ঢাকা ০৯:২৯ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৮ জুন ২০২৫

বিশিষ্ট সাহিত্যিক ও অনুবাদক শেখ আবদুল হাকিম আর নেই

  • আপডেট সময় : ১২:০৮:৫৫ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৮ অগাস্ট ২০২১
  • ৭৮ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক : দেশের রহস্য রোমাঞ্চ উপন্যাসের অন্যতম প্রধান লেখক ও অনুবাদক শেখ আবদুল হাকিম আর নেই। আজ শনিবার বেলা একটায় তিনি রাজধানীর মাদারটেকের নান্দিপাড়ায় বড় মেয়ের বাড়িতে ইন্তেকাল করেছেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। তাঁর বয়স হয়েছিল ৭৫ বছর।
শেখ আবদুল হাকিম মৃত্যুকালে ছেলে শেখ পুলক হাসান, দুই মেয়ে শেখ সাদিয়া হাকিম, শেখ আপালা হাকিমসহ আত্মীয়স্বজন এবং সারা দেশে তাঁর লেখার অসংখ্য গুণমুগ্ধ পাঠক রেখে গেছেন। তাঁর স্ত্রী ফরিদা বেগম ছয় বছর আগে ইন্তেকাল করেছেন। আপালা হাকিম জানান, তাঁর বাবা দীর্ঘদিন থেকেই শ্বাসকষ্টের রোগী ছিলেন। সম্প্রতি রোগের তীব্রতা বেড়ে গিয়েছিল। গত মাসে তাঁকে চিকিৎসার জন্য বক্ষব্যাধি হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছিল। প্রায় মাসখানেক হাসপাতালে চিকিৎসা নেওয়ার পরে অবস্থার কিছুটা উন্নতি হয়। বাড়িতে আনার পর আবার গত দু–এক দিন থেকে শ্বাসকষ্ট কিছুটা বেড়েছিল। শনিবার সকালের দিকেও কথাবার্তা বলেছেন। তবে দুপুরের দিকে অনেকটা আকস্মিকভাবেই দ্রুত অবস্থা খারাপ হয়ে যায়। চিকিৎসার ব্যবস্থা নেওয়ার আগেই তিনি ইন্তেকাল করেন।
শনিবার বাদ মাগরিব নন্দিপাড়া মসজিদে তাঁর জানাজা সম্পন্ন হয়। এরপর নন্দিপাড়া কবরস্থানেই তাঁকে দাফন করা হয়।
পারিবারিক সূত্র জানায়, শেখ আবদুল হাকিমের জন্ম ১৯৪৬ সালে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের হুগলি জেলায়। তাঁর বাবার নাম শেখ আবদুর রফিক। তাঁরা পাঁচ ভাই, তিন বোন। দেশভাগের পর তাঁরা ঢাকায় চলে আসেন। শেখ আবদুল হাকিম গত শতকের ষাটের দশকের মাঝামাঝি থেকে দেশের অন্যতম প্রকাশনা সংস্থা সেবা প্রকাশনীর সঙ্গে যুক্ত হয়ে পেশাদার লেখক হিসেবে কাজ করছিলেন। এই প্রকাশনা প্রতিষ্ঠানের জনপ্রিয় রহস্য রোমাঞ্চ উপন্যাস সিরিজ ‘কুয়াশা’ ও ‘মাসুদ রানার’ অনেক বইয়ের নেপথ্য লেখক ছিলেন তিনি। এ ছাড়া নিজ নামেও তিনি এই ধারার বহু জনপ্রিয় রোমাঞ্চ উপন্যাসের অনুবাদ এবং মৌলিক উপন্যাস রচনা করে পাঠকসমাজে বিপুল জনপ্রিয়তা লাভ করেন। বিশেষ করে তাঁর অনুবাদে মারিও পুজোর গডফাদার এ দেশের পাঠক সমাজে অত্যন্ত জনপ্রিয়তা লাভ করে।
বইয়ের লেখক সম্মানি নিয়ে একটা পর্যায়ে সেবা প্রকাশনীর প্রকাশক কাজী আনোয়ার হোসেনের সঙ্গে শেখ আবদুল হাকিমের মতান্তর ঘটে। এই নিয়ে তাঁদের প্রায় সাড়ে চার দশকের প্রীতিময় সম্পর্কের অবনতি হয়। বিষয়টি অদালত পর্যন্ত গড়ায়। শেখ আবদুল হাকিম ‘কুয়াশা সিরিজ’–এর ৫০টি বই ও ‘মাসুদ রানা সিরিজ’–এর ২৬০ বইয়ের লেখক দাবি করে কপিরাইট অফিসে অভিযোগ দায়ের করেন। গত বছর জুনে কপিরাইট অফিস তাঁর দাবির পক্ষে রায় দিয়েছিল। এই রায়ের পরিপ্রেক্ষিতে প্রকাশকের পক্ষ থেকে উচ্চ আদালতে আপিল করা হয়। সেবা প্রকাশনী থেকে বেরিয়ে এসে শেখ আবদুল হাকিম দেশের বিভিন্ন প্রকাশনা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। নিয়মিত অনুবাদ ও মৌলিক গ্রন্থ রচনার কাজ করেছেন। তাঁর প্রকাশিত গ্রন্থের সংখ্যা বিপুল।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

