ঢাকা ০২:১৯ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৬ মে ২০২৫

গ্রেনেড হামলা নিয়ে সাঈদ খোকনের বক্তব্য রহস্যজনক: রিজভী

  • আপডেট সময় : ০১:২৭:০৫ অপরাহ্ন, শনিবার, ২১ অগাস্ট ২০২১
  • ৮১ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক ঃ ২১ শে আগস্টের গ্রেনেড হামলার আগের দিন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনাকে সতর্ক করেছিলেন বলে ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সাবেক মেয়র সাঈদ খোকনের দেওয়া বক্তব্যকে রহস্যজনক বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি নেতা রুহুল কবির রিজভী আহমেদ।
গতকাল শনিবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে সাংবাদিকদের বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘আজ ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা নিয়ে আমরা একটি চাঞ্চল্যকর তথ্য পেয়েছি। সেটা হল ঢাকার সাবেক মেয়র হানিফের ছেলে সাবেক মেয়র সাঈদ খোকন গতকাল চাঞ্চল্যকর তথ্য দিয়েছে। হামলার আগের দিন তার বাবা হানিফ তাকে আগেই বলেছিলেন যে শেখ হাসিনার ওপর হামলা হতে পারে এই তথ্যটা তাকে জানাও। তিনি বলেন, সাঈদ খোকন ঘটনার আগের দিন তাদের নেত্রীকে জানিয়েছেন যে আপনার বাসায় বা যাতায়াত পথে আক্রমণ হতে পারে। কিন্তু এই বিষয়টা শেখ হাসিনা কোনো আমলে নেন নাই। এটা আমাদের কাছে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে- কেন এই বিষয়টা তিনি (শেখ হাসিনা) গুরুত্ব দিলেন না? আমলে নিলেন না?
‘২১ আগস্ট নারকীয় গ্রেনেড হামলা, স্মৃতির পাতা থেকে জানা অজানা দুটি কথা’ শীর্ষক গত শুক্রবারের আলোচনা সভায় সাঈদ খোকন বলেছেন, ‘বাবা আমাকে সুধা সদনে পাঠিয়েছিলেন। নেত্রীকে হামলার পূর্বাভাস দিতে। আমি সুধা সদনে গিয়ে বলি যে নেত্রীর সঙ্গে দেখা করব। নেত্রী তখন সাংগঠনিক সফর শেষে বিশ্রামে ছিলেন। নেত্রী আমাকে ডেকে নেন দোতলায়। তখন আমি বলি, বাবা আমাকে বলেছে আপনাকে জানাতে। সুধা সদনসহ আপনার কাল সভায় যাওয়ার রাস্তা ও সভাস্থলে হামলা হতে পারে। হামলাকারীরা নিরাপদে ঢাকায় চলে এসেছে। আপনি আমার সঙ্গে আমাদের বাসায় চলেন। এখানে নিরাপদ নন আপনি। বাবা আপনাকে যেতে বলেছেন।’
বিএনপি নেতা রিজভী বলেন, ‘এই সরকারের আন্দোলনের ফসল এক-এগারোর সরকারের সময় এই হামলা মামলা নিয়ে আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান এর নাম চার্জশিটে আসেনি। সে সময় অনেক তদন্ত করেছে। কিন্তু এই সরকার ক্ষমতায় এসে তাদের লোক যারা নির্বাচন করবে পোস্টার ছাপিয়েছে তাকে তদন্ত কর্মকর্তা করা হয়। তাকে দিয়ে তদন্ত করে আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের নাম দিয়েছে। এতে স্পষ্ট হয় এটা একদম পরিকল্পিত, উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। এসব ঘটনায় সব সময় আমরা নিন্দা জানাই। কিন্তু এই সরকার সঠিক তদন্তের মাধ্যমে কারা জড়িত তাদের বের করার আন্তরিকতা এদের মধ্যে আমরা দেখতে পাই নাই। সে সময় বিএনপি ক্ষমতায় ছিল। কিন্তু তারা বিএনপিকে কোনো সহযোগিতা করেনি। রিজভী আহমেদ বলেন, তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া সুধাসদনে দেখতে গিয়েছিলেন তাকে ঢুকতে দেওয়া হয়নি। এবং তদন্তের বিষয়ে আলোচনা করতে চেয়েছিলেন। তাও তারা করেন নাই। সবকিছু বিবেচনা করে দেখলে এবং গতকাল এর সাঈদ খোকনের তথ্য থেকে বোঝা যায় এখানে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য হাসিলের জন্য করা হয়েছে।

