ঢাকা ১০:২৩ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৫ মার্চ ২০২৫

গাজায় নিহত প্রায় ২০০, হামলা অব্যাহত ইসরায়েলের

  • আপডেট সময় : ০১:৫২:৫৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৭ মে ২০২১
  • ৮৩ বার পড়া হয়েছে

প্রত্যাশা ডেস্ক : ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরায়েলের রকেট হামলায় মৃত্যুর সংখ্যা প্রায় ২০০ জনে পৌঁছেছে। পাল্টাপাল্টি হামলার অষ্টম দিন রবিবার ইসরায়েলের হামলায় নতুন করে প্রাণ হারিয়েছেন ৪২ জন। আহত হয়েছেন আরও অনেকে।
গতকাল সোমবার সকাল থেকে গাজায় নতুন নতুন স্থানে হামলা শুরু করেছে। এই শত্রুতার দ্রুত অবসান হবে না বলে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর হুমকির কয়েক ঘণ্টা পর ফের হামলা চালাল ইসরায়েল। খবর আল জাজিরার।
গাজায় হামাস প্রধানের বাড়িও গুঁড়িয়ে দিয়েছে ইসরায়েল। আল জাজিরা, এপিসহ আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমের ভবনও গুড়িয়ে দেয়া হয়েছে। ইসরায়েলের হামলায় এখন পর্যন্ত ১৯২ ফিলিস্তিনির মৃত্যু হয়েছে। এদের মধ্যে ৫৮ জন শিশু এবং ৩৪ জন নারী। হামাসের হামলায় অন্তত দশ ইসরায়েলির মৃত্যু হয়েছে। যাদের মধ্যে দুই জন শিশু রয়েছে বলে দাবি করেছে ইসরায়েল। হামাস ও ইসরায়েলের পাল্টাপাল্টি হামলায় উদ্বেগ প্রকাশ করে গত রোববার জরুরি বৈঠকে বসে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ। তবে তারা এ বিষয়ে একমত হতে এবং যৌথ বিবৃতি দিতে ব্যর্থ হয়েছে। গত সপ্তাহে (৭ মে) থেকে জেরুজালেমের মসজিদ আল আকসায় ফিলিস্তিনিদের ওপর হামলা চালায় ইসরায়েল। পরপর তিন দিন ওই হামলায় সাত শতাধিক ফিলিস্তিনি আহত হন। এরপরই ইসরায়েলকে হামলা বন্ধের জন্য আল্টিমেটাম দেয় গাজার নিয়ন্ত্রক হামাস। আল্টিমেটাম পার হলেই ইসরায়েলে হামলা চালায় হামাস। এরপর ইসরায়েল পাল্টা হামলা শুরু করলে দুই পক্ষের মধ্যে যুদ্ধ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।
ফিলিস্তিনিদের জন্য ভয়ংকর এক দিন : ফিলিস্তিনের কর্মকর্তারা বলেছেন, সম্প্রতি ইসরায়েলের সঙ্গে সংঘাত শুরুর পর গত রোববার ছিল ভয়াবহ দিন। গত রোববার ইসরায়েলি বাহিনীর বিমান হামলায় ১৬ নারী, ১০ শিশুসহ ৪২ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে।
