ঢাকা ০৩:১৮ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৭ জুন ২০২৫

ইফতারে কয়েকটি প্রিয় খাবার মচমচে পিঁয়াজু তৈরির গোপন পদ্ধতি

  • আপডেট সময় : ১০:৩২:২৫ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৫ মার্চ ২০২৪
  • ১১০ বার পড়া হয়েছে

: এই রমজানে ইফতারের টেবিলে সবচাইতে জনপ্রিয় খাবারটি নিঃসন্দেহে পিঁয়াজু। সারা বছর খাওয়া হোক বা না হোক, রমজানে প্রতিদিন যেন না খেলেই নয়। কিন্তু বেশিরভাগ রাঁধুনির কিন্তু এটাই অভিযোগ যে পিঁয়াজু ঠিক যেন মনমতন মুচমুচে হয় না। কিংবা মুচমুচে হলেও ঠা-া হবার সাথে সাথে শক্ত হয়ে যায় কিংবা নেতিয়ে পড়ে। আসুন, জেনে নিই পিঁয়াজু বানাবার “গোপন” ফর্মুলা। সুস্বাদু তো হবেই হবে, সেই সাথে ভাজার পর দীর্ঘ সময় ধরে থাকবে মুচমুচে।
পিঁয়াজু একেকজন একেক রকম ডাল দিয়ে তৈরি করে থাকেন। কেউ মুগ, কেউ মসুর, আবার কেউবা ব্যবহার করেন খেসারির ডাল। তবে মুচমুচে পিঁয়াজু তৈরি প্রথম সিক্রেট হলো সম পরিমাণ মুগ, মসুর আর বুটের ডাল নিন। সারারাত এই ডাল পানিতে ভিজিয়ে রাখুন ও সকালে পানি ছেঁকে বেটে নিন। তবে একদম মিহি করে বাটবেন না, একটু শক্ত রেখে দিন। সব রকম ডালের মিশ্রণ পিঁয়াজু সুস্বাদু করতে সাহায্য করবে, অন্যদিকে মুগ আর বুটের ডালের মতন একটু শক্ত ডাল মুচমুচে করতেও সাহায্য করবে। চাইলে ব্যবহার করতে পারেন মটরের ডালও। ডাল বাটা হলে তাতে দিন সামান্য একটু আদা-রসুন বাটা। এতে বাড়তি ফ্লেভার যেমন আসবে, তেমনই ডালের গন্ধটাও অনেকটা কমে যাবে। তারপর একে একে দিন পিয়াজ, কাঁচা মরিচ, ধনে/পুদিনা পাতা ও লবণ। ভালো করে মাখিয়ে নিন। তবে এইসব কিছু কেবল ভাজার আগ মুহূর্তেই দিবেন। চুলায় তেল গরম করে তারপর মাখালে সবচাইতে ভালো। কেননা লবণ দেয়ার সাথে সাথে পিয়াজ, ধনে পাতা ইত্যাদি পানি ছেড়ে দিয়ে নরম হয়ে যাবে। ডাল তাতে হয়ে উঠবে পানি পানি ও পিঁয়াজু মুচমুচে হবে না। পিঁয়াজুতে কখনোই হলুদ দিবেন না। হলুদের কারণে পিঁয়াজু মচমচে হবে না। এবার আসে পিঁয়াজু ভাজার পালা। তেল কখনো বেশি আঁচে গরম করবেন না। মাঝারি আঁচে আগুন গরম করে নিন। এবার হাতের আঙ্গুলের ওপর খানিকটা ডাল মাখানো নিন ও খানিকটা চাপ দিয়ে চ্যাপ্টা আকৃতি করে ছেড়ে দিন তেলের মাঝে। ধৈর্য নিয়ে লালচে সোনালি করে ভেজে