ঢাকা ০২:৪৭ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৪ মে ২০২৫

খুমেক হাসপাতাল দুই লটে বেতন নেন আউটসোর্সিং কর্মচারী

  • আপডেট সময় : ০১:১৭:৩৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ২০ মে ২০২৪
  • ৫৮ বার পড়া হয়েছে

খুলনা সংবাদদাতা : কেউ কাজ করেও বেতন পান না, আবার কেউ দুই লট থেকে বেতন পান। এটি সম্ভব হয়েছে আউটসোর্সিং ঠিকাদারের দুর্নীতির বদৌলতে। খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আউটসোর্সিং কর্মচারীদের ১০০ জনের লটের বেতনের চিত্র এটি। এমন অনিয়মের অভিযোগ এনেছেন খোদ হাসপাতালের উপপরিচালক। গত ১৫ মে উপপরিচালক ডা. মো. হুসাইন শাফায়াত স্বাক্ষরিত একটি চিঠিতে এমনটি উল্লেখ করা হয়। হাসপাতালের পরিচালক বরাবর দেওয়া ওই চিঠিতে হিসাবরক্ষকের কাছে তালিকা সরবরাহের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। চিঠিতে বলা হয়, হাসপাতালের আউটসোর্সিং ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মাছরাঙ্গা সিকিউরিটি সার্ভিসেস (প্রা.) লিমিটেডের ১০৭, ৯৫ ও ৪ জনের লটে তিনটি আউটসোর্সিং সেবা চলমান রয়েছে। সেই সাথে হাসপাতাল সার্ভিস ম্যানেজমেন্ট থেকে অপারেশন প্ল্যানের আওতায় খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে সেবা ও সরবরাহ খাতে পরিচ্ছন্নতা ও নিরাপত্তা সেবায় কর্মরত ১০০ জন আউটসোর্সিং কর্মীর সেবা আউটসোর্সিং প্রক্রিয়ায় চলমান ছিল। এই ১০০ জনের বেতন ২০২২ সালের ডিসেম্বরের পর চুক্তির মেয়াদ নবায়ন/বৃদ্ধি না করায় তাদের বেতনের জন্য তহবিল বরাদ্দ স্থগিত করা হয়। ২০২৩ সালের জানুয়ারি থেকে তাদের বেতন স্থগিত করা হয়। কিন্তু হাসপাতালের কার্যক্রম অত্যন্ত সংবেদনশীল এবং অত্যবশ্যকীয় হওয়ায় কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে চলমান রাখতে ঠিকাদার তার নিজ ব্যবস্থাপনায় ওই ১০০ জন কর্মীর কার্যক্রম চালু রেখেছিলেন। পরে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সার্ভিস ম্যানেজমেন্টের লাইন ডাইরেক্টরের (হাসপাতাল) দপ্তর থেকে ওই ১০০ জনের ২০২৩ সালের জানুয়ারি থেকে নভেম্বর পর্যন্ত বেতন বরাদ্দ দেওয়া হয়। যেহেতু তহবিল প্রাপ্তি অনিশ্চিত ছিল এবং ঠিকাদার ওই কর্মীদের কাজে নিয়োজিত রেখেছিল। তাই সেই তালিকা, নিয়োগপত্র এবং হাজিরা ঠিকাদারের কাছ থেকে সংগ্রহ করে বেতন ১০০ জনের ব্যাংক একাউন্টে ট্রান্সফার করা হয়। যেহেতু দীর্ঘ এগার মাস পর বেতন দেওয়া হয় তাই তহবিল বরাদ্দের খবর পাওয়া মাত্রই হাসপাতালের বিভিন্ন স্থানে কর্মরত কর্মীদের মধ্যে বেতন প্রাপ্তির তীব্র আকাঙ্ক্ষা তৈরি হয় এবং যাচাই-বাছাই ও অন্যান্য দাপ্তরিক কর্মকাণ্ড সম্পন্ন করতে বিলম্ব হওয়ায় কর্মীদের মধ্যে অসন্তোষ সৃষ্টি হওযাতে দ্রুত বেতন দেওয়া সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সেই মোতাবেক ঠিকাদারের সরবরাহকৃত তালিকা অনুযায়ী বেতন দ্রুত দেওয়া হয়।
কিন্তু পরে আভ্যন্তরীণ যাচাই-বাছাইকালে দেখা যায়, ওই ১০০ জন কর্মীর ২৮ জন চলমান ১০৭, ৯৫ ও ৪ জনের লট থেকে বেতন উত্তোলন করছেন। একজন ব্যক্তির দুই স্থান থেকে বেতন উত্তোলন সুস্পষ্টভাবে আইন ও বিধির লঙ্ঘন বলেও চিঠিতে উল্লেখ করা হয়। যেহেতু উল্লেখিত ঠিকাদার সন্তোষজনক কার্যক্রমের ভিত্তিতে আউটসোর্সিং চুক্তি চার অর্থবছর নবায়ন করে আসছে, তাই ঠিকাদারের এমন কর্ম অত্যন্ত অনাকাঙ্ক্ষিত। বিষয়টির গ্রহণযোগ্য আইনানুগ সুরাহা হওয়া প্রয়োজন। তাই এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে পরিচালককে লিখিতভাবে বিষয়টি অবহিত করা হয়। হাসপাতালের পরিচালক ডা. গৌতম কুমার পাল বলেন, অভিযোগটি পাওয়ার পর সংশ্লিষ্ট কর্মচারীদের তালিকা সংগ্রহ করা হচ্ছে। তালিকাসহ অভিযোগটি মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে। একই সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য সুপারিশও করা হবে। খুমেক হাসপাতালের আউটসোর্সিং কর্মচারীদের অনেকেই ১০০ জনের লট থেকে বিগত দেড় বছর ধরে কাজ করে এলেও তাদের অনেকেই বেতন পাননি। আবার কেউ কেউ কাজ না করেও বেতন পেয়েছেন এমনও অভিযোগ রয়েছে। সবশেষ হাসপাতালের উপপরিচালকের এমন অভিযোগের পরই সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের অনিয়মের বিষয়টি আরও স্পষ্ট হতে যাচ্ছে।