ইসরায়েলের বিমান হামলা যেমন অব্যাহত রয়েছে, তেমনি ফিলিস্তিনের রকেট হামলাও অব্যাহত রয়েছে। ইসরায়েলের সেনাবাহিনী বলেছে, ফিলিস্তিনি সশস্ত্র গোষ্ঠী দেশটির বিভিন্ন স্থান লক্ষ্য করে তিন হাজারের বেশি রকেট ছুড়েছে গত এক সপ্তাহে। ফিলিস্তিনিদের হামলায় এ পর্যন্ত দুই শিশুসহ ১০ ইসরায়েলি নিহত হয়েছে।
গত রাতে এক ঘণ্টা ধরে দেড় শতাধিক রকেট বৃষ্টির মতো ছোড়া হয়েছে। জরুরি সহায়তা দল ধ্বংসস্তূপের ভেতর থেকে হতাহত ব্যক্তিদের উদ্ধারের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। গাজা উপত্যকার আল-ওহেদা শহরকে কেন্দ্র করে ৭০টির বেশি রকেট ছোড়া হয়েছে। এতে আবাসিক ভবন, অবকাঠামো ও সড়ক পুরোপুরি বা কোথাও কোথাও আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনের মধ্যে সংঘর্ষের শুরু গত সপ্তাহে। জেরুজালেমের আল-আকসায় পবিত্র জুমাতুল বিদাকে কেন্দ্র করে এ সংঘর্ষের সূত্রপাত। বলা হচ্ছে, বিগত কয়েক বছরের মধ্যে ইসরায়েলি ও ফিলিস্তিনিদের মধ্যে এটাই সবচেয়ে বড় সংঘর্ষের ঘটনা। বড় ধরনের সংঘর্ষের সূচনা হয় গত সোমবার পূর্ব জেরুজালেমে। সেই সংঘর্ষ অব্যাহত রয়েছে। এ পর্যন্ত ইসরায়েলের হামলায় গাজা, পশ্চিম তীরসহ ফিলিস্তিনের বিভিন্ন এলাকায় প্রাণহানি বেড়ে প্রায় ২০০ জন হয়েছে। নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে অন্তত ৫৫টিই শিশু। এ ছাড়া আহত হয়েছে ১ হাজার ২০০ জনের বেশি ফিলিস্তিনি। গতকাল ইসরায়েলি বাহিনীর বিমান হামলায় গাজায় তিনটি ভবন ধসে গেছে। এ হামলা প্রসঙ্গে জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস সতর্ক করে বলেছেন, সংঘর্ষ চলতে থাকলে এ অঞ্চল একটি ‘অনিয়ন্ত্রিত সংকটের’ মধ্যে পড়বে। চলমান এ ‘চূড়ান্ত ভয়ংকর’ সংঘর্ষ দ্রুত থামাতে আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
ইসরায়েলের বিমান হামলার কারণে ফিলিস্তিনে জ্বালানিসংকট দেখা দিয়েছে। এ নিয়ে সতর্কবার্তা উচ্চারণ করেছে জাতিসংঘ। সংস্থাটি বলেছে, এর কারণে ফিলিস্তিনের হাসপাতাল ও অন্য গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাগুলো বিদ্যুৎবিহীন হয়ে পড়বে। এ প্রসঙ্গে জাতিসংঘের মিডল ইস্ট পিস প্রোসেসের ডেপুটি স্পেশাল কো-অর্ডিনেটর লিন হেস্টিংস বিবিসিকে বলেন, তিনি ইসরায়েলের কাছে আহ্বান জানিয়েছিলেন, জাতিসংঘ দেশটির বাইরে থেকে জ্বালানি এনে তা সরবরাহ করুক। কিন্তু ইসরায়েলের কর্তৃপক্ষ বলেছে, এটা নিরাপদ নয়।

