ঢাকা ০২:৩৯ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১০ জুন ২০২৫

বইমেলার শিশুপ্রহরে ফাগুন আমেজ

  • আপডেট সময় : ১০:০৭:১২ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৭ ফেব্রুয়ারী ২০২৪
  • ৬৮ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক : ছুটির দিনে বইমেলার শিশুচত্বরে রীতিমত উড়ে বেড়াচ্ছিল ছোট্ট মেহেরু, পরনে তার হলদে শাড়ি। বাসন্তি সাজে মা-বাবার সঙ্গে গতকাল শুক্রবার মেলায় এসেছে সে, শিশুচত্বরে আনন্দে মেতে ওঠার পাশাপাশি ঘুরে ঘুরে বেশকিছু বইও কিনেছে। অমর একুশে বইমেলার তৃতীয় শিশুপ্রহরে এসে মেয়ের উচ্ছ্বাস দেখে মেহেরুর মা-বাবাও খুশি। তারা মেলায় এসেছিলেন রাজধানীর কলাবাগান থেকে। মেহেরুর মা মিতু বলেন, “গতবারও মেয়েকে নিয়ে বইমেলায় এসেছিলাম। তখন ওর বয়স ছিল দেড় বছর। আমাদের কোলে চড়েই তখন ঘুরেছে। আর এবার নিজেই মাঠে ছুটে বেড়াচ্ছে। দেখে খুব ভালো লাগছে।”
ছোটবেলা থেকেই বইয়ের সঙ্গে মেয়ের সম্পর্ক গড়ে তুলতে চান মিতু। তিনি বলেন, “আমাদের বাসায় টিভি রাখিনি। মেয়ের হাতে মোবাইল ফোন দিই না। ওকে এখন প্রচুর ছবির বই কিনে দিই। বাইরে বেড়াতে নিয়ে যাই।”
মেহেরুর মত অনেক শিশুই শিশুপ্রহরে এসেছিল ফাগুনের সাজে। কেউ কেউ এসেছে ঢাকার বাইরে থেকেও। গাজীপুরের জয়দেবপুর থেকে মায়ের সঙ্গে মেলায় এসেছিল দুই বোন রাইসা ও রামিসা। রাইসা পড়ে চতুর্থ শ্রেণিতে, রামিসা প্রথম শ্রেণিতে। মায়ের সঙ্গে তারা দুজনও পরেছে হলুদ পোশাক, মাথায় ফুলের মুকুট। রামিসা জানায়, তার গল্পের বই ভালো লাগে। যে কারণে মেলা থেকে কিনেছে ‘ছোটদের মিউ আলী ও মিনিমাউস’ বই। সিলেটের চা বাগান থেকে আসা আট-নয়জনের একটি দলকে দেখা গেল বইমেলার শিশুচত্বরে। তাদের মধ্যে ১৩ বছরের বিধি পড়েছে ক্লাস থ্রি পর্যন্ত। এখন কাজ করে চা বাগানেই। বিধি জানায়, তারা ঢাকার অন্য একটি অনুষ্ঠানে অংশ নিতে এসেছে। সকালে সময় ছিল বলে কয়েকজন মিলে বইমেলা দেখতে এসেছে। শুক্রবার ছুটির দিন বইমেলা শুরু হয় বেলা ১১টায়, চলে রাত ৯টা পর্যন্ত। এর মধ্যে সকাল ১১টা থেকে বেলা ১টা পর্যন্ত থাকে শিশুপ্রহর। অভিভাবক ও স্বজনেরা শিশুদের মেলায় নিয়ে আসেন এই সময়। এর আগে সকাল ১০টায় বইমেলার মূলমঞ্চে হয় শিশু-কিশোর আবৃত্তি প্রতিযোগিতার চূড়ান্ত পর্ব।
শিশুপ্রহরের অন্যতম আকর্ষণ সিসিমপুরের মঞ্চ। সপ্তাহের শুক্র ও শনিবার সকাল সাড়ে ১১টা, বিকাল সাড়ে ৩টা এবং সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় সিসিমপুরের এই প্রদর্শনী রাখা হয় মেলায় আসা শিশুদের জন্য। সিসিমপুরের জনপ্রিয় চরিত্র হালুম, টুকটুকি, ইকরি, শিকু এবং জুলিয়ার মজার মজার কথা গল্প আর নাচ-গানে শিশুরা আনন্দ করে। তৃতীয় শিশুপ্রহরে বই বিক্রি নিয়েও সন্তুষ্টির কথা জানিয়েছেন সিসিমপুর, ঘাশফড়িং ও বাংলা একাডেমির স্টলের বিক্রয়কর্মীরা। বিভিন্ন স্টলের সামনে সকালটা শিশু ও তাদের অভিভাবকদের দখলেই ছিল। শিশুসাহিত্যিক ও ছড়াকার মাসুম আওয়াল বলেন, “ফাগুনের প্রথম শিশুপ্রহর, এজন্য নানা রঙে সেজে এসেছে শিশুরা এবং তাদের বাবা-মায়েরা। এটাই মেলার সবচেয়ে সুন্দর দৃশ্য।”
শিশুদের ছোটকাগজ দোলন সম্পাদক কামাল মোস্তফা বলেন, “শিশুচত্বরের পাশাপাশি সকালটা পুরো মেলায় দেখেছি শিশুদের বিচরণ। সব স্টলেই অভিভাবকের হাত ধরে শিশুরা ঘুরছে। বইও কিনছে।” এর আগে মেলার দ্বিতীয় দিন ২ ফেব্রুয়ারি ছিল প্রথম শিশুপ্রহর, ৯ ফেব্রুয়ারি ছিল দ্বিতীয় শিশুপ্রহর।

