ঢাকা ০১:৪৬ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৭ জুন ২০২৫

আইপি টিভি খবর প্রচারের অভাবে দর্শক হারাচ্ছে

  • আপডেট সময় : ০৫:১০:৫২ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৯ অক্টোবর ২০২৪
  • ৭৬ বার পড়া হয়েছে

এমদাদুল হক তুহিন :‘খবর প্রচার না করার’ শর্তে ইন্টারনেট প্রটোকল (আইপি) টিভির নিবন্ধন দিয়েছিল বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকার। আর এ শর্তের কারণে শুরু থেকেই দর্শক টানতে পারছিল না আইপি টিভিগুলো। ফলে বিজ্ঞাপন খরায় আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েছে প্রতিষ্ঠানগুলো।
বর্তমানে দেশ চালাচ্ছে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার। এ জন্য স্যাটেলাইট টেলিভিশনের চাপে বৈষম্যমূলক ওই শর্ত জুড়ে দেওয়ার অভিযোগটি নতুন করে সামনে এসেছে। ‘সংবিধান বিরোধী’ ওই শর্ত উঠিয়ে খবর প্রচারের অনুমতি ও নীতিমালা সংস্কার করে আইপি টিভিগুলোকে সুরক্ষা দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন একাধিক আইপি টিভির মালিক।
জানা গেছে, ২০২১ সালে সরকার ১৪টি আইপি টিভিকে অনুমোদন দেয়। এর মধ্যে অনেক টিভি সম্প্রচারে পুরোপুরি সক্রিয় নয়। অনেকটিতে বিজ্ঞাপন খরা চলছে। আবার কিছু টিভির অনুষ্ঠানও নিম্নমানের। পুরনো বাংলা সিনেমা প্রচার করে প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের কার্যক্রম সচল রেখেছে।
অনুমোদনপ্রাপ্ত ১৪ আইপি টিভি হলো মুভিবাংলা টিভি, জাগরণ টিভি, রূপসীবাংলা টিভি, হার্নেট টিভি, মাটি এন্টারটেইনমেন্ট টিভি, ফ্লিক্সআরকে টিভি, রাজধানী টিভি, ভয়েস টিভি, জেএটিভিবিডি, নিউজ২১ বাংলা টিভি, জাগরণী টিভি, শোবাইপ্রাইম টিভি, দেশবন্ধু টিভি এবং সিএইচডিনিউজ ২৪ টিভি।
জানতে চাইলে অ্যাসোসিয়েশন অব আইপি টিভি ওনারসের (আইটো) সহ-সভাপতি ও রাজধানী টিভির স্বত্বাধিকারী এমএএস ইমন বলেন, ‘খবর প্রচার করতে না পারায় আমরা অনেক বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছি। নিউজ প্রচারে বাধা রয়েছে। তবে ডকুমেন্টারি প্রচারে বাধা নেই। নিউজ করতে না পারার কারণে দর্শক হারাচ্ছি। অনেকে এটিকে পরিপূর্ণ মিডিয়াই মনে করে না।’ তিনি বলেন, ‘নতুন সরকারের কাছে আমাদের দাবি, আমরা যাতে নিউজ প্রচার করতে পারি। এখন ইউটিউবেও অনেক ধরনের কন্টেন্ট প্রচার হচ্ছে। সেটিও অনলাইনকেই ব্যবহার করেই। কিন্তু আমরা সরকারের নিবন্ধিত মিডিয়া হয়েও বৈষম্যের শিকার হচ্ছি। প্রতিনিয়ত ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছি। আমরা তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ চেয়েছি। বিভিন্ন স্টেক হোল্ডারদের সঙ্গে উনার আলাদা করে বসার কথা। তখন সংগঠনের পক্ষ থেকে আমরা আমাদের প্রস্তাব তুলে ধরব।’
