ঢাকা ০২:৩০ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২০ মে ২০২৫

ফিলিস্তিনে নারী ও শিশু হত্যা মানবাধিকার নীতির পরিপন্থী

  • আপডেট সময় : ০৬:৩১:৪০ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৩ নভেম্বর ২০২৪
  • ৪৮ বার পড়া হয়েছে

নারী ও শিশু ডেস্ক: গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসনের প্রথম ছয় মাসের মধ্যে নিহত হয়েছে ৩৪ হাজার ৫০০ জনের বেশি মানুষ। জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশন বা ওএইচসিএইচআর এ তথ্য জানিয়েছে। তাদের মধ্যে ৮ হাজার ১১৯ জনের মৃত্যুর তথ্য যাচাই করা হয়েছে। এই নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে উল্লেখযোগ্যসংখ্যক নারী ও শিশু রয়েছে। সবচেয়ে কম বয়সে নিহত শিশুর বয়স ছিল মাত্র এক দিন। আর সবচেয়ে বেশি বয়সী নিহত নারীর বয়স ছিল ৯৭ বছর।
ওএইচসিএইচআর ৮ নভেম্বর এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, এ পর্যন্ত গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসনে নিহত হয়েছে ৪৩ হাজার ৫০০ জনের বেশি। তাদের মধ্যে ৭০ শতাংশই শিশু ও নারী।
যুদ্ধে এভাবে অকাতরে নারী এবং শিশু হত্যা আন্তর্জাতিক মানবাধিকার নীতির পরিপন্থী। কিন্তু এর শেষ কোথায়, তা জানে না কেউই। এ বিষয় নিয়ে নিজেদের অবস্থান যতা স্বচ্ছ হওয়া উচিত, বিশ্বনেতাদের মধ্যে ততা দেখা যাচ্ছে না। প্রতিশ্রুতি, ঘোষণা আর আলোচনার মধ্যেই ঘুরপাক খাচ্ছেন তারা।
এদিকে হোয়াইট হাউসে প্রেসিডেন্ট হিসেবে আবার ফিরছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিনি তার নির্বাচনী প্রচারে ইউক্রেনের মতো মধ্যপ্রাচ্যে ‘শান্তি’ ফেরানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। বলেছিলেন, তিনি নির্বাচিত হলে গাজায় ইসরায়েল-হামাস এবং লেবাননে ইসরায়েল-হিজবুল্লাহ যুদ্ধ বন্ধ করবেন। আবার এটাও সত্য, বিগত সময়ে ক্ষমতায় থাকাকালে ট্রাম্প ছিলেন কট্টর ইসরায়েলপন্থী। এমনকি তিনি জেরুজালেমকে ইসরায়েলের রাজধানী হিসেবে স্বীকৃতিও দেন। তেল আবিব থেকে মার্কিন দূতাবাস সরিয়ে জেরুজালেমে নিয়ে যান। এ ছাড়া ট্রাম্পের অতীতের অনেক পদক্ষেপ তাকে বিশ্বের কাছে ইসরায়েলের বন্ধু করে তুলেছিল। সব শেষে সেই ট্রাম্পই যুদ্ধ বন্ধ করার ঘোষণা দিয়ে চালালেন নির্বাচনী প্রচার এবং নির্বাচনে জিতেও গেলেন। এটা একদিকে যেমন সম্ভাবনার, অন্যদিকে কিছতা ভয়েরও। কীভাবে যুদ্ধ বন্ধ করবেন, এর কোনো নির্দেশনা নেই। তাই ফিলিস্তিনের যুদ্ধ আদৌ বন্ধ হবে কি না, তা নিয়েই রয়েছে শঙ্কা।
ফিলিস্তিন রাষ্ট্র গঠনের পাশাপাশি লেবানন ও মধ্যপ্রাচ্যের অন্যান্য দেশে চলমান সংঘাত বন্ধের বিষয়ে আলোচনা করছেন আরব নেতারা। অন্যদিকে ফিলিস্তিন রাষ্ট্র গঠনের বিষয়টিকে অবাস্তব লক্ষ্য হিসেবে মন্তব্য করেছেন ইসরায়েলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী গিডিয়ন সার।
বিশ্বনেতাদের ‘চালবাজির’ এই ডামাডোলে সমাধান আসছে না কোনোভাবেই। উল্টো মৃতের সংখ্যা বাড়ছে। বেঁচে থাকার জন্য নিরাপত্তাসহ সব ধরনের অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছে ফিলিস্তিনের নারীরা। অবিবাহিত নারী, মাতৃকেন্দ্রিক পরিবার, প্রতিবন্ধী ও বয়স্ক নারী—সবাই নিরাপত্তাহীন। তাদের খাদ্য ও পুষ্টিহীনতা এখন চরম পর্যায়ে পৌঁছেছে। নিরাপদ ও পরিচ্ছন্ন ল্যাট্রিন এবং গোসলের সুবিধা তাদের নেই বললে চলে। অতিরিক্ত ভিড় হওয়ার কারণে আশ্রয়কেন্দ্রগুলোয় নারীদের গোপনীয়তার সুযোগই নেই। তাদের যৌন ও প্রজননস্বাস্থ্য, মানসিক-সামাজিক সহায়তাসহ স্বাস্থ্য পরিষেবা শূন্যের কোঠায়।
এ অবস্থায় ফিলিস্তিনিরা তো বটেই, পুরো পৃথিবী তাকিয়ে আছে বিশ্বনেতাদের দিকে। সূত্র: ওএইচসিএইচআর, আল জাজিরা, ইউএন উইমেন।