তুলুন। বেশি আঁচে ভাজলে পিঁয়াজু বাইরে শক্ত হয়ে যাবে কিন্তু ভেতরে মচমচে হবে না। তাই আঁচের ব্যাপারটা মাথায় রাখুন। যখন দেখবেন, তেলের মাঝে ছাড়া পিঁয়াজুর আশেপাশে কোনো বুদবুদ নেই, বুঝবেন ভেতরে একদম রান্না হয়ে গেছে। এইভাবে তৈরি পিঁয়াজু অন্ততœ দেড় থেকে দুই ঘণ্টা স্বাভাবিক ভাবেই মচমচে থাকবে। যদি ওভেনে হালকা গরম রাখেন, তাহলে থাকবে আরও বেশি সময়।
মচমচে বেগুনি বানানোর গোপনীয় কৌশল: ইফতার আয়োজনে বেগুনি একটি সাধারণ পদ। অনেকে অভিযোগ করেন যে, বেগুনি বানানোর পর নেতিয়ে পড়ে। মচমচে ও ফুলকো বেগুনি তৈরির রয়েছে কিছু কৌশল। মচমচে বেগুনি তৈরির আসল কৌশল লুকানো থাকে বেসনের মিশ্রণে। এই মিশ্রণটি ঠিকঠাক তৈরি করতে পারলে বেগুনি যেমন ফুলে উঠবে ঝটপট, তেমনি মচমচেও থাকবে অনেকক্ষণ। আবার বেগুনির গায়ে বাড়তি তেলও লেগে থাকবে না।
প্রথমেই বেসন চেলে নিন। এতে বেসনের ভেতরে কোনও দানা থাকবে না। ২ কাপ বেসন চেলে ২ টেবিল চামচ চালের গুঁড়া মিশিয়ে নিন। চালের গুঁড়া মেশালে বেগুনি অনেকক্ষণ পর্যন্ত মচমচে থাকবে। এবার ১/৪ চা চামচ হলুদের গুঁড়া, আধা চা চামচ জিরার গুঁড়া, আধা চা চামচ গরম মসলার গুঁড়া, ১ চা চামচ আদা বাটা, ১/৪ চা চামচ বেকিং সোডা, স্বাদ মতো লবণ ও মরিচের গুঁড়া মিশিয়ে নিন। ব্যাটার তৈরি করতে হবে সময় নিয়ে। উপকরণগুলো ভালো করে মিশিয়ে অল্প অল্প করে রুম তাপমাত্রার পানি মেশান। মিশ্রণটি খুব পাতলা যেমন হবে না, তেমনি খুব ঘনও হবে না। বেসনের গোলা মসৃণ হয়ে গেলে দেড় টেবিল চামচ কুসুম গরম রান্নার তেল মিশিয়ে নিন। ১০ থেকে ১৫ মিনিটের জন্য ঢেকে রাখুন বেসনের গোলা। বেগুন পাতলা করে কেটে বেসনে ডুবিয়ে তেলে ভেজে তুলুন। পরিবেশন করুন গরম গরম।
সুস্বাদু শাহি আলুর চপ রেসিপি: ইফতারের আয়োজনে থাকে আলুর চপ। এটি সাধারণভাবে ছাড়াও তৈরি করা যায় ভিন্ন স্বাদে। ইফতারের আয়োজনে শাহি স্বাদ যোগ হলে খেতে আরও ভালো লাগবে নিশ্চয়ই। চলুন জেনে নেওয়া যাক পরিচিত সব উপকরণ দিয়ে সুস্বাদু শাহী আলুর চপ তৈরির রেসিপিÑ
উপকরণ: আলু ৭-৮টি, গরুর ঝুরা মাংস ২৫০ গ্রাম, পেঁয়াজ কুঁচি দেড় কাপ, আদা কুচি ১ টেবিল চামচ, রসুন কুচি ২ টেবিল চামচ, টমেটো কেচাপ ৪ টেবিল চামচ, গোলমরিচ গুঁড়া ১ চা চামচ, কাঁচা মরিচ কুচি স্বাদ মতো, ধনিয়াপাতা কুচি পরিমাণ মতো, ডিম ২টি, ব্রেড ক্রাম্বস ২ কাপ, তেল পরিমাণ মতো এবং লবণ স্বাদ মতো।