রূপসী বাংলা টিভির আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘স্যাটেলাইট টিভিগুলোর চাপে নিবন্ধন দেওয়া সময় খবর প্রচার না করার শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়। কারণ তারা মনে করে এতে করে আইপি টিভিগুলো স্যাটেলাইট টিভির সমতুল্য হয়ে যাবে। খবর প্রচার না করতে পারলেও আমাদের প্রতিবেদন বা ডকুমেন্টারি প্রকাশ করার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। ফলে প্রতিবেদনটি কখন প্রকাশ পাবে, কখন প্রচার হবে, নির্দিষ্ট করে তা দর্শক জানতে পারে না। একটি নির্দিষ্ট সময় আমরা প্রতিবেদন প্রকাশ করতে পারি না। কোনো একটি ভালো প্রতিবেদন হাতে এলে তা তখনই প্রকাশ করে দিই। এতে করে আমরা খবরের দর্শক হারাচ্ছি।’
আইপি টিভিগুলোকে নিবন্ধন দেওয়া সময় স্যাটেলাইট টেলিভিশন মালিকদের সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অব টেলিভিশন চ্যানেল ওনার্স (অ্যাটকো) আপত্তি তুলে বলে অভিযোগ রয়েছে। সংগঠনটির সাবেক নেতা ও একাত্তর টিভির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোজাম্মেল বাবু এবং আরও কয়েকজন মালিক আইপি টিভির নিবন্ধন প্রক্রিয়ায় বাধা হয়ে দাঁড়ান। পরে খবর প্রচার না করার শর্তে ১৪টি আইপি টিভির নিবন্ধন দেয় ক্ষমতাচ্যুত শেখ হাসিনার সরকার।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে আইপি টিভি ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সদস্য সচিব মো. আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘এককভাবে শুধু ব্যক্তি মোজাম্মেল বাবুই নয়, অ্যাটকোর সবাই বাধা দিয়েছে- যাতে করে আইপি টিভিতে খবর প্রচার না হয়। মূলত তাদের বাধার কারণেই নীতিমালার সময় এই শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়েছে। এতে আইপি টিভির প্রত্যেক মালিক ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। যদি খবর প্রচার করতে না পারি, বিজ্ঞাপনও পাওয়া যায় না, তাহলে আমরা কীভাবে চলব। মূলত খবরের সময় টিভিতে বিজ্ঞাপন বেশি প্রচার হয়ে থাকে। ফলে আমরা বেশ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছি।’

