ঢাকা ০১:০০ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১০ জুন ২০২৫

ঢাকায় ৬ স্থানে ট্রাকপ্রতি ২০০-৩০০ টাকা চাঁদা দিতে হয় সিন্ডিকেট ও মজুতদারির বিরুদ্ধে অ্যাকশনে র‌্যাব

  • আপডেট সময় : ০১:১১:৪৪ অপরাহ্ন, রবিবার, ৪ ফেব্রুয়ারী ২০২৪
  • ১১১ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক : পণ্যবাহী ট্রাকে বিভিন্ন সংগঠন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নামে চাঁদাবাজির কারণে অযৌক্তিকভাবে নিত্যপণ্যের দাম বেড়েছে। ঢাকায় অন্তত পাঁচ থেকে ছয়টি স্থানে পণ্যবাহী ট্রাক থেকে ২০০ থেকে ৩০০ টাকা চাঁদা উত্তোলন করা হয় বলে জানিয়েছে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব)। রমজানে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি ঠেকাতে এবং মজুতদারি ও যানবাহনে চাঁদাবাজি বন্ধে মাঠে নেমেছে র‌্যাব। পুলিশের এলিট ফোর্স র‌্যাব বলছে, সবজিসহ নিত্যপণ্যের দাম অযৌক্তিকভাবে বৃদ্ধিতে যারা কারসাজি করছেন, মজুত করে দাম বৃদ্ধির চেষ্টা করছেন, তাদের পরিচয় যাই হোক শনাক্ত করে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ পদক্ষেপ নেওয়া হবে। এক্ষেত্রে কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। এজন্য গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধি ও অভিযান পরিচালনার জন্য প্রতিটি ব্যাটালিয়নকে নির্দেশ দিয়েছে র‌্যাব।
গতকাল রোববার (৪ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র‌্যাবের মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান র‌্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন। খন্দকার আল মঈন বলেন, সম্প্রতি অযৌক্তিকভাবে নিত্যপণ্যের দাম বেড়েছে। এ জন্য গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ানো হয়। গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে ঢাকার বিভিন্ন প্রবেশমুখ ও পাইকারি বাজার এলাকায় পণ্যবাহী ট্রাক থেকে চাঁদা উত্তোলনের সময় হাতেনাতে ৫১ জনকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব। শনিবার (৩ ফেব্রুয়ারি) ভোররাতে একযোগে রাজধানীর বেশ কয়েকটি এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে র‌্যাব।
রাজধানীর কারওয়ান বাজার, বাবুবাজার, গুলিস্তান, দৈনিক বাংলা মোড়, ইত্তেফাক মোড়, টিটিপাড়া, কাজলা, গাবতলী ও ডেমরা স্টাফ কোয়ার্টারসহ বিভিন্ন এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে র‌্যাব।
গ্রেফতাররা হলেন- জাবেদ, আরিফ, আবুল হোসেন, বিল্লাল হোসেন, আলী হোসেন, রাকিব হাসান, ফালান মিয়া, সাকিব আলী, বাবলু ও রাজাসহ ৫১ জন। তাদের কাছ থেকে নগদ এক লাখ ১২ হাজার টাকা, একটি লেজার রশ্মির লাইট, ছয়টি সিটি করপোরেশনসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের জ্যাকেট, দু’টি অন্যান্য লাইট, চারটি আইডি কার্ড, ৪১টি মোবাইল এবং বিপুল পরিমাণ চাঁদা আদায়ের রশিদ জব্দ করা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, রাজধানীর বিভিন্ন সড়ক ও মহাসড়কে পণ্যবাহী গাড়িতে চাঁদাবাজি করে গ্রেফতাররা। তথাকথিত ইজারাদারদের নির্দেশে কয়েকটি গ্রুপে বিভক্ত হয়ে