ঢাকা ০৩:১৩ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২১ মে ২০২৫

ডিবি পরিচয়ে ৭১ লাখ টাকা ছিনতাই, চক্রের ৫ সদস্য আটক

  • আপডেট সময় : ০২:১৮:০৭ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৪ মার্চ ২০২৪
  • ১২৪ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক : মতিঝিলে ডিবি পরিচয়ে ৭১ লাখ টাকা ছিনতাইয়ের ঘটনায় ৫ জনকে গ্রেপ্তার করেছে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। গ্রেপ্তাররা হলেন- দ্বীন ইসলাম, মো. সবুজ, সিফাত ইসলাম রাজী, মাজারুল ইসলাম, আব্দুস সালাম হাওলাদার। এ সময় লুট করে নেওয়া ১২ লাখ টাকা, ৫টি মোবাইল, ডিবি জ্যাকেট ১টি, ১টি হ্যান্ডকাপ, একটি খেলনা পিস্তল, স্প্রিং স্টিক, ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত ১টি মাইক্রোবাস, ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত ১টি মোটরসাইকেল ও পুলিশ লেখা নেভি ব্লু ব্যাগ উদ্ধার করা হয়। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজধানীর মিন্টু রোডের নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এসব কথা জানান ডিবি প্রধান মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ। তিনি জানান, গত ৬ মার্চ মতিঝিল ফাইন্যান্স টাওয়ারের ল ফার্ম ও মাল্টি অ্যাসোসিয়েশনের জেনারেল ম্যানেজার শাহাদাত হোসেন ক্লায়েন্টের ৭১ লাখ টাকা ব্যাংকে জমা দেওয়ার জন্য যাচ্ছিলেন। বাসা থেকে রিকশাযোগে মতিঝিল ইসলামী ব্যাংকের লোকাল ব্রাঞ্চে যাওয়ার পথে ফকিরাপুলের ক্যাফে সুগন্ধা হোটেলের সামনে পৌঁছালে তাকে আটকানো হয়। ডিবি পুলিশের জ্যাকেট পরা ওয়াকিটকি, স্প্রিং লাঠি ও হ্যান্ডকাপসহ ডিবি পুলিশ পরিচয় দিয়ে দুজন ভুক্তভোগীকে রিকশা থেকে নামিয়ে গাড়িতে উঠিয়ে নিয়ে চলে যায়। গাড়িতে তুলে গামছা দিয়ে চোখ-মুখ ও বেল্ট খুলে হাত বেঁধে ফেলে অপহরণকারীরা। এক পর্যায়ে জোরপূর্বক কাঁধে থাকা কালো ব্যাগ ভর্তি ৭১ লাখ টাকা ব্যক্তিগত মোবাইল ফোন ও মানিব্যাগ নিয়ে নেয়। ঘটনার দুই দিন পর রাজধানীর মতিঝিল থানায় একটি মামলা দায়ের করেন ভুক্তভোগী শাহাদাত হোসেন। ওই মামলা তদন্ত করতে গিয়ে ডিবি পুলিশ পরিচয়ে সংঘবদ্ধ এই ডাকাত দলের সন্ধান পায় ডিবি। পরে রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে চক্রের পাঁচ সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়। ডিবি প্রধান বলেন, গ্রেপ্তারররা দেশের প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ীদের অর্থ হস্তান্তরকারী ব্যক্তিদের টার্গেট করত এবং অর্থ উত্তোলনের স্থান, জমা দেওয়ার স্থান, উত্তোলন ও জমা দেওয়ার রোড পর্যবেক্ষণ করত। সিফাত ইসলাম রাজী ও মাজারুল ইসলাম টার্গেট করা ব্যক্তির তথ্য সংগ্রহ করে দ্বীন ইসলাম ও অন্যদের সরবরাহ করত। দ্বীন ইসলাম ও অজ্ঞাতনামা আসামিরা টার্গেট করা ব্যক্তি সম্পর্কে সব তথ্য শুনে নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে সবুজ ও আব্দুস সালামসহ বাকিদের সঙ্গে পরামর্শ করত। সে অনুযায়ী নির্দিষ্ট তারিখে দ্বীন ইসলামসহ সবুজ সিফাত ইসলাম রাজী, মাজারুল ইসলাম, আব্দুস সালামসহ তাদের সহযোগীরা প্রাইভেট কার নিয়ে অবস্থান করত। ভুক্তভোগী বা টার্গেট করা ব্যক্তি সেখানে আসলে আসামিরা তার গতিরোধ করে জোর পূর্বক গাড়িতে উঠিয়ে নিত। পরে গাড়িটি ঢাকা ও আশপাশের এলাকায় ঘোরাঘুরি করে ভিকটিমের চোখ, মুখ ও হাত বেঁধে তাকে নির্জন স্থানে ফেলে রেখে যেত। দ্বীন ইসলাম ডাকাতির ৩০ শতাংশ টাকা রেখে বাকিদের মধ্যে বণ্টন করে দিতো। তিনি আরও বলেন, রমজান মাস ঘিরে কোথায় কোথায় ডাকাতি করবে তার একটি পরিকল্পনা করেছিল তারা। সে জন্য তারা রাজধানীর মগবাজারে একটি হোটেল ভাড়া নিয়েছিলেন। তাদের পরিকল্পনা ছিল ঈদের চাঁদ রাত পর্যন্ত ডিবি পুলিশ পরিচয়ে ডাকাতি করবে। এরপর ঈদে বাড়ি ফিরে যাবে। আমরা সেই হোটেলের নাম, ডাকাত দলের অন্য সদস্যদের নাম পরিচয় জেনেছি। শিগগিরই তাদের বিরুদ্ধেও অভিযান পরিচালনা করা হবে। ডিবি প্রধান বলেন, শুধু ব্যাংক কেন্দ্রিক টার্গেট করে ডাকাতিই নয়, হানি ট্র্যাপেও সিদ্ধহস্ত তারা। প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী বা ধনাঢ্য ব্যক্তিদের অপহরণ করে নিয়ে তরুণীদের দিয়ে ছবি বা ভিডিও ধারণ করে ব্ল্যাকমেইল করত। কখনো কখনো তারা সিএনজি চালকদেরও ছাড় দিত না। ২০-৩০ হাজার টাকার বিনিময়ে ছিনতাই করা সিএনজি ছেড়ে দিত। কখনো কখনো তারা স্বর্ণ ব্যবসায়ীদেরও টার্গেট করে মুক্তিপণ আদায় করত।