এ প্রসঙ্গে আইপি টিভির এক মালিক বলেন, ‘গণমাধ্যম রাষ্ট্রের চতুর্থ স্তম্ভ। গণমাধ্যমে কী প্রচার হবে, কী প্রচার হবে না; লিখিত নির্দেশনার মাধ্যমে কোনো সরকার তা দিতে পারে না। কিন্তু আইপি টিভির অনুমোদন দেওয়ার সময় বিগত সরকার খবর প্রচার না করার শর্ত জুড়ে দেয়; যা সংবিধান সম্মত নয়।’ তিনি বলেন, ‘যখন লাইসেন্স দেওয়া হচ্ছিল তখন আইপি টিভির মালিকরা বিয়ষটি নিয়ে কথা বলতে শুরু করে। কিন্তু সরকার তা আমলে নেয়নি। তখন আমি তাদের বলেছিলাম, খবর প্রচার করা যাবে না। এটি সংবিধান সম্মত নয়। এক সময় ঠিকই আমরা খবর প্রচার করতে পারব। তাই আপাতত শুধু লাইসেন্স নিই।’
জানতে চাইলে জেএটিভিবিডির মালিক কিবরিয়া চৌধুরী বলেন, ‘মূলত দ্বন্দ্বটা শুরু এ কারণে যে, ইন্টারনেট প্রটোকল টিভি সারাবিশ্বে উন্মুক্ত। কিন্তু স্যাটেলাইট টিভি চাইলেই দেশের বাইরে সম্প্রচার করা যাবে না। ফলে ব্যবসায়িকভাবে স্যাটেলাইট টিভিগুলো মার খাবে। ফলে তারা নানা ধরনের প্রতিবন্ধকতা তৈরি করে। তবে সেটি তারা পেরে ওঠেনি।’ তিনি বলেন, ‘অনেক স্যাটেলাইট টিভি অনলাইনে দেখা যায়। কিন্তু তাদের আইপি টিভির লাইসেন্স নেই, যেটি অবৈধ। সরকার প্রথমে ১৪টি আইপি টিভিকে অনুমোদন দেয়। পরে ১৪টি স্যাটেলাইট টিভিকেও আইপি টিভির অনুমোদন দেওয়া হয়েছে বলে আমরা শুনেছি। এছাড়া দুটি টিভিকে আইপি টিভির অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এর বাইরে যারা ইন্টারনেটে প্রচার চালাচ্ছে তারা অবৈধ।’
আইপি টিভির প্রেক্ষাপট তুলে ধরে রূপসী বাংলা টিভির আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘স্বল্প পরিসরে আমরা আমাদের কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছি। গুগল প্লে স্টোরেও আমাদের অ্যাপস রয়েছে। সবমিলিয়ে আমাদের ২৪ থেকে ২৫ হাজার দর্শক রয়েছে। ভালোভাবে কার্যক্রম চালিয়ে যেতে পারলে আমাদের দর্শক কোটিও ছাড়িয়ে যেতে পারে।’ তিনি বলেন, ‘উন্নত দেশগুলোয় ২০০০ সালে আইপি টিভির যাত্র শুরু হয়। তার ২১ বছর পর বাংলাদেশে আইপি টিভি যাত্রা শুরু করে। সারাবিশ্বে আইপি টিভি বলতে ইন্টারনেট ব্রডকাস্ট টেলিভিশন বোঝায়। কিন্তু, আমাদের এখানে বলা হয় ইন্টারনেট প্রটোকল টিভি। আমাদের দেশে আইপি টিভি সম্পর্কে এখনো মানুষের সঠিক কোনো ধারণা নেই।’