প্রণালি: আলু সেদ্ধ করে ছিলে ভালোভাবে চটকে নিন। কড়াইতে তেল গরম করে এতে পেঁয়াজ দিতে হবে। পেঁয়াজ নরম হয়ে এলে আদা ও রসুন কুচি দিয়ে বাদামি করে ভাজতে হবে। এবার তাতে গরুর মাংস কুচি, টমেটো কেচাপ, লবণ ও কালো গোলমরিচের গুঁড়া দিয়ে কষাতে হবে। মাংস থেকে পানি বের হয়ে শুকিয়ে যাওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। কিছুটা শুকিয়ে এলে এতে কাঁচামরিচ কুচি ও ধনিয়া পাতা কুচি দিয়ে নেড়েচেড়ে নামিয়ে নিতে হবে।
আলুর চপ তৈরির জন্য একটি বাটিতে দুইটি ডিম ফেটিয়ে নিন। অপরদিকে একটি প্লেটে ব্রেড ক্রাম্বস ছড়িয়ে নিন। এবার হাতের তালুতে পরিমাণ মতো আলু নিয়ে তার মধ্যে মাংসের পুর দিয়ে চপের ওপরের অংশ আলুর সাহায্যে মুড়ে নিন। এভাবে সবগুলো চপ তৈরি করুন। কড়াইতে তেল গরম করে নিন। আলুর চপ প্রথমে ডিমে চুবিয়ে এরপর ব্রেড ক্রাম্বসের গড়িয়ে নিতে হবে। তেল গরম হলে চপগুলো সোনালি করে ভেজে তুলুন। ইফতারে পরিবেশন করুন সুস্বাদু শাহি আলুর চপ।
জিলাপি বানানোর সহজ উপায়: ইফতারে মিষ্টি খাবার হিসেবে জিলাপি খেতে ভালোবাসেন অনেকেই। বাজার থেকে কেনা জিলাপি অস্বাস্থ্যকর উপায়ে প্রস্তুত হওয়ার ঝুঁকি থাকে। বাড়িতেই স্বাস্থ্যকর উপায়ে রসে টইটম্বুর জিলাপি বানিয়ে ফেলতে পারেন। মাত্র ১ কাপ ময়দা দিয়েই এক কেজি জিলাপি বানানো যায়। প্রস্তুত প্রণালি জেনে নিন।
প্রথমে জিলাপির সিরা বানিয়ে নিন। এজন্য ১ কাপ চিনি, আধা কাপ পানি, ৩টি সবুজ এলাচ ও এক চিমটি জর্দার রঙ মাঝারি আঁচে বসিয়ে দিন চুলায়। বলক আসলে এক স্লাইস কমলা দিয়ে নাড়তে থাকুন। কিছুটা ঘন হয়ে আসলে নামিয়ে নিন। এবার জিলাপির জন্য ব্যাটার বানিয়ে নিন। এজন্য ১ কাপ ময়দা, ২ টেবিল চামচ বেসন, ২ টেবিল চামচ কর্ন ফ্লাওয়ার, ১ প্যাকেট ফ্রুট সল্ট বা ইনো মিশিয়ে নিন। ফ্রুট সল্ট দিতে না চাইলে আধা চা চামচ বেকিং পাউডার মিশিয়ে নেবেন। শুকনো উপকরণগুলো মেশানো হয়ে গেলে ১ চা চামচ ঘি মেশান। এবার ধীরে ধীরে ১ কাপ পানি মেশান। ব্যাটার তৈরি হলে সসের টিউবে ঢুকিয়ে নিন ফানেলের সাহায্যে। প্যানে তেল গরম করে নিন। সসের টিউব উল্টে হাত ঘুরিয়ে জিলাপি ফেলুন তেলে। বাদামী করে ভেজে তুলুন। ভেজে সঙ্গে সঙ্গে চিনির সিরায় ডুবিয়ে দিন। কয়েক মিনিট রেখে তারপর সিরা থেকে উঠিয়ে পরিবেশন করুন জিলাপি।