 

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

প্রধান উপদেষ্টা হতাশ-ক্ষুব্ধ, ‘পদত্যাগ’ নিয়ে আলোচনা

খুমেক হাসপাতাল দুই লটে বেতন নেন আউটসোর্সিং কর্মচারী

আপডেট সময় : ০১:১৭:৩৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ২০ মে ২০২৪

খুলনা সংবাদদাতা : কেউ কাজ করেও বেতন পান না, আবার কেউ দুই লট থেকে বেতন পান। এটি সম্ভব হয়েছে আউটসোর্সিং ঠিকাদারের দুর্নীতির বদৌলতে। খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আউটসোর্সিং কর্মচারীদের ১০০ জনের লটের বেতনের চিত্র এটি। এমন অনিয়মের অভিযোগ এনেছেন খোদ হাসপাতালের উপপরিচালক। গত ১৫ মে উপপরিচালক ডা. মো. হুসাইন শাফায়াত স্বাক্ষরিত একটি চিঠিতে এমনটি উল্লেখ করা হয়। হাসপাতালের পরিচালক বরাবর দেওয়া ওই চিঠিতে হিসাবরক্ষকের কাছে তালিকা সরবরাহের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। চিঠিতে বলা হয়, হাসপাতালের আউটসোর্সিং ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মাছরাঙ্গা সিকিউরিটি সার্ভিসেস (প্রা.) লিমিটেডের ১০৭, ৯৫ ও ৪ জনের লটে তিনটি আউটসোর্সিং সেবা চলমান রয়েছে। সেই সাথে হাসপাতাল সার্ভিস ম্যানেজমেন্ট থেকে অপারেশন প্ল্যানের আওতায় খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে সেবা ও সরবরাহ খাতে পরিচ্ছন্নতা ও নিরাপত্তা সেবায় কর্মরত ১০০ জন আউটসোর্সিং কর্মীর সেবা আউটসোর্সিং প্রক্রিয়ায় চলমান ছিল। এই ১০০ জনের বেতন ২০২২ সালের ডিসেম্বরের পর চুক্তির মেয়াদ নবায়ন/বৃদ্ধি না করায় তাদের বেতনের জন্য তহবিল বরাদ্দ স্থগিত করা হয়। ২০২৩ সালের জানুয়ারি থেকে তাদের বেতন স্থগিত করা হয়। কিন্তু হাসপাতালের কার্যক্রম অত্যন্ত সংবেদনশীল এবং অত্যবশ্যকীয় হওয়ায় কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে চলমান রাখতে ঠিকাদার তার নিজ ব্যবস্থাপনায় ওই ১০০ জন কর্মীর কার্যক্রম চালু রেখেছিলেন। পরে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সার্ভিস ম্যানেজমেন্টের লাইন ডাইরেক্টরের (হাসপাতাল) দপ্তর থেকে ওই ১০০ জনের ২০২৩ সালের জানুয়ারি থেকে নভেম্বর