 

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

আইপি টিভি খবর প্রচারের অভাবে দর্শক হারাচ্ছে

আপডেট সময় : ০৫:১০:৫২ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৯ অক্টোবর ২০২৪

এমদাদুল হক তুহিন :‘খবর প্রচার না করার’ শর্তে ইন্টারনেট প্রটোকল (আইপি) টিভির নিবন্ধন দিয়েছিল বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকার। আর এ শর্তের কারণে শুরু থেকেই দর্শক টানতে পারছিল না আইপি টিভিগুলো। ফলে বিজ্ঞাপন খরায় আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েছে প্রতিষ্ঠানগুলো।
বর্তমানে দেশ চালাচ্ছে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার। এ জন্য স্যাটেলাইট টেলিভিশনের চাপে বৈষম্যমূলক ওই শর্ত জুড়ে দেওয়ার অভিযোগটি নতুন করে সামনে এসেছে। ‘সংবিধান বিরোধী’ ওই শর্ত উঠিয়ে খবর প্রচারের অনুমতি ও নীতিমালা সংস্কার করে আইপি টিভিগুলোকে সুরক্ষা দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন একাধিক আইপি টিভির মালিক।
জানা গেছে, ২০২১ সালে সরকার ১৪টি আইপি টিভিকে অনুমোদন দেয়। এর মধ্যে অনেক টিভি সম্প্রচারে পুরোপুরি সক্রিয় নয়। অনেকটিতে বিজ্ঞাপন খরা চলছে। আবার কিছু টিভির অনুষ্ঠানও নিম্নমানের। পুরনো বাংলা সিনেমা প্রচার করে প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের কার্যক্রম সচল রেখেছে।
অনুমোদনপ্রাপ্ত ১৪ আইপি টিভি হলো মুভিবাংলা টিভি, জাগরণ টিভি, রূপসীবাংলা টিভি, হার্নেট টিভি, মাটি এন্টারটেইনমেন্ট টিভি, ফ্লিক্সআরকে টিভি, রাজধানী টিভি, ভয়েস টিভি, জেএটিভিবিডি, নিউজ২১ বাংলা টিভি, জাগরণী টিভি, শোবাইপ্রাইম টিভি, দেশবন্ধু টিভি এবং সিএইচডিনিউজ ২৪ টিভি।
জানতে চাইলে অ্যাসোসিয়েশন অব আইপি টিভি ওনারসের (আইটো) সহ-সভাপতি ও রাজধানী টিভির স্বত্বাধিকারী এমএএস ইমন বলেন, ‘খবর প্রচার করতে না পারায় আমরা অনেক বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছি। নিউজ প্রচারে বাধা রয়েছে। তবে ডকুমেন্টারি প্রচারে বাধা নেই। নিউজ করতে না পারার কারণে দর্শক হারাচ্ছি। অনেকে এটিকে পরিপূর্ণ মিডিয়াই মনে করে না।’ তিনি বলেন, ‘নতুন সরকারের কাছে আমাদের দাবি, আমরা যাতে নিউজ প্রচার করতে পারি। এখন ইউটিউবেও অনেক ধরনের কন্টেন্ট প্রচার হচ্ছে। সেটিও অনলাইনকেই ব্যবহার করেই। কিন্তু আমরা সরকারের নিবন্ধিত মিডিয়া হয়েও বৈষম্যের শিকার হচ্ছি। প্রতিনিয়ত ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছি। আমরা তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ চেয়েছি। বিভিন্ন স্টেক হোল্ডারদের সঙ্গে উনার আলাদা করে বসার কথা। তখন সংগঠনের পক্ষ থেকে আমরা আমাদের প্রস্তাব তুলে ধরব।’
রূপসী বাংলা টিভির আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘স্যাটেলাইট টিভিগুলোর চাপে নিবন্ধন দেওয়া সময় খবর প্রচার না করার শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়। কারণ তারা মনে করে এতে করে আইপি টিভিগুলো স্যাটেলাইট টিভির সমতুল্য হয়ে যাবে। খবর প্রচার না করতে পারলেও আমাদের প্রতিবেদন বা ডকুমেন্টারি প্রকাশ করার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। ফলে প্রতিবেদনটি কখন প্রকাশ পাবে, কখন প্রচার হবে, নির্দিষ্ট করে তা দর্শক জানতে পারে না। একটি নির্দিষ্ট সময় আমরা প্রতিবেদন প্রকাশ করতে পারি না। কোনো একটি ভালো প্রতিবেদন হাতে এলে তা তখনই প্রকাশ করে দিই। এতে করে আমরা খবরের দর্শক হারাচ্ছি।’
আইপি টিভিগুলোকে নিবন্ধন দেওয়া সময় স্যাটেলাইট টেলিভিশন মালিকদের সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অব টেলিভিশন চ্যানেল ওনার্স (অ্যাটকো) আপত্তি তুলে বলে অভিযোগ রয়েছে। সংগঠনটির সাবেক নেতা ও একাত্তর টিভির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোজাম্মেল বাবু এবং আরও কয়েকজন মালিক আইপি টিভির নিবন্ধন প্রক্রিয়ায় বাধা হয়ে দাঁড়ান। পরে খবর প্রচার না করার শর্তে ১৪টি আইপি টিভির নিবন্ধন দেয় ক্ষমতাচ্যুত শেখ হাসিনার সরকার।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে আইপি টিভি ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সদস্য সচিব মো. আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘এককভাবে শুধু ব্যক্তি মোজাম্মেল বাবুই নয়, অ্যাটকোর সবাই বাধা দিয়েছে- যাতে করে আইপি টিভিতে খবর প্রচার না হয়। মূলত তাদের বাধার কারণেই নীতিমালার সময় এই শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়েছে। এতে আইপি টিভির প্রত্যেক মালিক ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। যদি খবর প্রচার করতে না পারি, বিজ্ঞাপনও পাওয়া যায় না, তাহলে আমরা কীভাবে চলব। মূলত খবরের সময় টিভিতে বিজ্ঞাপন বেশি প্রচার হয়ে থাকে। ফলে আমরা বেশ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছি।’

