আন্তর্জাতিক ডেস্ক : গাজা থেকে ছাড়া জ্বলন্ত বেলুনে দক্ষিণ ইসরায়েলের কিছু জায়গায় আগুন ধরে যাওয়ার প্রতিক্রিয়ায় ফিলিস্তিনি ভূখ-টিতে হামাসের একাধিক স্থাপনায় বোমাবর্ষণ করেছে ইসরায়েলি যুদ্ধবিমান।
গতকাল মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে দেশটির সামরিক বাহিনী জানিয়েছে, তারা হামাসের একটি অস্ত্র উৎপাদন কারখানা ও একটি রকেট উৎক্ষেপণ স্থাপনায় বোমাবর্ষণ করেছে। তবে তাৎক্ষণিকভাবে এ হামলায় হতাহতের কোনো খবর পাওয়া যায়নি বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স। চলতি বছরের মে মাসে ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে ১১ দিনের একটি লড়াই হয়েছিল, যা মিশরের মধ্যস্থতায় যুদ্ধবিরতির মাধ্যমে শেষ হয়।
তারপর থেকে গাজার যোদ্ধারা মাঝে মধ্যেই ইসরায়েলে জ্বলন্ত বেলুন পাঠানো শুরু করে। এসব বেলুন পাঠানোর প্রতিক্রিয়ায় ইসরায়েলও হামাসের বিভিন্ন স্থাপনায় হামলা চালাচ্ছে। ফিলিস্তিনিরা বলছে, তাদের জ্বলন্ত বেলুন পাঠানোর উদ্দেশ্য ইসরায়েলের ওপর চাপ সৃষ্টি করা যেন তারা গাজার ওপর থেকে বিধিনিষেধ তুলে নেয় ও ভূখ-টিতে ত্রাণ ঢোকার অনুমতি দেয়।
গত সোমবার পাঠানো বেলুনগুলোর কারণে গাজা সীমান্তের কাছে ইসরায়েলের একাধিক ফসলি জমিতে আগুন ধরে যায় বলে জানিয়েছে ইসরায়েলি ফায়ার অ্যান্ড রেসকিউ সার্ভিস।
গত সপ্তাহে গাজায় কাতারের সাহায্য পৌঁছানোর ব্যবস্থা ফের চালুর ঘোষণা দেয় ইসরায়েল, তারপরও সীমান্তে সহিংসতা বেড়েই চলেছে। ইসরায়েলের ওই ঘোষণা মে মাসের ‘ভঙ্গুর‘ যুদ্ধবিরতিকে খানিকটা মজবুত করবে বলে আশা সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলোর।
গত শনিবার সীমান্তে গাজার বিক্ষোভকারীদের টায়ার পোড়ানো ও বিস্ফোরক ছোড়ার পাল্টায় ইসরায়েলি সেনারা গুলি ছোড়ে, এতে ৪১ ফিলিস্তিনি আহত হন। আহতদের মধ্যে দুই জনের অবস্থা গুরুতর বলে জানিয়েছেন গাজার চিকিৎসকরা। ফিলিস্তিনিদের বন্দুকের গুলিতে ইসরায়েলের এক সৈন্যও গুরুতর জখম হয়েছে বলে জানিয়েছে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী।
গত শনিবারের সহিংসতার কয়েকদিন আগে গাজা থেকে ইসরায়েলকে লক্ষ্য করে রকেট ছোড়া হয়। ২১ মে-র যুদ্ধবিরতির পর প্রথম ছোড়া এ রকেটটি ইসরায়েলের ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাপনা ‘আয়রন ডোম’ধ্বংস করে দেয়। মে’র সংঘাতে আড়াইশ’রও বেশি ফিলিস্তিনি ও ১৩ ইসরায়েলি নিহত হয়েছিল। সেবার গাজার সশস্ত্র যোদ্ধাদের ইসরায়েলকে তাক করে ছোড়া একের পর এক রকেটের পাল্টায় ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীও ফিলিস্তিনিদের হাতে থাকা ভূখ-টিতে বিমান হামলা চালায়।
প্রায় ২০ লাখ ফিলিস্তিনির আবাসস্থল গাজাকে অবরোধ করে রেখেছে ইসরায়েল; ভূখ-টিতে ঢোকা বা বের হওয়ার ওপর রয়েছে কড়া বিধিনিষেধ। কেবল ইসরায়েলই নয়, মিশরও গাজার সঙ্গে তাদের সীমান্তে কড়াকড়ি নিয়ন্ত্রণ আরোপ করে রাখে। হামাসের হুমকি মোকাবেলায় এমন বিধিনিষেধ রাখা বলে ভাষ্য মিশর, ইসরায়েল- উভয় দেশেরই।
গাজায় হামাসের স্থাপনায় ইসরায়েলের বোমাবর্ষণ
ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