লাইফস্টাইল ডেস্ক: শিশুর জ্বর হলেই মা-বাবা ডেঙ্গু আতঙ্কে দিশাহারা হয়ে পড়েন। কারণ মশাবাহিত রোগ ডেঙ্গু প্রায় সময়েই বেশ গুরুতর হয়ে ওঠে, বিশেষ করে শিশুদের ক্ষেত্রে। ডেঙ্গু এক ধরনের ভাইরাসজনিত জ্বর। রোগটিতে বেশির ভাগ সময় উপসর্গ দেখা দিলেও কিছু ক্ষেত্রে উপসর্গহীনও হয় ডেঙ্গু। শিশুর ভাইরাল জ্বর, ঠা-া লাগা জ্বর নাকি ডেঙ্গু জ্বর হয়েছে; তা বুঝতে হলে মা-বাবার সতর্ক থাকার বিকল্প নেই।
ঢাকা শিশু হাসপাতালের শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ সার্জন ডা. এসএম নাজমুল ইসলাম জানালেন, ডেঙ্গুর সবচেয়ে বড় লক্ষণ হচ্ছে অতিরিক্ত জ্বর থাকা। সাধারণত ১০৩ বা ১০৪ ডিগ্রি পর্যন্ত জ্বর উঠে যেতে পারে শিশুর। এর পাশাপাশি শিশুর শরীর ব্যথা থাকতে পারে। আরেকটি বড় লক্ষণ হচ্ছে এই জ্বরে কোনো ধরনের ঠা-া লাগা কিংবা কাশি থাকবে না। জ্বরের পাশাপাশি বমি বমি ভাব, পাতলা পায়খানা থাকতে পারে শিশুর। জ্বর পরবর্তী সময়ে শরীরে লালচে র্যাশ ওঠাও ডেঙ্গুর অন্যতম লক্ষণ।
চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া শিশুকে কোনো ধরনের অ্যান্টিবায়োটিক কিংবা স্টেরয়েডজাতীয় ওষুধ খাওয়ানো যাবে না বলে জানালেন ডা. নাজমুল ইসলাম। এছাড়া শিশুর প্রস্রাব কমে গেলে, শিশু নিস্তেজ হয়ে গেলে বা পানিশূন্যতা দেখা দিলে সঙ্গে সঙ্গে হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে চিকিৎসা দিতে হবে।
ডেঙ্গু জ্বর হওয়ার ৪ থেকে ৫ ঘণ্টা পরই ডেঙ্গু শনাক্তকরণ পরীক্ষা করা সম্ভব বলে জানান গ্রিন লাইফ হাসপাতালের সহযোগী অধ্যাপক ও শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. আবদুল মালেক। তিনি জানান, শুধু উপসর্গে ডেঙ্গু হয়েছে কি না, সেটি নিশ্চিত হওয়া সম্ভব নয়। এ জন্য পরীক্ষাই একমাত্র সমাধান। তবে জ্বর আসার ৭২ ঘণ্টার মধ্যে এই পরীক্ষা না করলে সেটির রিপোর্ট নেগেটিভ আসবে। আরেকটি টেস্ট আছে যেটা পাঁচ দিন পর করলে তারপর পজেটিভ আসে ফল। এই শুরুর তিন দিন এবং পাঁচদিন পরবর্তী সময়ের মধ্যকার যে দু’দিন রয়েছে, ওই দু’দিন কোনো পরীক্ষাতেই ডেঙ্গু ধরা পড়ে না। তবে কখন কী পরীক্ষা করতে হবে, সেটি চিকিৎসকই বলে দেবেন। ডেঙ্গু জ্বরের উপসর্গ দেখা দেওয়া মাত্র চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। শিশুর ক্ষেত্রে ডেঙ্গুর উপসর্গ সেভাবে বোঝা না গেলেও অতিরিক্ত জ্বর থাকলে সঙ্গে সঙ্গে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
সব ডেঙ্গু রোগীকে হাসপাতালে ভর্তির প্রয়োজন নেই। স্বাভাবিক ডেঙ্গু হলে বাড়িতে রেখেই শিশুর চিকিৎসা চালিয়ে যেতে পারবেন। এক্ষেত্রে শিশুকে বেশি বেশি তরল খাবার খাওয়াতে হবে। পানি, খাবার স্যালাইন, ডাবের পানি বা গ্লুকোজের পানি বারবার খাওয়ান শিশুকে। তবে হেমোরেজিক ডেঙ্গু কিংবা ডেঙ্গু শক সিনড্রোমের ক্ষেত্রে রোগীর জীবননাশের আশঙ্কা থাকে। এ জন্য শুরু থেকেই চিকিৎসকের পর্যবেক্ষণে থাকা জরুরি। এতে বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই জীবননাশের ঝুঁকি কমে যায় অনেকাংশে।
দ্রুত চিকিৎসা প্রয়োজন শিশুর ডেঙ্গু উপসর্গে
জনপ্রিয় সংবাদ