ঢাকা ০৮:২৩ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ০৮ জুন ২০২৫

সবুজ পৃথিবী: পরিবেশ রক্ষার পথে আমাদের পদক্ষেপ

  • আপডেট সময় : ১০:৫৪:০০ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৫ জুন ২০২৪
  • ১০২ বার পড়া হয়েছে

সাবিরা নুপুর : নদীগুলোর মৃতপ্রায় অবস্থা। বিভিন্ন কারখানার বর্জ্য নদীতে পড়ে পানি কালো হয়ে ব্যবহারের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। নদীর আশপাশের মানুষ আগে গোসল ও কাপড় পরিষ্কারের জন্য নদীর ওপর নির্ভরশীল ছিল। বলছি বুড়িগঙ্গা, তুরাগ নদীসহ অন্যান্য নদীর কথা। এই নদীগুলোর আশপাশে অবস্থিত মানুষেরা মৃতপ্রায় নদীগুলোর কারণে বিশুদ্ধ বাতাস ও সতেজ মাছ খাওয়া থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।
আমাদের গ্রামের বাড়ির সামনে একটি খাল ছিল। যেখানে স্টিমার, বড় নৌকা ছিল। বড় নৌকায় করে মানুষ বিয়ে করতে যেত। সেই খালে এখন কিছু চলে না। দুইপাড়ে আবর্জনা ফেলে খালটি প্রায় মারা গিয়েছে। সারা বাংলাদেশে এমন অনেক জলাধার মৃতপ্রায় অবস্থা। জলাধারগুলো চালু থাকলে পরিবেশ দূষণ অনেক কম হতে পারতো।
বিশ্ব পরিবশে দিবস পালিত হলো ৫ জুন ২০২৪। উদ্দেশ্য পরিবেশ রক্ষায় সচেতনতা বৃদ্ধি করা। প্রতিবছর এই দিবসের জন্য একটি থিম নির্ধারণ করা হয়। এবছরও একটি থিম নির্ধারণ হয়েছে। এবছরের থিম হচ্ছে ভূমি পুনরুদ্ধার, মরুকরণ এবং খরা স্থিতিস্থাপকতা। সাথে একটি স্লোগানও আছে। স্লোগানটি হচ্ছে আমাদের ভূমি, আমাদের ভবিষ্যৎ। এবছর দিবসটি আয়োজক দেশ সৌদি আরব।
পরিবেশ রক্ষার জন্য একটি দিন যথার্থ নয়। বছরের ৩৬৫ দিন, প্রতি মুহূর্ত আমাদের পরিবেশ রক্ষায় উদ্যোগী ভূমিকা রাখা খুবই প্রয়োজন। প্রতিদিন আমরা বিভিন্নভাবে পরিবেশ ধ্বংস করছি। প্লাস্টিকের ব্যবহার আমাদের মাটি এবং বিশাল জলরাশিকে ধ্বংসের মুখে নিয়ে যাচ্ছে। প্রাণীকূল এবং মানব প্রজাতিও একইভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। আমরা প্রতিদিন যে পরিমাণ প্লাস্টিক বর্জন করি তার খুব কম পরিমাণই পুনর্ব্যবহার করা হয় অথবা পুড়িয়ে ফেলা হয়। বেশিরভাগ প্লাস্টিকই মাটিতে জমা হয় যা ক্ষয় হতে ১০০০ বছর পর্যন্ত সময় লাগতে পারে।
