ঢাকা ০৪:০০ অপরাহ্ন, সোমবার, ০৯ জুন ২০২৫

শুধু কাগজের নয়, ডিজিটাল প্রকাশক হতে হবে: প্রধানমন্ত্রী

  • আপডেট সময় : ০১:৪৭:৫৬ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১ ফেব্রুয়ারী ২০২৪
  • ৯৬ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক : প্রকাশকদের শুধু কাগজের নয়, ডিজিটাল প্রকাশক হওয়ার অনুরোধ জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে ডিজিটাল প্রকাশনার ওপর গুরুত্ব দেন তিনি। গতকাল বৃহস্পতিবার (১ ফেব্রুয়ারি) বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে অমর একুশে গ্রন্থমেলা-২০২৪ এর উদ্বোধনের আগে দেওয়া বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন। এরপর তিনি বইমেলার উদ্বোধন ঘোষণা করেন। শেখ হাসিনা বলেন, ‘মোদের গরব, মোদের আশা, আ মরি বাংলা ভাষা’। কী মধুর আমাদের ভাষা। আমি একটা কথা বলব যে, এখন আমাদের যুগটা হয়ে গেছে বিজ্ঞান প্রযুক্তির যুগ। বই প্রকাশ এটা অবশ্যই থাকবে, এটা যাবে না। কারণ, একটা বই হাতে নিয়ে পড়ার মধ্য দিয়ে আলাদা একটা আনন্দ আছে। আজকালকার ছেলের মেয়েরা আবার ট্যাবে করে বই পড়ে অথবা ল্যাপটপে পড়ে। যদিও আমরা ওইভাবে খুব একটা আনন্দ পাই না। ‘কিন্তু তারপরও আমাদের ভাষা, সাহিত্য, সংস্কৃতি সবকিছু নিয়ে এগিয়ে যেতে হলে আমাদের যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলা উচিত। আমি আমাদের প্রকাশকদের অনুরোধ করব, প্রকাশকরা শুধুমাত্র কাগজের প্রকাশক হলে হবে না, ডিজিটাল প্রকাশক হতে হবে। ডিজিটাল হলে শুধু আমাদের দেশে নয়, বিদেশেও সকলের কাছে এটা পৌঁছাতে পারব। অন্যান্য ভাষাভাষী লোকেরাও পড়বে। কাজেই সেদিকেও একটু নজর দিলে মানসিকতার পরিবর্তন হয়ে আধুনিক প্রযুক্তিটাও নিজেরা রপ্ত করতে পারব। ’ প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, লাইব্রেগুলিতেও সাথে সাথে অডিও ভার্সন থাকবে, অডিও ভার্সনের কিন্তু প্রয়োজন আছে। সেটাও থাকলে অনেকের সুবিধা, শুনবে জানতে পারবে, সে ব্যবস্থাটাও আমাদের নেওয়া উচিত। এটাই সব থেকে দরকার, যুগের সাথে তাল মিলিয়ে চলতে আমরা এগিয়ে যাব।
বাংলা একাডেমি পুরস্কার নিলেন ১৬ লেখক
এদিকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাত থেকে বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার নিয়েছেন ১৬ লেখক। বৃহস্পতিবার (১ ফেব্রুয়ারি) বিকেল ৩টার দিকে বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে তাদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন তিনি। বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার-২০২৩ পেয়েছেন ১৬ জন। তারা হলেন, কবিতায় শামীম আজাদ, কথাসাহিত্যে নূরুদ্দিন জাহাঙ্গীর ও সালমা বাণী, প্রবন্ধ-গবেষণায় জুলফিকার মতিন। অনুবাদে সালেহা চৌধুরী, নাটক ও নাট্যসাহিত্যে (যাত্রা, পালা নাটক, সাহিত্যনির্ভর আর্টফিল্ম বা নান্দনিক চলচ্চিত্র) মৃত্তিকা চাকমা ও মাসুদ পথিক, শিশুসাহিত্যে তপংকর চক্রবর্তী, মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক গবেষণায় আফরোজা পারভীন ও আসাদুজ্জামান আসাদ, বঙ্গবন্ধুবিষয়ক গবেষণায় সাইফুল্লাহ মাহমুদ দুলাল ও মো. মজিবুর রহমান, বিজ্ঞান-কল্পবিজ্ঞান-পরিবেশবিজ্ঞানে ইনাম আল হক, আত্মজীবনী-স্মৃতিকথা-ভ্রমণকাহিনী-মুক্তগদ্যে ইসহাক খান এবং ফোকলোরে তপন বাগচী ও সুমনকুমার দাশ পুরস্কার পেয়েছেন। এ ছাড়া অমর একুশে বইমেলা উদ্বোধনের পাশাপাশি বাংলা একাডেমি প্রকাশিত ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সংগৃহীত রচনা: দ্বিতীয় খ-’ সহ কয়েকটি বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করেন প্রধানমন্ত্রী। এবারের বইমেলার প্রতিপাদ্য হলো ‘পড়ো বই, গড়ো দেশ: বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশ। ’ এবার বইমেলায় ৬৩৫টি প্রতিষ্ঠানকে মোট ৯৩৭টি স্টল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে বাংলা একাডেমি মাঠে ১২০টি প্রতিষ্ঠানকে ১৭৩টি এবং সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ৫১৫টি প্রতিষ্ঠানকে ৭৬৪টি স্টল বরাদ্দ দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। এ ছাড়া এ বছর বইমেলায় মোট ৩৭টি প্যাভিলিয়নও বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।

