ঢাকা ১১:৫৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ২১ জুলাই ২০২৫

২৫ দিনে ৬ হাজার ছাড়ালো ডেঙ্গু শনাক্ত

  • আপডেট সময় : ০২:২৮:৫৭ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৫ অগাস্ট ২০২১
  • ১০১ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক : চলতি বছরের সর্বোচ্চ সংখ্যক ডেঙ্গু রোগী পাওয়া গেছে আগস্ট মাসে। আগস্টের ২৫ দিনে ৬ হাজার ১৯৫ জন ডেঙ্গু রোগী শনাক্ত হয়েছেন। এটি এখনও পর্যন্ত এ বছরের সর্বোচ্চ শনাক্ত। এছাড়া ডেঙ্গুতে এ পর্যন্ত মারা গেছেন ৪০ জন বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদফতর। গত মঙ্গলবার (২৪ আগস্ট) এ সংখ্যা ছিল ৩৮ জন।
গতকাল বুধবার স্বাস্থ্য অধিদফতরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুমের দেওয়া তথ্য থেকে এসব জানা যায়। স্বাস্থ্য অধিদফতর জানায়, গত ২৪ ঘণ্টায় শনাক্ত হয়েছেন ২৭৮ জন। এদের মধ্যে ২৩০ জনই ঢাকার, আর ঢাকার বাইরের ৪৮ জন। সারাদেশের বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে বর্তমানে ১ হাজার ৯০ জন রোগী ভর্তি আছেন। এর মধ্যে ঢাকাতে আছেন ৯৮৭ জন, আর বাকি ১০৩ জন ঢাকার বাইরে অন্যান্য বিভাগের। এ বছরের ১ জানুয়ারি থেকে ২৫ আগস্ট পর্যন্ত ৮ হাজার ৮৫৩ জন রোগী ভর্তি হয়েছেন এবং ছাড়া পেয়েছেন ৭ হাজার ৭২১ জন।
ডেঙ্গুতে একটি মৃত্যুও ছোট করে দেখার সুযোগ নেই : করোনা মহামারির মধ্যে ডেঙ্গুর প্রকোপ যেন মারাত্মক আকার ধারণ না করে সে ব্যাপারে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দিয়েছেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম। তিনি জানিয়েছেন, ডেঙ্গুতে একটি মৃত্যুও ছোট করে দেখার সুযোগ নেই।
গতকাল বুধবার স্থানীয় সরকার বিভাগের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত সারাদেশে মশাবাহিত রোগ প্রতিরোধে সিটি করপোরেশন ও অন্যান্য মন্ত্রণালয়, বিভাগ, দপ্তর, সংস্থার কার্যক্রম পর্যালোচনার ১১তম আন্তঃমন্ত্রণালয় সভায় সভাপতির বক্তব্যে মন্ত্রী এই কথা জানান। স্থানীয় সরকার মন্ত্রী বলেন, ‘নিজের বাসা মশামুক্ত রাখার পরেও পাশের বাসার এডিস মশার কামড়ে কেউ ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত হবে অথবা মৃত্যুবরণ করবে এটা মেনে নেওয়া হবে না। প্রতিটি মৃত্যুই দুঃখজনক, একটি মৃত্যুকেও ছোট করে দেখার সুযোগ নেই। এটি শাস্তিযোগ্য অপরাধ।’