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

ফিলিস্তিনে নারী ও শিশু হত্যা মানবাধিকার নীতির পরিপন্থী

আপডেট সময় : ০৬:৩১:৪০ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৩ নভেম্বর ২০২৪

নারী ও শিশু ডেস্ক: গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসনের প্রথম ছয় মাসের মধ্যে নিহত হয়েছে ৩৪ হাজার ৫০০ জনের বেশি মানুষ। জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশন বা ওএইচসিএইচআর এ তথ্য জানিয়েছে। তাদের মধ্যে ৮ হাজার ১১৯ জনের মৃত্যুর তথ্য যাচাই করা হয়েছে। এই নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে উল্লেখযোগ্যসংখ্যক নারী ও শিশু রয়েছে। সবচেয়ে কম বয়সে নিহত শিশুর বয়স ছিল মাত্র এক দিন। আর সবচেয়ে বেশি বয়সী নিহত নারীর বয়স ছিল ৯৭ বছর।
ওএইচসিএইচআর ৮ নভেম্বর এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, এ পর্যন্ত গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসনে নিহত হয়েছে ৪৩ হাজার ৫০০ জনের বেশি। তাদের মধ্যে ৭০ শতাংশই শিশু ও নারী।
যুদ্ধে এভাবে অকাতরে নারী এবং শিশু হত্যা আন্তর্জাতিক মানবাধিকার নীতির পরিপন্থী। কিন্তু এর শেষ কোথায়, তা জানে না কেউই। এ বিষয় নিয়ে নিজেদের অবস্থান যতা স্বচ্ছ হওয়া উচিত, বিশ্বনেতাদের মধ্যে ততা দেখা যাচ্ছে না। প্রতিশ্রুতি, ঘোষণা আর আলোচনার মধ্যেই ঘুরপাক খাচ্ছেন তারা।
এদিকে হোয়াইট হাউসে প্রেসিডেন্ট হিসেবে আবার ফিরছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিনি তার নির্বাচনী প্রচারে ইউক্রেনের মতো মধ্যপ্রাচ্যে ‘শান্তি’ ফেরানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। বলেছিলেন, তিনি নির্বাচিত হলে গাজায় ইসরায়েল-হামাস এবং লেবাননে ইসরায়েল-হিজবুল্লাহ যুদ্ধ বন্ধ করবেন। আবার এটাও সত্য, বিগত সময়ে ক্ষমতায় থাকাকালে ট্রাম্প ছিলেন কট্টর ইসরায়েলপন্থী। এমনকি তিনি জেরুজালেমকে ইসরায়েলের রাজধানী হিসেবে স্বীকৃতিও দেন। তেল আবিব থেকে মার্কিন দূতাবাস সরিয়ে জেরুজালেমে নিয়ে যান। এ ছাড়া ট্রাম্পের অতীতের অনেক পদক্ষেপ তাকে বিশ্বের কাছে ইসরায়েলের বন্ধু করে তুলেছিল। সব শেষে সেই ট্রাম্পই যুদ্ধ বন্ধ করার ঘোষণা দিয়ে চালালেন নির্বাচনী প্রচার এবং নির্বাচনে জিতেও গেলেন। এটা একদিকে যেমন সম্ভাবনার, অন্যদিকে কিছতা ভয়েরও। কীভাবে যুদ্ধ বন্ধ করবেন, এর কোনো নির্দেশনা নেই। তাই ফিলিস্তিনের যুদ্ধ আদৌ বন্ধ হবে কি না, তা নিয়েই রয়েছে শঙ্কা।
ফিলিস্তিন রাষ্ট্র গঠনের পাশাপাশি লেবানন ও মধ্যপ্রাচ্যের অন্যান্য দেশে চলমান সংঘাত বন্ধের বিষয়ে আলোচনা করছেন আরব নেতারা। অন্যদিকে ফিলিস্তিন রাষ্ট্র গঠনের বিষয়টিকে অবাস্তব লক্ষ্য হিসেবে মন্তব্য করেছেন ইসরায়েলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী গিডিয়ন সার।
বিশ্বনেতাদের ‘চালবাজির’ এই ডামাডোলে সমাধান আসছে না কোনোভাবেই। উল্টো মৃতের সংখ্যা বাড়ছে। বেঁচে থাকার জন্য নিরাপত্তাসহ সব ধরনের অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছে ফিলিস্তিনের নারীরা। অবিবাহিত নারী, মাতৃকেন্দ্রিক পরিবার, প্রতিবন্ধী ও বয়স্ক নারী—সবাই নিরাপত্তাহীন। তাদের খাদ্য ও পুষ্টিহীনতা এখন চরম পর্যায়ে পৌঁছেছে। নিরাপদ ও পরিচ্ছন্ন ল্যাট্রিন এবং গোসলের সুবিধা তাদের নেই বললে চলে। অতিরিক্ত ভিড় হওয়ার কারণে আশ্রয়কেন্দ্রগুলোয় নারীদের গোপনীয়তার সুযোগই নেই। তাদের যৌন ও প্রজননস্বাস্থ্য, মানসিক-সামাজিক সহায়তাসহ স্বাস্থ্য পরিষেবা শূন্যের কোঠায়।
এ অবস্থায় ফিলিস্তিনিরা তো বটেই, পুরো পৃথিবী তাকিয়ে আছে বিশ্বনেতাদের দিকে। সূত্র: ওএইচসিএইচআর, আল জাজিরা, ইউএন উইমেন।