সুস্বাদু বুন্দিয়া: ইফতারে মিষ্টি খাবারের মধ্যে জিলাপির পাশাপাশি জনপ্রিয় আরেকটি আইটেম হচ্ছে বুন্দিয়া। ময়দা দিয়ে স্বাস্থ্যকর উপায়ে বাড়িতেই আইটেমটি বানিয়ে ফেলতে পারে। জেনে নিন কীভাবে বানাবেন।
১ কাপ ময়দার সঙ্গে ১/৪ চা চামচ বেকিং পাউডার ও ১ চিমটি লবণ মিশিয়ে নিন। পরিমাণ মতো পানি দিয়ে ব্যাটার তৈরি করুন। ব্যাটার দুই ভাগে ভাগ করে আলাদা ফুড কালার মিশিয়ে ২০ মিনিট ঢেকে রাখুন। পছন্দ মতো লাল বা সবুজ রঙ ব্যবহার করতে পারেন। আবার কোনও রঙ ছাড়াই বানিয়ে ফেলতে পারেন। প্যানে তেল গরম করুন। ঝাঁঝরিতে ব্যাটার নিয়ে তেলের ভেতর বুন্দিয়া ফেলুন সাবধানে। একবারে বেশি ছাড়বেন না। এতে একটার সঙ্গে আরেকটা লেগে যাবে। ভাজা হলে কিচেন টিস্যুর ওপরে উঠিয়ে রাখুন বুন্দিয়া। এবার চিনির শিরা তৈরি করে নিন। এজন্য ১ কাপ পানি, স্বাদ মতো চিনি ও দুটি এলাচ দিয়ে জ্বাল দিন। ঘন করবেন না সিরা। পাতলা থাকতে থাকতে ১ চা চামচ লেবুর রস ও ভেজে রাখা বুন্দিয়া মিশিয়ে অল্প আঁচে নেড়ে নামিয়ে নিন।

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

ইফতারে কয়েকটি প্রিয় খাবার মচমচে পিঁয়াজু তৈরির গোপন পদ্ধতি

আপডেট সময় : ১০:৩২:২৫ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৫ মার্চ ২০২৪

: এই রমজানে ইফতারের টেবিলে সবচাইতে জনপ্রিয় খাবারটি নিঃসন্দেহে পিঁয়াজু। সারা বছর খাওয়া হোক বা না হোক, রমজানে প্রতিদিন যেন না খেলেই নয়। কিন্তু বেশিরভাগ রাঁধুনির কিন্তু এটাই অভিযোগ যে পিঁয়াজু ঠিক যেন মনমতন মুচমুচে হয় না। কিংবা মুচমুচে হলেও ঠা-া হবার সাথে সাথে শক্ত হয়ে যায় কিংবা নেতিয়ে পড়ে। আসুন, জেনে নিই পিঁয়াজু বানাবার “গোপন” ফর্মুলা। সুস্বাদু তো হবেই হবে, সেই সাথে ভাজার পর দীর্ঘ সময় ধরে থাকবে মুচমুচে।
পিঁয়াজু একেকজন একেক রকম ডাল দিয়ে তৈরি করে থাকেন। কেউ মুগ, কেউ মসুর, আবার কেউবা ব্যবহার করেন খেসারির ডাল। তবে মুচমুচে পিঁয়াজু তৈরি প্রথম সিক্রেট হলো সম পরিমাণ মুগ, মসুর আর বুটের ডাল নিন। সারারাত এই ডাল পানিতে ভিজিয়ে রাখুন ও সকালে পানি ছেঁকে বেটে নিন। তবে একদম মিহি করে বাটবেন না, একটু শক্ত