ঢাকা ১১:০৪ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২২ মে ২০২৫

বন্যা পরিস্থিতির খানিকটা উন্নতি

  • আপডেট সময় : ১২:২৬:৪৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৪ জুলাই ২০২৪
  • ৬৩ বার পড়া হয়েছে

সিলেট সংবাদদাতা : সিলেটে বন্যার পানি কোথাও কমছে কোথাও বাড়ছে। ফলে সার্বিক বন্যা পরিস্থিতি কোনো স্থানে কিছুটা উন্নতি, আবার কোথাও অবনতি হয়েছে। ভারী বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা ঢলে সোমবার নতুন করে বন্যা দেখা দিয়েছে জেলার বিভিন্ন উপজেলায়। জেলা প্রশাসকের তথ্য মতে, জেলার ১৩ উপজেলায় ৯৭টি ইউনিয়ন প্লাবিত। ১ হাজার ১৮৪টি গ্রামের ৭ লাখ ১১ হাজারের বেশি মানুষ বন্যাকবলিত রয়েছেন। জেলার ৬৫৩টি আশ্রয় কেন্দ্রে এখন পর্যন্ত প্রায় সাড়ে ৮ হাজার মানুষ আশ্রয় নিয়েছেন। সেখানে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে খাদ্য সামগ্রী দেওয়াসহ বন্যার্ত মানুষের সার্বিক অবস্থা পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড জানিয়েছে, বুধবার সকাল পর্যন্ত সুরমা ও কুশিয়ারা নদীর ছয়টি পয়েন্টের পানি বিপৎসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এর মধ্যে সুরমা নদীর পানি কানাইঘাট পয়েন্টে ৮১ সে.মি, যা ২৪ ঘণ্টা আগে ছিল ১১৭ সে.মি উপরে। একই নদীর পানি সিলেট পয়েন্টে বিপৎসীমায় ১ সে. মি. উপর দিয়ে চলছে, যা আগের দিন বিপৎসীমার নীচে ছিল। কুশিয়ারা নদীর পানি আজ আমলশীদ পয়েন্টে ১৪০ সে.মি. উপরে যা, ২৪ ঘণ্টা আগে একই পয়েন্টে ৭৭ সে.মি. ছিল। এ নদীর পানি শেওলা পয়েন্টে ৪৩ সে.মি. উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। আগেরদিন যা ২৩ সে..মি. উপরে ছিল। একই নদীর ফেঞ্চুগঞ্জ পয়েন্টে ৯৯ সে.মি. উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে পানি। আগের দিন সেখানে পানি ৯৫ সে.মি.উপরে ছিল। কুশিয়ারা নদীর পানি শেরপুর পয়েন্টে বিপৎসীমার ১৯ সে.মি উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে, আগের দিন এ পয়েন্টে পানির প্রবাহ ১৪ সে.মি উপরে ছিল। এছাড়া সিলেটের লোভাছড়া, সারি নদী, জাফলং নদী, গোয়াইন নদী ও ধলাই নদীর সবগুলো পয়েন্টের পানি গত ২৪ ঘণ্টায় কিছুটা কমে বিপৎসীমার নীচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। বুধবার সকাল থেকে উজান থেকে নামা পাহাড়ি ঢল কিছুটা কমেছে বলে স্থানীয় বিভিন্ন সূত্র জানিয়েছে। বুধবার সিলেটে দিনের বেলা বৃষ্টিপাত না হলেও বিকালে ভারী বৃষ্টি নেমেছে। সিলেট সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, বন্যার্ত মানুষদের প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা প্রদানে সিলেট জেলায় ১২৬টি মেডিকেল টিম কাজ করছে। তারা বন্যা কবলিত এলাকায় গিয়ে বন্যার্ত মানুষকে পানিবাহিত রোগ থেকে মুক্ত রাখতে পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট, ওরস্যালাইনসহ প্রয়োজনীয় ঔষধ সরবরাহ করছে। এছাড়া প্রতিটি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে বন্যার্ত মানুষের জরুরি স্বাস্থ্যসেবায় বিশেষ গুরত্ব দিয়ে কাজ করছে। সিলেটে গত ২৭ মে আগাম বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। দুই সপ্তাহব্যাপী স্থায়ী এ বন্যায় পানিবন্দি ছিলেন ১০ লাখেরও বেশি মানুষ। প্রথম বন্যার পানি পুরোপুরি নামার আগেই ১৫ জুন থেকে ফের বন্যা হয় সিলেটে। বিশেষ করে ঈদুল আজহার দিন ভোর থেকে মাত্র কয়েক ঘণ্টার ভারী বর্ষণে মহানগরসহ সিলেটের সব উপজেলায় লাখ লাখ মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েন। পরবর্তী এক সপ্তাহ সিলেটে বন্যা পরিস্থিতি ছিল ভয়াবহ। এরপর পানি নামতে শুরু করে। তবে সে গতি ছিল খুব ধীর। দ্বিতীয় দফা বন্যা শেষ হওয়ার আগেই সোমবার থেকে সিলেটে ধাক্কা দেয় তৃতীয় দফার বন্যা। রবিবার (৩০ জুন) দিনভর সিলেটে থেমে থেমে এবং উজানে ভারী বৃষ্টির ফলে নতুন করে বন্যা দেখা দিয়েছে।

