ঢাকা ০২:৫৬ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৫ জানুয়ারী ২০২৫, ২ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বহির্বিভাগ ৩ ঘণ্টা খোলা রেখে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা চিকিৎসকদের

  • আপডেট সময় : ০২:৫০:১৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ২ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  • ১০৬ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক : চিকিৎসকদের ওপর হামলার ঘটনায় দেশের সব সরকারি হাসপাতালের বহির্বিভাগ তিন ঘণ্টা খোলা রেখে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসকেরা। ঢাকা মেডিকেলের নিউরো সার্জারি বিভাগের আবাসিক চিকিৎসক মো. আবদুল আহাদ গতকাল সোমবার বিকালে এক সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দিয়েছেন। তিনি বলেন, সকাল ১০টা থেকে বেলা ১টা পর্যন্ত বহির্বিভাগ খোলা থাকবে। বাকি সময় চিকিৎসকরা কর্মবিরতি পালন করবেন। হাসপাতালে অন্যান্য চিকিৎসাসেবা যথারীতি চলবে। কর্মসূচি শিথিলের আগে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালকের কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে বৈঠক করেন চিকিৎসকরা। এরপর বিকাল ৪টার দিকে আন্দোলনকারী চিকিৎসকরা সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন। আবদুল আহাদ বলেন, ঢাকা মেডিকেলে হামলার ঘটনায় একজন, শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসকদের ওপর হামলাকারীদের মধ্যে একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, মুগদা জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়েছে। এজন্য কর্মসূচি শিথিল করেছেন তারা। হামলাকারীদের গ্রেপ্তারের ঘটনায় স্বাস্থ্য উপদেষ্টাকে ধন্যবাদ জানিয়ে তিনি বলেন, “আমরা গতকাল (রোববার) সন্ধ্যার পর থেকে ঢাকা মেডিকেলসহ সারা দেশের হাসপাতালে জরুরি বিভাগে সেবা দেওয়া শুরু করেছি।
“বাংলাদেশের রোগীদের স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করতে সীমিত পরিসরে আউটডোর সেবা চালু রাখব। আগামীকাল সকাল ১০টা থেকে দুপুর একটা পর্যন্ত আউটডোর খোলা রাখব। সকাল ৮টা থেকে ১০টা পর্যন্ত অবস্থান কর্মসূচি চলবে।”
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে শনিবার রাতে তিন দফায় চিকিৎসকদের ওপর হামলা ও মারধরের প্রতিবাদে রাতেই কাজ বন্ধ করে দেন ইন্টার্ন চিকিৎসকরা। তখন থেকেই সেখানে চিকিৎসা সেবার অচলাবস্থা শুরু। ঢাকা মেডিকেলের অন্য চিকিৎসকরাও ইন্টার্ন চিকিৎসকদের এই কর্মবিরতিতে সংহতি জানান। চিকিৎসকেরা হামলাকারীদের গ্রেপ্তার ও শাস্তির পাশাপাশি সারা দেশে চিকিৎসক ও রোগীদের নিরাপত্তা নিশ্চিতের দাবি জানান।
রোববার দুপুরে তারা সারা দেশের সব হাসপাতালে ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ কর্মসূচি ঘোষণা করেন। সঙ্গে ছয় দফা দাবি তুলে ধরেন। এরপর সন্ধ্যায় সংকট নিরসনে হাসপাতালের ছয় চিকিৎসকের সঙ্গে বৈঠকে বসেন স্বাস্থ্য উপদেষ্টা নূরজাহান বেগম। উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকে কিছু শর্ত জুড়ে দিয়ে কর্মবিরতি স্থগিতের ঘোষণা দেন চিকিৎসকরা। এসব শর্ত না মানা হলে গতকাল সোমবার সন্ধ্যা থেকে ‘শাটডাউন’ কর্মসূচিতে ফিরবেন বলে তারা হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন। তবে এ কর্মসূচিতে না গিয়ে গতকাল সোমবার বিকালে সংবাদ সম্মেলনে তিন ঘণ্টা বহির্বিভাগ খোলা ও অন্যান্য চিকিৎসাসেবা চালিয়ে যাওয়ার পাশাপাশি তারা আন্দোলন-কর্মসূচি পালনের কথা জানিয়েছেন।
নিউরো সার্জারি বিভাগের আবাসিক চিকিৎসক মো. আবদুল আহাদ বলেন, “আওয়ামী লীগ সরকারের দোসররা হাসপাতালগুলোতে অস্থিরতা সৃষ্টির ষড়যন্ত্র করছে। তাই আমরা আশঙ্কা করছি, অন্যান্য মেডিকেল কলেজ এবং অন্যান্য জেলা, উপজেলা হাসপাতালে নিরাপত্তা নিশ্চিত না করলে এ ধরনের আক্রমণ আবারও হতে পারে। “যারা এখনও গ্রেপ্তার হয়নি তাদের অতি দ্রুত গ্রেপ্তার করে শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে। এ ছাড়া স্বাস্থ্য সুরক্ষা আইন এবং চিকিৎসক, স্বাস্থ্যকর্মীদের নিরাপত্তার জন্য স্বাস্থ্য পুলিশ নিয়োগের খসড়া করার দাবি জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।”