রেখে দিন। সব রকম ডালের মিশ্রণ পিঁয়াজু সুস্বাদু করতে সাহায্য করবে, অন্যদিকে মুগ আর বুটের ডালের মতন একটু শক্ত ডাল মুচমুচে করতেও সাহায্য করবে। চাইলে ব্যবহার করতে পারেন মটরের ডালও। ডাল বাটা হলে তাতে দিন সামান্য একটু আদা-রসুন বাটা। এতে বাড়তি ফ্লেভার যেমন আসবে, তেমনই ডালের গন্ধটাও অনেকটা কমে যাবে। তারপর একে একে দিন পিয়াজ, কাঁচা মরিচ, ধনে/পুদিনা পাতা ও লবণ। ভালো করে মাখিয়ে নিন। তবে এইসব কিছু কেবল ভাজার আগ মুহূর্তেই দিবেন। চুলায় তেল গরম করে তারপর মাখালে সবচাইতে ভালো। কেননা লবণ দেয়ার সাথে সাথে পিয়াজ, ধনে পাতা ইত্যাদি পানি ছেড়ে দিয়ে নরম হয়ে যাবে। ডাল তাতে হয়ে উঠবে পানি পানি ও পিঁয়াজু মুচমুচে হবে না। পিঁয়াজুতে কখনোই হলুদ দিবেন না। হলুদের কারণে পিঁয়াজু মচমচে হবে না। এবার আসে পিঁয়াজু ভাজার পালা। তেল কখনো বেশি আঁচে গরম করবেন না। মাঝারি আঁচে আগুন গরম করে নিন। এবার হাতের আঙ্গুলের ওপর খানিকটা ডাল মাখানো নিন ও খানিকটা চাপ দিয়ে চ্যাপ্টা আকৃতি করে ছেড়ে দিন তেলের মাঝে। ধৈর্য নিয়ে লালচে সোনালি করে ভেজে তুলুন। বেশি আঁচে ভাজলে পিঁয়াজু বাইরে শক্ত হয়ে যাবে কিন্তু ভেতরে মচমচে হবে না। তাই আঁচের ব্যাপারটা মাথায় রাখুন। যখন দেখবেন, তেলের মাঝে ছাড়া পিঁয়াজুর আশেপাশে কোনো বুদবুদ নেই, বুঝবেন ভেতরে একদম রান্না হয়ে গেছে। এইভাবে তৈরি পিঁয়াজু অন্ততœ দেড় থেকে দুই ঘণ্টা স্বাভাবিক ভাবেই মচমচে থাকবে। যদি ওভেনে হালকা গরম রাখেন, তাহলে থাকবে আরও বেশি সময়।
মচমচে বেগুনি বানানোর গোপনীয় কৌশল: ইফতার আয়োজনে বেগুনি একটি সাধারণ পদ। অনেকে অভিযোগ করেন যে, বেগুনি বানানোর পর নেতিয়ে পড়ে। মচমচে ও ফুলকো বেগুনি তৈরির রয়েছে কিছু কৌশল। মচমচে বেগুনি তৈরির আসল কৌশল লুকানো থাকে বেসনের মিশ্রণে। এই মিশ্রণটি ঠিকঠাক তৈরি করতে পারলে বেগুনি যেমন ফুলে উঠবে ঝটপট, তেমনি মচমচেও থাকবে অনেকক্ষণ। আবার বেগুনির গায়ে বাড়তি তেলও লেগে থাকবে না।