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

ছিনতাইয়ের শিকার বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকের বাসায় আসামির ছেলে

গাজায় নিহত প্রায় ২০০, হামলা অব্যাহত ইসরায়েলের

আপডেট সময় : ০১:৫২:৫৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৭ মে ২০২১

প্রত্যাশা ডেস্ক : ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরায়েলের রকেট হামলায় মৃত্যুর সংখ্যা প্রায় ২০০ জনে পৌঁছেছে। পাল্টাপাল্টি হামলার অষ্টম দিন রবিবার ইসরায়েলের হামলায় নতুন করে প্রাণ হারিয়েছেন ৪২ জন। আহত হয়েছেন আরও অনেকে।
গতকাল সোমবার সকাল থেকে গাজায় নতুন নতুন স্থানে হামলা শুরু করেছে। এই শত্রুতার দ্রুত অবসান হবে না বলে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর হুমকির কয়েক ঘণ্টা পর ফের হামলা চালাল ইসরায়েল। খবর আল জাজিরার।
গাজায় হামাস প্রধানের বাড়িও গুঁড়িয়ে দিয়েছে ইসরায়েল। আল জাজিরা, এপিসহ আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমের ভবনও গুড়িয়ে দেয়া হয়েছে। ইসরায়েলের হামলায় এখন পর্যন্ত ১৯২ ফিলিস্তিনির মৃত্যু হয়েছে। এদের মধ্যে ৫৮ জন শিশু এবং ৩৪ জন নারী। হামাসের হামলায় অন্তত দশ ইসরায়েলির মৃত্যু হয়েছে। যাদের মধ্যে দুই জন শিশু রয়েছে বলে দাবি করেছে ইসরায়েল। হামাস ও ইসরায়েলের পাল্টাপাল্টি হামলায় উদ্বেগ প্রকাশ করে গত রোববার জরুরি বৈঠকে বসে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ। তবে তারা এ বিষয়ে একমত হতে এবং যৌথ বিবৃতি দিতে ব্যর্থ হয়েছে। গত সপ্তাহে (৭ মে) থেকে জেরুজালেমের মসজিদ আল আকসায় ফিলিস্তিনিদের ওপর হামলা চালায় ইসরায়েল। পরপর তিন দিন ওই হামলায় সাত শতাধিক ফিলিস্তিনি আহত হন। এরপরই ইসরায়েলকে হামলা বন্ধের জন্য আল্টিমেটাম দেয় গাজার নিয়ন্ত্রক হামাস। আল্টিমেটাম পার হলেই ইসরায়েলে হামলা চালায় হামাস। এরপর ইসরায়েল পাল্টা হামলা শুরু করলে দুই পক্ষের মধ্যে যুদ্ধ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।
ফিলিস্তিনিদের জন্য ভয়ংকর এক দিন : ফিলিস্তিনের কর্মকর্তারা বলেছেন, সম্প্রতি ইসরায়েলের সঙ্গে সংঘাত শুরুর পর গত রোববার ছিল ভয়াবহ দিন। গত রোববার ইসরায়েলি বাহিনীর বিমান হামলায় ১৬ নারী, ১০ শিশুসহ ৪২ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে।
ইসরায়েলের বিমান হামলা যেমন অব্যাহত রয়েছে, তেমনি ফিলিস্তিনের রকেট হামলাও অব্যাহত রয়েছে। ইসরায়েলের সেনাবাহিনী বলেছে, ফিলিস্তিনি সশস্ত্র গোষ্ঠী দেশটির বিভিন্ন স্থান লক্ষ্য করে তিন হাজারের বেশি রকেট ছুড়েছে গত এক সপ্তাহে। ফিলিস্তিনিদের হামলায় এ পর্যন্ত দুই শিশুসহ ১০ ইসরায়েলি নিহত হয়েছে।
গত রাতে এক ঘণ্টা ধরে দেড় শতাধিক রকেট বৃষ্টির মতো ছোড়া হয়েছে। জরুরি সহায়তা দল ধ্বংসস্তূপের ভেতর থেকে হতাহত ব্যক্তিদের উদ্ধারের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। গাজা উপত্যকার আল-ওহেদা শহরকে কেন্দ্র করে ৭০টির বেশি রকেট ছোড়া হয়েছে। এতে আবাসিক ভবন, অবকাঠামো ও সড়ক পুরোপুরি বা কোথাও কোথাও আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনের মধ্যে সংঘর্ষের শুরু গত সপ্তাহে। জেরুজালেমের আল-আকসায় পবিত্র জুমাতুল বিদাকে কেন্দ্র করে এ সংঘর্ষের সূত্রপাত। বলা হচ্ছে, বিগত কয়েক বছরের মধ্যে ইসরায়েলি ও ফিলিস্তিনিদের মধ্যে এটাই সবচেয়ে বড় সংঘর্ষের ঘটনা। বড় ধরনের সংঘর্ষের সূচনা হয় গত সোমবার পূর্ব জেরুজালেমে। সেই সংঘর্ষ অব্যাহত রয়েছে। এ পর্যন্ত ইসরায়েলের হামলায় গাজা, পশ্চিম তীরসহ ফিলিস্তিনের বিভিন্ন এলাকায় প্রাণহানি বেড়ে প্রায় ২০০ জন হয়েছে। নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে অন্তত ৫৫টিই শিশু। এ ছাড়া আহত হয়েছে ১ হাজার ২০০ জনের বেশি ফিলিস্তিনি। গতকাল ইসরায়েলি বাহিনীর বিমান হামলায় গাজায় তিনটি ভবন ধসে গেছে। এ হামলা প্রসঙ্গে জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস সতর্ক করে বলেছেন, সংঘর্ষ চলতে থাকলে এ অঞ্চল একটি ‘অনিয়ন্ত্রিত সংকটের’ মধ্যে পড়বে। চলমান এ ‘চূড়ান্ত ভয়ংকর’ সংঘর্ষ দ্রুত থামাতে আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
ইসরায়েলের বিমান হামলার কারণে ফিলিস্তিনে জ্বালানিসংকট দেখা দিয়েছে। এ নিয়ে সতর্কবার্তা উচ্চারণ করেছে জাতিসংঘ। সংস্থাটি বলেছে, এর কারণে ফিলিস্তিনের হাসপাতাল ও অন্য গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাগুলো বিদ্যুৎবিহীন হয়ে পড়বে। এ প্রসঙ্গে জাতিসংঘের মিডল ইস্ট পিস প্রোসেসের ডেপুটি স্পেশাল কো-অর্ডিনেটর লিন হেস্টিংস বিবিসিকে বলেন, তিনি ইসরায়েলের কাছে আহ্বান জানিয়েছিলেন, জাতিসংঘ দেশটির বাইরে থেকে জ্বালানি এনে তা সরবরাহ করুক। কিন্তু ইসরায়েলের কর্তৃপক্ষ বলেছে, এটা নিরাপদ নয়।