রিজভী অভিযোগ করে বলেন, ‘এই সরকার মুফতি হান্নানকে নির্যাতন করে স্বাক্ষর নিয়েছিল। কিন্তু পরবর্তীকালে তিনি সেটা অস্বীকার করেছেন এবং বলেছেন আমাকে নির্যাতন করে স্বাক্ষর নেওয়া হয়েছে। এ থেকে বোঝা যায় এই সরকার জাতীয়তাবাদী শক্তিকে ধ্বংস করার জন্য উঠে পড়ে লেগেছে। সাঈদ খোকন যে তথ্য দিয়েছিল তারা সতর্ক হতে পারত বা সরকারের সঙ্গে আলোচনা করতে পারত। আরেকটি বিষয় হলো তাদেরকে যে জায়গায় অনুমতি দেওয়া হয়েছিল সে জায়গায় না করে হঠাৎ করে এখানে করে। এ থেকে বোঝা যায় যে হামলা সাজানো ছিলো। এই হামলার মাধ্যমে বিএনপির ভাবমূর্তি নষ্ট করতে উদ্দেশ্য ছিল। যেটা আবারও প্রমাণিত হলো গতকাল সাঈদ খোকনের বক্তব্যের মধ্যে দিয়ে। রিজভী বলেন, এখন যে একদলীয় শাসন ব্যবস্থা সেটাকে প্রতিষ্ঠা করার জন্য কোন মাধ্যম এবং যারা গণতন্ত্র নিয়ে কাজ করে তাদেরকে দিয়ে কাজ করানো হচ্ছে। একতরফাভাবে একদলীয় শাসনের ব্যবস্থার জন্য কাজ করানো হচ্ছে। সুতরাং বর্তমানে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নয়, তাদের বক্তব্য তুলে ধরার জন্য কাজ করানো হচ্ছে।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