মন্ত্রী বলেন, ‘ডেঙ্গু রোগে যাতে একটি মানুষও মৃত্যুবরণ না করে সেটা আমাদের সবারই কাম্য। অনেক অভিজাত ও শিক্ষিত লোকের বাসায় মশার লার্ভা পাওয়া যাচ্ছে, যা অত্যন্ত দুঃখজনক।’
ছাদ বাগান অথবা বাসা-বাড়ির ফুলের টব যেন এডিস মশার প্রজননস্থলে পরিণত না হয় সে জন্য নগরবাসীকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘অন্যান্য বছরের তুলনায় এবছর একটু আগেই বৃষ্টি শুরু হয়েছে, পরিমাণও বেশি এবং থেমে থেমে বৃষ্টি হচ্ছে। যার কারণে যেখানে সেখানে পানি জমছে। আবার স্কুল-কলেজ-মাদ্রাসা, বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ থাকায় নিয়মিত পরিষ্কার করতে না পারায় এসব স্থাপনায় মশার প্রজনন হচ্ছে। ছাদ বাগান বা ফুলের টবে নিয়মিত পানি অপসারণ করতে না পারলে মশার কীটনাশক অথবা কেরোসিনের তেল ব্যবহার করুন।’
এলাকা বিশেষে এডিস মশার প্রাদুর্ভাব লক্ষ্য করা যাচ্ছে জানিয়ে মো. তাজুল ইসলাম বলেন, ‘সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে অথবা ক্লিনিকে ডেঙ্গু রোগী ভর্তি হওয়া মাত্রই মন্ত্রণালয় অথবা সিটি করপোরেশনকে জরুরি ভিত্তিতে জানানোর নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে, যাতে খবর পাওয়া মাত্রই সেই বাড়িসহ আশপাশে বিশেষ অভিযান চালানো সম্ভব হয়।’
ঢাকা ক্যান্টমেন্ট বোর্ড, বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ ও বাংলাদেশ রেলওয়ের অধিক্ষেত্রে মশার বংশ বিস্তার রোধে কার্যকর গ্রহণের নির্দেশনা দিয়ে বসে না থেকে নিয়মিত পর্যবেক্ষণ করতে বলেন মন্ত্রী। এসব প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে মশা নিধন কার্যক্রম চলমান রয়েছে বলে আমাদের জানানো হয়েছে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, ‘সংরক্ষিত এলাকায় মশার লার্ভা পাওয়া গেলে স্ব স্ব প্রতিষ্ঠানকে দায়-দায়িত্ব নিতে হবে।’
সভায় অন্যদের মধ্যে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম (অনলাইন), দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস, গাজীপুর মেয়র মো. জাহাঙ্গীর আলম, স্থানীয় সরকার বিভাগের সিনিয়র সচিব, গৃহায়ণ ও গণপূর্ত সচিব, স্বাস্থ্য সচিব, প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের এসডিজি সমন্বয়ক, মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়/বিভাগ, দপ্তর/সংস্থার কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

