অর্থনৈতিক ডেস্ক: ব্যাংক খাতে খেলাপি বা ঋণ শ্রেণিকরণ ও প্রভিশনিং নীতিমালা আন্তর্জাতিক উত্তম চর্চা ব্যাসেল ৩-এর আলোকে ঋণ শ্রেণিকরণ ও প্রভিশনিং বিষয়ক সমন্বিত নির্দেশনা জারি করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। গত বুধবার বাংলাদেশ ব্যাংকের বিআরপিডি থেকে এ-সম্পর্কিত সার্কুলার জারি কর হয়েছে।
সার্কুলার অনুযায়ী সব ধরনের ঋণের মেয়াদোত্তীর্ণের সময়সীমা ৩ থেকে ৬ মাসের মধ্যে হলে নিম্নমান; ৬ থেকে ১২ মাসের মধ্যে সন্দেহজনক ও ১২ মাস বা এর অধিক হলে মন্দ-ক্ষতিজনক মানে শ্রেণিকৃত হবে।
সার্কুলারে ঋণের বিপরীতে প্রভিশন সংরক্ষণে ও নতুন নির্দেশনা জারি করে বাংলাদেশ ব্যাংক।
নতুন এ সার্কুলার অনুযায়ী স্ট্যান্ডার্ড ঋণের ক্ষেত্রে ঋণস্থিতির ১ শতাংশ, স্পেশাল মেনশন অ্যাকাউন্টের ক্ষেত্রে ঋণস্থিতির ৫ শতাংশ জেনারেল প্রভিশন সংরক্ষণ করতে হবে।
তিন ধরনের খেলাপি ঋণের মধ্যে নিম্নমানের ঋণের বিপরীতে ২০ শতাংশ; সন্দেহজনক হলে ৫০ শতাংশ এবং মন্দমান বা ক্ষতিজনক খেলাপি ঋণের বিপরীতে হলে ১০০ শতাংশ প্রভিশন সংরক্ষণ করতে হবে।
সার্কুলারে বর্ণিত এ নির্দেশনা আগামী ২০২৫ সালের ১ এপ্রিল থেকে কার্যকর হবে।
আর্থিক খাত সংস্কার কর্মসূচির আওতায় ১৯৮৯ সালে সর্বপ্রথম ঋণ শ্রেণিকরণ ও প্রভিশনিং নীতিমালা প্রবর্তন করা হয়। আন্তর্জাতিক উত্তম চর্চা ও পন্থাসমূহ সমন্বয়ের লক্ষ্যে এ নীতিমালায় বিভিন্ন পরিবর্তন এনে ধাপে ধাপে ১৯৯৮ ও ২০০৬ সালে এতদ্বিষয় মাস্টার সার্কুলার জারি করা হয়।
সর্বশেষ ২০১২ সালে ঋণ শ্রেণিকরণ ও প্রভিশনিং নীতিমালায় উল্লেখযোগ্য পরিমার্জনকরত বিআরপিডি মাস্টার সার্কুলার নম্বর ১৪/২০১২ জারি করা হয়। এই মাস্টার সার্কুলার জারির পর ওই নীতিমালায় সময় সময় বিভিন্ন পরিবর্তন আনা হয়।
বাংলাদেশ ব্যাংক জানায়, ঋণ শ্রেণিকরণ ও প্রভিশনিং নীতিমালা আন্তর্জাতিক উত্তম চর্চার সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ করার প্রয়োজনীয়তা বিবেচনায় ১২ বছর পর এখন বিআরপিডি মাস্টার সার্কুলার নম্বর ১৫ জারি করা হয়েছে। ওই সার্কুলারের মাধ্যমে ব্যাসেল-৩ নীতিমালার আলোকে ঋণ শ্রেণিকরণ ও প্রভিশনিং বিষয়ক একীভূত নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে।
এই উদ্যোগকে যুগ-উপযোগী উল্লেখ করে বাংলাদেশ ব্যাংক বলছে, বাংলাদেশের ক্রমবিকাশমান অর্থনীতির সহায়ক শক্তি হিসেবে একটি শক্তিশালী আর্থিক খাতের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। আর্থিক স্থিতিশীলতার স্বার্থে শ্রেণীকৃত ঋণের হার হ্রাস করার বিষয়ে এই পদক্ষেপ গ্রহণ করা প্রয়োজন।
ব্যাংক খাত সংস্কার করার জন্য ইতোমধ্যেই সরকার ও বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। উক্ত পদক্ষেপের অংশ হিসেবেই আন্তর্জাতিক উত্তম চর্চার আলোকে আলোচ্য নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে। ফলে ব্যাংকের সম্পদের প্রকৃত গুণমান নিরূপণ করা সম্ভব হবে। এক্ষেত্রে যেহেতু সার্কুলারটি ০১ এপ্রিল ২০২৫ তারিখ হতে কার্যকর হবে সেহেতু ব্যাংকগুলো ওই নীতিমালার পরিপালনের ক্ষেত্রে প্রস্তুতি গ্রহণের পর্যাপ্ত সময় পাবে।
ঋণ শ্রেণিকরণ ও প্রভিশনিং বিষয়ে নির্দেশনা জারি
জনপ্রিয় সংবাদ