ঢাকা ০৭:৪৮ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২২ অগাস্ট ২০২৫

প্রথমবারের মতো ‘ব্ল্যাক হোল ত্রয়ীর’ দেখা মিলল

  • আপডেট সময় : ০৬:৫৯:০৮ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৫ অক্টোবর ২০২৪
  • ৭৭ বার পড়া হয়েছে

প্রত্যাশা ডেস্ক: সম্প্রতি এক বিশেষ ‘ব্ল্যাক হোল ত্রয়ী’ খুঁজে পাওয়ার দাবি করেছেন বিজ্ঞানীরা, যা এ ধরনের প্রথম আবিষ্কার। এর আগে খোঁজ পাওয়া বেশিরভাগ ব্ল্যাক হোল কোনো জোড়ার অংশ হিসেবে বিবেচিত হত। একটি ব্ল্যাক হোল অন্য কোনো বস্তু যেমন আরেকটি ব্ল্যাক হোল, তারা বা অনুরূপ কিছুর কাছাকাছি চলে এলে এ ধরনের জোড়া গঠিত হয়। আর এগুলোকে ধরে রাখে ওই ব্ল্যাক হোলের শক্তিশালী মাধ্যাকর্ষণ বল। তবে, এখন গবেষকরা প্রথমবারের মতো ‘ব্ল্যাক হোল ত্রয়ীর’ দেখা পেয়েছেন বলে প্রতিবেদনে লিখেছে ব্রিটিশ দৈনিক ইন্ডিপেন্ডেন্ট। ব্ল্যাক হোলটি এর কাছাকাছি থাকা এক ছোট তারাকে খেয়ে ফেলছে। তবে, দূরের আরেকটি তারাও একে আবর্তন করছে। এর মধ্যে দূরের তারাটি ওই ব্ল্যাক হোলের চারপাশ প্রদক্ষিণ করতে সময় নেয় ৭০ হাজার বছর। তবে, কোনো ব্ল্যাক হোল কীভাবে এমন দূরত্বে থাকা কোনো বস্তুকে আঁকড়ে ধরেছে ও এটি কোথা থেকে এসেছে, সে বিষয়ে নিশ্চিত নন বিজ্ঞানীরা। গবেষণা দলটির ধারণা, ব্ল্যাক হোলটি মৃত কোনো নক্ষত্রের (সুপারনোভা) বড় এক বিস্ফোরণের পর জন্ম নিয়েছে, যেখানে ‘ভি৪০৪ সিগনি’ নামের তারাটি কিছুটা স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় গঠিত হয়েছিল প্রায় চারশ কোটি বছর আগে। এমআইটি’র পদার্থবিদ্যা বিভাগের ‘পাপালার্দো ফেলো’ কেভিন বার্জ বলেছেন, “আমরা মনে করি, ব্ল্যাক হোল বিভিন্ন তারার বিস্ফোরণ থেকে গঠিত হয়। তবে, এ অনুসন্ধান সে ধারণাকে প্রশ্নের মুখে ফেলছে।” “ব্ল্যাক হোলের বিবর্তন বোঝার ক্ষেত্রে এ সিস্টেমটি খুবই রোমাঞ্চকর। আর মহাবিশ্বে এমন আরও ট্রিপলেট বা ত্রয়ী’র অস্তিত্ব আছে কি না, সে বিষয়টি নিয়েও প্রশ্ন উঠছে।” জোতির্বিদরা বলেছেন, ভি৪০৪ সিগনি সিস্টেমটিতে একটি কেন্দ্রীয় ব্ল্যাক হোল আছে, যা আরেকটি ছোট তারাকে গ্রাস করছে। তারাটি ওই ব্ল্যাক হোলের খুবই কাছাকাছি অবস্থিত, যা প্রতি সাড়ে ছয়দিনে একে প্রদক্ষিণ করে। বার্জ আরও বলেন, “ধরুন আপনি এমন এক ঘুড়ির সুতায় টান দিচ্ছেন, যেখানে ধারাল তারের পরিবর্তে মাকড়সার জাল দেওয়া।” “আপনি যদি এটি খুবই দৃঢ়ভাবে টান দেন, তবে তা ভেঙে যাবে। আর আপনি ঘুড়িটি হারিয়ে ফেলবেন।” “মাধ্যাকর্ষণও এমন এক তার, যা খুবই দুর্বল। আপনি যদি এতে নাটকীয় কিছু ঘটাতে চান, তবে আপনি বাইরের তারাটিও হারাবেন।” ভি৪০৪ সিগনি’র খোঁজ মিলেছিল ১৯৯২ সালে, যা ব্ল্যাক হোল হিসেবে নিশ্চিত হওয়া প্রথম বস্তুগুলোর একটি। বিষয়টি নিয়ে ভালোই গবেষণা হয়েছে, যার ফলে প্রকাশ পেয়েছে এক হাজার তিনশ’রও বেশি বৈজ্ঞানিক গবেষণাপত্র। তবে, বার্জ ও তার সহকর্মীরা নতুন ব্ল্যাক হোল খুঁজতে গিয়ে সিস্টেমটির এমন এক ছবি দেখতে পান, যেখানে এক আলোচ্ছটা আরেক আলোচ্ছটার কাছাকাছি অবস্থান করছে। এতদিন পর্যন্ত বিজ্ঞানীরা দ্বিতীয় আলচ্ছটা নিয়ে ঘনিষ্ঠভাবে তদন্ত করেননি, যাকে এখন দূরের একটি দ্বিতীয় তারা হিসেবে দাবি কর হচ্ছে। বার্জ বলেছেন, “এটা যে কাকতালীয় বা কোনো দুর্ঘটনা নয়, তা প্রায় নিশ্চিত।” “আমরা দুটি তারা দেখছি, যেগুলো একে অপরকে অনুসরণ করছে কারণ এই দূর্বল মাধ্যাকর্ষণের তার এদের যোগসূত্র হিসেবে কাজ করে।” “তাই এটা নিশ্চতভাবেই একটি ট্রিপলেট সিস্টেম।”

