ঢাকা ০৩:৪৩ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২২ অগাস্ট ২০২৫

হতদরিদ্র মানুষ চলতি মাস থেকে টানা ৩ মাস ১০ টাকা কেজিতে চাল পাবে

  • আপডেট সময় : ০১:১৫:১৮ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২ সেপ্টেম্বর ২০২১
  • ১২৫ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক : দেশজুড়ে চলতি মাস থেকেই সরকারের খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির আওতায় হতদরিদ্ররা ১০ টাকা কেজিতে চাল পাবে। আর এ কর্মসূচি টানা আগামী ৩ মাস চলবে। উপকারভোগীরা প্রতি মাসে ৩০ কেজি চাল পাবে। পাশাপাশি খাদ্যবান্ধব কর্মসূচিতে নতুন করে যুক্ত হচ্ছে আরো ৫০ হাজার পরিবার। দেশের মোট ৫০ লাখ পরিবার ওই কর্মসূচির আওতায় সুবিধা ভোগ করবে। পাশাপাশি চালু রয়েছে ওএমএস কর্মসূচি। দেশের সকল সিটি কর্পোরেশন ও পৌর এলাকায় ওই কর্মসূচি চলছে। ওই কর্মসূচির আওতায় সারাদেশে ৭৩৭ ডিলার প্রতিদিন নির্ধারিত পরিমাণের দ্বিগুণ চাল ও আটা বিক্রি করছে। তাতে প্রতি কেজি চাল ৩০ টাকা এবং প্রতি কেজি আটা ১৮ টাকা দরে বিক্রি করা হচ্ছে। সাধারণ মানুষ প্রতিদিন লাইন দিয়ে ওএমএস কর্মসূচির আওতায় চাল ও আটা কিনছে। খাদ্য মন্ত্রণালয় সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়।
সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, বিগত ২০১৬ সালের সেপ্টেম্বরে কুড়িগ্রাম জেলার চিলমারী উপজেলায় প্রধানমন্ত্রী দেশে প্রথম খাদ্যবান্ধব কর্মসূচি উদ্বোধন করেন। মূলত পল্লী অঞ্চলের কর্মাভাবকালীন মার্চ, এপ্রিল, সেপ্টেম্বর, অক্টোবর ও নবেম্বর ওই ৫ মাস খাদ্যবান্ধব কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। যদিও ১০ টাকা কেজি দরে চাল বিতরণ শুরুর পর তালিকায় সচ্ছল ব্যক্তিদের নাম থাকা, বাইরে বেশি দামে চাল বিক্রি করা, ওজনে কম দেয়াসহ নানা অনিয়মের অভিযোগ ওঠে। ওই প্রেক্ষিতে ভুয়া সুবিধাভোগীদের কার্ড বাতিল, ডিলারশিপ বাতিল, ডিলারদের বিরুদ্ধে ফৌজদারি ও বিভাগীয় মামলা, জরিমানাসহ বিভিন্ন ধরনের শাস্তিমূলক ব্যবস্থাও নেয়া হয়। আর বিগত ২০১৭ সালের শুরুর দিকে খাদ্য বিভাগ খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির উপকারভোগীর তালিকা ওয়েবসাইটে প্রকাশ করে। ওই কর্মসূচির আওতায় সাধারণ চাল ছাড়াও বিভিন্ন স্থানে পুষ্টি চালও বিতরণ করেছে সরকার।
সূত্র জানায়, খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির আওতায় সারাদেশে হতদরিদ্র পরিবারগুলোকে প্রতি মাসে ১০ টাকা কেজি দরে ৩০ কেজি করে চাল দেয়া হয়। আর বছরের ৫ মাস এ সহায়তা দেয়া হয়। তবে এতোদিন এ কর্মসূচিতে যে সংখ্যক উপকারভোগী থাকার কথা ছিল, তার চেয়ে সাড়ে ৪৬ হাজারের মতো কম ছিল। সেজন্য নতুন করে অতিদরিদ্র উপকারভোগীদের অন্তর্ভুক্ত করে সেপ্টেম্বর থেকেই চাল বিতরণের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। তার আগে খাদ্য অধিদফতরের পাঠানো উপকারভোগীর তালিকা অনুসারে সারাদেশে ৪৯২টি উপজেলার তথ্য যাচাই করে দেখা যায়, ৫০ লাখ উপকারভোগীর তালিকায় প্রায় ৪৬ হাজার ৫০০ অতিদরিদ্র ব্যক্তিকে তালিকাভুক্ত করা যায়নি। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো থেকে দেশের দারিদ্র্য মানচিত্র ২০১৬ (গুরুত্বপূর্ণ ফলাফল) ২০২০ সালের নবেম্বরে প্রকাশিত হয়। ওই প্রকাশনা অনুসারে ২২৪টি উপজেলায় যে পরিমাণ উপকারভোগী থাকার দরকার তার চেয়ে কম রয়েছে। উপজেলা অনুযায়ী খাদ্যবান্ধব কর্মসূচিতে নতুন করে যে সংখ্যক উপকারভোগী অন্তর্ভুক্ত করা যাবে ওই তালিকা করা হয়েছে এবং জরুরি ভিত্তিতে যথাযথভাবে নীতিমালা অনুসরণ করে সেপ্টেম্বরে চালু হতে যাওয়া খাদ্যবান্ধব কর্মসূচিতে ২২৪টি উপজেলায় ৪৬ হাজার ৬১৫ নতুন উপকারভোগীকে অন্তর্ভুক্ত করে খাদ্যশস্য বিতরণের তালিকা মন্ত্রণালয়ে পাঠানোর নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
সূত্র আরো জানায়, বর্তমানে বাজার চালের দর কমতে শুরু করেছে। বেসরকারি পর্যায়েও চাল আমদানির কার্যক্রম শুরু হয়েছে। তাছাড়া সরকারের খাদ্য মজুদ পরিস্থিতিও সন্তোষজনক। আমদানির চাল আসলে দাম আরো কমে আসবে। বর্তমানে সরকারের মজুদের পরিমাণ প্রায় ১৭ লাখ মেট্রিক টন। যা সরকারকে স্বস্তিতে রেখেছে।
এদিকে এ প্রসঙ্গে খাদ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক (ডিজি) শেখ মুজিবর রহমান জানান, খাদ্যবান্ধব কর্মসূচিতে যে সংখ্যক উপকারভোগী থাকার কথা, তার চেয়ে সাড়ে ৪৬ হাজারের মতো কম ছিল। সে বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের কাছে নির্দেশনাও পাঠানো হয়েছে। মন্ত্রণালয় থেকে উপজেলাভিত্তিক সংখ্যা দেয়া হয়েছে। কোন উপজেলা থেকে কতজনকে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে তা দারিদ্র্য মানচিত্র থেকে তালিকা দিয়েছে। সেপ্টেম্বর, অক্টোবর ও নবেম্বর মাসে দেশজুড়ে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচি চলবে। পাশাপাশি আগের যে তালিকা ছিল সেটিও যাচাই করতে বলা হয়েছে। কারণ যারা মারা গেছে তাদের বাদ দিয়ে যেন নতুন নাম অন্তর্ভুক্ত করা হয়। তাছাড়া অনেকে স্থানও পরিবর্তন করে। সে বিষয়গুলোও বিচেনায় নেয়ার জন্য মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
অন্যদিকে এ ব্যাপারে খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার জানান, ১০ টাকা কেজি দরে চাল খাওয়ানো শেখ হাসিনা সরকারের নির্বাচনী অঙ্গীকার। প্রতি বছর এই কর্মসূচী চলে আসছে। আগামীতেও এই কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে। সারাদেশে ৫০ লাখ হতদরিদ্র পরিবার বছরে মোট ৫ মাস ১০ টাকা কেজি দরে প্রতি মাসে ৩০ কেজি করে চাল পাবে। সেপ্টেম্বর থেকে নবেম্বর পর্যন্ত টানা ৩ মাস এই কর্মসূচি চলবে।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

