ঢাকা ০১:৪৫ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৬ জুন ২০২৫

এআই-এর ব্যবহার হচ্ছে যে সাতটি অদ্ভুত কাজে

  • আপডেট সময় : ০৬:৪৬:৫৮ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৯ নভেম্বর ২০২৪
  • ৬১ বার পড়া হয়েছে

প্রযুক্তি ডেস্ক : এ আই প্রযুক্তির প্রধান সুবিধা আলোচনায় প্রায়ই উঠে আসে ইভি, ফিনটেক ও স্বাস্থ্যখাতে এর ব্যবহারের কথা। কিন্তু এর বাইরে কি এআইয়ের ব্যবহার নেই? এই স্মার্ট অ্যালগরিদমের প্রথম ঝলক মিলেছিল অ্যামাজনের পণ্য ও সিরি’র মতো পারসোনাল অ্যাসিস্ট্যান্ট ব্যবস্থায়। তবে, এ প্রযুক্তি এখন বিবর্তিত হয়ে আরও সামনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। সে বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে, বাস্তব জগতে এআই ব্যবহারের সাতটি অস্বাভাবিক ঘটনা প্রতিবেদনে তুলে ধরেছে অনলাইন সাইট ক্লিকওয়ার্কার ডটকম। যেমন-
প্রবীণদের সাথী: বয়স্ক ব্যক্তিদের সারাদিন কথোপকথনে ব্যস্ত রাখবে, এমনই এক রোমাঞ্চকর এআই ব্যবস্থা হল ‘এলিকিউ’। এ বন্ধুত্বসুলভ ও বুদ্ধিমান সত্ত্বাটি তাদেরকে বিভিন্ন কৌতুক বলে এমনকি পরামর্শ বা টিপসও দিয়ে থাকে। এই বুদ্ধিমান সামাজিক সঙ্গী বয়স্ক লোকজনকে সক্রিয় রাখতে সহায়তা করে। এমনকি এতে গেম, সোশাল মিডিয়ায় প্রবেশাধিকার ও ভিডিও চ্যাটিংয়ের মতো ফিচারও আছে। ডিভাইসটি বয়স্কদের জীবন কাটানোর মানে বড় ধরনের অগ্রগতি দেখাতে পারে।
অপরাধ ঠেকাতে: বিষয়টি শুনতে কিছুটা অস্বাভাবিক মনে হলেও এআই ব্যবহার করে অপরাধ সমাধানের বিষয়টি একেবারে অযৌক্তিক কিছু নয়। উদাহরণ হিসেবে, আমরা এরইমধ্যে বিভিন্ন সিনেমা ও ‘ক্রাইম সিন ইনভেস্টিগেশন (সিএসআই)’র মতো টিভি শো দেখেছি, যেখানে অপরাধী শনাক্ত করতে গোয়েন্দারা প্রযুক্তির সহায়তা নিয়ে অস্পষ্ট ছবি অনায়াসেই ঠিক করে ফেলেন। তাই বাস্তব জগতেও এমন প্রযুক্তি ব্যবহারের সম্ভাবনা আছে। এমন প্রযুক্তি এখনও পর্যন্ত বাস্তব জীবনে ব্যবহার না হলেও অপরাধ বিচারের জগতে এআই প্রযুক্তির মাধ্যমে বিভিন্ন পরীক্ষা এখনও অব্যাহত আছে।
গান লেখা ও র‌্যাপ করা: কম্পিউটার ব্যবহার করে সংগীত রচনা করা নতুন কিছু নয়। কিন্তু কম্পিউটার যদি নিজে নিজেই মিউজিক বানায়, তবে তা পুরোপুরি ভিন্ন কিছু। কল্পনা করুন, আপনি সারা সপ্তাহ যে গানটি শুনছেন, সেটা এআইয়ের লেখা। বিষয়টি জানার পর আপনার প্রতিক্রিয়া কেমন হবে? শুনতে অসম্ভব মনে হলেও এর বাস্তবিক ব্যবহার