মেলায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও মাসব্যাপী সেমিনারের পাশাপাশি শিশু-কিশোরদের জন্য ছবি আঁকা, সংগীত ও আবৃত্তি প্রতিযোগিতার ব্যবস্থা থাকবে। এবারের গ্রন্থমেলায় বাংলা একাডেমি প্রকাশ করছে নতুন ও পুনর্মুদ্রিত ১০০ বই। বইমেলায় অংশগ্রহণকারী সব প্রতিষ্ঠান ২৫ শতাংশ কমিশনে বই বিক্রি করবে। বাংলা একাডেমির তিনটি প্যাভিলিয়ন এবং শিশুকিশোর উপযোগী প্রকাশনার বিপণনের জন্য ১টি স্টল থাকবে। বইমেলার সার্বিক নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকছে বাংলাদেশ পুলিশ, র‌্যাব, আনসার ও বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা। নিরাপত্তার জন্য মেলায় তিন শতাধিক ক্লোজসার্কিট ক্যামেরার ব্যবস্থা রয়েছে।
বইমেলা উপলক্ষে শুক্রবারেও মেট্রোরেল চালু রাখার দাবি
বই মেলা উপলক্ষে শুক্রবারেও মেট্রোরেল চালু রাখার দাবি জানিয়েছেন প্রকাশক, লেখক-পাঠক সবাই। সাধারণত বইমেলা শুরু হলে উত্তরা-মিরপুর সংশ্লিষ্ট এলাকার লোকজন নিত্য-নৈমিত্তিক যানজট ঠেলে শাহবাগ আসতে পারতেন না বা চাইতেন না। তবে এবার কর্মজীবীসহ সব স্তরের বই পাগল মানুষের জন্য আশীর্বাদ হয়ে এসেছে মেট্রোরেল। যে কারণে প্রকাশক, লেখক-পাঠক সবাই মেট্রোরেলের সমসাময়িক সুবিধার কথা জানিয়ে দাবি করছেন- সাপ্তাহিক ছুটির দিন শুক্রবারও যেন মেট্রোরেল চালু করা হয়।

দাঁড়িকমা প্রকাশনীর প্রকাশক আলমগীর রুমির বাসা ও কার্যালয় মিরপুরে। বইমেলায় স্টলের কাজে গত দুই সপ্তাহে প্রতিদিনই তাকে যেতে হয়েছে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের বইমেলা প্রাঙ্গণে। মেট্রোরেল থাকায় তিনি অনায়াসে যাতায়াত সুবিধা পেয়েছেন। আলমগীর রুমি বলেন, বছর ঘুরে আবারও আসা ফেব্রুয়ারি ভাষা ও লেখক-প্রকাশক-পাঠকের মাস। মেলা প্রাঙ্গণে বইয়ে ঠাসা শত শত প্যাভিলিয়ন, হাজারো নতুন বই ও লাখো পাঠকের উপস্থিতিতে রমরমা হবে বইমেলা। বাংলা সাহিত্য পাবে নতুন সম্পদ, সাহিত্যের ইতিহাস পাবে আগামীর লেখক।
তরুণ এ প্রকাশকের দাবি, মেট্রোরেলের কারণে এবার বইমেলায় আসা সবার জন্যই সহজ হবে। ছুটির দিনও যদি মেট্রোরেল চালু থাকে তাহলে স্বাচ্ছন্দ্যে বইমেলায় সবাই আসতে পারবেন। একই কথা বলেছেন টঙ্গী এলাকার বাসিন্দা ও বইপ্রেমী ফয়সাল মাহমুদ। ফেব্রুয়ারি এলেই তিনি নিয়মিত মেলায় আসেন ঘুরতে ও বই কিনতে। নিজের দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, মেট্রোরেল একটি গণপরিবহন। গণপরিবহনে শুক্রবার বন্ধ রাখা উচিত না। একইসাথে বইমেলার এ মাসে মেলায় প্রচুর মানুষ আসবেন। মেট্রোরেল কর্তৃপক্ষের উচিত শুক্রবারও মেট্রোরেল চালু রাখা।

