ঢাকা ১০:০২ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২১ অগাস্ট ২০২৫

এক ব্যাংক থেকে টাকা তুলে আরেকটিতে রাখা বন্ধের আহ্বান

  • আপডেট সময় : ০৮:৫৮:০০ অপরাহ্ন, বুধবার, ৬ নভেম্বর ২০২৪
  • ৯২ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক : এক ব্যাংক থেকে টাকা তুলে গ্রাহকদের আরেক ব্যাংকে রাখার প্রবণতা বন্ধ করার আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। আমানতকারীদের মধ্যে আস্থার সংকটে সবাই একসঙ্গে টাকা তুলতে চেষ্টা করার কারণেই কিছু ব্যাংকে তারল্য সংকট তৈরি হওয়ার কথা বলেছেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক হুসনে আরা শিখা।
বুধবার (৬ নভেম্বর) বাংলাদেশ ব্যাংকের সম্মেলন কেন্দ্রে সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, “সব গ্রাহক একসঙ্গে এখন ব্যাংকে যাচ্ছেন, তাই টাকা পাচ্ছেন না। আগের চাইতে এখন ব্যাংকে অনেক বেশি সংখ্যক গ্রাহক টাকা উত্তোলন করতে যান। বাংলাদেশ ব্যাংক আস্থার জায়গা তৈরি করতে চায়। আমানতকারীদের আস্থা ধরে রাখার বিষয়ে ব্যাংকগুলোর সঙ্গে কেন্দ্রীয় ব্যাংকেরও দায়িত্ব রয়েছে।“
ছাত্র জনতার আন্দোলনে সরকার পতনের পর থেকে বিভিন্ন ব্যাংকে গিয়ে প্রয়োজন অনুযায়ী টাকা পাচ্ছেন না গ্রাহকরা। বিশেষ করে এস আলমের মালিকানাধীন ও পর্ষদে তাদের নিয়ন্ত্রণ থাকা ব্যাংকগুলোতে এ সংকট দেখা দেয়।
অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর নতুন গভর্নর হিসেবে আহসান এইচ মনসুর দায়িত্বে আসার পর কেন্দ্রীয় ব্যাংক গত তিন মাসে চেষ্টা করেও পরিস্থিতির উন্নতি করতে পারেনি। দুর্বল ব্যাংকগুলোকে তারল্য সহায়তা দিয়েও ব্যাংকগুলো গ্রাহকদের চাহিদা পূরণ করতে পারছে না। ব্যাংকাররা বলছেন, গ্রাহকরা নতুন করে টাকা রাখার বদলে আমানত তুলেই নিতে চাচ্ছেন, যে কারণে সংকট বাড়ছে।
নিয়মিত সংবাদ সম্মেলনে এসে বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র এ বিষয়ে কথা বলেন। বলেন, এ মুহূর্তে ব্যাংকগুলোতে যে আমানত রয়েছে সেটা নিয়ে কোনো রকম আতংকিত হওয়ার কারণ নেই। সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, মূলত শরিয়াভিত্তিক ইসলামী ধারার ব্যাংকগুলো থেকে গ্রাহকরা নগদ টাকা তুলতে পারছেন না। “গ্রাহকের যে টাকা ব্যাংকে রয়েছে সেটা নিয়ে আতংকিত না হওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি। কারণ কোনো ব্যাংকে গ্রাহকের টাকা থাকলে সেই টাকা গ্রাহকদের সময়মত পরিশোধ করার দায়িত্ব বাংলাদেশ ব্যাংকের ওপরও থাকে, যদি ব্যাংকটি বিপদে পড়ে।“
হুসনে আরা শিখা বলেন, আস্থার অভাবে ও ভুল বার্তার কারণে গ্রাহকরা আগেই বেশি সচেতন হয়ে ইসলামী ধারার ব্যাংকগুলো থেকে টাকা উত্তোলন করেছেন। এতে ব্যাংকের সব গ্রাহক একসঙ্গে টাকা উত্তোলন করেছেন। তাতে এসব ব্যাংকে এক ধরনের তারল্য সংকট তৈরি হয়েছে। “সেটার জন্য আমরাই দায়ী। কারণ তাদের কাছে অনেক ভুল বার্তা দেওয়া হয়েছে।“
ইসলামী ধারার ব্যাংকগুলোতে নগদ টাকার সহায়তা দেওয়ার কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, গ্রাহকরা এখন সবাই এক সঙ্গে টাকা তুলতে এসব ব্যাংকে ভিড় করছেন। এসব ব্যাংককে বাঁচাতে হলে এক সঙ্গে আমানত তোলা যাবে না। বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে তারল্য সহায়তা অব্যাহত থাকলেও আমানত তোলার সংখ্যা কমানো না গেলে এ সমস্যা থেকে বের হয়ে আসা সম্ভব নয় বলে মন্তব্য করেন তিনি। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মুখপাত্র বলেন, এটা হতে পারে দুর্বল ব্যাংকগুলো যে পরিমাণ তারল্য সহায়তা আশা করছে বাংলাদেশ ব্যাংক তা দিতে পারছে না। ব্যাংকগুলোর চেয়ারম্যানরা এ প্রক্রিয়া কীভাবে আরও বেশি ফলপ্রসূ হতে পারে তা নিয়ে গভর্নরের সঙ্গে আলোচনা করেছেন।