 

 

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

বহির্বিভাগ ৩ ঘণ্টা খোলা রেখে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা চিকিৎসকদের

আপডেট সময় : ০২:৫০:১৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ২ সেপ্টেম্বর ২০২৪

নিজস্ব প্রতিবেদক : চিকিৎসকদের ওপর হামলার ঘটনায় দেশের সব সরকারি হাসপাতালের বহির্বিভাগ তিন ঘণ্টা খোলা রেখে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসকেরা। ঢাকা মেডিকেলের নিউরো সার্জারি বিভাগের আবাসিক চিকিৎসক মো. আবদুল আহাদ গতকাল সোমবার বিকালে এক সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দিয়েছেন। তিনি বলেন, সকাল ১০টা থেকে বেলা ১টা পর্যন্ত বহির্বিভাগ খোলা থাকবে। বাকি সময় চিকিৎসকরা কর্মবিরতি পালন করবেন। হাসপাতালে অন্যান্য চিকিৎসাসেবা যথারীতি চলবে। কর্মসূচি শিথিলের আগে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালকের কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে বৈঠক করেন চিকিৎসকরা। এরপর বিকাল ৪টার দিকে আন্দোলনকারী চিকিৎসকরা সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন। আবদুল আহাদ বলেন, ঢাকা মেডিকেলে হামলার ঘটনায় একজন, শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসকদের ওপর হামলাকারীদের মধ্যে একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, মুগদা জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়েছে। এজন্য কর্মসূচি শিথিল করেছেন তারা। হামলাকারীদের গ্রেপ্তারের ঘটনায় স্বাস্থ্য উপদেষ্টাকে ধন্যবাদ জানিয়ে তিনি বলেন, “আমরা গতকাল (রোববার) সন্ধ্যার পর থেকে ঢাকা মেডিকেলসহ সারা দেশের হাসপাতালে জরুরি বিভাগে সেবা দেওয়া শুরু করেছি।
“বাংলাদেশের রোগীদের স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করতে সীমিত পরিসরে আউটডোর সেবা চালু রাখব। আগামীকাল সকাল ১০টা থেকে দুপুর একটা পর্যন্ত আউটডোর খোলা রাখব। সকাল ৮টা থেকে ১০টা পর্যন্ত অবস্থান কর্মসূচি চলবে।”
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে শনিবার রাতে তিন দফায় চিকিৎসকদের ওপর হামলা ও মারধরের প্রতিবাদে রাতেই কাজ বন্ধ করে দেন ইন্টার্ন চিকিৎসকরা। তখন থেকেই সেখানে চিকিৎসা সেবার অচলাবস্থা শুরু। ঢাকা মেডিকেলের অন্য চিকিৎসকরাও ইন্টার্ন চিকিৎসকদের এই কর্মবিরতিতে সংহতি জানান। চিকিৎসকেরা হামলাকারীদের গ্রেপ্তার ও শাস্তির পাশাপাশি সারা দেশে চিকিৎসক ও রোগীদের নিরাপত্তা নিশ্চিতের দাবি জানান।
রোববার দুপুরে তারা সারা দেশের সব হাসপাতালে ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ কর্মসূচি ঘোষণা করেন। সঙ্গে ছয় দফা দাবি তুলে ধরেন। এরপর সন্ধ্যায় সংকট নিরসনে হাসপাতালের ছয় চিকিৎসকের সঙ্গে বৈঠকে বসেন স্বাস্থ্য উপদেষ্টা নূরজাহান বেগম। উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকে কিছু শর্ত জুড়ে দিয়ে কর্মবিরতি স্থগিতের ঘোষণা দেন চিকিৎসকরা। এসব শর্ত না মানা হলে গতকাল সোমবার সন্ধ্যা থেকে ‘শাটডাউন’ কর্মসূচিতে ফিরবেন বলে তারা হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন। তবে এ কর্মসূচিতে না গিয়ে গতকাল সোমবার বিকালে সংবাদ সম্মেলনে তিন ঘণ্টা বহির্বিভাগ খোলা ও অন্যান্য চিকিৎসাসেবা চালিয়ে যাওয়ার পাশাপাশি তারা আন্দোলন-কর্মসূচি পালনের কথা জানিয়েছেন।
নিউরো সার্জারি বিভাগের আবাসিক চিকিৎসক মো. আবদুল আহাদ বলেন, “আওয়ামী লীগ সরকারের দোসররা হাসপাতালগুলোতে অস্থিরতা সৃষ্টির ষড়যন্ত্র করছে। তাই আমরা আশঙ্কা করছি, অন্যান্য মেডিকেল কলেজ এবং অন্যান্য জেলা, উপজেলা হাসপাতালে নিরাপত্তা নিশ্চিত না করলে এ ধরনের আক্রমণ আবারও হতে পারে। “যারা এখনও গ্রেপ্তার হয়নি তাদের অতি দ্রুত গ্রেপ্তার করে শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে। এ ছাড়া স্বাস্থ্য সুরক্ষা আইন এবং চিকিৎসক, স্বাস্থ্যকর্মীদের নিরাপত্তার জন্য স্বাস্থ্য পুলিশ নিয়োগের খসড়া করার দাবি জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।”