এ প্রসঙ্গে আইপি টিভির এক মালিক বলেন, ‘গণমাধ্যম রাষ্ট্রের চতুর্থ স্তম্ভ। গণমাধ্যমে কী প্রচার হবে, কী প্রচার হবে না; লিখিত নির্দেশনার মাধ্যমে কোনো সরকার তা দিতে পারে না। কিন্তু আইপি টিভির অনুমোদন দেওয়ার সময় বিগত সরকার খবর প্রচার না করার শর্ত জুড়ে দেয়; যা সংবিধান সম্মত নয়।’ তিনি বলেন, ‘যখন লাইসেন্স দেওয়া হচ্ছিল তখন আইপি টিভির মালিকরা বিয়ষটি নিয়ে কথা বলতে শুরু করে। কিন্তু সরকার তা আমলে নেয়নি। তখন আমি তাদের বলেছিলাম, খবর প্রচার করা যাবে না। এটি সংবিধান সম্মত নয়। এক সময় ঠিকই আমরা খবর প্রচার করতে পারব। তাই আপাতত শুধু লাইসেন্স নিই।’
জানতে চাইলে জেএটিভিবিডির মালিক কিবরিয়া চৌধুরী বলেন, ‘মূলত দ্বন্দ্বটা শুরু এ কারণে যে, ইন্টারনেট প্রটোকল টিভি সারাবিশ্বে উন্মুক্ত। কিন্তু স্যাটেলাইট টিভি চাইলেই দেশের বাইরে সম্প্রচার করা যাবে না। ফলে ব্যবসায়িকভাবে স্যাটেলাইট টিভিগুলো মার খাবে। ফলে তারা নানা ধরনের প্রতিবন্ধকতা তৈরি করে। তবে সেটি তারা পেরে ওঠেনি।’ তিনি বলেন, ‘অনেক স্যাটেলাইট টিভি অনলাইনে দেখা যায়। কিন্তু তাদের আইপি টিভির লাইসেন্স নেই, যেটি অবৈধ। সরকার প্রথমে ১৪টি আইপি টিভিকে অনুমোদন দেয়। পরে ১৪টি স্যাটেলাইট টিভিকেও আইপি টিভির অনুমোদন দেওয়া হয়েছে বলে আমরা শুনেছি। এছাড়া দুটি টিভিকে আইপি টিভির অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এর বাইরে যারা ইন্টারনেটে প্রচার চালাচ্ছে তারা অবৈধ।’
আইপি টিভির প্রেক্ষাপট তুলে ধরে রূপসী বাংলা টিভির আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘স্বল্প পরিসরে আমরা আমাদের কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছি। গুগল প্লে স্টোরেও আমাদের অ্যাপস রয়েছে। সবমিলিয়ে আমাদের ২৪ থেকে ২৫ হাজার দর্শক রয়েছে। ভালোভাবে কার্যক্রম চালিয়ে যেতে পারলে আমাদের দর্শক কোটিও ছাড়িয়ে যেতে পারে।’ তিনি বলেন, ‘উন্নত দেশগুলোয় ২০০০ সালে আইপি টিভির যাত্র শুরু হয়। তার ২১ বছর পর বাংলাদেশে আইপি টিভি যাত্রা শুরু করে। সারাবিশ্বে আইপি টিভি বলতে ইন্টারনেট ব্রডকাস্ট টেলিভিশন বোঝায়। কিন্তু, আমাদের এখানে বলা হয় ইন্টারনেট প্রটোকল টিভি। আমাদের দেশে আইপি টিভি সম্পর্কে এখনো মানুষের সঠিক কোনো ধারণা নেই।’