 

 

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

বন্যা পরিস্থিতির খানিকটা উন্নতি

আপডেট সময় : ১২:২৬:৪৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৪ জুলাই ২০২৪

সিলেট সংবাদদাতা : সিলেটে বন্যার পানি কোথাও কমছে কোথাও বাড়ছে। ফলে সার্বিক বন্যা পরিস্থিতি কোনো স্থানে কিছুটা উন্নতি, আবার কোথাও অবনতি হয়েছে। ভারী বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা ঢলে সোমবার নতুন করে বন্যা দেখা দিয়েছে জেলার বিভিন্ন উপজেলায়। জেলা প্রশাসকের তথ্য মতে, জেলার ১৩ উপজেলায় ৯৭টি ইউনিয়ন প্লাবিত। ১ হাজার ১৮৪টি গ্রামের ৭ লাখ ১১ হাজারের বেশি মানুষ বন্যাকবলিত রয়েছেন। জেলার ৬৫৩টি আশ্রয় কেন্দ্রে এখন পর্যন্ত প্রায় সাড়ে ৮ হাজার মানুষ আশ্রয় নিয়েছেন। সেখানে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে খাদ্য সামগ্রী দেওয়াসহ বন্যার্ত মানুষের সার্বিক অবস্থা পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড জানিয়েছে, বুধবার সকাল পর্যন্ত সুরমা ও কুশিয়ারা নদীর ছয়টি পয়েন্টের পানি বিপৎসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এর মধ্যে সুরমা নদীর পানি কানাইঘাট পয়েন্টে ৮১ সে.মি, যা ২৪ ঘণ্টা আগে ছিল ১১৭ সে.মি উপরে। একই নদীর পানি সিলেট পয়েন্টে বিপৎসীমায় ১ সে. মি. উপর দিয়ে চলছে, যা আগের দিন বিপৎসীমার নীচে ছিল। কুশিয়ারা নদীর পানি আজ আমলশীদ পয়েন্টে ১৪০ সে.মি. উপরে যা, ২৪ ঘণ্টা আগে একই পয়েন্টে ৭৭ সে.মি. ছিল। এ নদীর পানি শেওলা পয়েন্টে ৪৩ সে.মি. উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। আগেরদিন যা ২৩ সে..মি. উপরে ছিল। একই নদীর ফেঞ্চুগঞ্জ পয়েন্টে ৯৯ সে.মি. উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে পানি। আগের দিন সেখানে পানি ৯৫ সে.মি.উপরে ছিল। কুশিয়ারা নদীর পানি শেরপুর পয়েন্টে বিপৎসীমার ১৯ সে.মি উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে, আগের দিন এ পয়েন্টে পানির প্রবাহ ১৪ সে.মি উপরে ছিল। এছাড়া সিলেটের লোভাছড়া, সারি নদী, জাফলং নদী, গোয়াইন নদী ও ধলাই নদীর সবগুলো পয়েন্টের পানি গত ২৪ ঘণ্টায় কিছুটা কমে বিপৎসীমার নীচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। বুধবার সকাল থেকে উজান থেকে নামা পাহাড়ি ঢল কিছুটা কমেছে বলে স্থানীয় বিভিন্ন সূত্র জানিয়েছে। বুধবার সিলেটে দিনের বেলা বৃষ্টিপাত না হলেও বিকালে ভারী বৃষ্টি নেমেছে। সিলেট সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, বন্যার্ত মানুষদের প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা প্রদানে সিলেট জেলায় ১২৬টি মেডিকেল টিম কাজ করছে। তারা বন্যা কবলিত এলাকায় গিয়ে বন্যার্ত মানুষকে পানিবাহিত রোগ থেকে মুক্ত রাখতে পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট, ওরস্যালাইনসহ প্রয়োজনীয় ঔষধ সরবরাহ করছে। এছাড়া প্রতিটি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে বন্যার্ত মানুষের জরুরি স্বাস্থ্যসেবায় বিশেষ গুরত্ব দিয়ে কাজ করছে। সিলেটে গত ২৭ মে আগাম বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। দুই সপ্তাহব্যাপী স্থায়ী এ বন্যায় পানিবন্দি ছিলেন ১০ লাখেরও বেশি মানুষ। প্রথম বন্যার পানি পুরোপুরি নামার আগেই ১৫ জুন থেকে ফের বন্যা হয় সিলেটে। বিশেষ করে ঈদুল আজহার দিন ভোর থেকে মাত্র কয়েক ঘণ্টার ভারী বর্ষণে মহানগরসহ সিলেটের সব উপজেলায় লাখ লাখ মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েন। পরবর্তী এক সপ্তাহ সিলেটে বন্যা পরিস্থিতি ছিল ভয়াবহ। এরপর পানি নামতে শুরু করে। তবে সে গতি ছিল খুব ধীর। দ্বিতীয় দফা বন্যা শেষ হওয়ার আগেই সোমবার থেকে সিলেটে ধাক্কা দেয় তৃতীয় দফার বন্যা। রবিবার (৩০ জুন) দিনভর সিলেটে থেমে থেমে এবং উজানে ভারী বৃষ্টির ফলে নতুন করে বন্যা দেখা দিয়েছে।