এ বিষয়ে একুশে বইমেলা আয়োজক কমিটির সদস্য ও আগামী প্রকাশনীর প্রকাশক ওসমান গণি বলেন, আমরা দাবি করছিলাম মেট্রোরেলের সময় বৃদ্ধির। সেটা ইতিমধ্যেই বাস্তবায়িত হওয়ায় এবার বইমেলায় পাঠকের পরিমাণ বাড়বে। মিরপুর-উত্তরার মানুষ আগে বইমেলায় আসতে পারতেন না যানজটের কারণে। এবার আসতে পারবেন অনায়াসে। শুক্রবারে মেট্রোরেল চললে আরও বেশি সংখ্যক পাঠক বইমেলায় আসতে পারবেন। লেখক-প্রকাশক আর পাঠকদের দাবীর সাথে একমত পোষণ করেছেন বাংলা একাডেমির কর্মকর্তা ও বইমেলা পরিচালনা কমিটির সদস্য সচিব ডা. কে. এম. মুজাহিদুল ইসলাম। তিনি বলেন, শুক্রবারে মেট্রোরেল চালু হলে সুবিধা হবে।
শুধু বইমেলাকে কেন্দ্র করেই নয়, বছরের প্রতিদিনই মেট্রোরেল চালু রাখার দাবি করেছেন শিক্ষার্থী ও পরীক্ষার্থীরা। তাদের দাবি, শুক্রবারে সরকারি-বেসরকারি অনেক প্রতিষ্ঠানে চাকরির পরীক্ষা হয়। মেট্রোরেল চালু থাকলে সব পরীক্ষার্থীরই সুবিধা।

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

শুধু কাগজের নয়, ডিজিটাল প্রকাশক হতে হবে: প্রধানমন্ত্রী

আপডেট সময় : ০১:৪৭:৫৬ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১ ফেব্রুয়ারী ২০২৪

