ঢাকা ১২:৪৪ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সিগারেটের কার্যকর দাম বাড়ানোর আহ্বান

  • আপডেট সময় : ০৮:১৩:৩৬ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪
  • ১২ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক : আসন্ন ২০২৫-২৬ অর্থবছরে সব স্তরের সিগারেটের দাম উল্লেখযোগ্য মাত্রায় বাড়িয়ে সেই বর্ধিত মূল্যের ওপর যথাযথ করারোপের বিষয়টি ইতিবাচকভাবে বিবেচনা করার আহ্বান জানিয়েছেন ১৭ জন বিশিষ্ট নাগরিক। এ বিষয়ে তারা অর্থ উপদেষ্টার কাছে লিখিত অনুরোধ জানিয়েছেন। বেসরকারি গবেষণা সংস্থা উন্নয়ন সমন্বয়’র সভাপতি এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমেরিটাস অধ্যাপক ড. আতিউর রহমানের সই করা চিঠি গতকাল মঙ্গলবার (২৬ নভেম্বর) অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বরাবর পাঠানো হয়েছে। লিখিত অনুরোধ জানানো বিশিষ্ট নাগরিকরা হলেন- টেকসই অর্থনৈতিক কৌশল পুনঃনির্ধারণ ও প্রয়োজনীয় সম্পদ আহরণে গঠিত টাস্কফোর্সের প্রধান ড. কে এ এস মুরশিদ, সিপিডির সম্মাননীয় ফেলো ড. মুস্তাফিজুর রহমান, ইউসিএসআই বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য ড. এ কে এনামুল হক, আইইডিসিআরের সাবেক প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ডা. মুশতাক হোসেন, সমাজবিজ্ঞানী ড. মাহবুবা নাসরীন, বিআিইডিএসর গবেষণা পরিচালক ড. এস এম জুলফিকার আলী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন অধ্যয়ন বিভাগের অধ্যাপক ড. তৈয়েবুর রহমান, একই বিভাগের অধ্যাপক ড. এম আবু ইউসুফ, বিআইজিডির ভিজিটিং ফেলো খন্দকার সাখাওয়াত আলী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উইমেন অ্যান্ড জেন্ডার স্টাডিজ বিভাগের অধ্যাপক ড. তানিয়া হক, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগি অধ্যাপক ড. নাজমুল ইসলাম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাস্থ্য অর্থনীতি ইনস্টিটিউটের সহযোগি অধ্যাপক ড. সুজানা করিম, বিএসএমএমইউর সহযোগি অধ্যাপক ডা. খালেকুজ্জামান, বাপার যুগ্ম সম্পাদক মো. আমিনুর রসুল, এএলআডির নির্বাহী পরিচালক শামসুল হুদা, ন্যাশনাল