ঢাকা ০৭:৫৪ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২২ অগাস্ট ২০২৫

দাবি না মানলে ‘বারাসাত ব্যারিকেড’ দেবে তিতুমীর শিক্ষার্থীরা

  • আপডেট সময় : ০৫:১৫:৫৬ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৯ নভেম্বর ২০২৪
  • ৯৬ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক : সরকারি তিতুমীর কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয়ে রুপান্তরে কমিশন গঠনের দাবি মঙ্গলবারের (১৯ নভেম্বর) মধ্যে মেনে না নিলে বুধবার (২০ নভেম্বর) রাজধানীর মহাখালীতে ফের সড়ক ও রেলপথ অবরোধ করার ঘোষণা দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। এটিকে তারা ‘বারাসাত ব্যারিকেড টু মহাখালী’ বলে উল্লেখ করেছেন।
মঙ্গলবার (১৯ নভেম্বর) দুপুর পৌনে ১২টার দিকে কলেজের প্রধান ফটকে অবস্থান কর্মসূচি থেকে ব্রিফিং করে এ ঘোষণা দেন তারা। ব্রিফিংয়ে আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক মতিউর রহমান জয় বলেন, আজ আমাদের দাবিগুলো নিয়ে শিক্ষা উপদেষ্টাসহ সরকারের শীর্ষ কর্মকর্তারা বসবেন বলে জেনেছি। সেখানে আমাদের প্রতিনিধি দলও থাকবে। এ বৈঠক থেকে দাবি মেনে নেওয়ার সুনির্দিষ্ট আশ্বাস না পেলে বুধবার বেলা ১১টা থেকে সড়ক ও রেলপথ অবরোধ করা হবে। ব্রিফিং শেষে শিক্ষার্থীরা ফের অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন। ‘তিতুমীরের বাংলায়, বৈষম্যের ঠাঁই নাই’, ‘টিসি না টিইউ’, টিইউ টিইউ’, ‘ডিমান্ড টু গুলশান’, ‘তিতুমীর ভার্সিটি’, ‘ডিমান্ড টু বনানী, তিতুমীর ভার্সিটি, ‘অধ্যক্ষ না ভিসি, ভিসি ভিসি’’, ‘আমাদের ক্যাম্পাসে, আমরাই থাকবো’, ‘ক্যাম্পাসে পুলিশ কেন, প্রশাসন জবাব চাই’ স্লোগান দিচ্ছেন তারা। এর আগে সোমবার (১৭ নভেম্বর) বেলা ১১টার দিকে থেকে ৪টা পর্যন্ত সড়ক ও রেলপথ অবরোধ করেন শিক্ষার্থীরা। এরপর বিকেলে সচিবালয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধিদল। তবে বিষয়টি সুরাহা না হওয়ায় সন্ধ্যা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত ফের সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন তারা। পরে রাতে নতুন কর্মসূচি দিয়ে ফিরে যান শিক্ষার্থীরা।
উল্লেখ্য, সরকারি তিতুমীর কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তর করতে শিক্ষা উপদেষ্টা ও প্রধান উপদেষ্টার সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষার্থীরা। এবিষয়ে স্পষ্ট সিদ্ধান্ত সরকারের পক্ষ থেকে জানানোর আগ পর্যন্ত পূর্বঘোষিত অবরোধ কর্মসূচি স্থগিত করেছেন তারা। তবে সিদ্ধান্ত ইতিবাচক না হলে, সড়ক অবরোধ করা হবে বলে জানিয়েছেন তারা। এদিকে অনাকাঙিক্ষত পরিস্থিতি এড়াতে তিতুমীর কলেজের সামনে এবং আশপাশের এলাকায় অবস্থান নিয়েছেন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বিপুল সংখ্যক সদস্য। গেটের সামনে রাখা হয়েছে একটি জলকামান।
