ঢাকা ০৫:০৪ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২২ মে ২০২৫

সালিশে জুতাপেটা করায় আত্মহত্যা

  • আপডেট সময় : ১২:০২:১৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৯ জুলাই ২০২৪
  • ৫৩ বার পড়া হয়েছে

মাদারীপুর সংবাদদাতা : সালিশে গ্রামের মাতব্বরের রায়ে ছেলে ইলিয়াছ মৃধাকে জুতাপেটা করেছিলেন বাবা। এ অপমান মেনে নিতে না পেরে বিষপান করে আত্মহত্যা করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। গত সোমবার (৮ জুলাই) বিকেলে ময়নাতদন্ত শেষে গ্রামের কবরস্থানে দাফন সম্পন্ন হয়। এর আগে রোববার জেলার শিবচর উপজেলার কুতুবপুরের ৯ নম্বর ওয়ার্ডে ঘটনাটি ঘটে।
জানা গেছে, শিবচর উপজেলার কুতুবপুরের ৯ নম্বর ওয়ার্ডে কাদির মৃধার ছোট ছেলে দিনমজুর ইলিয়াছ মৃধার সঙ্গে সৌদি প্রবাসী বড় ভাই আক্কাস মৃধার স্ত্রী তাসলিমার পায়ে আলপিনের খোঁচা লাগাকে কেন্দ্র করে ঘটনার সূত্রপাত। রোববার সকালে সৌদি প্রবাসী আক্কাস মৃধার স্ত্রী তাছলিমা অভিযোগ করেন, তার পায়ের স্যান্ডেলে গেঁথে রাখা আলপিনের খোঁচায় তিনি আহত হন। দেবর ইলিয়াছ মৃধা তার স্যান্ডেলে এই আলপিন গেঁথে রেখেছিল বলে তিনি সন্দেহ প্রকাশ করেন। এ নিয়ে ভাবি ও দেবরের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে তাদের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। পরে তাছলিমা ও তার স্বজনরা তাৎক্ষণিকভাবে বিষয়টি তার প্রবাসী স্বামী আক্কাস মৃধা এবং গ্রাম্য মাতব্বর আলাউদ্দিন খানকে জানায়। এ সংবাদ পেয়ে আলাউদ্দিন খান তখনই ওই বাড়িতে এসে বিচারের উদ্দেশ্যে সালিশ বসান। বৈঠকে বিস্তারিত শুনার পর ইলিয়াছকে ১০০ জুতার বাড়ি দেওয়ার নির্দেশ দেন মাতব্বর আলাউদ্দিন খান। পরে কাদির মৃধা ইলিয়াছকে জনসম্মুখে জুতাপেটা করেন। এ অপমান মেনে নিতে না পেরে ক্ষুব্ধ হয়ে ঘাস মারার বিষ কিনে এনে বিষপান করেন ইলিয়াছ। পরে তিনি গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়লে শিবচর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে তার মৃত্যু হয়। এদিকে নিহতের স্ত্রীর স্বজনরা জানান, আলাউদ্দিন খান ও তাসলিমার মধ্যে অবৈধ সম্পর্ক ছিল। সেজন্যই আলাউদ্দিন খান খবর পেয়ে এসেই সালিশ বিচার বসিয়ে ১০০ জুতাপেটা করায়। আর এতেই লজ্জা পেয়ে সে আত্মহত্যা করেছেন। ইলিয়াছের স্ত্রী মিনু বেগম কাঁদতে কাঁদতে বলেন, সবার সামনে জুতাপেটা করায় তিনি অপমান সইতে না পেরে আত্মহত্যা করেছে। এখন আমার দুই মেয়ে নিয়ে আমি কই যাব। কি খাবো। ইলিয়াছের বাবা কাদির মৃধা বলেন, ইলিয়াছ বিভিন্ন সময়ই এরকম করতেন। আমি শাসন হিসেবে স্যান্ডেল দিয়ে পিটিয়েছি। ও বিষ খাবে তা বুঝতে পারিনি। আলাউদ্দিন খান বলেন, ওরা আমাকে খবর দিয়ে আনে। এসময় আরও অনেকেই ছিল। আমি ওর বাবাকে এর বিচার করতে বললে তিনি কয়েকটি জুতাপেটা করেন ছেলেকে। আমি কোনো রায় দেইনি বা জুতাপেটা করতে বলিনি। শিবচর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. কাজী রিপন বলেন, এ বিষয়ে একটি অপমৃত্যু মামলা হয়েছে। জুতাপেটার বিষয়টি আমাদের জানা নেই।