ভারতের কোচ গম্ভীরের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ সাবেক ওপেনারের

হতদরিদ্র মানুষ চলতি মাস থেকে টানা ৩ মাস ১০ টাকা কেজিতে চাল পাবে

আপডেট সময় : ০১:১৫:১৮ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২ সেপ্টেম্বর ২০২১

নিজস্ব প্রতিবেদক : দেশজুড়ে চলতি মাস থেকেই সরকারের খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির আওতায় হতদরিদ্ররা ১০ টাকা কেজিতে চাল পাবে। আর এ কর্মসূচি টানা আগামী ৩ মাস চলবে। উপকারভোগীরা প্রতি মাসে ৩০ কেজি চাল পাবে। পাশাপাশি খাদ্যবান্ধব কর্মসূচিতে নতুন করে যুক্ত হচ্ছে আরো ৫০ হাজার পরিবার। দেশের মোট ৫০ লাখ পরিবার ওই কর্মসূচির আওতায় সুবিধা ভোগ করবে। পাশাপাশি চালু রয়েছে ওএমএস কর্মসূচি। দেশের সকল সিটি কর্পোরেশন ও পৌর এলাকায় ওই কর্মসূচি চলছে। ওই কর্মসূচির আওতায় সারাদেশে ৭৩৭ ডিলার প্রতিদিন নির্ধারিত পরিমাণের দ্বিগুণ চাল ও আটা বিক্রি করছে। তাতে প্রতি কেজি চাল ৩০ টাকা এবং প্রতি কেজি আটা ১৮ টাকা দরে বিক্রি করা হচ্ছে। সাধারণ মানুষ প্রতিদিন লাইন দিয়ে ওএমএস কর্মসূচির আওতায় চাল ও আটা কিনছে। খাদ্য মন্ত্রণালয় সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়।
সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, বিগত ২০১৬ সালের সেপ্টেম্বরে কুড়িগ্রাম জেলার চিলমারী উপজেলায় প্রধানমন্ত্রী দেশে প্রথম খাদ্যবান্ধব কর্মসূচি উদ্বোধন করেন। মূলত পল্লী অঞ্চলের কর্মাভাবকালীন মার্চ, এপ্রিল, সেপ্টেম্বর, অক্টোবর ও নবেম্বর ওই ৫ মাস খাদ্যবান্ধব কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। যদিও ১০ টাকা কেজি দরে চাল বিতরণ শুরুর পর তালিকায় সচ্ছল ব্যক্তিদের নাম থাকা, বাইরে বেশি দামে চাল বিক্রি করা, ওজনে কম দেয়াসহ নানা অনিয়মের অভিযোগ ওঠে। ওই প্রেক্ষিতে ভুয়া সুবিধাভোগীদের কার্ড বাতিল, ডিলারশিপ বাতিল, ডিলারদের বিরুদ্ধে ফৌজদারি ও বিভাগীয় মামলা, জরিমানাসহ বিভিন্ন ধরনের শাস্তিমূলক ব্যবস্থাও নেয়া হয়। আর বিগত ২০১৭ সালের শুরুর দিকে খাদ্য বিভাগ খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির উপকারভোগীর তালিকা ওয়েবসাইটে প্রকাশ করে। ওই কর্মসূচির আওতায় সাধারণ চাল ছাড়াও বিভিন্ন স্থানে পুষ্টি চালও বিতরণ করেছে সরকার।
সূত্র জানায়, খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির আওতায় সারাদেশে হতদরিদ্র পরিবারগুলোকে প্রতি মাসে ১০ টাকা কেজি দরে ৩০ কেজি করে চাল দেয়া হয়। আর বছরের ৫ মাস এ সহায়তা দেয়া হয়। তবে এতোদিন এ কর্মসূচিতে যে সংখ্যক উপকারভোগী থাকার কথা ছিল, তার চেয়ে সাড়ে ৪৬ হাজারের মতো কম ছিল। সেজন্য নতুন করে অতিদরিদ্র উপকারভোগীদের অন্তর্ভুক্ত করে সেপ্টেম্বর থেকেই চাল বিতরণের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। তার আগে খাদ্য অধিদফতরের পাঠানো উপকারভোগীর তালিকা অনুসারে সারাদেশে ৪৯২টি উপজেলার তথ্য যাচাই করে দেখা যায়, ৫০ লাখ উপকারভোগীর তালিকায় প্রায় ৪৬ হাজার ৫০০ অতিদরিদ্র ব্যক্তিকে তালিকাভুক্ত করা যায়নি। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো থেকে দেশের দারিদ্র্য মানচিত্র ২০১৬ (গুরুত্বপূর্ণ ফলাফল) ২০২০ সালের নবেম্বরে প্রকাশিত হয়। ওই প্রকাশনা অনুসারে ২২৪টি উপজেলায় যে পরিমাণ উপকারভোগী থাকার দরকার তার চেয়ে কম রয়েছে। উপজেলা অনুযায়ী খাদ্যবান্ধব কর্মসূচিতে নতুন করে যে সংখ্যক উপকারভোগী অন্তর্ভুক্ত করা যাবে ওই তালিকা করা হয়েছে এবং জরুরি ভিত্তিতে যথাযথভাবে নীতিমালা অনুসরণ করে সেপ্টেম্বরে চালু হতে যাওয়া খাদ্যবান্ধব কর্মসূচিতে ২২৪টি উপজেলায় ৪৬ হাজার ৬১৫ নতুন উপকারভোগীকে অন্তর্ভুক্ত করে খাদ্যশস্য বিতরণের তালিকা মন্ত্রণালয়ে পাঠানোর নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
সূত্র আরো জানায়, বর্তমানে বাজার চালের দর কমতে শুরু করেছে। বেসরকারি পর্যায়েও চাল আমদানির কার্যক্রম শুরু হয়েছে। তাছাড়া সরকারের খাদ্য মজুদ পরিস্থিতিও সন্তোষজনক। আমদানির চাল আসলে দাম আরো কমে আসবে। বর্তমানে সরকারের মজুদের পরিমাণ প্রায় ১৭ লাখ মেট্রিক টন। যা সরকারকে স্বস্তিতে রেখেছে।
এদিকে এ প্রসঙ্গে খাদ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক (ডিজি) শেখ মুজিবর রহমান জানান, খাদ্যবান্ধব কর্মসূচিতে যে সংখ্যক উপকারভোগী থাকার কথা, তার চেয়ে সাড়ে ৪৬ হাজারের মতো কম ছিল। সে বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের কাছে নির্দেশনাও পাঠানো হয়েছে। মন্ত্রণালয় থেকে উপজেলাভিত্তিক সংখ্যা দেয়া হয়েছে। কোন উপজেলা থেকে কতজনকে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে তা দারিদ্র্য মানচিত্র থেকে তালিকা দিয়েছে। সেপ্টেম্বর, অক্টোবর ও নবেম্বর মাসে দেশজুড়ে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচি চলবে। পাশাপাশি আগের যে তালিকা ছিল সেটিও যাচাই করতে বলা হয়েছে। কারণ যারা মারা গেছে তাদের বাদ দিয়ে যেন নতুন নাম অন্তর্ভুক্ত করা হয়। তাছাড়া অনেকে স্থানও পরিবর্তন করে। সে বিষয়গুলোও বিচেনায় নেয়ার জন্য মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
অন্যদিকে এ ব্যাপারে খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার জানান, ১০ টাকা কেজি দরে চাল খাওয়ানো শেখ হাসিনা সরকারের নির্বাচনী অঙ্গীকার। প্রতি বছর এই কর্মসূচী চলে আসছে। আগামীতেও এই কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে। সারাদেশে ৫০ লাখ হতদরিদ্র পরিবার বছরে মোট ৫ মাস ১০ টাকা কেজি দরে প্রতি মাসে ৩০ কেজি করে চাল পাবে। সেপ্টেম্বর থেকে নবেম্বর পর্যন্ত টানা ৩ মাস এই কর্মসূচি চলবে।