চর অ্যালায়েন্সের সদস্য সচিব জাহিদ রহমান এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন অধ্যয়ন বিভাগের সহযোগি অধ্যাপক নাজনীন সুলতানা। চিঠিতে বলা হয়, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ‘গ্লোবাল অ্যাকশন প্ল্যান ফর দি প্রিভেনশন অ্যান্ড কন্ট্রোল অফ এনসিডিএস’ অনুসারে ২০১০ থেকে ২০২৫ সময়কালে বাংলাদেশে ১৫ বছর বা তদূর্ধ্ব বয়সী নাগরিকদের মধ্যে তামাক ব্যবহারের হার ৩০ শতাংশ কমানোর লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে, যা অর্জনে বাংলাদেশ বহুলাংশে পিছিয়ে রয়েছে (২০১০ সালে তামাক ব্যবহারের হার ছিলো ৪৩.৩ শতাংশ, যা বর্তমানে ৩৫.৩ শতাংশ)। বিপুল সংখ্যক নাগরিক তামাক ব্যবহার করায় এর প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ প্রভাবে যে স্বাস্থ্যগত ক্ষয়ক্ষতি হচ্ছে তা অপরিমেয়। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য মতে, প্রতিবছর তামাকজনিত কারণে অকালে মৃত্যুবরণ করছেন ১ লাখ ৬১ হাজার বাংলাদেশি নাগরিক। এছাড়াও তামাক চাষ ও তামাক পণ্য উৎপাদনের কারণে দেশের কৃষি জমি ও পরিবেশেরও অপূরণীয় ক্ষতি সাধিত হচ্ছে। সিগারেট ব্যবহার কমিয়ে আনতে সাম্প্রতিক অর্থবছরগুলোতে বিভিন্ন স্তরের সিগারেটের দাম অল্প অল্প করে বাড়ানো হলেও তা সিগারেট ব্যবহার কমানোর জন্য যথেষ্ট নয়। যেমন: ২০১৯-২০ থেকে ২০২৩-২৪ সময়কালে চলতি মূল্যে মাথাপিছু আয় ৫৫ শতাংশ এবং ভোক্তা মূল্যসূচকের মান ৩২ শতাংশ বাড়লেও এসময়ে সিগারেটের দাম বেড়েছে মাত্র ৬ থেকে ২২ শতাংশ। চিঠিতে আরও বলা হয়, মূল্যস্ফীতির বিবেচনায় সিগারেটের দামবৃদ্ধি কম হওয়ায়, সিগারেটের প্রকৃত মূল্যবৃদ্ধি ঋণাত্মক। অর্থাৎ প্রকৃত অর্থে সিগারেটের দাম বাড়েনি, বরং কমেছে। শুধু তাই নয়, এ সময়ে সিগারেটে কার্যকরভাবে করারোপ না করায় প্রতি বছর গড়ে ৬,৬০০ কোটি টাকা রাজস্ব হারিয়েছে সরকার। এই প্রেক্ষাপটে প্রধানত জনস্বাস্থ্য সুরক্ষার পাশাপাশি রাজস্ব আয় বাড়ানোর লক্ষ্যে আসন্ন ২০২৫-২৬ অর্থবছরে সব স্তরের সিগারেটের দাম উল্লেখযোগ্য মাত্রায় বাড়ানো এবং ওই বর্ধিত দামের ওপর যথাযথ করারোপ করা দরকার বলে মনে করেন বিশিষ্ট নাগরিকরা।