 

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

ডিবি পরিচয়ে ৭১ লাখ টাকা ছিনতাই, চক্রের ৫ সদস্য আটক

আপডেট সময় : ০২:১৮:০৭ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৪ মার্চ ২০২৪

নিজস্ব প্রতিবেদক : মতিঝিলে ডিবি পরিচয়ে ৭১ লাখ টাকা ছিনতাইয়ের ঘটনায় ৫ জনকে গ্রেপ্তার করেছে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। গ্রেপ্তাররা হলেন- দ্বীন ইসলাম, মো. সবুজ, সিফাত ইসলাম রাজী, মাজারুল ইসলাম, আব্দুস সালাম হাওলাদার। এ সময় লুট করে নেওয়া ১২ লাখ টাকা, ৫টি মোবাইল, ডিবি জ্যাকেট ১টি, ১টি হ্যান্ডকাপ, একটি খেলনা পিস্তল, স্প্রিং স্টিক, ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত ১টি মাইক্রোবাস, ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত ১টি মোটরসাইকেল ও পুলিশ লেখা নেভি ব্লু ব্যাগ উদ্ধার করা হয়। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজধানীর মিন্টু রোডের নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এসব কথা জানান ডিবি প্রধান মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ। তিনি জানান, গত ৬ মার্চ মতিঝিল ফাইন্যান্স টাওয়ারের ল ফার্ম ও মাল্টি অ্যাসোসিয়েশনের জেনারেল ম্যানেজার শাহাদাত হোসেন ক্লায়েন্টের ৭১ লাখ টাকা ব্যাংকে জমা দেওয়ার জন্য যাচ্ছিলেন। বাসা থেকে রিকশাযোগে মতিঝিল ইসলামী ব্যাংকের লোকাল ব্রাঞ্চে যাওয়ার পথে ফকিরাপুলের ক্যাফে সুগন্ধা হোটেলের সামনে পৌঁছালে তাকে আটকানো হয়। ডিবি পুলিশের জ্যাকেট পরা ওয়াকিটকি, স্প্রিং লাঠি ও হ্যান্ডকাপসহ ডিবি পুলিশ পরিচয় দিয়ে দুজন ভুক্তভোগীকে রিকশা থেকে নামিয়ে গাড়িতে উঠিয়ে নিয়ে চলে যায়। গাড়িতে তুলে গামছা দিয়ে চোখ-মুখ ও বেল্ট খুলে হাত বেঁধে ফেলে অপহরণকারীরা। এক পর্যায়ে জোরপূর্বক কাঁধে থাকা কালো ব্যাগ ভর্তি ৭১ লাখ টাকা ব্যক্তিগত মোবাইল ফোন ও মানিব্যাগ নিয়ে নেয়। ঘটনার দুই দিন পর রাজধানীর মতিঝিল থানায় একটি মামলা দায়ের করেন ভুক্তভোগী শাহাদাত হোসেন। ওই মামলা তদন্ত করতে গিয়ে ডিবি পুলিশ পরিচয়ে সংঘবদ্ধ এই ডাকাত দলের সন্ধান পায় ডিবি। পরে রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে চক্রের পাঁচ সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়। ডিবি প্রধান বলেন, গ্রেপ্তারররা দেশের প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ীদের অর্থ হস্তান্তরকারী ব্যক্তিদের টার্গেট করত এবং অর্থ উত্তোলনের স্থান, জমা দেওয়ার স্থান, উত্তোলন ও জমা দেওয়ার রোড পর্যবেক্ষণ করত। সিফাত ইসলাম রাজী ও মাজারুল ইসলাম টার্গেট করা ব্যক্তির তথ্য সংগ্রহ করে দ্বীন ইসলাম ও অন্যদের সরবরাহ করত। দ্বীন ইসলাম ও অজ্ঞাতনামা আসামিরা টার্গেট করা ব্যক্তি সম্পর্কে সব তথ্য শুনে নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে সবুজ ও আব্দুস সালামসহ বাকিদের সঙ্গে পরামর্শ করত। সে অনুযায়ী নির্দিষ্ট তারিখে দ্বীন ইসলামসহ সবুজ সিফাত ইসলাম রাজী, মাজারুল ইসলাম, আব্দুস সালামসহ তাদের সহযোগীরা প্রাইভেট কার নিয়ে অবস্থান করত। ভুক্তভোগী বা টার্গেট করা ব্যক্তি সেখানে আসলে আসামিরা তার গতিরোধ করে জোর পূর্বক গাড়িতে উঠিয়ে নিত। পরে গাড়িটি ঢাকা ও আশপাশের এলাকায় ঘোরাঘুরি করে ভিকটিমের চোখ, মুখ ও হাত বেঁধে তাকে নির্জন স্থানে ফেলে রেখে যেত। দ্বীন ইসলাম ডাকাতির ৩০ শতাংশ টাকা রেখে বাকিদের মধ্যে বণ্টন করে দিতো। তিনি আরও বলেন, রমজান মাস ঘিরে কোথায় কোথায় ডাকাতি করবে তার একটি পরিকল্পনা করেছিল তারা। সে জন্য তারা রাজধানীর মগবাজারে একটি হোটেল ভাড়া নিয়েছিলেন। তাদের পরিকল্পনা ছিল ঈদের চাঁদ রাত পর্যন্ত ডিবি পুলিশ পরিচয়ে ডাকাতি করবে। এরপর ঈদে বাড়ি ফিরে যাবে। আমরা সেই হোটেলের নাম, ডাকাত দলের অন্য সদস্যদের নাম পরিচয় জেনেছি। শিগগিরই তাদের বিরুদ্ধেও অভিযান পরিচালনা করা হবে। ডিবি প্রধান বলেন, শুধু ব্যাংক কেন্দ্রিক টার্গেট করে ডাকাতিই নয়, হানি ট্র্যাপেও সিদ্ধহস্ত তারা। প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী বা ধনাঢ্য ব্যক্তিদের অপহরণ করে নিয়ে তরুণীদের দিয়ে ছবি বা ভিডিও ধারণ করে ব্ল্যাকমেইল করত। কখনো কখনো তারা সিএনজি চালকদেরও ছাড় দিত না। ২০-৩০ হাজার টাকার বিনিময়ে ছিনতাই করা সিএনজি ছেড়ে দিত। কখনো কখনো তারা স্বর্ণ ব্যবসায়ীদেরও টার্গেট করে মুক্তিপণ আদায় করত।