প্রথমেই বেসন চেলে নিন। এতে বেসনের ভেতরে কোনও দানা থাকবে না। ২ কাপ বেসন চেলে ২ টেবিল চামচ চালের গুঁড়া মিশিয়ে নিন। চালের গুঁড়া মেশালে বেগুনি অনেকক্ষণ পর্যন্ত মচমচে থাকবে। এবার ১/৪ চা চামচ হলুদের গুঁড়া, আধা চা চামচ জিরার গুঁড়া, আধা চা চামচ গরম মসলার গুঁড়া, ১ চা চামচ আদা বাটা, ১/৪ চা চামচ বেকিং সোডা, স্বাদ মতো লবণ ও মরিচের গুঁড়া মিশিয়ে নিন। ব্যাটার তৈরি করতে হবে সময় নিয়ে। উপকরণগুলো ভালো করে মিশিয়ে অল্প অল্প করে রুম তাপমাত্রার পানি মেশান। মিশ্রণটি খুব পাতলা যেমন হবে না, তেমনি খুব ঘনও হবে না। বেসনের গোলা মসৃণ হয়ে গেলে দেড় টেবিল চামচ কুসুম গরম রান্নার তেল মিশিয়ে নিন। ১০ থেকে ১৫ মিনিটের জন্য ঢেকে রাখুন বেসনের গোলা। বেগুন পাতলা করে কেটে বেসনে ডুবিয়ে তেলে ভেজে তুলুন। পরিবেশন করুন গরম গরম।
সুস্বাদু শাহি আলুর চপ রেসিপি: ইফতারের আয়োজনে থাকে আলুর চপ। এটি সাধারণভাবে ছাড়াও তৈরি করা যায় ভিন্ন স্বাদে। ইফতারের আয়োজনে শাহি স্বাদ যোগ হলে খেতে আরও ভালো লাগবে নিশ্চয়ই। চলুন জেনে নেওয়া যাক পরিচিত সব উপকরণ দিয়ে সুস্বাদু শাহী আলুর চপ তৈরির রেসিপিÑ
উপকরণ: আলু ৭-৮টি, গরুর ঝুরা মাংস ২৫০ গ্রাম, পেঁয়াজ কুঁচি দেড় কাপ, আদা কুচি ১ টেবিল চামচ, রসুন কুচি ২ টেবিল চামচ, টমেটো কেচাপ ৪ টেবিল চামচ, গোলমরিচ গুঁড়া ১ চা চামচ, কাঁচা মরিচ কুচি স্বাদ মতো, ধনিয়াপাতা কুচি পরিমাণ মতো, ডিম ২টি, ব্রেড ক্রাম্বস ২ কাপ, তেল পরিমাণ মতো এবং লবণ স্বাদ মতো।
প্রণালি: আলু সেদ্ধ করে ছিলে ভালোভাবে চটকে নিন। কড়াইতে তেল গরম করে এতে পেঁয়াজ দিতে হবে। পেঁয়াজ নরম হয়ে এলে আদা ও রসুন কুচি দিয়ে বাদামি করে ভাজতে হবে। এবার তাতে গরুর মাংস কুচি, টমেটো কেচাপ, লবণ ও কালো গোলমরিচের গুঁড়া দিয়ে কষাতে হবে। মাংস থেকে পানি বের হয়ে শুকিয়ে যাওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। কিছুটা শুকিয়ে এলে এতে কাঁচামরিচ কুচি ও ধনিয়া পাতা কুচি দিয়ে নেড়েচেড়ে নামিয়ে নিতে হবে।
আলুর চপ তৈরির জন্য একটি বাটিতে দুইটি ডিম ফেটিয়ে নিন। অপরদিকে একটি প্লেটে ব্রেড ক্রাম্বস ছড়িয়ে নিন। এবার হাতের তালুতে পরিমাণ মতো আলু নিয়ে তার মধ্যে মাংসের পুর দিয়ে চপের ওপরের অংশ আলুর সাহায্যে মুড়ে নিন। এভাবে সবগুলো চপ তৈরি করুন। কড়াইতে তেল গরম করে নিন। আলুর চপ প্রথমে ডিমে চুবিয়ে এরপর ব্রেড ক্রাম্বসের গড়িয়ে নিতে হবে। তেল গরম হলে চপগুলো সোনালি করে ভেজে তুলুন। ইফতারে পরিবেশন করুন সুস্বাদু শাহি আলুর চপ।