 

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

বইমেলার শিশুপ্রহরে ফাগুন আমেজ

আপডেট সময় : ১০:০৭:১২ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৭ ফেব্রুয়ারী ২০২৪

নিজস্ব প্রতিবেদক : ছুটির দিনে বইমেলার শিশুচত্বরে রীতিমত উড়ে বেড়াচ্ছিল ছোট্ট মেহেরু, পরনে তার হলদে শাড়ি। বাসন্তি সাজে মা-বাবার সঙ্গে গতকাল শুক্রবার মেলায় এসেছে সে, শিশুচত্বরে আনন্দে মেতে ওঠার পাশাপাশি ঘুরে ঘুরে বেশকিছু বইও কিনেছে। অমর একুশে বইমেলার তৃতীয় শিশুপ্রহরে এসে মেয়ের উচ্ছ্বাস দেখে মেহেরুর মা-বাবাও খুশি। তারা মেলায় এসেছিলেন রাজধানীর কলাবাগান থেকে। মেহেরুর মা মিতু বলেন, “গতবারও মেয়েকে নিয়ে বইমেলায় এসেছিলাম। তখন ওর বয়স ছিল দেড় বছর। আমাদের কোলে চড়েই তখন ঘুরেছে। আর এবার নিজেই মাঠে ছুটে বেড়াচ্ছে। দেখে খুব ভালো লাগছে।”
ছোটবেলা থেকেই বইয়ের সঙ্গে মেয়ের সম্পর্ক গড়ে তুলতে চান মিতু। তিনি বলেন, “আমাদের বাসায় টিভি রাখিনি। মেয়ের হাতে মোবাইল ফোন দিই না। ওকে এখন প্রচুর ছবির বই কিনে দিই। বাইরে বেড়াতে নিয়ে যাই।”
মেহেরুর মত অনেক শিশুই শিশুপ্রহরে এসেছিল ফাগুনের সাজে। কেউ কেউ এসেছে ঢাকার বাইরে থেকেও। গাজীপুরের জয়দেবপুর থেকে মায়ের সঙ্গে মেলায় এসেছিল দুই বোন রাইসা ও রামিসা। রাইসা পড়ে চতুর্থ শ্রেণিতে, রামিসা প্রথম শ্রেণিতে। মায়ের সঙ্গে তারা দুজনও পরেছে হলুদ পোশাক, মাথায় ফুলের মুকুট। রামিসা জানায়, তার গল্পের বই ভালো লাগে। যে কারণে মেলা থেকে কিনেছে ‘ছোটদের মিউ আলী ও মিনিমাউস’ বই। সিলেটের চা বাগান থেকে আসা আট-নয়জনের একটি দলকে দেখা গেল বইমেলার শিশুচত্বরে। তাদের মধ্যে ১৩ বছরের বিধি পড়েছে ক্লাস থ্রি পর্যন্ত। এখন কাজ করে চা বাগানেই। বিধি জানায়, তারা ঢাকার অন্য একটি অনুষ্ঠানে অংশ নিতে এসেছে। সকালে সময় ছিল বলে কয়েকজন মিলে বইমেলা দেখতে এসেছে। শুক্রবার ছুটির দিন বইমেলা শুরু হয় বেলা ১১টায়, চলে রাত ৯টা পর্যন্ত। এর মধ্যে সকাল ১১টা থেকে বেলা ১টা পর্যন্ত থাকে শিশুপ্রহর। অভিভাবক ও স্বজনেরা শিশুদের মেলায় নিয়ে আসেন এই সময়। এর আগে সকাল ১০টায় বইমেলার মূলমঞ্চে হয় শিশু-কিশোর আবৃত্তি প্রতিযোগিতার চূড়ান্ত পর্ব।
শিশুপ্রহরের অন্যতম আকর্ষণ সিসিমপুরের মঞ্চ। সপ্তাহের শুক্র ও শনিবার সকাল সাড়ে ১১টা, বিকাল সাড়ে ৩টা এবং সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় সিসিমপুরের এই প্রদর্শনী রাখা হয় মেলায় আসা শিশুদের জন্য। সিসিমপুরের জনপ্রিয় চরিত্র হালুম, টুকটুকি, ইকরি, শিকু এবং জুলিয়ার মজার মজার কথা গল্প আর নাচ-গানে শিশুরা আনন্দ করে। তৃতীয় শিশুপ্রহরে বই বিক্রি নিয়েও সন্তুষ্টির কথা জানিয়েছেন সিসিমপুর, ঘাশফড়িং ও বাংলা একাডেমির স্টলের বিক্রয়কর্মীরা। বিভিন্ন স্টলের সামনে সকালটা শিশু ও তাদের অভিভাবকদের দখলেই ছিল। শিশুসাহিত্যিক ও ছড়াকার মাসুম আওয়াল বলেন, “ফাগুনের প্রথম শিশুপ্রহর, এজন্য নানা রঙে সেজে এসেছে শিশুরা এবং তাদের বাবা-মায়েরা। এটাই মেলার সবচেয়ে সুন্দর দৃশ্য।”
শিশুদের ছোটকাগজ দোলন সম্পাদক কামাল মোস্তফা বলেন, “শিশুচত্বরের পাশাপাশি সকালটা পুরো মেলায় দেখেছি শিশুদের বিচরণ। সব স্টলেই অভিভাবকের হাত ধরে শিশুরা ঘুরছে। বইও কিনছে।” এর আগে মেলার দ্বিতীয় দিন ২ ফেব্রুয়ারি ছিল প্রথম শিশুপ্রহর, ৯ ফেব্রুয়ারি ছিল দ্বিতীয় শিশুপ্রহর।