ঢাকা ১০:২৫ অপরাহ্ন, সোমবার, ০৯ জুন ২০২৫

সবার জন্য তিনবেলা ভাত খাওয়া নয়

  • আপডেট সময় : ০৬:২২:৪১ অপরাহ্ন, সোমবার, ৭ অক্টোবর ২০২৪
  • ৬৯ বার পড়া হয়েছে

লাইফস্টাইল ডেস্ক: ভাত খাওয়া নিয়ে বাঙালির দুর্নাম কম নয়। তবে লোকে যতই বলুক, ভাত খেতে যারা ভালোবাসেন, তারা এসব গায়ে মাখেন না; বরং দিনের শুরুতে কিংবা রাতে খাটাখাটনির পর এসে দুটো ভাত খেলেই যেন মনে হয় শরীরটা জুড়ালো। অথচ আমাদের দেশে তিন বেলাই ভাত খাওয়া মানুষের সংখ্যাটাই বেশি।
আবার অনেক স্বাস্থ্য সচেতন মানুষজন যে ইদানীং ভাত খাওয়া ছেড়ে শাক-সবজি, ফলমূল ও রুটি খেয়ে থাকেন। তাহলে কি ভাত খাওয়া ভাল নয়? পুষ্টিবিদেরা বলছেন, ভাত খাওয়ায় কোনো আপত্তি নেই। তবে খেতে হবে মাপ বুঝে।
বাংলাদেশ, ভারত ছাড়াও চীন, ইন্দোনেশিয়া, ভিয়েতনামসহ বহু দেশ রয়েছে যেখানে ভাত খাওয়ার চল। ভাত এমনিতে সহজপাচ্য। এতে প্রচুর কার্বোহাইড্রেট থাকে, যা সারাদিন কাজকর্মের জন্য শরীরকে শক্তি জোগায়। চাল ভেদে ভাতে থাকে সামান্য ভিটামিন বি, ম্যাগনেশিয়াম ও আয়রন।
পুষ্টিবিদরা বলছেন, ভাতে কার্বোহাইড্রেট থাকলেও ফাইবার থাকে না। ব্রাউন রাইসে সামান্য ফাইবার থাকে। সিদ্ধ চালে কিছুটা ভিটামিন বি থাকলেও আতপ চালে তা থাকে না। যদি কেউ রোগা হতে চান, ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে চান তাহলে সারাদিন বারবার ভাত খেলে সমস্যা হতে পারে। এক্ষেত্রে ভাতের বদলে বেশি করে শাকসবজি ও রুটি খাওয়া যেতে পারে। এই সমস্যা না থাকলে দিনে একাধিক বার ভাত খাওয়া যেতে পারে। ওই সমস্যা না থাকলে কোনো অসুবিধা নেই।
পুষ্টিবিদদের মতে, একজন প্রাপ্তবয়স্ক সুস্থ মানুষ দিনে ১০০ গ্রাম চালের ভাত খেতে পারেন। এতে মোটামুটি ৩৫০-৩৬০ কিলোক্যালোরি থাকে। তবে ভাতের পরিমাপ নির্ভর করে সেই মানুষটি কতটা কায়িক পরিশ্রম করছেন, তার উপর। যাদের শারীরিক পরিশ্রম কম হয়, তারা দৈনিক ৬০-৭০ গ্রাম চালের ভাত খেলেই হবে। ভাল হয়, যদি তা দু’বারে খাওয়া হয়। আবার ১২-১৪ বছরের ছেলে-মেয়েরা যারা সারাদিন দৌড়ঝাঁপ করছে, তারা ১২০-১৫০ গ্রাম চালের ভাতও খেতে পারে, কারণ তাদের ক্যালোরি বেশি খরচ হয়। তবে এই পরিমাণ, ছেলে এবং মেয়ে তাদের উচ্চতা ও ওজন ভেদে আলাদা হবে।
ভাতের সঙ্গে সবজি, ডাল, মাছও খাওয়া হয়। পুষ্টিবিদেরা বলছেন, এই খাদ্যাভাসে ভাতের ফাইবারের অভাব বাকি খাবার দিয়ে পূরণ হয়ে যায়। একসঙ্গেই, সবজিতে থাকা ভিটামিন, খনিজ পায় শরীর। প্রোটিনও মেলে।
ডায়াবেটিস বিষয়ে চিকিৎসকরা বলছেন, ডায়াবেটিসের সঙ্গে ভাতের সরাসরি সম্পর্ক নেই। তবে ভাতের গ্লাইসেমিক ইনডেক্স বেশি। অর্থাৎ, রক্তে শর্করার মাত্রা বাড়িয়ে দিতে পারে যদি ভুল ভাবে খাওয়া হয়। তাদের কথায়, কারও রক্তে শর্করা বেশি থাকলেও যদি শরীরচর্চা, ওষুধ বা ইনসুলিনের দ্বারা নিয়ন্ত্রণে থাকে, তা হলে তিনি ভাত খেতে পারেন। তবে তা মাপমতো। সেটাও নির্ভর করবে তার শরীরে অন্য কোনও সমস্যা রয়েছে কি না, তার উপরে। এ ক্ষেত্রে পুষ্টিবিদের পরামর্শ নিয়ে মাপ নির্ধারণ করতে হবে।
দিনে বারবার ভাত খেলেই যে ক্ষতি হবে, এমনটা নয়। পুষ্টিবিদের কথায়Ñ এক জন সুস্থ মানুষের সারা দিনে যতটা চালের ভাত খাওয়া দরকার, সেই মাপ ঠিক রেখে একাধিকবার ভাত খাওয়া যেতে পারে।

