ঢাকা ০৪:৪৪ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২০ মে ২০২৫

শিক্ষক মুরাদের ‘অপরাধের সত্যতা’ পেয়েছে পুলিশ

  • আপডেট সময় : ০২:০২:৪১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৯ ফেব্রুয়ারী ২০২৪
  • ১২৮ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক : ছাত্রীকে যৌন নিপীড়নের অভিযোগে গ্রেপ্তার ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষক মোহাম্মদ মুরাদ হোসেন সরকারকে রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদ করে অভিযোগের ‘সত্যতা’ পাওয়ার কথা বলছে পুলিশ। ঢাকা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার খ. মহিদ উদ্দিন গতকাল বৃহস্পতিবার ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন। সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, “যে অভিযোগে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, পুলিশ হেফাজতে দুইদিন জিজ্ঞাসাবাদ তার প্রাথমিক প্রমাণ পাওয়া গেছে।”
মুরাদ হোসেন সরকার ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের আজিমপুর ক্যাম্পাসের দিবা শাখার গণিতের জ্যেষ্ঠ শিক্ষক। ২০১০ সাল থেকে তিনি এখানে পড়াচ্ছেন। পাশাপাশি আজিমপুর এলাকার একটি ফ্ল্যাটে কোচিং সেন্টার খুলে ছাত্রী পড়াতেন। ভুক্তভোগী ছাত্রীদের অভিভাবকরা বলছেন, শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ‘ভালো সম্পর্ক’ তৈরি করে ওই কোচিংয়েই তাদের যৌন হয়রানি করে আসছিলেন তিনি। বছরের পর বছর ধরে তার এ ধরনের কর্মকা- চললেও ভয়ে কেউ মুখ খোলার সাহস পেত না। গত ৭ ফেব্রুয়ারি কলেজ কর্তৃপক্ষের কাছে মুরাদ হোসেনের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন এক অভিভাবক। এ বিষয়টি নিয়ে একটি সংবাদপত্র অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রকাশ করলে শোরগোল পড়ে যায়। এরপর মুরাদ হোসেন সরকারকে আজিমপুরের ক্যাম্পাসের দিবা শাখা থেকে প্রত্যাহার করে অধ্যক্ষের কার্যালয়ে সংযুক্ত করা হয়। কলেজের পক্ষ থেকে গঠন করা হয় তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি। কিন্তু তাতে সন্তুষ্ট না হয়ে ওই শিক্ষকের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে আন্দোলনে নামে ভিকারুননিসার ছাত্রীরা। অভিভাবকরা জাতীয় প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে ওই শিক্ষকের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির পাশাপাশি তাকে চাকরিচ্যুত করার দাবি জানান। এই প্রেক্ষাপটে সোমবার রাতে কলেজের পরিচালনা কমিটির সভায় মুরাদ হোসেনকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। সেদিন সন্ধ্যায় এক শিক্ষার্থীর মা বাদী হয়ে লালবাগ থানায় মামলা করেন। এর কয়েক ঘণ্টার মধ্যে কলাবাগানের বাসা থেকে মুরাদকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
গতকাল বৃহস্পতিবারের সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ কর্মকর্তা মহিদ উদ্দিন বলেন, মুরাদের ল্যাপটপ ও মোবাইল ফোন জব্দ করা হয়েছে। সেগুলোর ফরেনসিক পরীক্ষা করানো হবে। রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদে কী জানা গেছে, সেই প্রশ্ন করা হলে অতিরিক্ত কমিশনার বলেন, “বাদীর মেয়ে ভিকারুননিসা নূন স্কুলে অষ্টম শ্রেণিতে অধ্যয়নরত। তার মেয়ে সপ্তম শ্রেণিতে পড়ার সময় মুরাদের কোচিংয়ে পড়ত। প্রায় সময় মুরাদ তার মেয়েসহ তার সহপাঠীদের কুরুচিপূর্ণ কৌতুক শোনাত।
“বাদীর মেয়ে স্কুলে নাচ করত। ওই নাচের ভিডিও মুরাদ ঘুমানোর আগে দেখত বলে ওই শিক্ষার্থীকে প্রায়ই বলত।” মহিদ উদ্দিন বলেন, “গত বছরের নভেম্বরে যৌন নির্যাতনের শিকার হয় ওই শিক্ষার্থী। পুলিশ এর প্রাথমিক সত্যতা পেয়েছে।”এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “ওই ঘটনা জানাজানি হলে মা-বাবার সম্মানহানি হবে এবং স্কুল থেকে তাকে বের করে দেবে- এই ভয়ে মেয়েটি এতদিন কিছু জানায়নি।” এক প্রশ্নের জবাবে মহিদ উদ্দিন বলেন, “ফৌজদারি অপরাধ কখনও তামাদি হয়ে যায় না। আর এই ঘটনা প্রমাণে মেডিকেল পরীক্ষার প্রয়োজন হয় না। পারিপার্শ্বিক অবস্থা ও আরো কিছু বিষয় তদন্ত করে অপরাধ সংঘটিত হওয়ার প্রমাণ বের করতে হয়। পুলিশ সেই চেষ্টাই করে যাচ্ছে।

