বিদেশের খবর ডেস্ক : রুশ বাহিনী ২০২২ সালে ইউক্রেনে আগ্রাসনের শুরুর পর থেকে সবচেয়ে দ্রুত অগ্রসর হচ্ছে বলে দাবি করেছেন বিশ্লেষকরা। গত এক মাসে রাশিয়া বৃহত্তর লন্ডনের অর্ধেক আয়তনের সমান এলাকা দখল করেছে বলে বিভিন্ন প্রতিবেদনে দেখা গেছে। ব্রিটিশ বার্তাসংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে। বিশ্লেষক ও পশ্চিমা কর্মকর্তারা বলছেন, যুদ্ধ এখন রাশিয়া ও ইউক্রেন উভয়ের জন্য অত্যন্ত বিপজ্জনক পর্যায়ে পৌঁছেছে। রাশিয়ার এই অগ্রগতি এমন একসময় ঘটছে যখন কিয়েভকে মার্কিন ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে পাল্টা হামলা চালানোর অনুমতি দিয়েছে বাইডেন প্রশাসন। স্বাধীন রুশ সংবাদমাধ্যম এজেন্টস্টভো একটি প্রতিবেদনে জানিয়েছে, গত সপ্তাহে রুশ বাহিনী ইউক্রেনে প্রায় ২৩৫ বর্গকিলোমিটার এলাকা দখল করেছে। চলতি বছর এক সপ্তাহে এলাকা দখলের সর্বোচ্চ রেকর্ড এটি। ইউক্রেনের সেনাবাহিনীর সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করে ও যুদ্ধক্ষেত্রের মানচিত্র প্রস্তুত করে ডিপ স্টেট নামের একটি দল। তারা জানিয়েছে, নভেম্বরে রাশিয়া প্রায় ৬০০ বর্গকিলোমিটার এলাকা দখল করেছে। জুলাই থেকে রাশিয়া পূর্ব ইউক্রেনে দ্রুত অগ্রসর হতে শুরু করে। বর্তমানে রুশ বাহিনী ডোনেস্ক অঞ্চলের কুরাখোভ শহরের দিকে অগ্রসর হচ্ছে। এটি পোকরোভস্কের মতো গুরুত্বপূর্ণ সরবরাহ কেন্দ্রের দিকে যাওয়ার পথে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ কৌশলগত অবস্থান। যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক ইনস্টিটিউট ফর দ্য স্টাডি অফ ওয়ার (আইএসডব্লিউ)-এর মতে, রাশিয়া বর্তমানে ২০২৩ সালের তুলনায় দ্রুতগতিতে অগ্রসর হচ্ছে। রুশ বাহিনী কুরাখোভ শহরে ইউক্রেনীয় সেনাদের দুর্বলতাকে কাজে লাগিয়ে দ্রুত অগ্রগতি অর্জন করছে বলে তাদের বিশ্লেষণে উঠে এসেছে। ইউক্রেনের সশস্ত্র বাহিনীর জেনারেল স্টাফের পক্ষ থেকে সোমবার জানানো হয়, কুরাখোভ অঞ্চলে ৪৫টি ভিন্ন ভিন্ন ফ্রন্টে লড়াই চলছে। পশ্চিমা বিশ্বের চেষ্টাকে নস্যাৎ করে দিয়ে নিজেদের সব লক্ষ্য পূরণের অঙ্গীকার একাধিকবার ব্যক্ত করেছে মস্কো। অন্যদিকে, ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেছেন, রুশ বাহিনীকে সম্পূর্ণ বিতাড়িত করে দখলকৃত সব অঞ্চল পুনরুদ্ধার না করা পর্যন্ত শান্তি প্রতিষ্ঠা সম্ভব নয়। বিশ্লেষকদের মতে, ডনবাসের ডোনেস্ক ও লুহানস্ক অঞ্চল এবং কুরস্ক অঞ্চলের পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার লক্ষ্যে রাশিয়া তাদের অগ্রযাত্রা চালিয়ে যাচ্ছে। যুদ্ধ পরিস্থিতি ক্রমেই জটিল ও অস্থিতিশীল হয়ে উঠছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, রাশিয়ার কৌশলগত পরিকল্পনা ও ইউক্রেনীয় সেনাদের জন্য পর্যাপ্ত রসদ সরবরাহের অভাব যুদ্ধক্ষেত্রে বড় ধরনের প্রভাব ফেলছে।