ঢাকা ১০:০৩ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১২ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

নতুন গবেষণায় দেখা গেল মস্তিষ্কে ‘ভালোবাসার ম্যাপ’

  • আপডেট সময় : ০১:২৪:১৩ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  • ৪৬ বার পড়া হয়েছে

মানব মস্তিষ্কে ভালোবাসা কীভাবে কাজ করে, তা উঠে এসেছে সাম্প্রতিক এক গবেষণায়। গবেষণাটি চালিয়েছেন ফিনল্যান্ডে অবস্থিত ‘আলটো ইউনিভার্সিটি’র গবেষকরা, যেখানে আধুনিক ইমেজিং পদ্ধতি ব্যবহার করে তারা বিভিন্ন ভালোবাসার ধরন খুঁজে পেয়েছেন। এর মধ্যে রয়েছে রোমান্টিক, মা বাবার প্রতি এমনকি পোষা প্রাণী বা প্রকৃতির প্রতি ভালোবাসাও, যেগুলো মানব মস্তিষ্কের বিভিন্ন অংশকে সক্রিয় করে তোলে। এ গবেষণায় এমন ৫৫ জন অভিভাবক অংশ নেন, যাদের দাম্পত্য সম্পর্ক ভালোবাসার। গবেষণাটিতে অংশগ্রহণকারীদেরকে বিভিন্ন সহজ, নিত্যদিনের প্রেক্ষাপট কল্পনা করতে বলা হয়, যেগুলো থেকে ভালোবাসার অনুভূতির উদ্রেক ঘটে। উদাহরণ হিসেবে, নবজাতক সন্তানকে প্রথমবারের মতো দেখা। আর তারা যখন এইসব প্রেক্ষাপট কল্পনা করেছেন, তখন তাদের মস্তিষ্কের গতিবিধি মনিটরিং করেছিল ‘ফাংশনাল ম্যাগনেটিক রেসোনেন্স ইমেজিং (এফএমআরআই)’ নামের যন্ত্রটি। গবেষকরা এতে খুঁজে পান, সব ধরনের ভালোবাসা সংশ্লিষ্ট গতিবিধির উদ্রেক ঘটে মস্তিষ্কের বিভিন্ন সুনির্দিষ্ট অংশ থেকে, বিশেষ করে যেসব অংশের যোগসূত্র আছে সামাজিক যোগাযোগ ও মানসিক প্রক্রিয়াকরণের সঙ্গে। তবে, মস্তিষ্কের এমন গতিবিধির তীব্রতা সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির ভালোবাসার ধরনের ভিত্তিতে ভিন্ন হয়ে থাকে। উদাহরণ হিসেবে, মা বাবার প্রতি ভালোবাসার বহিঃপ্রকাশের বেলায় মস্তিষ্কের গতিবিধি সবচেয়ে তীব্র, বিশেষ করে মস্তিষ্কের ‘রিওয়ার্ড সিস্টেম’-এর মধ্যে থাকা ‘স্ট্রিয়াটাম’ নামের অংশটিতে। অন্যান্য ধরনের ভালবাসার তুলনায়, মা বাবার প্রতি ভালোবাসার কথা চিন্তা করার সময় মস্তিষ্কের গভীরে থাকা এ অংশটি সবচেয়ে বেশি আলোকিত হয়ে ওঠে। এর সবচেয়ে কাছাকাছি আছে প্রেমের অনুভূতি, যা মস্তিষ্কে থাকা বিভিন্ন ‘রিওয়ার্ড সেন্টার’কে আরও জোরালোভাবে সক্রিয় করে তোলে। তবে, এ গবেষণায় যে রোমাঞ্চকর বিষয়টি লক্ষ্য করা গেছে, তা হল, মস্তিষ্কের মধ্যে অপরিচিত ব্যক্তিকে ভালোবাসার প্রবণতা ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের তুলনায় কম। অন্যদিকে, প্রকৃতির প্রতি ভালোবাসা মস্তিষ্কের রিওয়ার্ড সিস্টেম ও ভিজুয়াল প্রসেসিং উভয় ক্ষেত্রকে উদ্দীপিত করলেও তা মস্তিষ্কের সামাজিক গতিবিধি সংশ্লিষ্ট অংশে তেমন সক্রিয় নয়। এর মধ্যে আরেকটি চমকপ্রদ অনুসন্ধান ছিল পোষা প্রাণীর প্রতি ভালোবাসার বিষয়টি। গবেষকরা এতে দেখতে পান, পোষা প্রাণীর প্রতি ভালোবাসা অনেকটা মানুষকে ভালোবাসার মতো হলেও এতে একটি বিষয় লক্ষণীয়। তা হল, পোষা প্রাণীরের প্রতি ভালোবাসা প্রকাশে মস্তিষ্কের সামাজিক গতিবিধি সংশ্লিষ্ট অংশগুলো বেশি সক্রিয় থাকে পোষা প্রাণীর মালিকদের ক্ষেত্রে, যাদের পোষা প্রাণী নেই তাদের ক্ষেত্রে নয়। এমনকি গবেষকরা মস্তিষ্কের গতিবিধি দেখেই শনাক্ত করতে পেরেছেন, অংশ নেওয়া ব্যক্তিদের কেউ পোষা প্রাণীর মালিক কি না। গবেষণাটি প্রকাশ পেয়েছে অলাভজনক সাইট ‘সেরেব্রাল করটেক্স’-এ। এর যোগসূত্র আছে একই গবেষণা দলের আগের এক গবেষণার সঙ্গে, যেখানে কীভাবে মানবদেহে ভালোবাসা অনুভূত হয়, তা খতিয়ে দেখা হয়েছিল।