এরইমধ্যে দেখা গেছে। কয়েক বছর আগে বিলবোর্ড চার্টের শীর্ষে উঠে এসেছিল অ্যালেক্স ডা কিডের ‘নট ইজি’ শীর্ষক গানটি, যা যৌথভাবে লিখেছিল আইবিএম-এর কম্পিউটার সিস্টেম ওয়াটসন। এক্ষেত্রে, এর আগের পাঁচ বছরে সংবাদমাধ্যম, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও অন্যান্য সংশ্লিষ্ট জায়গায় হিট হিসেবে বিবেচিত গানগুলো স্ক্যান এবং বিশ্লেষণ করেছে ওয়াটসন। পরবর্তীতে লোকজনের সে সময়কার প্রতিক্রিয়ার ওপর নির্ভর করে ওই গানের কাঠামো তৈরিতে সাহায্য করেছে এটি। কিন্তু এ খাতে এআই প্রযুক্তি ব্যবহারের সবচেয়ে অদ্ভুত ঘটনা সম্ভবত প্রয়াত শিল্পীদের কণ্ঠস্বর থেকে নতুন গান তৈরি। উদাহরণ হিসেবে, ‘লস্ট টেপস অফ দ্য ২৭ ক্লাব’ নামের অ্যালবামে নতুন করে লেখা বিভিন্ন গানে কন্ঠ দিয়েছে মূলত মেশিন। এইসব গানে এমন অনেক মিউজিশিয়ানের গান লেখার শৈলী অনুসরণ করা হয়েছে, যারা ২৭ বছর বয়সে মারা গেছেন। এর মধ্যে রয়েছেন কিংবদন্তি মিউজিশিয়ান জিমি হেন্ড্রিক্স, জিম মরিসন এমনকি কার্ট কোবেইনও। ওই অ্যালবামে প্রত্যেক শিল্পীর ৩০টি পর্যন্ত গান বিশ্লেষণ করে একেকটি গান বানিয়েছে এআই। আর এইসব নতুন গানের সুর, কর্ড পরিবর্তন, গিটার রিফ’সহ অন্যান্য কাজে সাহায্য করেছে এর বিভিন্ন স্মার্ট অ্যালগরিদম।
সংবাদ উপস্থাপক: মানুষ হিসেবে সংবাদ উপস্থাপন করার দিন কি ফুরিয়ে আসছে? সম্প্রতি বিশ্বের প্রথম এআই চালিত সংবাদ উপস্থাপক বা ‘নিউজ অ্যাংকর’ তৈরি করেছে চীনের রাষ্ট্রায়ত্ত সংবাদ সংস্থা ‘শিনহুয়া নিউজ এজেন্সি’। ডিজিটাল উপায়ে মডেল করা এআই চালিত এই উপস্থাপক আগে সম্প্রচার করা খবরগুলো খতিয়ে দেখে ও সংবাদ সংস্থাটিতে কাজ করা মানব উপস্থাপক ঝ্যাং ঝাও’কে অনুকরণ করে। নিন্দুকদের দাবি, এটা সত্যিকারের এআই প্রযুক্তি নয়, কারণ এআইয়ের মাধ্যমে পরিচালিত উপস্থাপকটি স্রেফ পাণ্ডুলিপি পড়ছে। কিন্তু সরাসরি সম্প্রচারের সময় মানব উপস্থাপকও টেলিপ্রম্পটার দেখে একই কাজ করে থাকেন। বার্তাকক্ষে এআই প্রযুক্তির ব্যবহার থেকে ইঙ্গিত মেলে, শিগগিরই এআইয়ের তৈরি অভিনেতাও দেখা যেতে পারে। সিনেমায় এরইমধ্যে অ্যানিমেশনকে সমন্বিত করতে দেখা গেছে। তাই এআই কেন নয়? শীর্ষ ফিল্ম স্টুডিওগুলোর কাছে এআই দিয়ে তৈরি অভিনেতাদের নিজস্ব দল থাকলে, তাদের জন্যেও বিপুল পরিমাণ অর্থ উপার্জনের সুযোগ তৈরি হবে।
