ঢাকা ০২:৩০ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ০৬ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

জামায়াত-শিবির নিষিদ্ধে আইনি দিক দেখা হচ্ছে: ওবায়দুল কাদের

  • আপডেট সময় : ০২:২৪:৩৭ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩০ জুলাই ২০২৪
  • ৬৭ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক : স্বাধীনতার বিরোধিতাকারী জামায়াতে ইসলামী এবং দলটির ছাত্রসংগঠন ইসলামী ছাত্রশিবিরকে নিষিদ্ধ করার প্রশ্নে আইনি দিক দেখার কথা জানিয়েছেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেছেন, “আপনারা জানেন ১৪ দলের সভায় জামায়াত-শিবিরের রাজনীতি নিষিদ্ধ করার বিষয়ে সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত হয়েছে, যা আমরা গতরাতে গণমাধ্যমকে অবহিত করেছি।
“এখন এ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করবে সরকার। সেটার প্রক্রিয়া কী হবে, সেটার আইনগত দিক দেখেশুনে সরকার শিগগরিই পরবর্তী পদক্ষেপ নেবে। কারণ আমরা আইনগত দিকটি ভালভাবে দেখে নিতে চাই; যাতে কোনো ফাঁকফোকর দিয়ে স্বাধীন বাংলাদেশে এ অপশক্তি আর কোনো সুযোগ না পায়।”
গতকাল মঙ্গলবার আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে দলের যৌথসভার শুরুতে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা বলেন।
ধর্মভিত্তিক দল জামায়াতের রাজনীতি বাংলাদেশে নিষিদ্ধের দাবি দীর্ঘদিনের। আওয়ামী লীগ সরকার ২০০৯ সালে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের উদ্যোগ নেওয়ার পর এই দাবি আরো জোরালো হয়। তবে গত ১৫ বছরে কার্যকর কোনো উদ্যোগ সরকারের তরফে নেওয়া হয়নি। এবার কোটাবিরোধী আন্দোলনকে সহিংস রূপ দেওয়ার পেছনে বিএনপি ও জামায়াতকে দায়ী করে আসছেন ক্ষমতাসীনরা। তার মধ্যেই সোমবার সন্ধ্যায় ১৪ দলের বৈঠকে জামায়াত ও শিবিরকে নিষিদ্ধের সিন্ধান্ত নেওয়া হয়। ওবায়দুল কাদের বলেন, “জামায়াত-শিবিরের রাজনীতি নিষিদ্ধ করার জন্য দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, সামাজিক সংগঠন, মুক্তিযোদ্ধা ও নাগরিক সমাজ দাবি করে আসছে। শহীদ জননী জাহানারা ইমামের নেতৃত্বে একাত্তরে ঘাতক-দালল নির্মূল কমিটির গঠিত গণআদালত ও পরবর্তীতে গণজাগরণ মঞ্চের দাবিও ছিল জামায়াত-শিবিরকে নিষিদ্ধ করা।”
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, “জামায়াতের নিবন্ধন বাতিল করে হাই কোর্টের রায় দেশের সর্বোচ্চ আদালত বহাল রেখেছে। দেশের গণপ্রতিনিধিত্ব আইন অনুযায়ী, নির্বাচন কমিশনের নিবন্ধন না থাকলে কোনো রাজনৈতিক দল নির্বাচনে অংশ নিতে পারে না। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে এমন নজির আছে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরে জার্মানিতে হিটলারের নাৎসি বাহিনী রাজনীতি করতে পারে না।” তিনি বলেন, “আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আদালতে জামায়াতকে দল হিসেবে যুদ্ধাপরাধের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বলে- উল্লেখ আছে। মূলত দলটি ধর্মের মুখোশ পড়া সাম্প্রদায়িক অপশক্তি। নানান সময়ে তাদের দ্বারা প্রকাশ্য ও গোপনে নানা অপতৎপরতা ও নাশকতা, ষড়যন্ত্র, রাষ্ট্রবিরোধী কর্মকাণ্ডে সম্পৃক্ততার প্রমাণ পাওয়া গেছে; দেশের জনগণও সেটা অবহিত। “প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে হওয়া ১৪ দলীয় জোটের বৈঠকে নেতারা তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করে জামায়াতের অতীত ও বর্তমান কর্মকাণ্ড; বিভিন্ন সময় দেওয়া আদালতের রায় বিবেচনা করে তাদের রাজনীতি নিষিদ্ধে ১৪ দল সর্বসম্মতভাবে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে।” কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে সংঘাত-সহিংসতায় নিহতদের স্মরণে সরকারি উদ্যোগে দেশজুড়ে শোক পালন নিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, “আজকের দিনটি ঠিক রাষ্ট্রীয় শোক দিবস নয়, এটা সরকারিভাবে শোক পালন; জাতীয় বা রাষ্ট্রীয় নয়।”
“১৫ আগস্টে যারা শহীদ হয়েছে, তাদের স্মরণে এই শোকের মাস যথাযথ মর্যাদা ও ভাবগাম্ভীর্যের সাথে পালন করে থাকি। এর আগেই গত ওয়ার্কিং কমিটির সভায় জাতীয় শোক দিবসে ও শোকের মাসে আমাদের কর্মসূচি সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রীর সভাপতিত্বে আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি। “সেই সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, আমাদের মহানগর ও সহযোগী সংগঠন নিজেদের মাঝে সভা করে কর্মসূচি নির্ধারণ করেছে।”
নিরীহ ব্যক্তিকে হয়রানি করা যাবে না: সরকার অসহায় শিক্ষার্থীদের আটক ও নির্যাতন করছে- বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের এমন বক্তব্যকে ‘নির্লজ্জ মিথ্যাচার বলে’ বর্ণনা করেন ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, “আইন প্রয়োগকারী সংস্থা ভিডিও ফুটেজ দেখে অপরাধীদের চিহিৃত করছে। আমাদের জানা মতে, কোনো নিরাপরাধ ব্যক্তিকে আটক করা হচ্ছে না। নিরীহ ও সাধারণ শিক্ষার্থী যাতে হয়রানির শিকার না হয়- সেটার জন্য প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা রয়েছে।”
আওয়ামী লীগ নিজেদের আচার-আচরণে দায়িত্বশীলতাকে গুরুত্ব দেয় বলে মন্তব্য করেন দলটির সাধারণ সম্পাদক। “গণগ্রেপ্তারের নামে কোনো নিরাপরাধ ব্যক্তি যাতে অপরাধী সাব্যস্ত না হয়, গ্রেপ্তার না হয়- সেই ব্যাপারে আমাদের দলের সিদ্ধান্ত রয়েছে। কোনো নিরীহ ব্যক্তিকে কোনো অবস্থায় হয়রানি করা যাবে না। গ্রেপ্তারের সংখ্যা বেশি দেখানোর জন্য কেউ যাতে অতি উৎসাহী হয়ে নিরাপরাধী কাউকে ধরে না ফেলেন। এটা যাতে কোনো অবস্থায় না হয়, সেই ব্যাপারে আমরা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।” কাদের বলেন, “মির্জা ফখরুলের কাছে সবাই নিরপরাধ, সবাই অসহায়; তাহলে প্রশ্ন- এই ধ্বংসযজ্ঞ চালাল কারা? কারা অগ্নিসংযোগ করল, রাষ্ট্রের সম্পদ ভষ্মীভূত করল, বাংলাদেশে নারকীয় ধ্বংসযজ্ঞ কারা করেছে?
