নিজস্ব প্রতিবেদক : সপ্তাহের শেষ কার্যদিবস গতকাল বুধবার পুঁজিবাজারে সূচকের বড় উত্থানের মধ্য দিয়ে লেনদেন শেষ হয়েছে। এদিন দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) লেনদেন বাড়লেও অপর বাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) কমেছে। বাজার বিশ্লেষণে দেখা যায়, বুধবার ডিএসই প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স ৯৮ পয়েন্ট বেড়ে ৫ হাজার ৪২২ পয়েন্টে অবস্থান করছে। অন্য দুই সূচকের মধ্যে শরিয়াহ সূচক ১৮ পয়েন্ট এবং ডিএসই-৩০ সূচক ৪৫ পয়েন্ট বেড়ে যথাক্রমে ১২০৫ ও ১৯৮৪ পয়েন্টে অবস্থান করছে। এদিন ডিএসইতে ৩৭৬ কোটি ৬০ লাখ টাকার শেয়ার ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের লেনদেন হয়েছে। যা আগের কার্যদিবসের চেয়ে প্রায় ২১ কোটি টাকার লেনদেন বেড়েছে। আগের দিন ডিএসইতে ৩৫৫ কোটি ৩৭ লাখ টাকার শেয়ার ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের লেনদেন হয়েছিল।
বুধবার ডিএসইতে ৩৯৬টি কোম্পানির শেয়ার ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের ইউনিটের লেনদেন হয়েছে। এগুলোর মধ্যে দাম বেড়েছে ৩২৭টি কোম্পানির, কমেছে ৩৭টি এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ৩২টি কোম্পানির শেয়ার ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের ইউনিটের দর। এদিন লেনদেনের শীর্ষে থাকা ১০ প্রতিষ্ঠান হলো-অগ্নি সিস্টেম, লাভেলো আইসক্রিম, মিডল্যান্ড ব্যাংক, গ্রামীণফোন, ইসলামী ব্যাংক, টেকনো ড্রাগ, এনআরবি ব্যাংক, ব্রাক ব্যাংক, এসআইবিএল ও স্কয়ার ফার্মা। অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক সূচক সিএএসপিআই এদিন ১৭৩ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করছে ১৫ হাজার ১৩৫ পয়েন্টে। এদিন সিএসইতে হাত বদল হওয়া ২০৪টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে শেয়ার দর বেড়েছে ১২৫টির, কমেছে ৫৩টি এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ২৬টির কোম্পানির শেয়ার দর। বুধবার সিএসইতে ৮ কোটি ৩১ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিটের লেনদেন হয়েছে। যা আগের দিনের চেয়ে প্রায় ৩ কোটি টাকার লেনদেন বেড়েছে। আগের দিন সিএসইতে লেনদেন হয়েছিল ১১ কোটি ৩২ লাখ টাকা।
সংস্কারে প্রস্তাব দিলো ‘বিনিয়োগকারী ঐক্য পরিষদ’
এদিকে পুঁজিবাজারের সার্বিক সংস্কার সংক্রান্ত বিষয়ে বাংলাদেশ পুঁজিবাজার বিনিয়োগকারী ঐক্য পরিষদের সঙ্গে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) মত বিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৈঠকে পরিষদের প্রতিনিধিবৃন্দ এবং বিএসইসির কর্মকর্তাবৃন্দ পুঁজিবাজারের সাম্প্রতিক অবস্থা এবং বাজারের সংস্কারের নানা বিষয়ে আলোচনা করেন। সভায় বিনিয়োগকারীরা পুঁজিবাজারের উন্নয়ন ও বিকাশের জন্য তাদের সুপারিশ তুলে ধরেন। গতকাল বুধবার রাজধানীর আগারগাঁও-এ বিএসইসি ভবনে উক্ত বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে বলে সংস্থাটি এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে। বৈঠকে বাংলাদেশ পুঁজিবাজার বিনিয়োগকারী ঐক্য পরিষদের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ শীর্ষ প্রতিনিধিবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। একইসাথে বিএসইসির মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক এবং পরিচালকসহ শীর্ষ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। বৈঠকে বাংলাদেশ পুঁজিবাজার বিনিয়োগকারী ঐক্য পরিষদের প্রতিনিধিবৃন্দ এবং বিএসইসর কর্মকর্তাবৃন্দ পুঁজিবাজারের সাম্প্রতিক অবস্থা এবং বাজারের সংস্কারের নানা বিষয়ে আলোচনা করেন। বাংলাদেশ পুঁজিবাজার বিনিয়োগকারী ঐক্য পরিষদের সাথে বিনিয়োগকারীদের বিভিন্ন দাবিসমূহ নিয়েও বৈঠকে বিস্তারিত আলোচনা হয়। সভায় বিনিয়োগকারীরা পুঁজিবাজারের উন্নয়ন ও বিকাশের জন্য তাদের সুপারিশ তুলে ধরেন। সভায় বিনিয়োগকারীরা অন্যান্যের মধ্যে পুঁজিবাজারের জেড ক্যাটাগরি সংশ্লিষ্ট নিয়ম কানুনের সংস্কার এবং লভ্যাংশ না দেয়াসহ নন-কমপ্লায়েন্সের ফলে জেডে প্রেরণের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট কোম্পানি ও তার কর্তাব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া। এর পাশাপাশি সশরীরে কোম্পানির এজিএম করার নিয়ম পুনর্বহাল করা, বাজারে বিনিয়োগ বান্ধব পরিবেশ আনয়ন ও বিনিয়োগকারী বান্ধব সিদ্ধান্ত গ্রহণ করার মাধ্যমে বিদ্যমান পরিস্থিতি ও সময় বিবেচনায় সময়োপযোগী পদক্ষেপ গ্রহণ করার সুপারিশ করেন। এছাড়াও পুঁজিবাজারে কোম্পানির স্পন্সর বা পরিচালকদের ৩০ শতাংশ শেয়ারধারণের নিয়ম যথাযথ পরিপালন নিশ্চিতকরণ, শেয়ার বাই ব্যাক আইনের বিষয়ে কমিশনের পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ, বাংলাদেশে ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংকের মত আরো প্রতিষ্ঠান সৃষ্টি ও আনয়নের পদক্ষেপ গ্রহণ, বাজারে সিএমএসএফের ফান্ড হতে বিনিয়োগ বা পুঁজির আনয়ন করার সুপারিশ তুলে ধরেন বিনিয়োগকারীদের সংগঠনটি।