প্রতিরাতে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় রাস্তার ওপর অবস্থান নেয়। দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে পণ্যবাহী যানবাহন রাজধানীতে প্রবেশের সময় তারা লেজার লাইট, লাঠি ও বিভিন্ন সংকেতের মাধ্যমে গাড়ি থামিয়ে ড্রাইভারদের থেকে অবৈধভাবে চাঁদা আদায় করে থাকে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে তারা চাঁদা আদায়ের রশিদও দিয়ে থাকে। ড্রাইভাররা চাঁদা দিতে অস্বীকার করলে গাড়ি ভাঙচুর, ড্রাইভার-হেলপারকে মারধরসহ প্রাণনাশের হুমকি দিতো গ্রেফতাররা। তারা প্রতিটি ট্রাক ও পণ্যবাহী যান থেকে ২০০-৩০০ টাকা চাঁদা আদায় করে থাকে। কখনো সিটি করপোরেশন, কখনো শ্রমিক সংগঠন, কখনো কল্যাণ সমিতি, কখনো আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নামে এ চাঁদা উত্তোলন করা হয়। তিনি বলেন, মধ্যরাতে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় যখন পণ্যবাহী ট্রাক প্রবেশ করে তখন চাঁদা উত্তোলন শুরু হয়। একটি গ্রুপ চাঁদা উত্তোলন করে কথিত ইজারাদারদের কাছে জমা দেয়। তারা সিন্ডিকেটের মধ্যে টাকা ভাগ-বাটোয়ারা করে নেয়। চাঁদা উত্তোলনকারীরা প্রতিরাতে মজুরি হিসেবে ৬০০-৭০০ টাকা পান। প্রতিটি স্পট থেকে প্রতিদিন অন্তত লক্ষাধিক টাকা চাঁদা আদায় করা হয়। কমান্ডার বলেন, রমজানকে সামনে রেখে এ অভিযান অব্যাহত থাকবে। চাঁদাবাজির সিন্ডিকেটের সঙ্গে জড়িত ওপরের লেভেলের কয়েকজনের নাম পেয়েছি, যাচাই-বাছাই করছি। তারা যে সংস্থারই হোক অথবা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কেউ হোক, এমনকি আমাদের কোনো সদস্য হলেও আইনের আওতায় আনা হবে।
অ্যাকশনে র‌্যাব: রমজানে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি ঠেকাতে এবং মজুতদারি ও যানবাহনে চাঁদাবাজি বন্ধে মাঠে নেমেছে র‌্যাব। পুলিশের এলিট ফোর্স র‌্যাব বলছে, সবজিসহ নিত্যপণ্যের দাম অযৌক্তিকভাবে বৃদ্ধিতে যারা কারসাজি করছেন, মজুত করে দাম বৃদ্ধির চেষ্টা করছেন, তাদের পরিচয় যাই হোক শনাক্ত করে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ পদক্ষেপ নেওয়া হবে। এক্ষেত্রে কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। এজন্য গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধি ও অভিযান পরিচালনার জন্য প্রতিটি ব্যাটালিয়নকে নির্দেশ দিয়েছে র‌্যাব।
গতকাল রোববার (৪ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর কারওয়ান বাজার র‌্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান ফোর্সের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইং পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।
তিনি বলেন, এলিট ফোর্স র‌্যাব সবসময় এ ধরনের জনসম্পৃক্ত ঘটনায় অভিযান পরিচালনা করে থাকে। আজ থেকে আমরা সবজিসহ নিত্যপণ্যের ঊর্ধ্বগতি ঠেকাতে এবং মজুতদারি বন্ধে অভিযান পরিচালনা করব।
কমান্ডার মঈন বলেন, সম্প্রতি একটি চক্র সিন্ডিকেটের মাধ্যমে, নামে-বেনামে চাঁদাবাজদের মাধ্যমে সিন্ডিকেট করে চাঁদাবাজি করছে, চাঁদাবাজির কারণে অনিয়ন্ত্রিত ও অযৌক্তিকভাবে নিত্যপণ্যের দাম বেড়েই চলেছে। আমরা আমাদের প্রত্যেকটি ব্যাটালিয়নকে নির্দেশ দিয়েছি গোয়েন্দা নজরদারি পরিচালনা করার জন্য। যারা নামে বেনামে সিন্ডিকেট করে চাঁদাবাজি করছে, জনদুর্ভোগ সৃষ্টি করছে, নিত্যপণ্যের দাম অযৌক্তিকভাবে বৃদ্ধি করছে, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
