ফারজানা কাশেমী : জীবন সমাচারের দিনলিপি পটপরিক্রমার সন্নিবেশিত ছকবাধা।একছত্র সম অবস্থান ও সহ অবস্থান কখনো বিরাজমান নয়। প্রতিকূল ও অনকূল পরিস্থিতি সহ্য ও বরণ করে জীবন কে ধারণ ও বহন করতে হয়। কিছু অনাহুত পরিস্থিতি তে জীবন অসহনীয় ও দুর্বিসহ। তবুও বহমান জীবনের গতি।গতিপথে দুভ্যেদতা,মসৃন, বন্ধুর, কণ্টক, বেদনার্ত ও ভালবাসার কুসুম পেলবতায় যেন জীবন স্রোত। তথাপি আবার জীবন কখনো খরস্রোতা। কোলাহল ময় শব্দময়তার স্পন্দনবেগ। নিমিষেই যেন কঠিনত্বের ইস্পাত সম আঘাতের পদচারণ । হারিয়ে যেতে, বা পালিয়ে বেড়াতে নিষ্ফল আকুলতায় পুনঃ পুনঃ নিবেদন করে মানুষ। ভালো মন্দের বেড়াজালে, উপেক্ষা, উদ্বেগ ও অবহেলায় দিনপঞ্জি চলে যায়। অসীমতার আকুল পানে ক্ষমাহীন চক্করের দোলাচলে জীবন আবর্তিত হয়।
কণ্টকময় পথ অতিক্রম করতে মানুষ যথাসাধ্য চেষ্টা করে, যেন যথাস্থানে পৌছতে পারে। অসাধ্য সাধনের নিমিত্তে যেন সর্বদা প্রস্তুত। সময়ের বহুমাত্রায় একসময় হয়ত বেদনাময় বালুচর, মরিচিকা, ও নিষ্পেষনের অবসাদের নিঃশেষ হয়।
আরো ভালো থাকার আয়োজনে মানুষ নিমগ্ন হয়। শুধু উৎকৃষ্ট পন্থায় যেন নিজেকে অধিষ্ঠিত করতে সদা ব্যস্ত এই মনুষ্য প্রকৃতি। জীবনের দ্বার প্রান্তে পৌছানো অবধি শুধুই এগিয়ে যাওয়ার লড়াই তে ন্যস্ত এই জীবন। পথিমধ্যে অচেনা, অজানা কত বন্ধু, হাজারো স্বজন। এদের মাঝে কেউ হয়ত মানুষের কঠিনত্বের দিনলিপিতে সংগী হয়। দুর্গম পথে আস্থাভাজন হয়। বন্ধুর পথে বন্ধু হয়ে হাত ধরে। ভালবাসার উষ্ণ পরশে আগলে রাখে। সাহসিকতার ঢাল হয়। প্রাকৃতিক আর্বতনে দুর্গম পথ পাড়ি দেওয়া যাত্রী তার নতুন দিনের অনুসূচকে পুরানো অনুসর্গ কে অস্বীকার করে।
যাত্রাপথের সবুজ দিনে সুষম হাওয়ায় আবার অনেক শুভকাংখীর ছায়া মেলে। তাদের অন্তরের নিগাঢ় ভালবাসায় যেনে এক অকৃপন আতিথেয়তা। আতিথেয়তা এর অন্তরালে যেন এক বিষবাস্প। যার শাখামূল এতই গভীর যেন ধ্বংস বা পুড়ে ছাই হবার জন্য এক শক্তিধর রেখাংশ। আবার কঠিন দিনে উপকথার কথামালা হয়ে কেউ তাদের অস্তিত্ব বিরাজ করে। যাতনার গ্লানি থেকে মুক্ত হবার আশার সঞ্চার করে। এই উপকুলের বন্ধুত্ব কখনো সাময়িক, যেন যাত্রী বিরতিতে হারিয়ে যায়। আবার উপকুলের বন্ধুত্ব যেন হিরকের মায়াজাল যা অবিচল ও অবিরাম ভাবে স্থিতি প্রতিষ্ঠা করে। পাশে থাকা বা কাছে থাকা যেন হয় অনন্ত প্রহরের। যদি বন্ধুর পথে বন্ধুর ছায়াতল হতে হয় তা যেন ধ্রুবক হয়। সাময়িক কালের ক্ষনিকের আলোক ছটার বন্ধুত্ব প্রয়োজন শেষে ফুরিয়ে যায়। নিয়ন আলোর বন্ধুত্বসুলভ আচরণ নয়, স্থিতিশীল মাত্রায় বন্ধুত্বপূর্ণ সস্পর্ক আকড়ে থাকুক বন্ধু হওয়ার পূর্নতা। পাশে থাকা,কাছে থাকার বহুমাত্রিক আয়োজনে।
লেখক: আইনজীবী, সুপ্রিম কোর্ট অব বাংলাদেশ