মঙ্গলবার (১৯ নভেম্বর) বেলা বারোটার দিকে সরেজমিনে তিতুমীর কলেজ ও আশপাশের এলাকা ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে। দেখা যায়, কলেজের মূল ফটকের ভেতরে অবস্থান নিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। অবশ্য সকালে পুলিশ ক্যাম্পাসের ভেতরে প্রবেশ করলেও পরে শিক্ষার্থীদের আপত্তির মুখে তারা বাইরে অবস্থান নেন। এসময় শিক্ষার্থীদের ক্যাম্পাসে পুলিশের প্রবেশ নিয়ে বিভিন্ন প্রতিবাদী স্লোগান দিতে শোনা যায়।
উপস্থিত শিক্ষার্থীরা বলেন, প্রধান উপদেষ্টার প্রতি সম্মান জানিয়ে শেষবারের মতো তার সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় আজ শুধু ক্লোজ ডাউন তিতুমীর কর্মসূচি চলবে। ‘বারাসাত ব্যারিকেড টু মহাখালী’ কর্মসূচি স্থগিত করা হয়েছে। তিতুমীর বিশ্ববিদ্যালয় ব্যতীত অন্য কোনো সিদ্ধান্ত নিলে বা কোনোরকম চক্রান্ত কেউ করলে তাহলে তাৎক্ষণিকভাবে বারাসাত ব্যারিকেড কর্মসূচি শুরু হবে। প্রয়োজনে আরো বড় কর্মসূচির ডাক দেওয়া হতে পারে। তিতুমীর কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী মতিউর রহমান বলেন, ঢাবি অধিভুক্ত অন্য ৬টি কলেজ, ঢাবি ও জগন্নাথের শিক্ষার্থীরা চাইছেন না তিতুমীর বিশ্ববিদ্যালয় হোক। ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনে একটি বিশ্ববিদ্যালয় প্রয়োজন। এটি আমাদের নতুন দাবি নয়। দীর্ঘদিন ধরে এই আন্দোলন হয়ে আসছিল। এই শিক্ষার্থী আরো বলেন, সোমবার (১৯ নভেম্বর) ট্রেনে ঢিল ছোঁড়ার ঘটনায় আমরা দুঃখ প্রকাশ করছি। দেশবাসীর কাছে ক্ষমাপ্রার্থনা করছি। যে পরিবার আহত হয়েছে তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি। আমরা সেখানে যাব এবং প্রয়োজনে আর্থিক সহায়তা দেব। আজ আমাদের চারজন শিক্ষার্থী প্রতিনিধি উপদেষ্টাদের সঙ্গে বৈঠকে বসার কথা রয়েছে। সেই অপেক্ষা আমরা করছি। আমরা প্রত্যাশা করছি, যৌক্তিক দাবি মেনে নিয়ে তিতুমীর কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরের রূপরেখা গঠন করা হবে। এ বিষয়ে কোনো ষড়যন্ত্র করা হলে আমরা আবার আন্দোলনে অংশ নেব। তবে তার আগ পর্যন্ত সব শিক্ষার্থী ক্যাম্পাসেই অবস্থান করবে। অপরদিকে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন ঘিরে ক্যাম্পাসের বাইরে সতর্ক অবস্থায় দেখা গেছে পুলিশ সদস্যদের। এ বিষয়ে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) উপপুলিশ কমিশনার (অপারেশনস) এ. এফ. এম তারিক হোসেন খান বলেন, আমরা সতর্ক অবস্থায় আছি। আমরা চাইছি আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকুক। শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসের ভেতরেই যেন শান্তিপূর্ণভাবে অবস্থান করেন।