আর্টিফিসিয়াল ওলফ্যাক্টরি সেনসেশন: বেশ কয়েক বছর আগে আইবিএম-এর সঙ্গে জোট বেঁধেছিল জার্মান পারফিউম কোম্পানি ‘সিমরাইজ’। এর মাধ্যমে তারা পারফিউম শিল্পে এমন এক প্রযুক্তি তুলে এনেছিলে, যাকে তারা ডাকছে ‘আর্টিফিসিয়াল ওলফ্যাকশন’ বলে। এ প্রক্রিয়া অবলম্বন করে প্রতিযোগিতার বাজারে কিছুটা বাড়তি সুবিধা পাওয়ার পাশাপাশি পণ্য উদ্ভাবনেও সম্মুখসারীতে উঠে এসেছে সিমরাইজ। পারফিউম ব্যবসার মতো উচ্চ প্রতিযোগিতামূলক খাতে, উদ্ভাবন এমন একটি বিষয়, যা একটি ব্র্যান্ডকে অন্য ব্র্যান্ড থেকে আলাদা করে। আর এ প্রেক্ষাপটে বিভিন্ন রাসায়নিক সূত্র বিশ্লেষণ করে নতুন ধরনের পারফিউম তৈরির জন্য এআই প্রযুক্তির সাহায্য নিয়েছে কোম্পানিটি। পাশাপাশি, গ্রাহকদের পছন্দ সংশ্লিষ্ট পুরোনো ডেটা ব্যবহার করেছে এআই। ওই তথ্যের ওপর ভিত্তি করে বিশেষ এক ধরনের পারফিউম বানাতে পরবর্তীতে ভিন্ন ভিন্ন সুগন্ধী উপাদানের মিশ্রণ ঘটিয়েছে কোম্পানিটি।
রোবট বার্গার শেফ: ‘ক্যালিবার্গার’ নামে পরিচিত একটি রেস্টুরেন্টের মধ্যমণি হয়ে উঠেছে ‘ফ্লিপি’ নামের এআই চালিত রোবট, যা বানিয়েছে রোবটিক কোম্পানি ‘মিসো রোবটিক্স’। ফ্লিপি’র লক্ষ্য, ব্যস্ত রান্নাঘরে কাজ করার সম্ভাব্য ঝুঁকি ও ফাস্টফুড রেস্টুরেন্টে খাবার গ্রিল করার সময় যতটা সম্ভব কমিয়ে আনা। এ স্মার্ট রোবটকে প্রশিক্ষণ দিয়ে সবজি কাটা, মুরগি ভাজা’সহ বেশ কিছু কাজ শেখানো যাবে। বর্তমানে রেস্টুরেন্ট থেকে কর্মী ছাঁটাই করার যে হিড়িক চলছে, তা বিবেচনায় নিলে ভবিষ্যতে বিভিন্ন ফাস্ট ফুড রেস্টুরেন্টের রান্নাঘরে এমন আরও রোবট দেখা যেতে পারে।
পোষা প্রাণীর সঙ্গী: আমাদের পোষা প্রাণীগুলোর গড় আয়ু মানুষের তুলনায় অনেক কম। সে বিষয়টি বিবেচনায় রেখে তৈরি হয়েছে ‘টিটিকেয়ার’ নামের এআই হোমকেয়ার অ্যাপ, যা পোষা প্রাণীদের আয়ু বাড়ানোর সম্ভাবনা দেখানোর পাশাপাশি তাদের শারীরিক স্বাস্থ্যও ট্র্যাকিং করে। আমাদের আদুড়ে বন্ধুপ্রতিম প্রাণীগুলো যেন দীর্ঘদিন স্বাস্থ্যসম্মতভাবে বাঁচতে পারে, তা নিশ্চিত করার সম্ভাবনাও দেখাচ্ছে নতুন এ প্রক্রিয়াটি। পোষা প্রাণীর কথা বলতে গেলে আরেকটি বিষয় মাথায় আসে, তা হল, রোবট পোষা প্রাণী। এর বিভিন্ন কাজের মধ্যে রয়েছে আবেগ পড়া, লোকজনকে শনাক্ত করা, নিজের মালিকের আদেশ মান্য করা ও ব্যবহারকারীর পোষা প্রাণীর সঙ্গে সময় কাটানো। এরা আপনার কুকুর বা বেড়ালের জায়গা নিতে পারে, এমন ঝুঁকি থাকলেও এআইয়ের মাধ্যমে পরিচালিত প্রাণিগুলো বাড়িতে একাকী অবস্থায় থাকা পোষা প্রাণীর জন্য ভালো সঙ্গী হতে পারে, এমন সম্ভাবনাও আছে।

 

 

