ঢাকা ০২:৫১ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ০৪ অগাস্ট ২০২৫

সারাবছর উচ্ছে করলা চাষ পদ্ধতি

  • আপডেট সময় : ০৫:৫৬:০৩ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  • ১০৯ বার পড়া হয়েছে

কৃষি ও কৃষক ডেস্ক : করলা বা উচ্ছে স্বাদে তিতা হলেও পুষ্টিকর সবজি। বাজারে দামও কম নয়। তবে সারাবছরই বাজারে পাওয়া যায়। এর ওষুধি গুণ আছে। উচ্ছে বা করলা দেশের প্রায় সব জেলাতেই চাষ হয়। আগে গরমকালে বা খরিপ মৌসুমে উচ্ছে বা করলা চাষ হতো। তবে এখন সারাবছরই চাষ করা যায়।
মাটি: সুনিষ্কাশিত জৈব পদার্থযুক্ত দোআঁশ ও বেলে-দোআঁশ মাটি উচ্ছে বা করলা চাষের জন্য ভালো। ছায়াযুক্ত জায়গায় ভালো হয় না। পানি জমে না এ ধরনের প্রায় সব রকমের মাটিতেই চাষ করা যায়।
জলবায়ু: বাংলাদেশের আবহাওয়া উচ্ছে বা করলা চাষের জন্য উপযোগী। উষ্ণ ও আর্দ্র আবহাওয়ায় উচ্ছে ভালো জন্মায় । উচ্ছে উষ্ণ ও আর্দ্র জলবায়ু উপযোগী ফসল। এটি বৈরি পরিবেশ সহিষ্ণু উদ্ভিদ। মোটামুটি শুষ্ক আবহাওয়াতেও এর ফলন সম্ভব। উচ্ছে বা করলা জলাবদ্ধতা সহ্য করতে পারে না। আবার অতিরিক্ত বৃষ্টিপাতে পরাগায়ন বিঘ্নিত হতে পারে।
বীজ বপন: বছরের যে কোনো সময়ে উচ্ছে বা করলা লাগানো যায়। তবে খরিপ মৌসুমে অর্থাৎ গ্রীষ্ম ও বর্ষাকালে এ সবজি ভালো হয়। ফেব্রুয়ারি থেকে মে মাস পর্যন্ত বীজ বুনলে ভালো ফলন পাওয়া যায়। বীজ বপন করার আগে মাটি ভালোভাবে পানি দিয়ে ভিজিয়ে নিয়ে ১৫-২০ দিন বয়সের চারা পরের দিন বিকেলে রোপণ করতে হবে। চারা মাটির দলাসহ লাগাতে হবে। তারপর গর্তে পানি দিতে হবে।
পরিচর্যা: উচ্ছে বা করলার সবচেয়ে ক্ষতিকর পোকা হলো ফল ছিদ্রকারী পোকা। এই পোকার হাত থেকে রক্ষা পেতে হলে মাঝে মাঝে করলা গাছে ভালো কীটনাশক স্প্রে করতে হবে । তাহলে পোকামাকড়ের হাত থেকে রক্ষা পাওয়া যাবে। চারা গজানোর পর মাদা শুকিয়ে গেলে সেচ দিতে হয়। সেচ দেওয়ার পর মাদার মাটি শুকিয়ে চটা বেঁধে গেলে নিড়ানি দিয়ে মাটি ঝুরঝুরে করে দিতে হবে এবং আগাছা পরিষ্কার করে দিতে হবে। গাছের গোড়া থেকে কিছু ডগা বের হয়, এগুলো ভেঙে দিলে ফলন বাড়ে।
সার প্রয়োগ: চারা রোপণের বা চারা গজানোর ১০ দিন পর ১ম কিস্তি, ৩৫ দিন পর ২য় কিস্তি, ৫৫ দিন পর ৩য় কিস্তি এবং ৭৫ দিন পর ৪র্থ কিস্তিতে ইউরিয়া ও এমওপি সার উপরি প্রয়োগ করতে হবে। প্রতি কিস্তিতে প্রতি মাদায় ইউরিয়া ১০-১৫ গ্রাম এবং এমওপি ১০-১৫ গ্রাম প্রয়োগ করতে হবে।
ফসল সংগ্রহ: চারা গজানোর ৪৫-৫০ দিন পর উচ্ছে বা করলা গাছ ফল দিতে থাকে। স্ত্রীফুলের পরাগায়নের ১৫-২০ দিনের মধ্যে ফল খাওয়ার উপযুক্ত হয়। ফল আহরণ একবার শুরু হলে তা দু’মাস পর্যন্ত অব্যাহত থাকে। উন্নত পদ্ধতিতে চাষাবাদ করলে হেক্টর প্রতি ফলন যথাক্রমে ৭-১০ টন (৩০-৪০ কেজি বা শতাংশ) পাওয়া যায়।

 