কমান্ডার মঈন বলেন, প্রধানমন্ত্রী নির্দেশনা দিয়েছেন, এই ধরনের মজুতদার ও সিন্ডিকেটের মাধ্যমে সবজিসহ নিত্যপণ্যের দাম বৃদ্ধিতে যারা কারসাজি করছেন তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য। সামনে রমজান। রমজানে যাতে নিত্যপণ্যের দাম স্বাভাবিক থাকে সেজন্য র‌্যাবের প্রত্যেকটি ব্যাটালিয়নকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে চাঁদাবাজ মজুতদার ও নিত্যপণ্যের দাম বৃদ্ধিতে যারা কারসাজি করছেন তাদের শনাক্ত করার জন্য। তিনি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, যারা ইচ্ছাকৃত কারসাজি করে রমজানে নিত্যপণ্যের দাম বৃদ্ধির চেষ্টা করবেন, এখন করছেন তাদের শনাক্ত করে কঠোর ও আইনানুগ পদক্ষেপ নেওয়া হবে। সে যেই হোক, তারা যদি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যও হয়, সিন্ডিকেটের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার প্রমাণ পাওয়া গেলে ছাড় দেওয়া হবে না, কঠোর আইনানুগ পদক্ষেপ নেওয়া হবে। তিনি আরও বলেন, আমাদের ম্যাজিস্ট্রেটের মাধ্যমে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হবে। নিত্যপণ্যের সরকারি মূল্যের বেশি দামে কেউ যদি পণ্য বিক্রি করেন বা মজুত করে অন্যত্র বিক্রির চেষ্টা করছেন তাদের শনাক্ত করছি। মোবাইল কোর্ট আইনে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

 

 

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

ঢাকায় ৬ স্থানে ট্রাকপ্রতি ২০০-৩০০ টাকা চাঁদা দিতে হয় সিন্ডিকেট ও মজুতদারির বিরুদ্ধে অ্যাকশনে র‌্যাব

আপডেট সময় : ০১:১১:৪৪ অপরাহ্ন, রবিবার, ৪ ফেব্রুয়ারী ২০২৪

নিজস্ব প্রতিবেদক : পণ্যবাহী ট্রাকে বিভিন্ন সংগঠন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নামে চাঁদাবাজির কারণে অযৌক্তিকভাবে নিত্যপণ্যের দাম বেড়েছে। ঢাকায় অন্তত পাঁচ থেকে ছয়টি স্থানে পণ্যবাহী ট্রাক থেকে ২০০ থেকে ৩০০ টাকা চাঁদা উত্তোলন করা হয় বলে জানিয়েছে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব)। রমজানে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি ঠেকাতে এবং মজুতদারি ও যানবাহনে চাঁদাবাজি বন্ধে মাঠে নেমেছে র‌্যাব। পুলিশের এলিট ফোর্স র‌্যাব বলছে, সবজিসহ নিত্যপণ্যের দাম অযৌক্তিকভাবে বৃদ্ধিতে যারা কারসাজি করছেন, মজুত করে দাম বৃদ্ধির চেষ্টা করছেন, তাদের পরিচয় যাই হোক শনাক্ত করে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ পদক্ষেপ নেওয়া হবে। এক্ষেত্রে কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। এজন্য গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধি ও অভিযান পরিচালনার জন্য প্রতিটি ব্যাটালিয়নকে নির্দেশ দিয়েছে র‌্যাব।