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

এআই-এর ব্যবহার হচ্ছে যে সাতটি অদ্ভুত কাজে

আপডেট সময় : ০৬:৪৬:৫৮ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৯ নভেম্বর ২০২৪

প্রযুক্তি ডেস্ক : এ আই প্রযুক্তির প্রধান সুবিধা আলোচনায় প্রায়ই উঠে আসে ইভি, ফিনটেক ও স্বাস্থ্যখাতে এর ব্যবহারের কথা। কিন্তু এর বাইরে কি এআইয়ের ব্যবহার নেই? এই স্মার্ট অ্যালগরিদমের প্রথম ঝলক মিলেছিল অ্যামাজনের পণ্য ও সিরি’র মতো পারসোনাল অ্যাসিস্ট্যান্ট ব্যবস্থায়। তবে, এ প্রযুক্তি এখন বিবর্তিত হয়ে আরও সামনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। সে বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে, বাস্তব জগতে এআই ব্যবহারের সাতটি অস্বাভাবিক ঘটনা প্রতিবেদনে তুলে ধরেছে অনলাইন সাইট ক্লিকওয়ার্কার ডটকম। যেমন-
প্রবীণদের সাথী: বয়স্ক ব্যক্তিদের সারাদিন কথোপকথনে ব্যস্ত রাখবে, এমনই এক রোমাঞ্চকর এআই ব্যবস্থা হল ‘এলিকিউ’। এ বন্ধুত্বসুলভ ও বুদ্ধিমান সত্ত্বাটি তাদেরকে বিভিন্ন কৌতুক বলে এমনকি পরামর্শ বা টিপসও দিয়ে থাকে। এই বুদ্ধিমান সামাজিক সঙ্গী বয়স্ক লোকজনকে সক্রিয় রাখতে সহায়তা করে। এমনকি এতে গেম, সোশাল মিডিয়ায় প্রবেশাধিকার ও ভিডিও চ্যাটিংয়ের মতো ফিচারও আছে। ডিভাইসটি বয়স্কদের জীবন কাটানোর মানে বড় ধরনের অগ্রগতি দেখাতে পারে।
অপরাধ ঠেকাতে: বিষয়টি শুনতে কিছুটা অস্বাভাবিক মনে হলেও এআই ব্যবহার করে অপরাধ সমাধানের বিষয়টি একেবারে অযৌক্তিক কিছু নয়। উদাহরণ হিসেবে, আমরা এরইমধ্যে বিভিন্ন সিনেমা ও ‘ক্রাইম সিন ইনভেস্টিগেশন (সিএসআই)’র মতো টিভি শো দেখেছি, যেখানে অপরাধী শনাক্ত করতে গোয়েন্দারা প্রযুক্তির সহায়তা নিয়ে অস্পষ্ট ছবি অনায়াসেই ঠিক করে ফেলেন। তাই বাস্তব জগতেও এমন প্রযুক্তি ব্যবহারের সম্ভাবনা আছে। এমন প্রযুক্তি এখনও পর্যন্ত বাস্তব জীবনে ব্যবহার না হলেও অপরাধ বিচারের জগতে এআই প্রযুক্তির মাধ্যমে বিভিন্ন পরীক্ষা এখনও অব্যাহত আছে।
গান লেখা ও র‌্যাপ করা: কম্পিউটার ব্যবহার করে সংগীত রচনা করা নতুন কিছু নয়। কিন্তু কম্পিউটার যদি নিজে নিজেই মিউজিক বানায়, তবে তা পুরোপুরি ভিন্ন কিছু। কল্পনা করুন, আপনি সারা সপ্তাহ যে গানটি শুনছেন, সেটা এআইয়ের লেখা। বিষয়টি জানার পর আপনার প্রতিক্রিয়া কেমন হবে? শুনতে অসম্ভব মনে হলেও এর বাস্তবিক ব্যবহার এরইমধ্যে দেখা