বিশিষ্ট সাহিত্যিক ও অনুবাদক শেখ আবদুল হাকিম আর নেই

আপডেট সময় : ১২:০৮:৫৫ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৮ অগাস্ট ২০২১

নিজস্ব প্রতিবেদক : দেশের রহস্য রোমাঞ্চ উপন্যাসের অন্যতম প্রধান লেখক ও অনুবাদক শেখ আবদুল হাকিম আর নেই। আজ শনিবার বেলা একটায় তিনি রাজধানীর মাদারটেকের নান্দিপাড়ায় বড় মেয়ের বাড়িতে ইন্তেকাল করেছেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। তাঁর বয়স হয়েছিল ৭৫ বছর।
শেখ আবদুল হাকিম মৃত্যুকালে ছেলে শেখ পুলক হাসান, দুই মেয়ে শেখ সাদিয়া হাকিম, শেখ আপালা হাকিমসহ আত্মীয়স্বজন এবং সারা দেশে তাঁর লেখার অসংখ্য গুণমুগ্ধ পাঠক রেখে গেছেন। তাঁর স্ত্রী ফরিদা বেগম ছয় বছর আগে ইন্তেকাল করেছেন। আপালা হাকিম জানান, তাঁর বাবা দীর্ঘদিন থেকেই শ্বাসকষ্টের রোগী ছিলেন। সম্প্রতি রোগের তীব্রতা বেড়ে গিয়েছিল। গত মাসে তাঁকে চিকিৎসার জন্য বক্ষব্যাধি হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছিল। প্রায় মাসখানেক হাসপাতালে চিকিৎসা নেওয়ার পরে অবস্থার কিছুটা উন্নতি হয়। বাড়িতে আনার পর আবার গত দু–এক দিন থেকে শ্বাসকষ্ট কিছুটা বেড়েছিল। শনিবার সকালের দিকেও কথাবার্তা বলেছেন। তবে দুপুরের দিকে অনেকটা আকস্মিকভাবেই দ্রুত অবস্থা খারাপ হয়ে যায়। চিকিৎসার ব্যবস্থা নেওয়ার আগেই তিনি ইন্তেকাল করেন।
শনিবার বাদ মাগরিব নন্দিপাড়া মসজিদে তাঁর জানাজা সম্পন্ন হয়। এরপর নন্দিপাড়া কবরস্থানেই তাঁকে দাফন করা হয়।
পারিবারিক সূত্র জানায়, শেখ আবদুল হাকিমের জন্ম ১৯৪৬ সালে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের হুগলি জেলায়। তাঁর বাবার নাম শেখ আবদুর রফিক। তাঁরা পাঁচ ভাই, তিন বোন। দেশভাগের পর তাঁরা ঢাকায় চলে আসেন। শেখ আবদুল হাকিম গত শতকের ষাটের দশকের মাঝামাঝি থেকে দেশের অন্যতম প্রকাশনা সংস্থা সেবা প্রকাশনীর সঙ্গে যুক্ত হয়ে পেশাদার লেখক হিসেবে কাজ করছিলেন। এই প্রকাশনা প্রতিষ্ঠানের জনপ্রিয় রহস্য রোমাঞ্চ উপন্যাস সিরিজ ‘কুয়াশা’ ও ‘মাসুদ রানার’ অনেক বইয়ের নেপথ্য লেখক ছিলেন তিনি। এ ছাড়া নিজ নামেও তিনি এই ধারার বহু জনপ্রিয় রোমাঞ্চ উপন্যাসের অনুবাদ এবং মৌলিক উপন্যাস রচনা করে পাঠকসমাজে বিপুল জনপ্রিয়তা লাভ করেন। বিশেষ করে তাঁর অনুবাদে মারিও পুজোর গডফাদার এ দেশের পাঠক সমাজে অত্যন্ত জনপ্রিয়তা লাভ করে।
বইয়ের লেখক সম্মানি নিয়ে একটা পর্যায়ে সেবা প্রকাশনীর প্রকাশক কাজী আনোয়ার হোসেনের সঙ্গে শেখ আবদুল হাকিমের মতান্তর ঘটে। এই নিয়ে তাঁদের প্রায় সাড়ে চার দশকের প্রীতিময় সম্পর্কের অবনতি হয়। বিষয়টি অদালত পর্যন্ত গড়ায়। শেখ আবদুল হাকিম ‘কুয়াশা সিরিজ’–এর ৫০টি বই ও ‘মাসুদ রানা সিরিজ’–এর ২৬০ বইয়ের লেখক দাবি করে কপিরাইট অফিসে অভিযোগ দায়ের করেন। গত বছর জুনে কপিরাইট অফিস তাঁর দাবির পক্ষে রায় দিয়েছিল। এই রায়ের পরিপ্রেক্ষিতে প্রকাশকের পক্ষ থেকে উচ্চ আদালতে আপিল করা হয়। সেবা প্রকাশনী থেকে বেরিয়ে এসে শেখ আবদুল হাকিম দেশের বিভিন্ন প্রকাশনা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। নিয়মিত অনুবাদ ও মৌলিক গ্রন্থ রচনার কাজ করেছেন। তাঁর প্রকাশিত গ্রন্থের সংখ্যা বিপুল।