নিজস্ব প্রতিবেদক : সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাশ ব্রহ্মচারীকে গ্রেপ্তার এবং তাকে কারাগারে পাঠানোর সময় চট্টগ্রামে সহিংসতার ঘটনা নিয়ে আলোচনার মধ্যেই বাংলাদেশে আন্তর্জাতিক কৃষ্ণভাবনামৃত সংঘ ইসকন নিষিদ্ধের দাবিতে হাই কোর্টে রিট আবেদন করেছেন এক আইনজীবী। সুপ্রিম কোর্টের অ্যাডভোকেট মনিরুজ্জামান বুধবার (২৭ নভেম্বর) বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি দেবাশীষ রায় চৌধুরীর হাই কোর্ট বেঞ্চে এ আবেদন করেন। চট্টগ্রাম ও রংপুরে জরুরি অবস্থা জারিরও আর্জি জানিয়েছেন তিনি। আবেদনের শুনানিকালে রাষ্ট্রপক্ষের মতামত জানতে অ্যাটর্নি জেনারেলকে ডেকে পাঠায় আদালত। পরে এক দিনের মধ্যে এ বিষয়ে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়। পরে অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান সাংবাদিকদের বলেন, তিনি আদালতকে বলেছেন, এ বিষয়ে এখনই কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া ঠিক হবে না। সরকার বিষয়টি ‘গুরুত্বের সঙ্গে’ দেখছে। এরই মধ্যে ব্যবস্থা নেওয়া শুরু করেছে। ইসকানের প্রসঙ্গে তিনি আদালতকে বলেন, এ সংগঠন রেজিস্টার্ড কিনা, এ সংগঠন নিষিদ্ধ হবে কিনা, এ সংগঠনের বিরুদ্ধে কী কী আইনি ব্যবস্থা নেওয়া যায়– সরকার সবকিছু দেখবে এবং আদালতে উপস্থাপন করবে। পরে আদালত বিকালের মধ্যে ইসকনের বিষয়ে জানাতে বললে অ্যাটর্নি জেনারেল এক দিন সময় চান। আদালত তখন বৃহস্পতিবারের (আজ) মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলে। চট্টগ্রামে ইসকন পরিচালিত মন্দির পুণ্ডরীক ধামের অধ্যক্ষ, সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাশ ব্রহ্মচারীর জামিন নামঞ্জুর করে মঙ্গলবার তাকে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেয় চট্টগ্রামের হাকিম আদালত। ওই আদেশের পর আদালত প্রাঙ্গণে প্রিজন ভ্যান ঘিরে বিক্ষোভ করে সনাতনী সম্প্রদায়ের লোকজন। বেলা সোয়া ১২ টা থেকে পৌনে ৩টা পর্যন্ত বিক্ষোভের পর পুলিশ সাউন্ড গ্রেনেড ছুড়ে বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করে চিন্ময় দাশকে কারাগারে নিয়ে যায়। এরপর আদালতের সাধারণ আইনজীবী ও কর্মচারীরা মিলে তাদের ধাওয়া করে। ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার মধ্যে রঙ্গম কনভেনশন হল সড়কে আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফকে হত্যা করা হয়। বুধবার সাইফুল ইসলামের জানাজায় অংশ নিয়ে জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক সারজিস আলমও ইসকন নিষিদ্ধের দাবি তোলেন। আন্তর্জাতিক কৃষ্ণভাবনামৃত সংঘের ইংরেজি নাম ইন্টারন্যাশনাল সোসাইটি ফর কৃষ্ণ কনশাসনেস এর সংক্ষিপ্ত রূপ হল ইসকন। হিন্দু ধর্মগুরু অভয়চরণারবিন্দ ভক্তিবেদান্ত স্বামী প্রভুপাদ ১৯৬৬ সালে নিউ ইয়র্কে এ সংগঠন প্রতিষ্ঠা করেন। ইসকন মূলত গৌড়ীয় বৈষ্ণব মতবাদের অনুসারী। বর্তমানে বিশ্বে ইসকনের ৫০ হাজারের বেশি মন্দির ও কেন্দ্র রয়েছে। গত কয়েক দশকে যুক্তরাষ্ট্র ছাড়াও পূর্ব ইউরোপ, মধ্য এশিয়া এবং ভারত উপমহাদেশে এ সংগঠনের সদস্য সংখ্যা উল্লেখযোগ্য হারে বৃদ্ধি পেয়েছে।
ইসকন নিষিদ্ধে রিট, রাষ্ট্রের প্রতিবেদন চেয়েছে আদালত
জনপ্রিয় সংবাদ