আজকের প্রত্যাশা/কেএমএএ

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

প্রথমবারের মতো ‘ব্ল্যাক হোল ত্রয়ীর’ দেখা মিলল

আপডেট সময় : ০৬:৫৯:০৮ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৫ অক্টোবর ২০২৪

প্রত্যাশা ডেস্ক: সম্প্রতি এক বিশেষ ‘ব্ল্যাক হোল ত্রয়ী’ খুঁজে পাওয়ার দাবি করেছেন বিজ্ঞানীরা, যা এ ধরনের প্রথম আবিষ্কার। এর আগে খোঁজ পাওয়া বেশিরভাগ ব্ল্যাক হোল কোনো জোড়ার অংশ হিসেবে বিবেচিত হত। একটি ব্ল্যাক হোল অন্য কোনো বস্তু যেমন আরেকটি ব্ল্যাক হোল, তারা বা অনুরূপ কিছুর কাছাকাছি চলে এলে এ ধরনের জোড়া গঠিত হয়। আর এগুলোকে ধরে রাখে ওই ব্ল্যাক হোলের শক্তিশালী মাধ্যাকর্ষণ বল। তবে, এখন গবেষকরা প্রথমবারের মতো ‘ব্ল্যাক হোল ত্রয়ীর’ দেখা পেয়েছেন বলে প্রতিবেদনে লিখেছে ব্রিটিশ দৈনিক ইন্ডিপেন্ডেন্ট। ব্ল্যাক হোলটি এর কাছাকাছি থাকা এক ছোট তারাকে খেয়ে ফেলছে। তবে, দূরের আরেকটি তারাও একে আবর্তন করছে। এর মধ্যে দূরের তারাটি ওই ব্ল্যাক হোলের চারপাশ প্রদক্ষিণ করতে সময় নেয় ৭০ হাজার বছর। তবে, কোনো ব্ল্যাক হোল কীভাবে এমন দূরত্বে থাকা কোনো বস্তুকে আঁকড়ে ধরেছে ও এটি কোথা থেকে এসেছে, সে বিষয়ে নিশ্চিত নন বিজ্ঞানীরা। গবেষণা দলটির ধারণা, ব্ল্যাক হোলটি মৃত কোনো নক্ষত্রের (সুপারনোভা) বড় এক বিস্ফোরণের পর জন্ম নিয়েছে, যেখানে ‘ভি৪০৪ সিগনি’ নামের তারাটি কিছুটা স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় গঠিত হয়েছিল প্রায় চারশ কোটি বছর আগে। এমআইটি’র পদার্থবিদ্যা বিভাগের ‘পাপালার্দো ফেলো’ কেভিন বার্জ বলেছেন, “আমরা মনে করি, ব্ল্যাক হোল বিভিন্ন তারার বিস্ফোরণ থেকে গঠিত হয়। তবে, এ অনুসন্ধান সে ধারণাকে প্রশ্নের মুখে ফেলছে।” “ব্ল্যাক হোলের বিবর্তন বোঝার ক্ষেত্রে এ সিস্টেমটি খুবই রোমাঞ্চকর। আর মহাবিশ্বে এমন আরও ট্রিপলেট বা ত্রয়ী’র অস্তিত্ব আছে কি না, সে বিষয়টি নিয়েও প্রশ্ন উঠছে।” জোতির্বিদরা বলেছেন, ভি৪০৪ সিগনি সিস্টেমটিতে একটি কেন্দ্রীয় ব্ল্যাক হোল আছে, যা আরেকটি ছোট তারাকে গ্রাস করছে। তারাটি ওই ব্ল্যাক হোলের খুবই কাছাকাছি অবস্থিত, যা প্রতি সাড়ে ছয়দিনে একে প্রদক্ষিণ করে। বার্জ আরও বলেন, “ধরুন আপনি এমন এক ঘুড়ির সুতায় টান দিচ্ছেন, যেখানে ধারাল তারের পরিবর্তে মাকড়সার জাল দেওয়া।” “আপনি যদি এটি খুবই দৃঢ়ভাবে টান দেন, তবে তা ভেঙে যাবে। আর আপনি ঘুড়িটি হারিয়ে ফেলবেন।” “মাধ্যাকর্ষণও এমন এক তার, যা খুবই দুর্বল। আপনি যদি এতে নাটকীয় কিছু ঘটাতে চান, তবে আপনি বাইরের তারাটিও হারাবেন।” ভি৪০৪ সিগনি’র খোঁজ মিলেছিল ১৯৯২ সালে, যা ব্ল্যাক হোল হিসেবে নিশ্চিত হওয়া প্রথম বস্তুগুলোর একটি। বিষয়টি নিয়ে ভালোই গবেষণা হয়েছে, যার ফলে প্রকাশ পেয়েছে এক হাজার তিনশ’রও বেশি বৈজ্ঞানিক গবেষণাপত্র। তবে, বার্জ ও তার সহকর্মীরা নতুন ব্ল্যাক হোল খুঁজতে গিয়ে সিস্টেমটির এমন এক ছবি দেখতে পান, যেখানে এক আলোচ্ছটা আরেক আলোচ্ছটার কাছাকাছি অবস্থান করছে। এতদিন পর্যন্ত বিজ্ঞানীরা দ্বিতীয় আলচ্ছটা নিয়ে ঘনিষ্ঠভাবে তদন্ত করেননি, যাকে এখন দূরের একটি দ্বিতীয় তারা হিসেবে দাবি কর হচ্ছে। বার্জ বলেছেন, “এটা যে কাকতালীয় বা কোনো দুর্ঘটনা নয়, তা প্রায় নিশ্চিত।” “আমরা দুটি তারা দেখছি, যেগুলো একে অপরকে অনুসরণ করছে কারণ এই দূর্বল মাধ্যাকর্ষণের তার এদের যোগসূত্র হিসেবে কাজ করে।” “তাই এটা নিশ্চতভাবেই একটি ট্রিপলেট সিস্টেম।”

আজকের প্রত্যাশা/কেএমএএ