গ্রেনেড হামলা নিয়ে সাঈদ খোকনের বক্তব্য রহস্যজনক: রিজভী

আপডেট সময় : ০১:২৭:০৫ অপরাহ্ন, শনিবার, ২১ অগাস্ট ২০২১

নিজস্ব প্রতিবেদক ঃ ২১ শে আগস্টের গ্রেনেড হামলার আগের দিন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনাকে সতর্ক করেছিলেন বলে ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সাবেক মেয়র সাঈদ খোকনের দেওয়া বক্তব্যকে রহস্যজনক বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি নেতা রুহুল কবির রিজভী আহমেদ।
গতকাল শনিবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে সাংবাদিকদের বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘আজ ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা নিয়ে আমরা একটি চাঞ্চল্যকর তথ্য পেয়েছি। সেটা হল ঢাকার সাবেক মেয়র হানিফের ছেলে সাবেক মেয়র সাঈদ খোকন গতকাল চাঞ্চল্যকর তথ্য দিয়েছে। হামলার আগের দিন তার বাবা হানিফ তাকে আগেই বলেছিলেন যে শেখ হাসিনার ওপর হামলা হতে পারে এই তথ্যটা তাকে জানাও। তিনি বলেন, সাঈদ খোকন ঘটনার আগের দিন তাদের নেত্রীকে জানিয়েছেন যে আপনার বাসায় বা যাতায়াত পথে আক্রমণ হতে পারে। কিন্তু এই বিষয়টা শেখ হাসিনা কোনো আমলে নেন নাই। এটা আমাদের কাছে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে- কেন এই বিষয়টা তিনি (শেখ হাসিনা) গুরুত্ব দিলেন না? আমলে নিলেন না?
‘২১ আগস্ট নারকীয় গ্রেনেড হামলা, স্মৃতির পাতা থেকে জানা অজানা দুটি কথা’ শীর্ষক গত শুক্রবারের আলোচনা সভায় সাঈদ খোকন বলেছেন, ‘বাবা আমাকে সুধা সদনে পাঠিয়েছিলেন। নেত্রীকে হামলার পূর্বাভাস দিতে। আমি সুধা সদনে গিয়ে বলি যে নেত্রীর সঙ্গে দেখা করব। নেত্রী তখন সাংগঠনিক সফর শেষে বিশ্রামে ছিলেন। নেত্রী আমাকে ডেকে নেন দোতলায়। তখন আমি বলি, বাবা আমাকে বলেছে আপনাকে জানাতে। সুধা সদনসহ আপনার কাল সভায় যাওয়ার রাস্তা ও সভাস্থলে হামলা হতে পারে। হামলাকারীরা নিরাপদে ঢাকায় চলে এসেছে। আপনি আমার সঙ্গে আমাদের বাসায় চলেন। এখানে নিরাপদ নন আপনি। বাবা আপনাকে যেতে বলেছেন।’
বিএনপি নেতা রিজভী বলেন, ‘এই সরকারের আন্দোলনের ফসল এক-এগারোর সরকারের সময় এই হামলা মামলা নিয়ে আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান এর নাম চার্জশিটে আসেনি। সে সময় অনেক তদন্ত করেছে। কিন্তু এই সরকার ক্ষমতায় এসে তাদের লোক যারা নির্বাচন করবে পোস্টার ছাপিয়েছে তাকে তদন্ত কর্মকর্তা করা হয়। তাকে দিয়ে তদন্ত করে আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের নাম দিয়েছে। এতে স্পষ্ট হয় এটা একদম পরিকল্পিত, উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। এসব ঘটনায় সব সময় আমরা নিন্দা জানাই। কিন্তু এই সরকার সঠিক তদন্তের মাধ্যমে কারা জড়িত তাদের বের করার আন্তরিকতা এদের মধ্যে আমরা দেখতে পাই নাই। সে সময় বিএনপি ক্ষমতায় ছিল। কিন্তু তারা বিএনপিকে কোনো সহযোগিতা করেনি। রিজভী আহমেদ বলেন, তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া সুধাসদনে দেখতে গিয়েছিলেন তাকে ঢুকতে দেওয়া হয়নি। এবং তদন্তের বিষয়ে আলোচনা করতে চেয়েছিলেন। তাও তারা করেন নাই। সবকিছু বিবেচনা করে দেখলে এবং গতকাল এর সাঈদ খোকনের তথ্য থেকে বোঝা যায় এখানে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য হাসিলের জন্য করা হয়েছে।

রিজভী অভিযোগ করে বলেন, ‘এই সরকার মুফতি হান্নানকে নির্যাতন করে স্বাক্ষর নিয়েছিল। কিন্তু পরবর্তীকালে তিনি সেটা অস্বীকার করেছেন এবং বলেছেন আমাকে নির্যাতন করে স্বাক্ষর নেওয়া হয়েছে। এ থেকে বোঝা যায় এই সরকার জাতীয়তাবাদী শক্তিকে ধ্বংস করার জন্য উঠে পড়ে লেগেছে। সাঈদ খোকন যে তথ্য দিয়েছিল তারা সতর্ক হতে পারত বা সরকারের সঙ্গে আলোচনা করতে পারত। আরেকটি বিষয় হলো তাদেরকে যে জায়গায় অনুমতি দেওয়া হয়েছিল সে জায়গায় না করে হঠাৎ করে এখানে করে। এ থেকে বোঝা যায় যে হামলা সাজানো ছিলো। এই হামলার মাধ্যমে বিএনপির ভাবমূর্তি নষ্ট করতে উদ্দেশ্য ছিল। যেটা আবারও প্রমাণিত হলো গতকাল সাঈদ খোকনের বক্তব্যের মধ্যে দিয়ে। রিজভী বলেন, এখন যে একদলীয় শাসন ব্যবস্থা সেটাকে প্রতিষ্ঠা করার জন্য কোন মাধ্যম এবং যারা গণতন্ত্র নিয়ে কাজ করে তাদেরকে দিয়ে কাজ করানো হচ্ছে। একতরফাভাবে একদলীয় শাসনের ব্যবস্থার জন্য কাজ করানো হচ্ছে। সুতরাং বর্তমানে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নয়, তাদের বক্তব্য তুলে ধরার জন্য কাজ করানো হচ্ছে।