 

 

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

সিগারেটের কার্যকর দাম বাড়ানোর আহ্বান

আপডেট সময় : ০৮:১৩:৩৬ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪

নিজস্ব প্রতিবেদক : আসন্ন ২০২৫-২৬ অর্থবছরে সব স্তরের সিগারেটের দাম উল্লেখযোগ্য মাত্রায় বাড়িয়ে সেই বর্ধিত মূল্যের ওপর যথাযথ করারোপের বিষয়টি ইতিবাচকভাবে বিবেচনা করার আহ্বান জানিয়েছেন ১৭ জন বিশিষ্ট নাগরিক। এ বিষয়ে তারা অর্থ উপদেষ্টার কাছে লিখিত অনুরোধ জানিয়েছেন। বেসরকারি গবেষণা সংস্থা উন্নয়ন সমন্বয়’র সভাপতি এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমেরিটাস অধ্যাপক ড. আতিউর রহমানের সই করা চিঠি গতকাল মঙ্গলবার (২৬ নভেম্বর) অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বরাবর পাঠানো হয়েছে। লিখিত অনুরোধ জানানো বিশিষ্ট নাগরিকরা হলেন- টেকসই অর্থনৈতিক কৌশল পুনঃনির্ধারণ ও প্রয়োজনীয় সম্পদ আহরণে গঠিত টাস্কফোর্সের প্রধান ড. কে এ এস মুরশিদ, সিপিডির সম্মাননীয় ফেলো ড. মুস্তাফিজুর রহমান, ইউসিএসআই বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য ড. এ কে এনামুল হক, আইইডিসিআরের সাবেক প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ডা. মুশতাক হোসেন, সমাজবিজ্ঞানী ড. মাহবুবা নাসরীন, বিআিইডিএসর গবেষণা পরিচালক ড. এস এম জুলফিকার আলী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন অধ্যয়ন বিভাগের অধ্যাপক ড. তৈয়েবুর রহমান, একই বিভাগের অধ্যাপক ড. এম আবু ইউসুফ, বিআইজিডির ভিজিটিং ফেলো খন্দকার সাখাওয়াত আলী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উইমেন অ্যান্ড জেন্ডার স্টাডিজ বিভাগের অধ্যাপক ড. তানিয়া হক, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগি অধ্যাপক ড. নাজমুল ইসলাম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাস্থ্য অর্থনীতি ইনস্টিটিউটের সহযোগি অধ্যাপক ড. সুজানা করিম, বিএসএমএমইউর সহযোগি অধ্যাপক ডা. খালেকুজ্জামান, বাপার যুগ্ম সম্পাদক মো. আমিনুর রসুল, এএলআডির নির্বাহী পরিচালক শামসুল হুদা, ন্যাশনাল চর অ্যালায়েন্সের সদস্য সচিব জাহিদ রহমান এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন অধ্যয়ন বিভাগের সহযোগি অধ্যাপক নাজনীন সুলতানা। চিঠিতে বলা হয়, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ‘গ্লোবাল অ্যাকশন প্ল্যান ফর দি প্রিভেনশন অ্যান্ড কন্ট্রোল অফ এনসিডিএস’ অনুসারে ২০১০ থেকে ২০২৫ সময়কালে বাংলাদেশে ১৫ বছর বা তদূর্ধ্ব বয়সী নাগরিকদের মধ্যে তামাক ব্যবহারের হার ৩০ শতাংশ কমানোর লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে, যা অর্জনে বাংলাদেশ বহুলাংশে পিছিয়ে রয়েছে (২০১০ সালে তামাক ব্যবহারের হার ছিলো ৪৩.৩ শতাংশ, যা বর্তমানে ৩৫.৩ শতাংশ)। বিপুল সংখ্যক নাগরিক তামাক ব্যবহার করায় এর প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ প্রভাবে যে স্বাস্থ্যগত ক্ষয়ক্ষতি হচ্ছে তা অপরিমেয়। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য মতে, প্রতিবছর তামাকজনিত কারণে অকালে মৃত্যুবরণ করছেন ১ লাখ ৬১ হাজার বাংলাদেশি নাগরিক। এছাড়াও তামাক চাষ ও তামাক পণ্য উৎপাদনের কারণে দেশের কৃষি জমি ও পরিবেশেরও অপূরণীয় ক্ষতি সাধিত হচ্ছে। সিগারেট ব্যবহার কমিয়ে আনতে সাম্প্রতিক অর্থবছরগুলোতে বিভিন্ন স্তরের সিগারেটের দাম অল্প অল্প করে বাড়ানো হলেও তা সিগারেট ব্যবহার কমানোর জন্য যথেষ্ট নয়। যেমন: ২০১৯-২০ থেকে ২০২৩-২৪ সময়কালে চলতি মূল্যে মাথাপিছু আয় ৫৫ শতাংশ এবং ভোক্তা মূল্যসূচকের মান ৩২ শতাংশ বাড়লেও এসময়ে সিগারেটের দাম বেড়েছে মাত্র ৬ থেকে ২২ শতাংশ। চিঠিতে আরও বলা হয়, মূল্যস্ফীতির বিবেচনায় সিগারেটের দামবৃদ্ধি কম হওয়ায়, সিগারেটের প্রকৃত মূল্যবৃদ্ধি ঋণাত্মক। অর্থাৎ প্রকৃত অর্থে সিগারেটের দাম বাড়েনি, বরং কমেছে। শুধু তাই নয়, এ সময়ে সিগারেটে কার্যকরভাবে করারোপ না করায় প্রতি বছর গড়ে ৬,৬০০ কোটি টাকা রাজস্ব হারিয়েছে সরকার। এই প্রেক্ষাপটে প্রধানত জনস্বাস্থ্য সুরক্ষার পাশাপাশি রাজস্ব আয় বাড়ানোর লক্ষ্যে আসন্ন ২০২৫-২৬ অর্থবছরে সব স্তরের সিগারেটের দাম উল্লেখযোগ্য মাত্রায় বাড়ানো এবং ওই বর্ধিত দামের ওপর যথাযথ করারোপ করা দরকার বলে মনে করেন বিশিষ্ট নাগরিকরা।