গতকাল রোববার (৪ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র‌্যাবের মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান র‌্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন। খন্দকার আল মঈন বলেন, সম্প্রতি অযৌক্তিকভাবে নিত্যপণ্যের দাম বেড়েছে। এ জন্য গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ানো হয়। গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে ঢাকার বিভিন্ন প্রবেশমুখ ও পাইকারি বাজার এলাকায় পণ্যবাহী ট্রাক থেকে চাঁদা উত্তোলনের সময় হাতেনাতে ৫১ জনকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব। শনিবার (৩ ফেব্রুয়ারি) ভোররাতে একযোগে রাজধানীর বেশ কয়েকটি এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে র‌্যাব।
রাজধানীর কারওয়ান বাজার, বাবুবাজার, গুলিস্তান, দৈনিক বাংলা মোড়, ইত্তেফাক মোড়, টিটিপাড়া, কাজলা, গাবতলী ও ডেমরা স্টাফ কোয়ার্টারসহ বিভিন্ন এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে র‌্যাব।
গ্রেফতাররা হলেন- জাবেদ, আরিফ, আবুল হোসেন, বিল্লাল হোসেন, আলী হোসেন, রাকিব হাসান, ফালান মিয়া, সাকিব আলী, বাবলু ও রাজাসহ ৫১ জন। তাদের কাছ থেকে নগদ এক লাখ ১২ হাজার টাকা, একটি লেজার রশ্মির লাইট, ছয়টি সিটি করপোরেশনসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের জ্যাকেট, দু’টি অন্যান্য লাইট, চারটি আইডি কার্ড, ৪১টি মোবাইল এবং বিপুল পরিমাণ চাঁদা আদায়ের রশিদ জব্দ করা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, রাজধানীর বিভিন্ন সড়ক ও মহাসড়কে পণ্যবাহী গাড়িতে চাঁদাবাজি করে গ্রেফতাররা। তথাকথিত ইজারাদারদের নির্দেশে কয়েকটি গ্রুপে বিভক্ত হয়ে প্রতিরাতে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় রাস্তার ওপর অবস্থান নেয়। দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে পণ্যবাহী যানবাহন রাজধানীতে প্রবেশের সময় তারা লেজার লাইট, লাঠি ও বিভিন্ন সংকেতের মাধ্যমে গাড়ি থামিয়ে ড্রাইভারদের থেকে অবৈধভাবে চাঁদা আদায় করে থাকে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে তারা চাঁদা আদায়ের রশিদও দিয়ে থাকে। ড্রাইভাররা চাঁদা দিতে অস্বীকার করলে গাড়ি ভাঙচুর, ড্রাইভার-হেলপারকে মারধরসহ প্রাণনাশের হুমকি দিতো গ্রেফতাররা। তারা প্রতিটি ট্রাক ও পণ্যবাহী যান থেকে ২০০-৩০০ টাকা চাঁদা আদায় করে থাকে। কখনো সিটি করপোরেশন, কখনো শ্রমিক সংগঠন, কখনো কল্যাণ সমিতি, কখনো আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নামে এ চাঁদা উত্তোলন করা হয়। তিনি বলেন, মধ্যরাতে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় যখন পণ্যবাহী ট্রাক প্রবেশ করে তখন চাঁদা উত্তোলন শুরু হয়। একটি গ্রুপ চাঁদা উত্তোলন করে কথিত ইজারাদারদের কাছে জমা দেয়। তারা সিন্ডিকেটের মধ্যে টাকা ভাগ-বাটোয়ারা করে নেয়। চাঁদা উত্তোলনকারীরা প্রতিরাতে মজুরি হিসেবে ৬০০-৭০০ টাকা পান। প্রতিটি স্পট থেকে প্রতিদিন অন্তত লক্ষাধিক টাকা চাঁদা আদায় করা হয়। কমান্ডার বলেন, রমজানকে সামনে রেখে এ অভিযান অব্যাহত থাকবে। চাঁদাবাজির সিন্ডিকেটের সঙ্গে জড়িত ওপরের লেভেলের কয়েকজনের নাম পেয়েছি, যাচাই-বাছাই করছি। তারা যে সংস্থারই হোক অথবা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কেউ হোক, এমনকি আমাদের কোনো সদস্য হলেও আইনের আওতায় আনা হবে।