গেছে। কয়েক বছর আগে বিলবোর্ড চার্টের শীর্ষে উঠে এসেছিল অ্যালেক্স ডা কিডের ‘নট ইজি’ শীর্ষক গানটি, যা যৌথভাবে লিখেছিল আইবিএম-এর কম্পিউটার সিস্টেম ওয়াটসন। এক্ষেত্রে, এর আগের পাঁচ বছরে সংবাদমাধ্যম, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও অন্যান্য সংশ্লিষ্ট জায়গায় হিট হিসেবে বিবেচিত গানগুলো স্ক্যান এবং বিশ্লেষণ করেছে ওয়াটসন। পরবর্তীতে লোকজনের সে সময়কার প্রতিক্রিয়ার ওপর নির্ভর করে ওই গানের কাঠামো তৈরিতে সাহায্য করেছে এটি। কিন্তু এ খাতে এআই প্রযুক্তি ব্যবহারের সবচেয়ে অদ্ভুত ঘটনা সম্ভবত প্রয়াত শিল্পীদের কণ্ঠস্বর থেকে নতুন গান তৈরি। উদাহরণ হিসেবে, ‘লস্ট টেপস অফ দ্য ২৭ ক্লাব’ নামের অ্যালবামে নতুন করে লেখা বিভিন্ন গানে কন্ঠ দিয়েছে মূলত মেশিন। এইসব গানে এমন অনেক মিউজিশিয়ানের গান লেখার শৈলী অনুসরণ করা হয়েছে, যারা ২৭ বছর বয়সে মারা গেছেন। এর মধ্যে রয়েছেন কিংবদন্তি মিউজিশিয়ান জিমি হেন্ড্রিক্স, জিম মরিসন এমনকি কার্ট কোবেইনও। ওই অ্যালবামে প্রত্যেক শিল্পীর ৩০টি পর্যন্ত গান বিশ্লেষণ করে একেকটি গান বানিয়েছে এআই। আর এইসব নতুন গানের সুর, কর্ড পরিবর্তন, গিটার রিফ’সহ অন্যান্য কাজে সাহায্য করেছে এর বিভিন্ন স্মার্ট অ্যালগরিদম।
সংবাদ উপস্থাপক: মানুষ হিসেবে সংবাদ উপস্থাপন করার দিন কি ফুরিয়ে আসছে? সম্প্রতি বিশ্বের প্রথম এআই চালিত সংবাদ উপস্থাপক বা ‘নিউজ অ্যাংকর’ তৈরি করেছে চীনের রাষ্ট্রায়ত্ত সংবাদ সংস্থা ‘শিনহুয়া নিউজ এজেন্সি’। ডিজিটাল উপায়ে মডেল করা এআই চালিত এই উপস্থাপক আগে সম্প্রচার করা খবরগুলো খতিয়ে দেখে ও সংবাদ সংস্থাটিতে কাজ করা মানব উপস্থাপক ঝ্যাং ঝাও’কে অনুকরণ করে। নিন্দুকদের দাবি, এটা সত্যিকারের এআই প্রযুক্তি নয়, কারণ এআইয়ের মাধ্যমে পরিচালিত উপস্থাপকটি স্রেফ পাণ্ডুলিপি পড়ছে। কিন্তু সরাসরি সম্প্রচারের সময় মানব উপস্থাপকও টেলিপ্রম্পটার দেখে একই কাজ করে থাকেন। বার্তাকক্ষে এআই প্রযুক্তির ব্যবহার থেকে ইঙ্গিত মেলে, শিগগিরই এআইয়ের তৈরি অভিনেতাও দেখা যেতে পারে। সিনেমায় এরইমধ্যে অ্যানিমেশনকে সমন্বিত করতে দেখা গেছে। তাই এআই কেন নয়? শীর্ষ ফিল্ম স্টুডিওগুলোর কাছে এআই দিয়ে তৈরি অভিনেতাদের নিজস্ব দল থাকলে, তাদের জন্যেও বিপুল পরিমাণ অর্থ উপার্জনের সুযোগ তৈরি হবে।