একসময় মাটি এবং পানি দূষিত করে ফেলে। কীভাবে প্লাস্টিক মাটি, পানি, প্রাণী এবং মানবকূলকে ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে সে বিষয়ে কিছু গবেষণা কার্যক্রম আছে। কিন্তু প্লাস্টিক দূষণ কীভাবে এবং কী পরিমাণ ক্ষতিগ্রস্ত করছে সে বিষয়ে ব্যাপকভাবে জানার জন্য প্রচুর গবেষণা কার্যক্রম পরিচালনা করা প্রয়োজন।
প্রতিনিয়ত পরিবেশ ধ্বংস করে আমরা বসবাসের জন্য বাড়িঘর ও ইন্ডাস্ট্রি তৈরি করছি, যা জলবায়ু পরিবর্তনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। জলবায়ুর পরিবর্তন পরিবেশের ওপর ব্যাপক প্রভাব ফেলছে। বিশ্বব্যাপী তাপমাত্রা বেড়েই চলেছে। বৃষ্টিপাত কম হচ্ছে।
গত কয়েক সপ্তাহের দাবদাহ জনজীবন অতীষ্ঠ হয়ে উঠেছে। বিশেষ করে নারী, শিশু, প্রতিবন্ধী এবং বয়স্ক জনগণ অসুস্থ্য হয়ে পড়ছে। হিটস্ট্রোকে মানুষ মারা যাচ্ছে। বাংলাদেশের অনেক স্থানে পানির স্তর নিচে নেমে গিয়েছে। খাবার পানির সংকট দেখা দিচ্ছে। পানিতে লবণের মাত্রা বৃদ্ধি পাচ্ছে। মানুষ পানি কিনে খাচ্ছে। যাদের পানি কিনে খাওয়ার সামর্থ্য নেই তারা প্রয়োজনীয় পরিমাণ পানি খেতে পারছে না। ফলে অনেকেই নানাবিধ শারীরিক অসুস্থতার শিকার হচ্ছে।
বাংলাদেশের গ্রামাঞ্চলে এখনও বেশিরভাগ ক্ষেত্রে নারী এবং কিশোরীরা খাবার পানি সংগ্রহ করে থাকে। প্রতিদিন তাদের দুই থেকে তিনঘণ্টা ব্যয় করতে হয় পানি সংগ্রহের জন্য। পানি আনা ও নেওয়ার পথে নারী ও শিশুদের যৌন হয়রানির শিকার হতে হয়। অনেকাংশে কিশোরী/মেয়ে শিশুরা শিক্ষা থেকে ঝরে পড়ে। একইসাথে তারা বাল্যবিবাহের শিকার হয়। বাংলাদেশে শিশু বিবাহের হার ৫১ শতাংশ যা দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে সর্বোচ্চ।
পরিবেশ ধ্বংসের কারণে জলবায়ুর ব্যাপক পরিবর্তন সাধিত হচ্ছে। বিশ্বব্যাপী প্রাকৃতিক দুর্যোগের পরিমাণ ক্রমাগত বৃদ্ধি পাচ্ছে। কিছুদিন আগে সাইক্লোন রিমাল বাংলাদেশ উপকূলে ব্যাপক আঘাত হেনেছে। প্রায় দশজন মারা গিয়েছে। প্রায় ৩৭ লাখের মতো মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে হাজার হাজার মানুষ গৃহহীন হয়ে পড়েছে। মানুষ বাস্তুচ্যুত হচ্ছে। বিশেষ করে নারী ও শিশুরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। নারীর সঙ্গে লিঙ্গভিত্তিক সহিংসতার পরিমাণ বাড়ছে। সেইসাথে বাড়ছে শিশু শ্রমিকের সংখ্যা।