অ্যাকশনে র‌্যাব: রমজানে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি ঠেকাতে এবং মজুতদারি ও যানবাহনে চাঁদাবাজি বন্ধে মাঠে নেমেছে র‌্যাব। পুলিশের এলিট ফোর্স র‌্যাব বলছে, সবজিসহ নিত্যপণ্যের দাম অযৌক্তিকভাবে বৃদ্ধিতে যারা কারসাজি করছেন, মজুত করে দাম বৃদ্ধির চেষ্টা করছেন, তাদের পরিচয় যাই হোক শনাক্ত করে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ পদক্ষেপ নেওয়া হবে। এক্ষেত্রে কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। এজন্য গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধি ও অভিযান পরিচালনার জন্য প্রতিটি ব্যাটালিয়নকে নির্দেশ দিয়েছে র‌্যাব।
গতকাল রোববার (৪ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর কারওয়ান বাজার র‌্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান ফোর্সের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইং পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।
তিনি বলেন, এলিট ফোর্স র‌্যাব সবসময় এ ধরনের জনসম্পৃক্ত ঘটনায় অভিযান পরিচালনা করে থাকে। আজ থেকে আমরা সবজিসহ নিত্যপণ্যের ঊর্ধ্বগতি ঠেকাতে এবং মজুতদারি বন্ধে অভিযান পরিচালনা করব।
কমান্ডার মঈন বলেন, সম্প্রতি একটি চক্র সিন্ডিকেটের মাধ্যমে, নামে-বেনামে চাঁদাবাজদের মাধ্যমে সিন্ডিকেট করে চাঁদাবাজি করছে, চাঁদাবাজির কারণে অনিয়ন্ত্রিত ও অযৌক্তিকভাবে নিত্যপণ্যের দাম বেড়েই চলেছে। আমরা আমাদের প্রত্যেকটি ব্যাটালিয়নকে নির্দেশ দিয়েছি গোয়েন্দা নজরদারি পরিচালনা করার জন্য। যারা নামে বেনামে সিন্ডিকেট করে চাঁদাবাজি করছে, জনদুর্ভোগ সৃষ্টি করছে, নিত্যপণ্যের দাম অযৌক্তিকভাবে বৃদ্ধি করছে, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
কমান্ডার মঈন বলেন, প্রধানমন্ত্রী নির্দেশনা দিয়েছেন, এই ধরনের মজুতদার ও সিন্ডিকেটের মাধ্যমে সবজিসহ নিত্যপণ্যের দাম বৃদ্ধিতে যারা কারসাজি করছেন তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য। সামনে রমজান। রমজানে যাতে নিত্যপণ্যের দাম স্বাভাবিক থাকে সেজন্য র‌্যাবের প্রত্যেকটি ব্যাটালিয়নকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে চাঁদাবাজ মজুতদার ও নিত্যপণ্যের দাম বৃদ্ধিতে যারা কারসাজি করছেন তাদের শনাক্ত করার জন্য। তিনি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, যারা ইচ্ছাকৃত কারসাজি করে রমজানে নিত্যপণ্যের দাম বৃদ্ধির চেষ্টা করবেন, এখন করছেন তাদের শনাক্ত করে কঠোর ও আইনানুগ পদক্ষেপ নেওয়া হবে। সে যেই হোক, তারা যদি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যও হয়, সিন্ডিকেটের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার প্রমাণ পাওয়া গেলে ছাড় দেওয়া হবে না, কঠোর আইনানুগ পদক্ষেপ নেওয়া হবে। তিনি আরও বলেন, আমাদের ম্যাজিস্ট্রেটের মাধ্যমে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হবে। নিত্যপণ্যের সরকারি মূল্যের বেশি দামে কেউ যদি পণ্য বিক্রি করেন বা মজুত করে অন্যত্র বিক্রির চেষ্টা করছেন তাদের শনাক্ত করছি। মোবাইল কোর্ট আইনে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।