আর্টিফিসিয়াল ওলফ্যাক্টরি সেনসেশন: বেশ কয়েক বছর আগে আইবিএম-এর সঙ্গে জোট বেঁধেছিল জার্মান পারফিউম কোম্পানি ‘সিমরাইজ’। এর মাধ্যমে তারা পারফিউম শিল্পে এমন এক প্রযুক্তি তুলে এনেছিলে, যাকে তারা ডাকছে ‘আর্টিফিসিয়াল ওলফ্যাকশন’ বলে। এ প্রক্রিয়া অবলম্বন করে প্রতিযোগিতার বাজারে কিছুটা বাড়তি সুবিধা পাওয়ার পাশাপাশি পণ্য উদ্ভাবনেও সম্মুখসারীতে উঠে এসেছে সিমরাইজ। পারফিউম ব্যবসার মতো উচ্চ প্রতিযোগিতামূলক খাতে, উদ্ভাবন এমন একটি বিষয়, যা একটি ব্র্যান্ডকে অন্য ব্র্যান্ড থেকে আলাদা করে। আর এ প্রেক্ষাপটে বিভিন্ন রাসায়নিক সূত্র বিশ্লেষণ করে নতুন ধরনের পারফিউম তৈরির জন্য এআই প্রযুক্তির সাহায্য নিয়েছে কোম্পানিটি। পাশাপাশি, গ্রাহকদের পছন্দ সংশ্লিষ্ট পুরোনো ডেটা ব্যবহার করেছে এআই। ওই তথ্যের ওপর ভিত্তি করে বিশেষ এক ধরনের পারফিউম বানাতে পরবর্তীতে ভিন্ন ভিন্ন সুগন্ধী উপাদানের মিশ্রণ ঘটিয়েছে কোম্পানিটি।
রোবট বার্গার শেফ: ‘ক্যালিবার্গার’ নামে পরিচিত একটি রেস্টুরেন্টের মধ্যমণি হয়ে উঠেছে ‘ফ্লিপি’ নামের এআই চালিত রোবট, যা বানিয়েছে রোবটিক কোম্পানি ‘মিসো রোবটিক্স’। ফ্লিপি’র লক্ষ্য, ব্যস্ত রান্নাঘরে কাজ করার সম্ভাব্য ঝুঁকি ও ফাস্টফুড রেস্টুরেন্টে খাবার গ্রিল করার সময় যতটা সম্ভব কমিয়ে আনা। এ স্মার্ট রোবটকে প্রশিক্ষণ দিয়ে সবজি কাটা, মুরগি ভাজা’সহ বেশ কিছু কাজ শেখানো যাবে। বর্তমানে রেস্টুরেন্ট থেকে কর্মী ছাঁটাই করার যে হিড়িক চলছে, তা বিবেচনায় নিলে ভবিষ্যতে বিভিন্ন ফাস্ট ফুড রেস্টুরেন্টের রান্নাঘরে এমন আরও রোবট দেখা যেতে পারে।
পোষা প্রাণীর সঙ্গী: আমাদের পোষা প্রাণীগুলোর গড় আয়ু মানুষের তুলনায় অনেক কম। সে বিষয়টি বিবেচনায় রেখে তৈরি হয়েছে ‘টিটিকেয়ার’ নামের এআই হোমকেয়ার অ্যাপ, যা পোষা প্রাণীদের আয়ু বাড়ানোর সম্ভাবনা দেখানোর পাশাপাশি তাদের শারীরিক স্বাস্থ্যও ট্র্যাকিং করে। আমাদের আদুড়ে বন্ধুপ্রতিম প্রাণীগুলো যেন দীর্ঘদিন স্বাস্থ্যসম্মতভাবে বাঁচতে পারে, তা নিশ্চিত করার সম্ভাবনাও দেখাচ্ছে নতুন এ প্রক্রিয়াটি। পোষা প্রাণীর কথা বলতে গেলে আরেকটি বিষয় মাথায় আসে, তা হল, রোবট পোষা প্রাণী। এর বিভিন্ন কাজের মধ্যে রয়েছে আবেগ পড়া, লোকজনকে শনাক্ত করা, নিজের মালিকের আদেশ মান্য করা ও ব্যবহারকারীর পোষা প্রাণীর সঙ্গে সময় কাটানো। এরা আপনার কুকুর বা বেড়ালের জায়গা নিতে পারে, এমন ঝুঁকি থাকলেও এআইয়ের মাধ্যমে পরিচালিত প্রাণিগুলো বাড়িতে একাকী অবস্থায় থাকা পোষা প্রাণীর জন্য ভালো সঙ্গী হতে পারে, এমন সম্ভাবনাও আছে।