জাতীয় শিশুশ্রমিক জরিপ ২০২২ এর তথ্য অনুযায়ী প্রায় ৩৫ লাখ শিশু বিভিন্ন কাজে জড়িত হয়ে আছে। একইসাথে ১০ লাখেরও বেশি শিশু ঝুঁকিপূর্ণ কাজে জড়িত আছে। বাংলাদেশ সরকার আশাবাদী যে, ২০২৫ সালের মধ্যে দেশে শিশুশ্রম নির্মূল করতে সক্ষম হবেন।
তাপমাত্রা বৃদ্ধি, বৃষ্টিপাতের স্বল্পতা, পানি দূষণ, মাটি দূষণ এবং খরা কৃষিপণ্য ও অন্যান্য শস্য উংপাদনে ব্যাপক নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। প্রান্তিক জনগণের দুর্ভোগ বৃদ্ধি পাচ্ছে। তারা গ্রাম ছেড়ে শহরমুখী হচ্ছে। শহরের ওপর চাপ বাড়ছে। প্রান্তিক নারীর জীবনে অনিশ্চিয়তা তৈরি হচ্ছে। নারীর ক্ষমতায়ন ব্যাহত হচ্ছে।
পরিবেশ ধ্বংসের কারণে প্রতিবেশ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। অনেক প্রাণীকূল এবং উদ্ভিদ বিলুপ্ত হলে যাচ্ছে। পরিবেশ ও প্রতিবেশের ভারসাম্যতা রক্ষায় এগুলোকে এখনই ফিরিয়ে আনতে হবে। আমরা অনেক সময় নষ্ট করে ফেলেছি। পরিবেশের চরম ক্ষতি করেছি। পরিবেশ ধ্বংসের কারণে বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধি পাচ্ছে। বৈশ্বিক উচ্চতা ১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে রাখে হলে, ২০৩০ সালের মধ্যে বছরে যে পরিমাণ গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমন করা হয় তা অর্ধেকে নামিয়ে আনতে হবে। আমরা যদি আমাদের শিশুদের জন্য একটি সমৃদ্ধ ও নির্মল পরিবেশ প্রত্যাশা করি, তাহলে এখনই পরিবেশ রক্ষায় সচেষ্ট হতে হবে। প্লাস্টিকের বিকল্প ব্যবহার করতে হবে। ভূমির ঊর্বরতা ফিরিয়ে আনার লক্ষ্যে রাসায়নিক সারের পরিবর্তে জৈবিক সার ব্যবহার বৃদ্ধি করতে হবে। পরিবেশ রক্ষায় গাছের বিকল্প নেই। প্রচুর গাছ লাগাতে হবে, সবুজ পৃথিবী গড়ে তুলতে হবে এবং তা করতে হবে এখনই।
লেখক: অ্যাডভোকেসি এবং কমিউনিকেশন প্রফেশনাল, ইন্টারন্যাশনাল রেসকিউ কমিটি (আইআরসি)