“আজকে কথায় কথায় সরকার ও আওয়ামী লীগকে দোষারোপ করা হয়। আমি পরিষ্কার বলতে চাই, এ ঘটনা প্রবাহে আমরা আক্রান্ত, আক্রমণকারী ছিলাম না। এখন অপবাদ দেওয়া হচ্ছে। আমাদের হাতে অস্ত্র ছিল না।”
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, “তাহলে কারা এই নারকীয় বর্বরতার আশ্রয় নিয়েছে? তাদের সঙ্গে আপনি (ফখরুল) জাতীয় ঐক্য করছেন- যারা কারাগারের অস্ত্র লুট করেছে, তারা কি আপনার বন্ধু ও দোসর? সেজন্য আজকে ইগনোর করছেন।” মির্জা ফখরুলের উদ্দেশে কাদের বলেন, “সব তথ্য আমাদের কাছে আছে। কোথা থেকে নির্দেশ এসেছে, উসকানি এসেছে, কোথায় কোথায় বৈঠক করেছেন, অর্থ জুগিয়েছেন, কোন কৌশলে অর্থ পাঠিয়েছেন- সেটা আমরা জানি। সকল ষড়যন্ত্র এখন জাতির কাছে দিবালোকের মত স্পষ্ট। মিথ্যার বেসাতি করে, আবোল-তাবোল বলে জাতিকে বিভ্রান্ত করার সুযোগ নেই।” তিনি বলেন, “আজকে অনেকেই বলে- আওয়ামী লীগের লোকজন কম ছিল, অনুপস্থিত ছিল। আমি বলতে চাই, দলীয় লোকজনকে অস্ত্র দিয়ে সজ্জিত হয়ে কোথাও অবস্থান নিতে বলেনি। আমরা তো আক্রান্ত হয়েছি। নিরস্ত্ররা সশস্ত্রদের দ্বারা আক্রান্ত হয়েছি।” আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের বিরাজমান পরিস্থিতিতে কারফিউ মেনে চলার আহ্বান জানিয়ে কাদের বলেন, “দলীয়ভাবে সতর্ক থাকার জন্য নির্দেশনা দেওয়া হচ্ছে। গুজব ও আতঙ্ক সৃষ্টিকারীদের বিরুদ্ধে সতর্ক থাকতে হবে। তাদের তথ্য আইনপ্রয়োগকারী সংস্থাকে জানাতে হবে।”
এসময় উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য আব্দুর রাজ্জাক, জাহাঙ্গীর কবির নানক, মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, কামরুল ইসলাম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ, আ ফ ম বাহাউদ্দীন নাছিম, দীপু মনি, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমেদ হোসেন, বি এম মোজাম্মেল হক, মির্জা আজম, এস এম কামাল হোসেন, আফজাল হোসেন, সুজিত রায় নন্দী, দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া।

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

জামায়াত-শিবির নিষিদ্ধে আইনি দিক দেখা হচ্ছে: ওবায়দুল কাদের

আপডেট সময় : ০২:২৪:৩৭ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩০ জুলাই ২০২৪

নিজস্ব প্রতিবেদক : স্বাধীনতার বিরোধিতাকারী জামায়াতে ইসলামী এবং দলটির ছাত্রসংগঠন ইসলামী ছাত্রশিবিরকে নিষিদ্ধ করার প্রশ্নে আইনি দিক দেখার কথা জানিয়েছেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেছেন, “আপনারা জানেন ১৪ দলের সভায় জামায়াত-শিবিরের রাজনীতি নিষিদ্ধ করার বিষয়ে সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত হয়েছে, যা আমরা গতরাতে গণমাধ্যমকে অবহিত করেছি।
“এখন এ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করবে সরকার। সেটার প্রক্রিয়া কী হবে, সেটার আইনগত দিক দেখেশুনে সরকার শিগগরিই পরবর্তী পদক্ষেপ নেবে। কারণ আমরা আইনগত দিকটি ভালভাবে দেখে নিতে চাই; যাতে কোনো ফাঁকফোকর দিয়ে স্বাধীন বাংলাদেশে এ অপশক্তি আর কোনো সুযোগ না পায়।”
গতকাল মঙ্গলবার আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে দলের যৌথসভার শুরুতে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা বলেন।