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

সালিশে জুতাপেটা করায় আত্মহত্যা

আপডেট সময় : ১২:০২:১৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৯ জুলাই ২০২৪

মাদারীপুর সংবাদদাতা : সালিশে গ্রামের মাতব্বরের রায়ে ছেলে ইলিয়াছ মৃধাকে জুতাপেটা করেছিলেন বাবা। এ অপমান মেনে নিতে না পেরে বিষপান করে আত্মহত্যা করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। গত সোমবার (৮ জুলাই) বিকেলে ময়নাতদন্ত শেষে গ্রামের কবরস্থানে দাফন সম্পন্ন হয়। এর আগে রোববার জেলার শিবচর উপজেলার কুতুবপুরের ৯ নম্বর ওয়ার্ডে ঘটনাটি ঘটে।
জানা গেছে, শিবচর উপজেলার কুতুবপুরের ৯ নম্বর ওয়ার্ডে কাদির মৃধার ছোট ছেলে দিনমজুর ইলিয়াছ মৃধার সঙ্গে সৌদি প্রবাসী বড় ভাই আক্কাস মৃধার স্ত্রী তাসলিমার পায়ে আলপিনের খোঁচা লাগাকে কেন্দ্র করে ঘটনার সূত্রপাত। রোববার সকালে সৌদি প্রবাসী আক্কাস মৃধার স্ত্রী তাছলিমা অভিযোগ করেন, তার পায়ের স্যান্ডেলে গেঁথে রাখা আলপিনের খোঁচায় তিনি আহত হন। দেবর ইলিয়াছ মৃধা তার স্যান্ডেলে এই আলপিন গেঁথে রেখেছিল বলে তিনি সন্দেহ প্রকাশ করেন। এ নিয়ে ভাবি ও দেবরের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে তাদের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। পরে তাছলিমা ও তার স্বজনরা তাৎক্ষণিকভাবে বিষয়টি তার প্রবাসী স্বামী আক্কাস মৃধা এবং গ্রাম্য মাতব্বর আলাউদ্দিন খানকে জানায়। এ সংবাদ পেয়ে আলাউদ্দিন খান তখনই ওই বাড়িতে এসে বিচারের উদ্দেশ্যে সালিশ বসান। বৈঠকে বিস্তারিত শুনার পর ইলিয়াছকে ১০০ জুতার বাড়ি দেওয়ার নির্দেশ দেন মাতব্বর আলাউদ্দিন খান। পরে কাদির মৃধা ইলিয়াছকে জনসম্মুখে জুতাপেটা করেন। এ অপমান মেনে নিতে না পেরে ক্ষুব্ধ হয়ে ঘাস মারার বিষ কিনে এনে বিষপান করেন ইলিয়াছ। পরে তিনি গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়লে শিবচর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে তার মৃত্যু হয়। এদিকে নিহতের স্ত্রীর স্বজনরা জানান, আলাউদ্দিন খান ও তাসলিমার মধ্যে অবৈধ সম্পর্ক ছিল। সেজন্যই আলাউদ্দিন খান খবর পেয়ে এসেই সালিশ বিচার বসিয়ে ১০০ জুতাপেটা করায়। আর এতেই লজ্জা পেয়ে সে আত্মহত্যা করেছেন। ইলিয়াছের স্ত্রী মিনু বেগম কাঁদতে কাঁদতে বলেন, সবার সামনে জুতাপেটা করায় তিনি অপমান সইতে না পেরে আত্মহত্যা করেছে। এখন আমার দুই মেয়ে নিয়ে আমি কই যাব। কি খাবো। ইলিয়াছের বাবা কাদির মৃধা বলেন, ইলিয়াছ বিভিন্ন সময়ই এরকম করতেন। আমি শাসন হিসেবে স্যান্ডেল দিয়ে পিটিয়েছি। ও বিষ খাবে তা বুঝতে পারিনি। আলাউদ্দিন খান বলেন, ওরা আমাকে খবর দিয়ে আনে। এসময় আরও অনেকেই ছিল। আমি ওর বাবাকে এর বিচার করতে বললে তিনি কয়েকটি জুতাপেটা করেন ছেলেকে। আমি কোনো রায় দেইনি বা জুতাপেটা করতে বলিনি। শিবচর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. কাজী রিপন বলেন, এ বিষয়ে একটি অপমৃত্যু মামলা হয়েছে। জুতাপেটার বিষয়টি আমাদের জানা নেই।