আজকের প্রত্যাশা/কেএমএএ

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

ডিসেম্বর ধরেই নির্বাচনের সব ধরনের প্রস্তুতি নিচ্ছে ইসি

নতুন গবেষণায় দেখা গেল মস্তিষ্কে ‘ভালোবাসার ম্যাপ’

আপডেট সময় : ০১:২৪:১৩ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪

মানব মস্তিষ্কে ভালোবাসা কীভাবে কাজ করে, তা উঠে এসেছে সাম্প্রতিক এক গবেষণায়। গবেষণাটি চালিয়েছেন ফিনল্যান্ডে অবস্থিত ‘আলটো ইউনিভার্সিটি’র গবেষকরা, যেখানে আধুনিক ইমেজিং পদ্ধতি ব্যবহার করে তারা বিভিন্ন ভালোবাসার ধরন খুঁজে পেয়েছেন। এর মধ্যে রয়েছে রোমান্টিক, মা বাবার প্রতি এমনকি পোষা প্রাণী বা প্রকৃতির প্রতি ভালোবাসাও, যেগুলো মানব মস্তিষ্কের বিভিন্ন অংশকে সক্রিয় করে তোলে। এ গবেষণায় এমন ৫৫ জন অভিভাবক অংশ নেন, যাদের দাম্পত্য সম্পর্ক ভালোবাসার। গবেষণাটিতে অংশগ্রহণকারীদেরকে বিভিন্ন সহজ, নিত্যদিনের প্রেক্ষাপট কল্পনা করতে বলা হয়, যেগুলো থেকে ভালোবাসার অনুভূতির উদ্রেক ঘটে। উদাহরণ হিসেবে, নবজাতক সন্তানকে প্রথমবারের মতো দেখা। আর তারা যখন এইসব প্রেক্ষাপট কল্পনা করেছেন, তখন তাদের মস্তিষ্কের গতিবিধি মনিটরিং করেছিল ‘ফাংশনাল ম্যাগনেটিক রেসোনেন্স ইমেজিং (এফএমআরআই)’ নামের যন্ত্রটি। গবেষকরা এতে খুঁজে পান, সব ধরনের ভালোবাসা সংশ্লিষ্ট গতিবিধির উদ্রেক ঘটে মস্তিষ্কের বিভিন্ন সুনির্দিষ্ট অংশ থেকে, বিশেষ করে যেসব অংশের যোগসূত্র আছে সামাজিক যোগাযোগ ও মানসিক প্রক্রিয়াকরণের সঙ্গে। তবে, মস্তিষ্কের এমন গতিবিধির তীব্রতা সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির ভালোবাসার ধরনের ভিত্তিতে ভিন্ন হয়ে থাকে। উদাহরণ হিসেবে, মা বাবার প্রতি ভালোবাসার বহিঃপ্রকাশের বেলায় মস্তিষ্কের গতিবিধি সবচেয়ে তীব্র, বিশেষ করে মস্তিষ্কের ‘রিওয়ার্ড সিস্টেম’-এর মধ্যে থাকা ‘স্ট্রিয়াটাম’ নামের অংশটিতে। অন্যান্য ধরনের ভালবাসার তুলনায়, মা বাবার প্রতি ভালোবাসার কথা চিন্তা করার সময় মস্তিষ্কের গভীরে থাকা এ অংশটি সবচেয়ে বেশি আলোকিত হয়ে ওঠে। এর সবচেয়ে কাছাকাছি আছে প্রেমের অনুভূতি, যা মস্তিষ্কে থাকা বিভিন্ন ‘রিওয়ার্ড সেন্টার’কে আরও জোরালোভাবে সক্রিয় করে তোলে। তবে, এ গবেষণায় যে রোমাঞ্চকর বিষয়টি লক্ষ্য করা গেছে, তা হল, মস্তিষ্কের মধ্যে অপরিচিত ব্যক্তিকে ভালোবাসার প্রবণতা ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের তুলনায় কম। অন্যদিকে, প্রকৃতির প্রতি ভালোবাসা মস্তিষ্কের রিওয়ার্ড সিস্টেম ও ভিজুয়াল প্রসেসিং উভয় ক্ষেত্রকে উদ্দীপিত করলেও তা মস্তিষ্কের সামাজিক গতিবিধি সংশ্লিষ্ট অংশে তেমন সক্রিয় নয়। এর মধ্যে আরেকটি চমকপ্রদ অনুসন্ধান ছিল পোষা প্রাণীর প্রতি ভালোবাসার বিষয়টি। গবেষকরা এতে দেখতে পান, পোষা প্রাণীর প্রতি ভালোবাসা অনেকটা মানুষকে ভালোবাসার মতো হলেও এতে একটি বিষয় লক্ষণীয়। তা হল, পোষা প্রাণীরের প্রতি ভালোবাসা প্রকাশে মস্তিষ্কের সামাজিক গতিবিধি সংশ্লিষ্ট অংশগুলো বেশি সক্রিয় থাকে পোষা প্রাণীর মালিকদের ক্ষেত্রে, যাদের পোষা প্রাণী নেই তাদের ক্ষেত্রে নয়। এমনকি গবেষকরা মস্তিষ্কের গতিবিধি দেখেই শনাক্ত করতে পেরেছেন, অংশ নেওয়া ব্যক্তিদের কেউ পোষা প্রাণীর মালিক কি না। গবেষণাটি প্রকাশ পেয়েছে অলাভজনক সাইট ‘সেরেব্রাল করটেক্স’-এ। এর যোগসূত্র আছে একই গবেষণা দলের আগের এক গবেষণার সঙ্গে, যেখানে কীভাবে মানবদেহে ভালোবাসা অনুভূত হয়, তা খতিয়ে দেখা হয়েছিল।

আজকের প্রত্যাশা/কেএমএএ