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

এক ব্যাংক থেকে টাকা তুলে আরেকটিতে রাখা বন্ধের আহ্বান

আপডেট সময় : ০৮:৫৮:০০ অপরাহ্ন, বুধবার, ৬ নভেম্বর ২০২৪

নিজস্ব প্রতিবেদক : এক ব্যাংক থেকে টাকা তুলে গ্রাহকদের আরেক ব্যাংকে রাখার প্রবণতা বন্ধ করার আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। আমানতকারীদের মধ্যে আস্থার সংকটে সবাই একসঙ্গে টাকা তুলতে চেষ্টা করার কারণেই কিছু ব্যাংকে তারল্য সংকট তৈরি হওয়ার কথা বলেছেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক হুসনে আরা শিখা।
বুধবার (৬ নভেম্বর) বাংলাদেশ ব্যাংকের সম্মেলন কেন্দ্রে সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, “সব গ্রাহক একসঙ্গে এখন ব্যাংকে যাচ্ছেন, তাই টাকা পাচ্ছেন না। আগের চাইতে এখন ব্যাংকে অনেক বেশি সংখ্যক গ্রাহক টাকা উত্তোলন করতে যান। বাংলাদেশ ব্যাংক আস্থার জায়গা তৈরি করতে চায়। আমানতকারীদের আস্থা ধরে রাখার বিষয়ে ব্যাংকগুলোর সঙ্গে কেন্দ্রীয় ব্যাংকেরও দায়িত্ব রয়েছে।“
ছাত্র জনতার আন্দোলনে সরকার পতনের পর থেকে বিভিন্ন ব্যাংকে গিয়ে প্রয়োজন অনুযায়ী টাকা পাচ্ছেন না গ্রাহকরা। বিশেষ করে এস আলমের মালিকানাধীন ও পর্ষদে তাদের নিয়ন্ত্রণ থাকা ব্যাংকগুলোতে এ সংকট দেখা দেয়।
অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর নতুন গভর্নর হিসেবে আহসান এইচ মনসুর দায়িত্বে আসার পর কেন্দ্রীয় ব্যাংক গত তিন মাসে চেষ্টা করেও পরিস্থিতির উন্নতি করতে পারেনি। দুর্বল ব্যাংকগুলোকে তারল্য সহায়তা দিয়েও ব্যাংকগুলো গ্রাহকদের চাহিদা পূরণ করতে পারছে না। ব্যাংকাররা বলছেন, গ্রাহকরা নতুন করে টাকা রাখার বদলে আমানত তুলেই নিতে চাচ্ছেন, যে কারণে সংকট বাড়ছে।
নিয়মিত সংবাদ সম্মেলনে এসে বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র এ বিষয়ে কথা বলেন। বলেন, এ মুহূর্তে ব্যাংকগুলোতে যে আমানত রয়েছে সেটা নিয়ে কোনো রকম আতংকিত হওয়ার কারণ নেই। সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, মূলত শরিয়াভিত্তিক ইসলামী ধারার ব্যাংকগুলো থেকে গ্রাহকরা নগদ টাকা তুলতে পারছেন না। “গ্রাহকের যে টাকা ব্যাংকে রয়েছে সেটা নিয়ে আতংকিত না হওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি। কারণ কোনো ব্যাংকে গ্রাহকের টাকা থাকলে সেই টাকা গ্রাহকদের সময়মত পরিশোধ করার দায়িত্ব বাংলাদেশ ব্যাংকের ওপরও থাকে, যদি ব্যাংকটি বিপদে পড়ে।“
হুসনে আরা শিখা বলেন, আস্থার অভাবে ও ভুল বার্তার কারণে গ্রাহকরা আগেই বেশি সচেতন হয়ে ইসলামী ধারার ব্যাংকগুলো থেকে টাকা উত্তোলন করেছেন। এতে ব্যাংকের সব গ্রাহক একসঙ্গে টাকা উত্তোলন করেছেন। তাতে এসব ব্যাংকে এক ধরনের তারল্য সংকট তৈরি হয়েছে। “সেটার জন্য আমরাই দায়ী। কারণ তাদের কাছে অনেক ভুল বার্তা দেওয়া হয়েছে।“
ইসলামী ধারার ব্যাংকগুলোতে নগদ টাকার সহায়তা দেওয়ার কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, গ্রাহকরা এখন সবাই এক সঙ্গে টাকা তুলতে এসব ব্যাংকে ভিড় করছেন। এসব ব্যাংককে বাঁচাতে হলে এক সঙ্গে আমানত তোলা যাবে না। বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে তারল্য সহায়তা অব্যাহত থাকলেও আমানত তোলার সংখ্যা কমানো না গেলে এ সমস্যা থেকে বের হয়ে আসা সম্ভব নয় বলে মন্তব্য করেন তিনি। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মুখপাত্র বলেন, এটা হতে পারে দুর্বল ব্যাংকগুলো যে পরিমাণ তারল্য সহায়তা আশা করছে বাংলাদেশ ব্যাংক তা দিতে পারছে না। ব্যাংকগুলোর চেয়ারম্যানরা এ প্রক্রিয়া কীভাবে আরও বেশি ফলপ্রসূ হতে পারে তা নিয়ে গভর্নরের সঙ্গে আলোচনা করেছেন।