 

 

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

দাবি না মানলে ‘বারাসাত ব্যারিকেড’ দেবে তিতুমীর শিক্ষার্থীরা

আপডেট সময় : ০৫:১৫:৫৬ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৯ নভেম্বর ২০২৪

নিজস্ব প্রতিবেদক : সরকারি তিতুমীর কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয়ে রুপান্তরে কমিশন গঠনের দাবি মঙ্গলবারের (১৯ নভেম্বর) মধ্যে মেনে না নিলে বুধবার (২০ নভেম্বর) রাজধানীর মহাখালীতে ফের সড়ক ও রেলপথ অবরোধ করার ঘোষণা দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। এটিকে তারা ‘বারাসাত ব্যারিকেড টু মহাখালী’ বলে উল্লেখ করেছেন।
মঙ্গলবার (১৯ নভেম্বর) দুপুর পৌনে ১২টার দিকে কলেজের প্রধান ফটকে অবস্থান কর্মসূচি থেকে ব্রিফিং করে এ ঘোষণা দেন তারা। ব্রিফিংয়ে আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক মতিউর রহমান জয় বলেন, আজ আমাদের দাবিগুলো নিয়ে শিক্ষা উপদেষ্টাসহ সরকারের শীর্ষ কর্মকর্তারা বসবেন বলে জেনেছি। সেখানে আমাদের প্রতিনিধি দলও থাকবে। এ বৈঠক থেকে দাবি মেনে নেওয়ার সুনির্দিষ্ট আশ্বাস না পেলে বুধবার বেলা ১১টা থেকে সড়ক ও রেলপথ অবরোধ করা হবে। ব্রিফিং শেষে শিক্ষার্থীরা ফের অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন। ‘তিতুমীরের বাংলায়, বৈষম্যের ঠাঁই নাই’, ‘টিসি না টিইউ’, টিইউ টিইউ’, ‘ডিমান্ড টু গুলশান’, ‘তিতুমীর ভার্সিটি’, ‘ডিমান্ড টু বনানী, তিতুমীর ভার্সিটি, ‘অধ্যক্ষ না ভিসি, ভিসি ভিসি’’, ‘আমাদের ক্যাম্পাসে, আমরাই থাকবো’, ‘ক্যাম্পাসে পুলিশ কেন, প্রশাসন জবাব চাই’ স্লোগান দিচ্ছেন তারা। এর আগে সোমবার (১৭ নভেম্বর) বেলা ১১টার দিকে থেকে ৪টা পর্যন্ত সড়ক ও রেলপথ অবরোধ করেন শিক্ষার্থীরা। এরপর বিকেলে সচিবালয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধিদল। তবে বিষয়টি সুরাহা না হওয়ায় সন্ধ্যা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত ফের সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন তারা। পরে রাতে নতুন কর্মসূচি দিয়ে ফিরে যান শিক্ষার্থীরা।
উল্লেখ্য, সরকারি তিতুমীর কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তর করতে শিক্ষা উপদেষ্টা ও প্রধান উপদেষ্টার সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষার্থীরা। এবিষয়ে স্পষ্ট সিদ্ধান্ত সরকারের পক্ষ থেকে জানানোর আগ পর্যন্ত পূর্বঘোষিত অবরোধ কর্মসূচি স্থগিত করেছেন তারা। তবে সিদ্ধান্ত ইতিবাচক না হলে, সড়ক অবরোধ করা হবে বলে জানিয়েছেন তারা। এদিকে অনাকাঙিক্ষত পরিস্থিতি এড়াতে তিতুমীর কলেজের সামনে এবং আশপাশের এলাকায় অবস্থান নিয়েছেন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বিপুল সংখ্যক সদস্য। গেটের সামনে রাখা হয়েছে একটি জলকামান।
মঙ্গলবার (১৯ নভেম্বর) বেলা বারোটার দিকে সরেজমিনে তিতুমীর কলেজ ও আশপাশের এলাকা ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে। দেখা যায়, কলেজের মূল ফটকের ভেতরে অবস্থান নিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। অবশ্য সকালে পুলিশ ক্যাম্পাসের ভেতরে প্রবেশ করলেও পরে শিক্ষার্থীদের আপত্তির মুখে তারা বাইরে অবস্থান নেন। এসময় শিক্ষার্থীদের ক্যাম্পাসে পুলিশের প্রবেশ নিয়ে বিভিন্ন প্রতিবাদী স্লোগান দিতে শোনা যায়।
উপস্থিত শিক্ষার্থীরা বলেন, প্রধান উপদেষ্টার প্রতি সম্মান জানিয়ে শেষবারের মতো তার সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় আজ শুধু ক্লোজ ডাউন তিতুমীর কর্মসূচি চলবে। ‘বারাসাত ব্যারিকেড টু মহাখালী’ কর্মসূচি স্থগিত করা হয়েছে। তিতুমীর বিশ্ববিদ্যালয় ব্যতীত অন্য কোনো সিদ্ধান্ত নিলে বা কোনোরকম চক্রান্ত কেউ করলে তাহলে তাৎক্ষণিকভাবে বারাসাত ব্যারিকেড কর্মসূচি শুরু হবে। প্রয়োজনে আরো বড় কর্মসূচির ডাক দেওয়া হতে পারে। তিতুমীর কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী মতিউর রহমান বলেন, ঢাবি অধিভুক্ত অন্য ৬টি কলেজ, ঢাবি ও জগন্নাথের শিক্ষার্থীরা চাইছেন না তিতুমীর বিশ্ববিদ্যালয় হোক। ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনে একটি বিশ্ববিদ্যালয় প্রয়োজন। এটি আমাদের নতুন দাবি নয়। দীর্ঘদিন ধরে এই আন্দোলন হয়ে আসছিল। এই শিক্ষার্থী আরো বলেন, সোমবার (১৯ নভেম্বর) ট্রেনে ঢিল ছোঁড়ার ঘটনায় আমরা দুঃখ প্রকাশ করছি। দেশবাসীর কাছে ক্ষমাপ্রার্থনা করছি। যে পরিবার আহত হয়েছে তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি। আমরা সেখানে যাব এবং প্রয়োজনে আর্থিক সহায়তা দেব। আজ আমাদের চারজন শিক্ষার্থী প্রতিনিধি উপদেষ্টাদের সঙ্গে বৈঠকে বসার কথা রয়েছে। সেই অপেক্ষা আমরা করছি। আমরা প্রত্যাশা করছি, যৌক্তিক দাবি মেনে নিয়ে তিতুমীর কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরের রূপরেখা গঠন করা হবে। এ বিষয়ে কোনো ষড়যন্ত্র করা হলে আমরা আবার আন্দোলনে অংশ নেব। তবে তার আগ পর্যন্ত সব শিক্ষার্থী ক্যাম্পাসেই অবস্থান করবে। অপরদিকে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন ঘিরে ক্যাম্পাসের বাইরে সতর্ক অবস্থায় দেখা গেছে পুলিশ সদস্যদের। এ বিষয়ে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) উপপুলিশ কমিশনার (অপারেশনস) এ. এফ. এম তারিক হোসেন খান বলেন, আমরা সতর্ক অবস্থায় আছি। আমরা চাইছি আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকুক। শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসের ভেতরেই যেন শান্তিপূর্ণভাবে অবস্থান করেন।