টাঙ্গাইল সংবাদদাতা : উত্তরের গেটওয়ে হিসেবে পরিচিত বঙ্গবন্ধু সেতু-ঢাকা মহাসড়ক। প্রতি বছর পরিবারের সঙ্গে ঈদ উদযাপন করতে রাজধানী ও আশপাশের শিল্পাঞ্চল থেকে গ্রামে যান কর্মজীবী মানুষ। ফলে মহাসড়কে যানজট ও ভোগান্তি পোহাতে হয় তাদের। ভোগান্তি এড়াতে এবার একটু আগেই মহাসড়কে যানবাহন ও যাত্রীর চাপ বেড়েছে। ৬৫ কিলোমিটার মহাসড়কের এলেঙ্গা থেকে বঙ্গবন্ধু সেতু পর্যন্ত ১৪ কিলোমিটার সড়ক দুই লেনের হওয়ায় গলার কাঁটা হতে পারে এ অংশটুকু। বঙ্গবন্ধু সেতু সূত্রে জানা যায়, ১ এপ্রিল ২৪ ঘণ্টায় ১৮ হাজার ৫৫৪টি যানবাহন সেতু পারাপারের বিপরীতে টোল আদায় হয়েছে এক কোটি ৭৬ লাখ ৬৬ হাজার ৯০০ টাকা। ৩১ মার্চ একই সময়ে ১৭ হাজার ৮৯৭টি যানবাহনের বিপরীতে টোল আদায় হয়েছে এক কোটি ৭১ লাখ ৩৩ হাজার ৮৫০ টাকা। ৩০ মার্চ ২৪ ঘণ্টায় ১৭ হাজার ২১৫টি যানবাহন পারাপারের বিপরীতে টোল আদায় হয়েছে এক কোটি ৬১ লাখ ৮৯ হাজার ৪৫০ টাকা। বঙ্গবন্ধু সেতু-ঢাকা মহাসড়কের টাঙ্গাইলের ৬৫ কিলোমিটার এলাকা ঘুরে দেখা যায়, মহাসড়কে ঘরমুখো মানুষের চাপ বেড়েছে। এ মহাসড়ক দিয়ে উত্তরাঞ্চলের ১৬ ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের পাঁচটিসহ মোট ২৬ জেলার ১১৬টি রুটের যানবাহন চলাচল করে থাকে। স্থানীয় বাসিন্দা, পরিবহন শ্রমিক ও যাত্রীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, নারায়ণগঞ্জ, ঢাকা, গাজীপুরসহ বিভিন্ন এলাকায় অবস্থানরত উত্তরবঙ্গের মানুষ ঈদে এ পথে বাড়ি ফেরেন। ফলে অতিরিক্ত মানুষের চাপে মহাসড়কের চন্দ্রা থেকে এলেঙ্গা পর্যন্ত চার লেনের সুবিধা পেলেও এলেঙ্গা থেকে বঙ্গবন্ধু সেতু পর্যন্ত ১৪ কিলোমিটার দুই লেন হওয়ায় প্রতিবছরই দীর্ঘ যানজটে পড়তে হয় মহাসড়কের এ অংশটিতে। ফলে ঘণ্টার পর ঘণ্টা এ ১৪ কিলোমিটার অংশে বসে থাকতে হয় যাত্রীদের। এলেঙ্গা হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ সাজেদুল ইসলাম জানান, ঈদ সামনে রেখে প্রতিদিন যানবাহনের সংখ্যা বাড়ছে। তবে এখনও তেমন কোনো চাপ নেই- স্বাভাবিক গতিতে মহাসড়কে যান চলাচল করছে। ঈদ উপলক্ষে হাইওয়ে পুলিশের পক্ষ থেকেও কিছু বাড়তি ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। টাঙ্গাইল সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী সিনথিয়া আজমিরী খান জানান, এ বছর টাঙ্গাইল অংশে ৬৫ কিলোমিটার মহাসড়কের ১৩ কিলোমিটারে চার লেন প্রকল্পের কাজ চলছে। এর মধ্যে সেতু থেকে এলেঙ্গার দিকে তিন কিলোমিটার ও এলেঙ্গা থেকে সেতুর দিকে তিন কিলোমিটারের কাজ শেষ হয়েছে। প্রায় সাত কিলোমিটার এখনো দুই লেনের সড়ক রয়ে গেছে। ওই অংশে যাতে যানজট না হয়, সেজন্য প্রতি কিলোমিটারে ১০ জন করে দ্বায়িত্বশীল ব্যক্তির নজরদারির ব্যবস্থা করা হচ্ছে। এছাড়া ওই অংশে নছিমন, করিমন, সিএনজি ও ব্যাটারি চালিত অটোরিকশাসহ কোনো তিন চাকার গাড়ি চলতে দেওয়া হবে না। বঙ্গবন্ধু সেতু সাইট অফিসের নির্বাহী প্রকৌশলী আহসানুল কবীর পাভেল জানান, ঈদ সামনে রেখে টোল প্লাজায় টোলবুথ বাড়ানোর প্রক্রিয়া চলছে। সব মিলিয়ে এবারের ঈদযাত্রা নির্বিঘœ হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন। টাঙ্গাইলের পুলিশ সুপার সরকার মোহাম্মদ কায়সার জানান, এলেঙ্গা থেকে বঙ্গবন্ধু সেতু পর্যন্ত উত্তরবঙ্গগামী সব যানবাহন একমুখী করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। আর উত্তরবঙ্গ থেকে ঢাকাগামী যানবাহন সেতুর পূর্বপার গোলচত্বর থেকে ভুঞাপুর হয়ে এলেঙ্গা এসে ঢাকা যাবে।
গলার কাঁটা এলেঙ্গা থেকে বঙ্গবন্ধু সেতু!
জনপ্রিয় সংবাদ