২৫ দিনে ৬ হাজার ছাড়ালো ডেঙ্গু শনাক্ত

আপডেট সময় : ০২:২৮:৫৭ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৫ অগাস্ট ২০২১

নিজস্ব প্রতিবেদক : চলতি বছরের সর্বোচ্চ সংখ্যক ডেঙ্গু রোগী পাওয়া গেছে আগস্ট মাসে। আগস্টের ২৫ দিনে ৬ হাজার ১৯৫ জন ডেঙ্গু রোগী শনাক্ত হয়েছেন। এটি এখনও পর্যন্ত এ বছরের সর্বোচ্চ শনাক্ত। এছাড়া ডেঙ্গুতে এ পর্যন্ত মারা গেছেন ৪০ জন বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদফতর। গত মঙ্গলবার (২৪ আগস্ট) এ সংখ্যা ছিল ৩৮ জন।
গতকাল বুধবার স্বাস্থ্য অধিদফতরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুমের দেওয়া তথ্য থেকে এসব জানা যায়। স্বাস্থ্য অধিদফতর জানায়, গত ২৪ ঘণ্টায় শনাক্ত হয়েছেন ২৭৮ জন। এদের মধ্যে ২৩০ জনই ঢাকার, আর ঢাকার বাইরের ৪৮ জন। সারাদেশের বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে বর্তমানে ১ হাজার ৯০ জন রোগী ভর্তি আছেন। এর মধ্যে ঢাকাতে আছেন ৯৮৭ জন, আর বাকি ১০৩ জন ঢাকার বাইরে অন্যান্য বিভাগের। এ বছরের ১ জানুয়ারি থেকে ২৫ আগস্ট পর্যন্ত ৮ হাজার ৮৫৩ জন রোগী ভর্তি হয়েছেন এবং ছাড়া পেয়েছেন ৭ হাজার ৭২১ জন।
ডেঙ্গুতে একটি মৃত্যুও ছোট করে দেখার সুযোগ নেই : করোনা মহামারির মধ্যে ডেঙ্গুর প্রকোপ যেন মারাত্মক আকার ধারণ না করে সে ব্যাপারে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দিয়েছেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম। তিনি জানিয়েছেন, ডেঙ্গুতে একটি মৃত্যুও ছোট করে দেখার সুযোগ নেই।
গতকাল বুধবার স্থানীয় সরকার বিভাগের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত সারাদেশে মশাবাহিত রোগ প্রতিরোধে সিটি করপোরেশন ও অন্যান্য মন্ত্রণালয়, বিভাগ, দপ্তর, সংস্থার কার্যক্রম পর্যালোচনার ১১তম আন্তঃমন্ত্রণালয় সভায় সভাপতির বক্তব্যে মন্ত্রী এই কথা জানান। স্থানীয় সরকার মন্ত্রী বলেন, ‘নিজের বাসা মশামুক্ত রাখার পরেও পাশের বাসার এডিস মশার কামড়ে কেউ ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত হবে অথবা মৃত্যুবরণ করবে এটা মেনে নেওয়া হবে না। প্রতিটি মৃত্যুই দুঃখজনক, একটি মৃত্যুকেও ছোট করে দেখার সুযোগ নেই। এটি শাস্তিযোগ্য অপরাধ।’
মন্ত্রী বলেন, ‘ডেঙ্গু রোগে যাতে একটি মানুষও মৃত্যুবরণ না করে সেটা আমাদের সবারই কাম্য। অনেক অভিজাত ও শিক্ষিত লোকের বাসায় মশার লার্ভা পাওয়া যাচ্ছে, যা অত্যন্ত দুঃখজনক।’
ছাদ বাগান অথবা বাসা-বাড়ির ফুলের টব যেন এডিস মশার প্রজননস্থলে পরিণত না হয় সে জন্য নগরবাসীকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘অন্যান্য বছরের তুলনায় এবছর একটু আগেই বৃষ্টি শুরু হয়েছে, পরিমাণও বেশি এবং থেমে থেমে বৃষ্টি হচ্ছে। যার কারণে যেখানে সেখানে পানি জমছে। আবার স্কুল-কলেজ-মাদ্রাসা, বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ থাকায় নিয়মিত পরিষ্কার করতে না পারায় এসব স্থাপনায় মশার প্রজনন হচ্ছে। ছাদ বাগান বা ফুলের টবে নিয়মিত পানি অপসারণ করতে না পারলে মশার কীটনাশক অথবা কেরোসিনের তেল ব্যবহার করুন।’
এলাকা বিশেষে এডিস মশার প্রাদুর্ভাব লক্ষ্য করা যাচ্ছে জানিয়ে মো. তাজুল ইসলাম বলেন, ‘সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে অথবা ক্লিনিকে ডেঙ্গু রোগী ভর্তি হওয়া মাত্রই মন্ত্রণালয় অথবা সিটি করপোরেশনকে জরুরি ভিত্তিতে জানানোর নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে, যাতে খবর পাওয়া মাত্রই সেই বাড়িসহ আশপাশে বিশেষ অভিযান চালানো সম্ভব হয়।’
ঢাকা ক্যান্টমেন্ট বোর্ড, বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ ও বাংলাদেশ রেলওয়ের অধিক্ষেত্রে মশার বংশ বিস্তার রোধে কার্যকর গ্রহণের নির্দেশনা দিয়ে বসে না থেকে নিয়মিত পর্যবেক্ষণ করতে বলেন মন্ত্রী। এসব প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে মশা নিধন কার্যক্রম চলমান রয়েছে বলে আমাদের জানানো হয়েছে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, ‘সংরক্ষিত এলাকায় মশার লার্ভা পাওয়া গেলে স্ব স্ব প্রতিষ্ঠানকে দায়-দায়িত্ব নিতে হবে।’
সভায় অন্যদের মধ্যে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম (অনলাইন), দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস, গাজীপুর মেয়র মো. জাহাঙ্গীর আলম, স্থানীয় সরকার বিভাগের সিনিয়র সচিব, গৃহায়ণ ও গণপূর্ত সচিব, স্বাস্থ্য সচিব, প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের এসডিজি সমন্বয়ক, মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়/বিভাগ, দপ্তর/সংস্থার কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।