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

শেখ হাসিনাকে কোনোদিনই বাংলাদেশে রাজনীতি করার সুযোগ দেবো না: মির্জা ফখরুল

সারাবছর উচ্ছে করলা চাষ পদ্ধতি

আপডেট সময় : ০৫:৫৬:০৩ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪

কৃষি ও কৃষক ডেস্ক : করলা বা উচ্ছে স্বাদে তিতা হলেও পুষ্টিকর সবজি। বাজারে দামও কম নয়। তবে সারাবছরই বাজারে পাওয়া যায়। এর ওষুধি গুণ আছে। উচ্ছে বা করলা দেশের প্রায় সব জেলাতেই চাষ হয়। আগে গরমকালে বা খরিপ মৌসুমে উচ্ছে বা করলা চাষ হতো। তবে এখন সারাবছরই চাষ করা যায়।
মাটি: সুনিষ্কাশিত জৈব পদার্থযুক্ত দোআঁশ ও বেলে-দোআঁশ মাটি উচ্ছে বা করলা চাষের জন্য ভালো। ছায়াযুক্ত জায়গায় ভালো হয় না। পানি জমে না এ ধরনের প্রায় সব রকমের মাটিতেই চাষ করা যায়।
জলবায়ু: বাংলাদেশের আবহাওয়া উচ্ছে বা করলা চাষের জন্য উপযোগী। উষ্ণ ও আর্দ্র আবহাওয়ায় উচ্ছে ভালো জন্মায় । উচ্ছে উষ্ণ ও আর্দ্র জলবায়ু উপযোগী ফসল। এটি বৈরি পরিবেশ সহিষ্ণু উদ্ভিদ। মোটামুটি শুষ্ক আবহাওয়াতেও এর ফলন সম্ভব। উচ্ছে বা করলা জলাবদ্ধতা সহ্য করতে পারে না। আবার অতিরিক্ত বৃষ্টিপাতে পরাগায়ন বিঘ্নিত হতে পারে।
বীজ বপন: বছরের যে কোনো সময়ে উচ্ছে বা করলা লাগানো যায়। তবে খরিপ মৌসুমে অর্থাৎ গ্রীষ্ম ও বর্ষাকালে এ সবজি ভালো হয়। ফেব্রুয়ারি থেকে মে মাস পর্যন্ত বীজ বুনলে ভালো ফলন পাওয়া যায়। বীজ বপন করার আগে মাটি ভালোভাবে পানি দিয়ে ভিজিয়ে নিয়ে ১৫-২০ দিন বয়সের চারা পরের দিন বিকেলে রোপণ করতে হবে। চারা মাটির দলাসহ লাগাতে হবে। তারপর গর্তে পানি দিতে হবে।
পরিচর্যা: উচ্ছে বা করলার সবচেয়ে ক্ষতিকর পোকা হলো ফল ছিদ্রকারী পোকা। এই পোকার হাত থেকে রক্ষা পেতে হলে মাঝে মাঝে করলা গাছে ভালো কীটনাশক স্প্রে করতে হবে । তাহলে পোকামাকড়ের হাত থেকে রক্ষা পাওয়া যাবে। চারা গজানোর পর মাদা শুকিয়ে গেলে সেচ দিতে হয়। সেচ দেওয়ার পর মাদার মাটি শুকিয়ে চটা বেঁধে গেলে নিড়ানি দিয়ে মাটি ঝুরঝুরে করে দিতে হবে এবং আগাছা পরিষ্কার করে দিতে হবে। গাছের গোড়া থেকে কিছু ডগা বের হয়, এগুলো ভেঙে দিলে ফলন বাড়ে।
সার প্রয়োগ: চারা রোপণের বা চারা গজানোর ১০ দিন পর ১ম কিস্তি, ৩৫ দিন পর ২য় কিস্তি, ৫৫ দিন পর ৩য় কিস্তি এবং ৭৫ দিন পর ৪র্থ কিস্তিতে ইউরিয়া ও এমওপি সার উপরি প্রয়োগ করতে হবে। প্রতি কিস্তিতে প্রতি মাদায় ইউরিয়া ১০-১৫ গ্রাম এবং এমওপি ১০-১৫ গ্রাম প্রয়োগ করতে হবে।
ফসল সংগ্রহ: চারা গজানোর ৪৫-৫০ দিন পর উচ্ছে বা করলা গাছ ফল দিতে থাকে। স্ত্রীফুলের পরাগায়নের ১৫-২০ দিনের মধ্যে ফল খাওয়ার উপযুক্ত হয়। ফল আহরণ একবার শুরু হলে তা দু’মাস পর্যন্ত অব্যাহত থাকে। উন্নত পদ্ধতিতে চাষাবাদ করলে হেক্টর প্রতি ফলন যথাক্রমে ৭-১০ টন (৩০-৪০ কেজি বা শতাংশ) পাওয়া যায়।