 

 

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

সবুজ পৃথিবী: পরিবেশ রক্ষার পথে আমাদের পদক্ষেপ

আপডেট সময় : ১০:৫৪:০০ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৫ জুন ২০২৪

সাবিরা নুপুর : নদীগুলোর মৃতপ্রায় অবস্থা। বিভিন্ন কারখানার বর্জ্য নদীতে পড়ে পানি কালো হয়ে ব্যবহারের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। নদীর আশপাশের মানুষ আগে গোসল ও কাপড় পরিষ্কারের জন্য নদীর ওপর নির্ভরশীল ছিল। বলছি বুড়িগঙ্গা, তুরাগ নদীসহ অন্যান্য নদীর কথা। এই নদীগুলোর আশপাশে অবস্থিত মানুষেরা মৃতপ্রায় নদীগুলোর কারণে বিশুদ্ধ বাতাস ও সতেজ মাছ খাওয়া থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।
আমাদের গ্রামের বাড়ির সামনে একটি খাল ছিল। যেখানে স্টিমার, বড় নৌকা ছিল। বড় নৌকায় করে মানুষ বিয়ে করতে যেত। সেই খালে এখন কিছু চলে না। দুইপাড়ে আবর্জনা ফেলে খালটি প্রায় মারা গিয়েছে। সারা বাংলাদেশে এমন অনেক জলাধার মৃতপ্রায় অবস্থা। জলাধারগুলো চালু থাকলে পরিবেশ দূষণ অনেক কম হতে পারতো।
বিশ্ব পরিবশে দিবস পালিত হলো ৫ জুন ২০২৪। উদ্দেশ্য পরিবেশ রক্ষায় সচেতনতা বৃদ্ধি করা। প্রতিবছর এই দিবসের জন্য একটি থিম নির্ধারণ করা হয়। এবছরও একটি থিম নির্ধারণ হয়েছে। এবছরের থিম হচ্ছে ভূমি পুনরুদ্ধার, মরুকরণ এবং খরা স্থিতিস্থাপকতা। সাথে একটি স্লোগানও আছে। স্লোগানটি হচ্ছে আমাদের ভূমি, আমাদের ভবিষ্যৎ। এবছর দিবসটি আয়োজক দেশ সৌদি আরব।
পরিবেশ রক্ষার জন্য একটি দিন যথার্থ নয়। বছরের ৩৬৫ দিন, প্রতি মুহূর্ত আমাদের পরিবেশ রক্ষায় উদ্যোগী ভূমিকা রাখা খুবই প্রয়োজন। প্রতিদিন আমরা বিভিন্নভাবে পরিবেশ ধ্বংস করছি। প্লাস্টিকের ব্যবহার আমাদের মাটি এবং বিশাল জলরাশিকে ধ্বংসের মুখে নিয়ে যাচ্ছে। প্রাণীকূল এবং মানব প্রজাতিও একইভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। আমরা প্রতিদিন যে পরিমাণ প্লাস্টিক বর্জন করি তার খুব কম পরিমাণই পুনর্ব্যবহার করা হয় অথবা পুড়িয়ে ফেলা হয়। বেশিরভাগ প্লাস্টিকই মাটিতে জমা হয় যা ক্ষয় হতে ১০০০ বছর পর্যন্ত সময় লাগতে পারে।
একসময় মাটি এবং পানি দূষিত করে ফেলে। কীভাবে প্লাস্টিক মাটি, পানি, প্রাণী এবং মানবকূলকে ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে সে বিষয়ে কিছু গবেষণা কার্যক্রম আছে। কিন্তু প্লাস্টিক দূষণ কীভাবে এবং কী পরিমাণ ক্ষতিগ্রস্ত করছে সে বিষয়ে ব্যাপকভাবে জানার জন্য প্রচুর গবেষণা কার্যক্রম পরিচালনা করা প্রয়োজন।
প্রতিনিয়ত পরিবেশ ধ্বংস করে আমরা বসবাসের জন্য বাড়িঘর ও ইন্ডাস্ট্রি তৈরি করছি, যা জলবায়ু পরিবর্তনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। জলবায়ুর পরিবর্তন পরিবেশের ওপর ব্যাপক প্রভাব ফেলছে। বিশ্বব্যাপী তাপমাত্রা বেড়েই চলেছে। বৃষ্টিপাত কম হচ্ছে।
গত কয়েক সপ্তাহের দাবদাহ জনজীবন অতীষ্ঠ হয়ে উঠেছে। বিশেষ করে নারী, শিশু, প্রতিবন্ধী এবং বয়স্ক জনগণ অসুস্থ্য হয়ে পড়ছে। হিটস্ট্রোকে মানুষ মারা যাচ্ছে। বাংলাদেশের অনেক স্থানে পানির স্তর নিচে নেমে গিয়েছে। খাবার পানির সংকট দেখা দিচ্ছে। পানিতে লবণের মাত্রা বৃদ্ধি পাচ্ছে। মানুষ পানি কিনে খাচ্ছে। যাদের পানি কিনে খাওয়ার সামর্থ্য নেই তারা প্রয়োজনীয় পরিমাণ পানি খেতে পারছে না। ফলে অনেকেই নানাবিধ শারীরিক অসুস্থতার শিকার হচ্ছে।