ধর্মভিত্তিক দল জামায়াতের রাজনীতি বাংলাদেশে নিষিদ্ধের দাবি দীর্ঘদিনের। আওয়ামী লীগ সরকার ২০০৯ সালে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের উদ্যোগ নেওয়ার পর এই দাবি আরো জোরালো হয়। তবে গত ১৫ বছরে কার্যকর কোনো উদ্যোগ সরকারের তরফে নেওয়া হয়নি। এবার কোটাবিরোধী আন্দোলনকে সহিংস রূপ দেওয়ার পেছনে বিএনপি ও জামায়াতকে দায়ী করে আসছেন ক্ষমতাসীনরা। তার মধ্যেই সোমবার সন্ধ্যায় ১৪ দলের বৈঠকে জামায়াত ও শিবিরকে নিষিদ্ধের সিন্ধান্ত নেওয়া হয়। ওবায়দুল কাদের বলেন, “জামায়াত-শিবিরের রাজনীতি নিষিদ্ধ করার জন্য দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, সামাজিক সংগঠন, মুক্তিযোদ্ধা ও নাগরিক সমাজ দাবি করে আসছে। শহীদ জননী জাহানারা ইমামের নেতৃত্বে একাত্তরে ঘাতক-দালল নির্মূল কমিটির গঠিত গণআদালত ও পরবর্তীতে গণজাগরণ মঞ্চের দাবিও ছিল জামায়াত-শিবিরকে নিষিদ্ধ করা।”
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, “জামায়াতের নিবন্ধন বাতিল করে হাই কোর্টের রায় দেশের সর্বোচ্চ আদালত বহাল রেখেছে। দেশের গণপ্রতিনিধিত্ব আইন অনুযায়ী, নির্বাচন কমিশনের নিবন্ধন না থাকলে কোনো রাজনৈতিক দল নির্বাচনে অংশ নিতে পারে না। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে এমন নজির আছে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরে জার্মানিতে হিটলারের নাৎসি বাহিনী রাজনীতি করতে পারে না।” তিনি বলেন, “আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আদালতে জামায়াতকে দল হিসেবে যুদ্ধাপরাধের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বলে- উল্লেখ আছে। মূলত দলটি ধর্মের মুখোশ পড়া সাম্প্রদায়িক অপশক্তি। নানান সময়ে তাদের দ্বারা প্রকাশ্য ও গোপনে নানা অপতৎপরতা ও নাশকতা, ষড়যন্ত্র, রাষ্ট্রবিরোধী কর্মকাণ্ডে সম্পৃক্ততার প্রমাণ পাওয়া গেছে; দেশের জনগণও সেটা অবহিত। “প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে হওয়া ১৪ দলীয় জোটের বৈঠকে নেতারা তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করে জামায়াতের অতীত ও বর্তমান কর্মকাণ্ড; বিভিন্ন সময় দেওয়া আদালতের রায় বিবেচনা করে তাদের রাজনীতি নিষিদ্ধে ১৪ দল সর্বসম্মতভাবে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে।” কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে সংঘাত-সহিংসতায় নিহতদের স্মরণে সরকারি উদ্যোগে দেশজুড়ে শোক পালন নিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, “আজকের দিনটি ঠিক রাষ্ট্রীয় শোক দিবস নয়, এটা সরকারিভাবে শোক পালন; জাতীয় বা রাষ্ট্রীয় নয়।”
“১৫ আগস্টে যারা শহীদ হয়েছে, তাদের স্মরণে এই শোকের মাস যথাযথ মর্যাদা ও ভাবগাম্ভীর্যের সাথে পালন করে থাকি। এর আগেই গত ওয়ার্কিং কমিটির সভায় জাতীয় শোক দিবসে ও শোকের মাসে আমাদের কর্মসূচি সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রীর সভাপতিত্বে আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি। “সেই সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, আমাদের মহানগর ও সহযোগী সংগঠন নিজেদের মাঝে সভা করে কর্মসূচি নির্ধারণ করেছে।”
