নিজস্ব প্রতিবেদক : করোনা মহামারির প্রকোপের মধ্যে প্রায় দেড় বছর ধরে বন্ধ থাকা স্কুলসহ সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার তাগিদ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।
গতকাল বুধবার রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে সচিব কমিটির সভায় প্রধানমন্ত্রী এই নির্দেশনা দেন। গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি তিনি এতে যুক্ত হন।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, সভায় শিক্ষা সচিব বলেন, আমরা বিশ্ববিদ্যালয় খুলে দেওয়ার ব্যবস্থা করছি। এ সময় প্রধানমন্ত্রী বলেন, শুধু বিশ্ববিদ্যালয় নয়, দ্রুত স্কুলগুলোও খুলে দেওয়ার ব্যবস্থা করেন। কারণ, বাচ্চারা ঘরে থাকতে থাকতে অসুস্থ হয়ে যাচ্ছে। বাচ্চারা মানসিকভাবেও অসুস্থ হয়ে যাচ্ছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার জন্য সব ধরনের পদক্ষেপ নিতে হবে। সবার জন্য টিকা নিশ্চিত করতে হবে। জরুরি ভিত্তিতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দিতে হবে।
উন্নয়ন পরিকল্পনার যথাযথ বাস্তবায়নের নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর : দেশকে এগিয়ে নিতে সরকার যেসব উন্নয়ন পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে, তার ‘যথাযথ বাস্তবায়নে’ কাজ করতে সচিবদের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। চার বছরের বেশি সময় পর গতকাল সরকারের বিভিন্ন দপ্তরের সচিবদের সঙ্গে বৈঠকে বসে এই নির্দেশনা দেন সরকারপ্রধান। এনইসির সম্মেলন কক্ষে সকাল ১০টায় এ সচিব-সভা শুরু হয়। গণভবন থেকে প্রধানমন্ত্রী এ বৈঠকে যোগ দেন ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে। শেখ হাসিনা বলেন, “লাখো শহীদের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত স্বাধীনতা যেন কোনভাবে ব্যর্থ না হয়। আমরা এই বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যাব উন্নত, সমৃদ্ধ দেশ হিসেবে। ইতোমধ্যে আমরা উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পেয়েছি। আমাদের ভবিষ্যতে আরো অনেক দূর যেতে হবে। সেই পরিকল্পনাও আমরা নিয়েছি। “যেমন আমাদের প্রেক্ষিত পরিকল্পনা বা ডেল্টা প্ল্যান- সেগুলো মাথায় রেখেই আমাদের বাংলাদেশের উন্নয়নের পরিকল্পনা; এবং তার বাস্তবায়ন যেন যথাযথভাবে হয়।”
দেশের তৃণমূল পর্যায়ের মানুষও যেন উন্নত জীবন পায়; দারিদ্র্যের হাত থেকে মুক্তি পায়; খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান, চিকিৎসা ও শিক্ষার সুযোগ পায়, সেই লক্ষ্যেই সরকার কাজ করে যাচ্ছে বলে মন্তব্য করেন প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, “বাংলাদেশ যেভাবে এগিয়ে যাচ্ছে, ভবিষ্যতেও যেন এভাবে এগিয়ে যেতে পারে, সেইভাবেই আমাদের কার্যক্রম চালাতে হবে এবং তারই ভিত্তিটা আমরা তৈরি করেছি। সেটা ধরে সামনে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। সেই কথা মাথায় রেখে আমাদের সব সিদ্ধান্ত নিতে হবে।”
প্রধানমন্ত্রীর উপস্থিতিতে সর্বশেষ সচিব সভা হয়েছিল ২০১৭ সালের জুলাই মাসে। গত জুলাই মাসে আবার সচিব সভা করার উদ্যোগ নেওয়া হলেও মহামারী পরিস্থিতির কারণে তা সম্ভব হয়নি। লকডাউন উঠে যাওয়ার পর এখন সেই সভার আয়োজন হল।
সভার শুরুতে বিভিন্ন দপ্তরের সচিবদের স্বাগত জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “আমাদের তো একটাই লক্ষ্য। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আমাদের স্বাধীনতা দিয়ে গেছেন এবং বাংলাদেশকে তিনি উন্নত, সমৃদ্ধ করতে চেয়েছিলেন। আমরা স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন করছি। জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী, ১০১তম জন্মবার্ষিকী উদযাপন করছি। সেই সময়ে এই সভাটা। কাজেই আমি সবাইকে স্বাগত জানাই।”
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং ১৯৭৫ সালের ১৫ অগাস্ট ঘাতকের নির্মম বুলেটে নিহত সবার পাশাপাশি জাতীয় চার নেতা, মুক্তিযুদ্ধের ৩০ লাখ শহীদ এবং ২ লাখ নির্যাতিত মা-বোনের প্রতিও শ্রদ্ধা জানান সরকার প্রধান। শেরেবাংলা নগরে পরিকল্পনা বিভাগের এনইসি সম্মেলন কেন্ত্রে সভা পরিচালনা করেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম । বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগের সচিবরা সভায় উপস্থিত ছিলেন।
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার তাগিদ প্রধানমন্ত্রীর
ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