বাংলাদেশের গ্রামাঞ্চলে এখনও বেশিরভাগ ক্ষেত্রে নারী এবং কিশোরীরা খাবার পানি সংগ্রহ করে থাকে। প্রতিদিন তাদের দুই থেকে তিনঘণ্টা ব্যয় করতে হয় পানি সংগ্রহের জন্য। পানি আনা ও নেওয়ার পথে নারী ও শিশুদের যৌন হয়রানির শিকার হতে হয়। অনেকাংশে কিশোরী/মেয়ে শিশুরা শিক্ষা থেকে ঝরে পড়ে। একইসাথে তারা বাল্যবিবাহের শিকার হয়। বাংলাদেশে শিশু বিবাহের হার ৫১ শতাংশ যা দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে সর্বোচ্চ।
পরিবেশ ধ্বংসের কারণে জলবায়ুর ব্যাপক পরিবর্তন সাধিত হচ্ছে। বিশ্বব্যাপী প্রাকৃতিক দুর্যোগের পরিমাণ ক্রমাগত বৃদ্ধি পাচ্ছে। কিছুদিন আগে সাইক্লোন রিমাল বাংলাদেশ উপকূলে ব্যাপক আঘাত হেনেছে। প্রায় দশজন মারা গিয়েছে। প্রায় ৩৭ লাখের মতো মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে হাজার হাজার মানুষ গৃহহীন হয়ে পড়েছে। মানুষ বাস্তুচ্যুত হচ্ছে। বিশেষ করে নারী ও শিশুরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। নারীর সঙ্গে লিঙ্গভিত্তিক সহিংসতার পরিমাণ বাড়ছে। সেইসাথে বাড়ছে শিশু শ্রমিকের সংখ্যা।
জাতীয় শিশুশ্রমিক জরিপ ২০২২ এর তথ্য অনুযায়ী প্রায় ৩৫ লাখ শিশু বিভিন্ন কাজে জড়িত হয়ে আছে। একইসাথে ১০ লাখেরও বেশি শিশু ঝুঁকিপূর্ণ কাজে জড়িত আছে। বাংলাদেশ সরকার আশাবাদী যে, ২০২৫ সালের মধ্যে দেশে শিশুশ্রম নির্মূল করতে সক্ষম হবেন।
তাপমাত্রা বৃদ্ধি, বৃষ্টিপাতের স্বল্পতা, পানি দূষণ, মাটি দূষণ এবং খরা কৃষিপণ্য ও অন্যান্য শস্য উংপাদনে ব্যাপক নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। প্রান্তিক জনগণের দুর্ভোগ বৃদ্ধি পাচ্ছে। তারা গ্রাম ছেড়ে শহরমুখী হচ্ছে। শহরের ওপর চাপ বাড়ছে। প্রান্তিক নারীর জীবনে অনিশ্চিয়তা তৈরি হচ্ছে। নারীর ক্ষমতায়ন ব্যাহত হচ্ছে।
পরিবেশ ধ্বংসের কারণে প্রতিবেশ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। অনেক প্রাণীকূল এবং উদ্ভিদ বিলুপ্ত হলে যাচ্ছে। পরিবেশ ও প্রতিবেশের ভারসাম্যতা রক্ষায় এগুলোকে এখনই ফিরিয়ে আনতে হবে। আমরা অনেক সময় নষ্ট করে ফেলেছি। পরিবেশের চরম ক্ষতি করেছি। পরিবেশ ধ্বংসের কারণে বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধি পাচ্ছে। বৈশ্বিক উচ্চতা ১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে রাখে হলে, ২০৩০ সালের মধ্যে বছরে যে পরিমাণ গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমন করা হয় তা অর্ধেকে নামিয়ে আনতে হবে। আমরা যদি আমাদের শিশুদের জন্য একটি সমৃদ্ধ ও নির্মল পরিবেশ প্রত্যাশা করি, তাহলে এখনই পরিবেশ রক্ষায় সচেষ্ট হতে হবে। প্লাস্টিকের বিকল্প ব্যবহার করতে হবে। ভূমির ঊর্বরতা ফিরিয়ে আনার লক্ষ্যে রাসায়নিক সারের পরিবর্তে জৈবিক সার ব্যবহার বৃদ্ধি করতে হবে। পরিবেশ রক্ষায় গাছের বিকল্প নেই। প্রচুর গাছ লাগাতে হবে, সবুজ পৃথিবী গড়ে তুলতে হবে এবং তা করতে হবে এখনই।
লেখক: অ্যাডভোকেসি এবং কমিউনিকেশন প্রফেশনাল, ইন্টারন্যাশনাল রেসকিউ কমিটি (আইআরসি)