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

সবার জন্য তিনবেলা ভাত খাওয়া নয়

আপডেট সময় : ০৬:২২:৪১ অপরাহ্ন, সোমবার, ৭ অক্টোবর ২০২৪

লাইফস্টাইল ডেস্ক: ভাত খাওয়া নিয়ে বাঙালির দুর্নাম কম নয়। তবে লোকে যতই বলুক, ভাত খেতে যারা ভালোবাসেন, তারা এসব গায়ে মাখেন না; বরং দিনের শুরুতে কিংবা রাতে খাটাখাটনির পর এসে দুটো ভাত খেলেই যেন মনে হয় শরীরটা জুড়ালো। অথচ আমাদের দেশে তিন বেলাই ভাত খাওয়া মানুষের সংখ্যাটাই বেশি।
আবার অনেক স্বাস্থ্য সচেতন মানুষজন যে ইদানীং ভাত খাওয়া ছেড়ে শাক-সবজি, ফলমূল ও রুটি খেয়ে থাকেন। তাহলে কি ভাত খাওয়া ভাল নয়? পুষ্টিবিদেরা বলছেন, ভাত খাওয়ায় কোনো আপত্তি নেই। তবে খেতে হবে মাপ বুঝে।
বাংলাদেশ, ভারত ছাড়াও চীন, ইন্দোনেশিয়া, ভিয়েতনামসহ বহু দেশ রয়েছে যেখানে ভাত খাওয়ার চল। ভাত এমনিতে সহজপাচ্য। এতে প্রচুর কার্বোহাইড্রেট থাকে, যা সারাদিন কাজকর্মের জন্য শরীরকে শক্তি জোগায়। চাল ভেদে ভাতে থাকে সামান্য ভিটামিন বি, ম্যাগনেশিয়াম ও আয়রন।
পুষ্টিবিদরা বলছেন, ভাতে কার্বোহাইড্রেট থাকলেও ফাইবার থাকে না। ব্রাউন রাইসে সামান্য ফাইবার থাকে। সিদ্ধ চালে কিছুটা ভিটামিন বি থাকলেও আতপ চালে তা থাকে না। যদি কেউ রোগা হতে চান, ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে চান তাহলে সারাদিন বারবার ভাত খেলে সমস্যা হতে পারে। এক্ষেত্রে ভাতের বদলে বেশি করে শাকসবজি ও রুটি খাওয়া যেতে পারে। এই সমস্যা না থাকলে দিনে একাধিক বার ভাত খাওয়া যেতে পারে। ওই সমস্যা না থাকলে কোনো অসুবিধা নেই।
পুষ্টিবিদদের মতে, একজন প্রাপ্তবয়স্ক সুস্থ মানুষ দিনে ১০০ গ্রাম চালের ভাত খেতে পারেন। এতে মোটামুটি ৩৫০-৩৬০ কিলোক্যালোরি থাকে। তবে ভাতের পরিমাপ নির্ভর করে সেই মানুষটি কতটা কায়িক পরিশ্রম করছেন, তার উপর। যাদের শারীরিক পরিশ্রম কম হয়, তারা দৈনিক ৬০-৭০ গ্রাম চালের ভাত খেলেই হবে। ভাল হয়, যদি তা দু’বারে খাওয়া হয়। আবার ১২-১৪ বছরের ছেলে-মেয়েরা যারা সারাদিন দৌড়ঝাঁপ করছে, তারা ১২০-১৫০ গ্রাম চালের ভাতও খেতে পারে, কারণ তাদের ক্যালোরি বেশি খরচ হয়। তবে এই পরিমাণ, ছেলে এবং মেয়ে তাদের উচ্চতা ও ওজন ভেদে আলাদা হবে।
ভাতের সঙ্গে সবজি, ডাল, মাছও খাওয়া হয়। পুষ্টিবিদেরা বলছেন, এই খাদ্যাভাসে ভাতের ফাইবারের অভাব বাকি খাবার দিয়ে পূরণ হয়ে যায়। একসঙ্গেই, সবজিতে থাকা ভিটামিন, খনিজ পায় শরীর। প্রোটিনও মেলে।
ডায়াবেটিস বিষয়ে চিকিৎসকরা বলছেন, ডায়াবেটিসের সঙ্গে ভাতের সরাসরি সম্পর্ক নেই। তবে ভাতের গ্লাইসেমিক ইনডেক্স বেশি। অর্থাৎ, রক্তে শর্করার মাত্রা বাড়িয়ে দিতে পারে যদি ভুল ভাবে খাওয়া হয়। তাদের কথায়, কারও রক্তে শর্করা বেশি থাকলেও যদি শরীরচর্চা, ওষুধ বা ইনসুলিনের দ্বারা নিয়ন্ত্রণে থাকে, তা হলে তিনি ভাত খেতে পারেন। তবে তা মাপমতো। সেটাও নির্ভর করবে তার শরীরে অন্য কোনও সমস্যা রয়েছে কি না, তার উপরে। এ ক্ষেত্রে পুষ্টিবিদের পরামর্শ নিয়ে মাপ নির্ধারণ করতে হবে।
দিনে বারবার ভাত খেলেই যে ক্ষতি হবে, এমনটা নয়। পুষ্টিবিদের কথায়Ñ এক জন সুস্থ মানুষের সারা দিনে যতটা চালের ভাত খাওয়া দরকার, সেই মাপ ঠিক রেখে একাধিকবার ভাত খাওয়া যেতে পারে।