নিরীহ ব্যক্তিকে হয়রানি করা যাবে না: সরকার অসহায় শিক্ষার্থীদের আটক ও নির্যাতন করছে- বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের এমন বক্তব্যকে ‘নির্লজ্জ মিথ্যাচার বলে’ বর্ণনা করেন ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, “আইন প্রয়োগকারী সংস্থা ভিডিও ফুটেজ দেখে অপরাধীদের চিহিৃত করছে। আমাদের জানা মতে, কোনো নিরাপরাধ ব্যক্তিকে আটক করা হচ্ছে না। নিরীহ ও সাধারণ শিক্ষার্থী যাতে হয়রানির শিকার না হয়- সেটার জন্য প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা রয়েছে।”
আওয়ামী লীগ নিজেদের আচার-আচরণে দায়িত্বশীলতাকে গুরুত্ব দেয় বলে মন্তব্য করেন দলটির সাধারণ সম্পাদক। “গণগ্রেপ্তারের নামে কোনো নিরাপরাধ ব্যক্তি যাতে অপরাধী সাব্যস্ত না হয়, গ্রেপ্তার না হয়- সেই ব্যাপারে আমাদের দলের সিদ্ধান্ত রয়েছে। কোনো নিরীহ ব্যক্তিকে কোনো অবস্থায় হয়রানি করা যাবে না। গ্রেপ্তারের সংখ্যা বেশি দেখানোর জন্য কেউ যাতে অতি উৎসাহী হয়ে নিরাপরাধী কাউকে ধরে না ফেলেন। এটা যাতে কোনো অবস্থায় না হয়, সেই ব্যাপারে আমরা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।” কাদের বলেন, “মির্জা ফখরুলের কাছে সবাই নিরপরাধ, সবাই অসহায়; তাহলে প্রশ্ন- এই ধ্বংসযজ্ঞ চালাল কারা? কারা অগ্নিসংযোগ করল, রাষ্ট্রের সম্পদ ভষ্মীভূত করল, বাংলাদেশে নারকীয় ধ্বংসযজ্ঞ কারা করেছে?
“আজকে কথায় কথায় সরকার ও আওয়ামী লীগকে দোষারোপ করা হয়। আমি পরিষ্কার বলতে চাই, এ ঘটনা প্রবাহে আমরা আক্রান্ত, আক্রমণকারী ছিলাম না। এখন অপবাদ দেওয়া হচ্ছে। আমাদের হাতে অস্ত্র ছিল না।”
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, “তাহলে কারা এই নারকীয় বর্বরতার আশ্রয় নিয়েছে? তাদের সঙ্গে আপনি (ফখরুল) জাতীয় ঐক্য করছেন- যারা কারাগারের অস্ত্র লুট করেছে, তারা কি আপনার বন্ধু ও দোসর? সেজন্য আজকে ইগনোর করছেন।” মির্জা ফখরুলের উদ্দেশে কাদের বলেন, “সব তথ্য আমাদের কাছে আছে। কোথা থেকে নির্দেশ এসেছে, উসকানি এসেছে, কোথায় কোথায় বৈঠক করেছেন, অর্থ জুগিয়েছেন, কোন কৌশলে অর্থ পাঠিয়েছেন- সেটা আমরা জানি। সকল ষড়যন্ত্র এখন জাতির কাছে দিবালোকের মত স্পষ্ট। মিথ্যার বেসাতি করে, আবোল-তাবোল বলে জাতিকে বিভ্রান্ত করার সুযোগ নেই।” তিনি বলেন, “আজকে অনেকেই বলে- আওয়ামী লীগের লোকজন কম ছিল, অনুপস্থিত ছিল। আমি বলতে চাই, দলীয় লোকজনকে অস্ত্র দিয়ে সজ্জিত হয়ে কোথাও অবস্থান নিতে বলেনি। আমরা তো আক্রান্ত হয়েছি। নিরস্ত্ররা সশস্ত্রদের দ্বারা আক্রান্ত হয়েছি।” আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের বিরাজমান পরিস্থিতিতে কারফিউ মেনে চলার আহ্বান জানিয়ে কাদের বলেন, “দলীয়ভাবে সতর্ক থাকার জন্য নির্দেশনা দেওয়া হচ্ছে। গুজব ও আতঙ্ক সৃষ্টিকারীদের বিরুদ্ধে সতর্ক থাকতে হবে। তাদের তথ্য আইনপ্রয়োগকারী সংস্থাকে জানাতে হবে।”
এসময় উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য আব্দুর রাজ্জাক, জাহাঙ্গীর কবির নানক, মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, কামরুল ইসলাম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ, আ ফ ম বাহাউদ্দীন নাছিম, দীপু মনি, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমেদ হোসেন, বি এম মোজাম্মেল হক, মির্জা আজম, এস এম কামাল হোসেন, আফজাল হোসেন, সুজিত রায় নন্দী, দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া।