জিলাপি বানানোর সহজ উপায়: ইফতারে মিষ্টি খাবার হিসেবে জিলাপি খেতে ভালোবাসেন অনেকেই। বাজার থেকে কেনা জিলাপি অস্বাস্থ্যকর উপায়ে প্রস্তুত হওয়ার ঝুঁকি থাকে। বাড়িতেই স্বাস্থ্যকর উপায়ে রসে টইটম্বুর জিলাপি বানিয়ে ফেলতে পারেন। মাত্র ১ কাপ ময়দা দিয়েই এক কেজি জিলাপি বানানো যায়। প্রস্তুত প্রণালি জেনে নিন।
প্রথমে জিলাপির সিরা বানিয়ে নিন। এজন্য ১ কাপ চিনি, আধা কাপ পানি, ৩টি সবুজ এলাচ ও এক চিমটি জর্দার রঙ মাঝারি আঁচে বসিয়ে দিন চুলায়। বলক আসলে এক স্লাইস কমলা দিয়ে নাড়তে থাকুন। কিছুটা ঘন হয়ে আসলে নামিয়ে নিন। এবার জিলাপির জন্য ব্যাটার বানিয়ে নিন। এজন্য ১ কাপ ময়দা, ২ টেবিল চামচ বেসন, ২ টেবিল চামচ কর্ন ফ্লাওয়ার, ১ প্যাকেট ফ্রুট সল্ট বা ইনো মিশিয়ে নিন। ফ্রুট সল্ট দিতে না চাইলে আধা চা চামচ বেকিং পাউডার মিশিয়ে নেবেন। শুকনো উপকরণগুলো মেশানো হয়ে গেলে ১ চা চামচ ঘি মেশান। এবার ধীরে ধীরে ১ কাপ পানি মেশান। ব্যাটার তৈরি হলে সসের টিউবে ঢুকিয়ে নিন ফানেলের সাহায্যে। প্যানে তেল গরম করে নিন। সসের টিউব উল্টে হাত ঘুরিয়ে জিলাপি ফেলুন তেলে। বাদামী করে ভেজে তুলুন। ভেজে সঙ্গে সঙ্গে চিনির সিরায় ডুবিয়ে দিন। কয়েক মিনিট রেখে তারপর সিরা থেকে উঠিয়ে পরিবেশন করুন জিলাপি।
সুস্বাদু বুন্দিয়া: ইফতারে মিষ্টি খাবারের মধ্যে জিলাপির পাশাপাশি জনপ্রিয় আরেকটি আইটেম হচ্ছে বুন্দিয়া। ময়দা দিয়ে স্বাস্থ্যকর উপায়ে বাড়িতেই আইটেমটি বানিয়ে ফেলতে পারে। জেনে নিন কীভাবে বানাবেন।
১ কাপ ময়দার সঙ্গে ১/৪ চা চামচ বেকিং পাউডার ও ১ চিমটি লবণ মিশিয়ে নিন। পরিমাণ মতো পানি দিয়ে ব্যাটার তৈরি করুন। ব্যাটার দুই ভাগে ভাগ করে আলাদা ফুড কালার মিশিয়ে ২০ মিনিট ঢেকে রাখুন। পছন্দ মতো লাল বা সবুজ রঙ ব্যবহার করতে পারেন। আবার কোনও রঙ ছাড়াই বানিয়ে ফেলতে পারেন। প্যানে তেল গরম করুন। ঝাঁঝরিতে ব্যাটার নিয়ে তেলের ভেতর বুন্দিয়া ফেলুন সাবধানে। একবারে বেশি ছাড়বেন না। এতে একটার সঙ্গে আরেকটা লেগে যাবে। ভাজা হলে কিচেন টিস্যুর ওপরে উঠিয়ে রাখুন বুন্দিয়া। এবার চিনির শিরা তৈরি করে নিন। এজন্য ১ কাপ পানি, স্বাদ মতো চিনি ও দুটি এলাচ দিয়ে জ্বাল দিন। ঘন করবেন না সিরা। পাতলা থাকতে থাকতে ১ চা চামচ লেবুর রস ও ভেজে রাখা বুন্দিয়া মিশিয়ে অল্প আঁচে নেড়ে নামিয়ে নিন।