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

শিক্ষক মুরাদের ‘অপরাধের সত্যতা’ পেয়েছে পুলিশ

আপডেট সময় : ০২:০২:৪১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৯ ফেব্রুয়ারী ২০২৪

নিজস্ব প্রতিবেদক : ছাত্রীকে যৌন নিপীড়নের অভিযোগে গ্রেপ্তার ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষক মোহাম্মদ মুরাদ হোসেন সরকারকে রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদ করে অভিযোগের ‘সত্যতা’ পাওয়ার কথা বলছে পুলিশ। ঢাকা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার খ. মহিদ উদ্দিন গতকাল বৃহস্পতিবার ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন। সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, “যে অভিযোগে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, পুলিশ হেফাজতে দুইদিন জিজ্ঞাসাবাদ তার প্রাথমিক প্রমাণ পাওয়া গেছে।”
মুরাদ হোসেন সরকার ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের আজিমপুর ক্যাম্পাসের দিবা শাখার গণিতের জ্যেষ্ঠ শিক্ষক। ২০১০ সাল থেকে তিনি এখানে পড়াচ্ছেন। পাশাপাশি আজিমপুর এলাকার একটি ফ্ল্যাটে কোচিং সেন্টার খুলে ছাত্রী পড়াতেন। ভুক্তভোগী ছাত্রীদের অভিভাবকরা বলছেন, শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ‘ভালো সম্পর্ক’ তৈরি করে ওই কোচিংয়েই তাদের যৌন হয়রানি করে আসছিলেন তিনি। বছরের পর বছর ধরে তার এ ধরনের কর্মকা- চললেও ভয়ে কেউ মুখ খোলার সাহস পেত না। গত ৭ ফেব্রুয়ারি কলেজ কর্তৃপক্ষের কাছে মুরাদ হোসেনের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন এক অভিভাবক। এ বিষয়টি নিয়ে একটি সংবাদপত্র অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রকাশ করলে শোরগোল পড়ে যায়। এরপর মুরাদ হোসেন সরকারকে আজিমপুরের ক্যাম্পাসের দিবা শাখা থেকে প্রত্যাহার করে অধ্যক্ষের কার্যালয়ে সংযুক্ত করা হয়। কলেজের পক্ষ থেকে গঠন করা হয় তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি। কিন্তু তাতে সন্তুষ্ট না হয়ে ওই শিক্ষকের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে আন্দোলনে নামে ভিকারুননিসার ছাত্রীরা। অভিভাবকরা জাতীয় প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে ওই শিক্ষকের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির পাশাপাশি তাকে চাকরিচ্যুত করার দাবি জানান। এই প্রেক্ষাপটে সোমবার রাতে কলেজের পরিচালনা কমিটির সভায় মুরাদ হোসেনকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। সেদিন সন্ধ্যায় এক শিক্ষার্থীর মা বাদী হয়ে লালবাগ থানায় মামলা করেন। এর কয়েক ঘণ্টার মধ্যে কলাবাগানের বাসা থেকে মুরাদকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
গতকাল বৃহস্পতিবারের সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ কর্মকর্তা মহিদ উদ্দিন বলেন, মুরাদের ল্যাপটপ ও মোবাইল ফোন জব্দ করা হয়েছে। সেগুলোর ফরেনসিক পরীক্ষা করানো হবে। রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদে কী জানা গেছে, সেই প্রশ্ন করা হলে অতিরিক্ত কমিশনার বলেন, “বাদীর মেয়ে ভিকারুননিসা নূন স্কুলে অষ্টম শ্রেণিতে অধ্যয়নরত। তার মেয়ে সপ্তম শ্রেণিতে পড়ার সময় মুরাদের কোচিংয়ে পড়ত। প্রায় সময় মুরাদ তার মেয়েসহ তার সহপাঠীদের কুরুচিপূর্ণ কৌতুক শোনাত।
“বাদীর মেয়ে স্কুলে নাচ করত। ওই নাচের ভিডিও মুরাদ ঘুমানোর আগে দেখত বলে ওই শিক্ষার্থীকে প্রায়ই বলত।” মহিদ উদ্দিন বলেন, “গত বছরের নভেম্বরে যৌন নির্যাতনের শিকার হয় ওই শিক্ষার্থী। পুলিশ এর প্রাথমিক সত্যতা পেয়েছে।”এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “ওই ঘটনা জানাজানি হলে মা-বাবার সম্মানহানি হবে এবং স্কুল থেকে তাকে বের করে দেবে- এই ভয়ে মেয়েটি এতদিন কিছু জানায়নি।” এক প্রশ্নের জবাবে মহিদ উদ্দিন বলেন, “ফৌজদারি অপরাধ কখনও তামাদি হয়ে যায় না। আর এই ঘটনা প্রমাণে মেডিকেল পরীক্ষার প্রয়োজন হয় না। পারিপার্শ্বিক অবস্থা ও আরো কিছু বিষয় তদন্ত করে অপরাধ সংঘটিত হওয়ার প্রমাণ বের করতে হয়। পুলিশ সেই চেষ্টাই করে যাচ্ছে।