পর্যন্ত বেতন বরাদ্দ দেওয়া হয়। যেহেতু তহবিল প্রাপ্তি অনিশ্চিত ছিল এবং ঠিকাদার ওই কর্মীদের কাজে নিয়োজিত রেখেছিল। তাই সেই তালিকা, নিয়োগপত্র এবং হাজিরা ঠিকাদারের কাছ থেকে সংগ্রহ করে বেতন ১০০ জনের ব্যাংক একাউন্টে ট্রান্সফার করা হয়। যেহেতু দীর্ঘ এগার মাস পর বেতন দেওয়া হয় তাই তহবিল বরাদ্দের খবর পাওয়া মাত্রই হাসপাতালের বিভিন্ন স্থানে কর্মরত কর্মীদের মধ্যে বেতন প্রাপ্তির তীব্র আকাঙ্ক্ষা তৈরি হয় এবং যাচাই-বাছাই ও অন্যান্য দাপ্তরিক কর্মকাণ্ড সম্পন্ন করতে বিলম্ব হওয়ায় কর্মীদের মধ্যে অসন্তোষ সৃষ্টি হওযাতে দ্রুত বেতন দেওয়া সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সেই মোতাবেক ঠিকাদারের সরবরাহকৃত তালিকা অনুযায়ী বেতন দ্রুত দেওয়া হয়।
কিন্তু পরে আভ্যন্তরীণ যাচাই-বাছাইকালে দেখা যায়, ওই ১০০ জন কর্মীর ২৮ জন চলমান ১০৭, ৯৫ ও ৪ জনের লট থেকে বেতন উত্তোলন করছেন। একজন ব্যক্তির দুই স্থান থেকে বেতন উত্তোলন সুস্পষ্টভাবে আইন ও বিধির লঙ্ঘন বলেও চিঠিতে উল্লেখ করা হয়। যেহেতু উল্লেখিত ঠিকাদার সন্তোষজনক কার্যক্রমের ভিত্তিতে আউটসোর্সিং চুক্তি চার অর্থবছর নবায়ন করে আসছে, তাই ঠিকাদারের এমন কর্ম অত্যন্ত অনাকাঙ্ক্ষিত। বিষয়টির গ্রহণযোগ্য আইনানুগ সুরাহা হওয়া প্রয়োজন। তাই এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে পরিচালককে লিখিতভাবে বিষয়টি অবহিত করা হয়। হাসপাতালের পরিচালক ডা. গৌতম কুমার পাল বলেন, অভিযোগটি পাওয়ার পর সংশ্লিষ্ট কর্মচারীদের তালিকা সংগ্রহ করা হচ্ছে। তালিকাসহ অভিযোগটি মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে। একই সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য সুপারিশও করা হবে। খুমেক হাসপাতালের আউটসোর্সিং কর্মচারীদের অনেকেই ১০০ জনের লট থেকে বিগত দেড় বছর ধরে কাজ করে এলেও তাদের অনেকেই বেতন পাননি। আবার কেউ কেউ কাজ না করেও বেতন পেয়েছেন এমনও অভিযোগ রয়েছে। সবশেষ হাসপাতালের উপপরিচালকের এমন অভিযোগের পরই সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের অনিয়মের বিষয়টি আরও স্পষ্ট হতে যাচ্ছে।