ফেনী সংবাদদাতা : নকশি কাঁথা সেলাই করে সফল উদ্যোক্তা হয়ে উঠেছেন স্কুল শিক্ষক আয়েশা আক্তার। ফেনীর দাগনভূঞা একাডেমিতে আট বছর শিক্ষকতা করেন তিনি। ছোট বেলায় মাকে দেখতেন টিভি কাভার, কুশন কাভার ইত্যাদির কাজ করতে। সেই থেকে আয়েশা আক্তারের নকশি কাঁথাসহ সুই-সুতো নিয়ে কাজে আগ্রহ তৈরি হয়। এছাড়া বাবা মৃত জাকির হোসেনকে দেখে ব্যবসা করার আগ্রহ তৈরি হয়। আগ্রহ এবং দক্ষতাকে কাজে লাগিয়ে শিক্ষকতার একপর্যায়ে আয়েশা আক্তার মন দেন সুই-সুতোর কাজে। শুরু করেন ব্যবসা। সাড়াও ফেলছেন ব্যাপক। নকশি কাঁথার নানা রঙের ডিজাইনে আকৃষ্ট করছেন ক্রেতাদের। ২০১৯ সাল থেকে শুরু করেন নকশি কাঁথা সেলাইয়ের কাজ। লকডাউন শুরু হলে ঘরের কাজ শেষে পুরো অবসর সময়কে কাজে লাগান তিনি। একসময় ক্রেতাদের চাহিদা বাড়তে থাকে। অনলাইন পেইজে নতুন নতুন অর্ডার আসতে থাকে তার। আয়েশা আক্তার জানান, তিনি চট্টগ্রাম কলেজ থেকে অনার্স, মাস্টার্স সম্পন্ন করেন। উদ্যোক্তা হিসেবে বেবি কাঁথা, নকশি বেডসিট, হাতের কাজের ড্রেস, কুশন কাভার, কুর্তি, শাড়ির ডিজাইন নিয়ে কাজ করছেন তিনি। ফেসবুকে আনজুম শপ এর মাধ্যমে এসব কাজের অর্ডার নেন। ভবিষ্যতে গ্রামীণ নারীদের কর্মসংস্থান সৃষ্টি করে স্বাবলম্বী করার মধ্য দিয়ে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে চান তিনি। এ পর্যন্ত তিনি এক লাখ টাকার বেশি কাজের অর্ডার সম্পন্ন করেছেন। আনজুম শপের মালিক আয়েশা আক্তার জানান, শিক্ষকতা পেশা ছেড়ে দেয়ার পর হতাশায় ভুগতে থাকি। অনেক চিন্তা-ভাবনার পর কিছু একটা করার তাগিদ থেকে উদ্যোগ নিয়ে পথ চলা শুরু করি। বর্তমানে আমি সন্তুষ্ট, অবসর সময় কাজে লাগছে। বাড়তি আয় দিয়ে পরিবারকে সহযোগিতা করতে পেরে নিজের কাছে ভালো লাগছে। ভবিষ্যতে কয়েকজন আগ্রহী নারীকে প্রশিক্ষণ দিয়ে আরো বড় পরিসরে কাজ করতে চাই। সানরাইজ নারী উন্নয়ন ফাউন্ডেশনের নির্বাহী সদস্য খাদিজা আক্তার সামান্তা বলেন, নারীরা অবসরকে কাজে লাগিয়ে স্বনির্ভর হলে দেশের অর্থনীতির চাকা সচল হবে। ভারতীয় টিভি চ্যানেল ও মোবাইলে অযথা সময় নষ্ট না করে আয়-মূলক কিছু করা উচিত। দাগনভূঞা উপজেলা যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা সাইফ আহমেদ জানান, নারীদের এগিয়ে নিতে সরকার বিভিন্ন প্রশিক্ষণের মাধ্যমে কর্মমুখী পদক্ষেপ গ্রহণ করছে। এতে পিছিয়ে পড়া বৃহৎ নারীগোষ্ঠী আত্মকর্মী ও সফল উদ্যোক্তা হয়ে পরিবার ও সমাজে অবদান রাখবে।