নিজস্ব প্রতিবেদক : প্রকাশকদের শুধু কাগজের নয়, ডিজিটাল প্রকাশক হওয়ার অনুরোধ জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে ডিজিটাল প্রকাশনার ওপর গুরুত্ব দেন তিনি। গতকাল বৃহস্পতিবার (১ ফেব্রুয়ারি) বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে অমর একুশে গ্রন্থমেলা-২০২৪ এর উদ্বোধনের আগে দেওয়া বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন। এরপর তিনি বইমেলার উদ্বোধন ঘোষণা করেন। শেখ হাসিনা বলেন, ‘মোদের গরব, মোদের আশা, আ মরি বাংলা ভাষা’। কী মধুর আমাদের ভাষা। আমি একটা কথা বলব যে, এখন আমাদের যুগটা হয়ে গেছে বিজ্ঞান প্রযুক্তির যুগ। বই প্রকাশ এটা অবশ্যই থাকবে, এটা যাবে না। কারণ, একটা বই হাতে নিয়ে পড়ার মধ্য দিয়ে আলাদা একটা আনন্দ আছে। আজকালকার ছেলের মেয়েরা আবার ট্যাবে করে বই পড়ে অথবা ল্যাপটপে পড়ে। যদিও আমরা ওইভাবে খুব একটা আনন্দ পাই না। ‘কিন্তু তারপরও আমাদের ভাষা, সাহিত্য, সংস্কৃতি সবকিছু নিয়ে এগিয়ে যেতে হলে আমাদের যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলা উচিত। আমি আমাদের প্রকাশকদের অনুরোধ করব, প্রকাশকরা শুধুমাত্র কাগজের প্রকাশক হলে হবে না, ডিজিটাল প্রকাশক হতে হবে। ডিজিটাল হলে শুধু আমাদের দেশে নয়, বিদেশেও সকলের কাছে এটা পৌঁছাতে পারব। অন্যান্য ভাষাভাষী লোকেরাও পড়বে। কাজেই সেদিকেও একটু নজর দিলে মানসিকতার পরিবর্তন হয়ে আধুনিক প্রযুক্তিটাও নিজেরা রপ্ত করতে পারব। ’ প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, লাইব্রেগুলিতেও সাথে সাথে অডিও ভার্সন থাকবে, অডিও ভার্সনের কিন্তু প্রয়োজন আছে। সেটাও থাকলে অনেকের সুবিধা, শুনবে জানতে পারবে, সে ব্যবস্থাটাও আমাদের নেওয়া উচিত। এটাই সব থেকে দরকার, যুগের সাথে তাল মিলিয়ে চলতে আমরা এগিয়ে যাব।
বাংলা একাডেমি পুরস্কার নিলেন ১৬ লেখক
এদিকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাত থেকে বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার নিয়েছেন ১৬ লেখক। বৃহস্পতিবার (১ ফেব্রুয়ারি) বিকেল ৩টার দিকে বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে তাদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন তিনি। বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার-২০২৩ পেয়েছেন ১৬ জন। তারা হলেন, কবিতায় শামীম আজাদ, কথাসাহিত্যে নূরুদ্দিন জাহাঙ্গীর ও সালমা বাণী, প্রবন্ধ-গবেষণায় জুলফিকার মতিন। অনুবাদে সালেহা চৌধুরী, নাটক ও নাট্যসাহিত্যে (যাত্রা, পালা নাটক, সাহিত্যনির্ভর আর্টফিল্ম বা নান্দনিক চলচ্চিত্র) মৃত্তিকা চাকমা ও মাসুদ পথিক, শিশুসাহিত্যে তপংকর চক্রবর্তী, মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক গবেষণায় আফরোজা পারভীন ও আসাদুজ্জামান আসাদ, বঙ্গবন্ধুবিষয়ক গবেষণায় সাইফুল্লাহ মাহমুদ দুলাল ও মো. মজিবুর রহমান, বিজ্ঞান-কল্পবিজ্ঞান-পরিবেশবিজ্ঞানে ইনাম আল হক, আত্মজীবনী-স্মৃতিকথা-ভ্রমণকাহিনী-মুক্তগদ্যে ইসহাক খান এবং ফোকলোরে তপন বাগচী ও সুমনকুমার দাশ পুরস্কার পেয়েছেন। এ ছাড়া অমর একুশে বইমেলা উদ্বোধনের পাশাপাশি বাংলা একাডেমি প্রকাশিত ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সংগৃহীত রচনা: দ্বিতীয় খ-’ সহ কয়েকটি বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করেন প্রধানমন্ত্রী। এবারের বইমেলার প্রতিপাদ্য হলো ‘পড়ো বই, গড়ো দেশ: বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশ। ’ এবার বইমেলায় ৬৩৫টি প্রতিষ্ঠানকে মোট ৯৩৭টি স্টল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে বাংলা একাডেমি মাঠে ১২০টি প্রতিষ্ঠানকে ১৭৩টি এবং সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ৫১৫টি প্রতিষ্ঠানকে ৭৬৪টি স্টল বরাদ্দ দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। এ ছাড়া এ বছর বইমেলায় মোট ৩৭টি প্যাভিলিয়নও বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।

মেলায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও মাসব্যাপী সেমিনারের পাশাপাশি শিশু-কিশোরদের জন্য ছবি আঁকা, সংগীত ও আবৃত্তি প্রতিযোগিতার ব্যবস্থা থাকবে। এবারের গ্রন্থমেলায় বাংলা একাডেমি প্রকাশ করছে নতুন ও পুনর্মুদ্রিত ১০০ বই। বইমেলায় অংশগ্রহণকারী সব প্রতিষ্ঠান ২৫ শতাংশ কমিশনে বই বিক্রি করবে। বাংলা একাডেমির তিনটি প্যাভিলিয়ন এবং শিশুকিশোর উপযোগী প্রকাশনার বিপণনের জন্য ১টি স্টল থাকবে। বইমেলার সার্বিক নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকছে বাংলাদেশ পুলিশ, র‌্যাব, আনসার ও বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা। নিরাপত্তার জন্য মেলায় তিন শতাধিক ক্লোজসার্কিট ক্যামেরার ব্যবস্থা রয়েছে।
বইমেলা উপলক্ষে শুক্রবারেও মেট্রোরেল চালু রাখার দাবি
বই মেলা উপলক্ষে শুক্রবারেও মেট্রোরেল চালু রাখার দাবি জানিয়েছেন প্রকাশক, লেখক-পাঠক সবাই। সাধারণত বইমেলা শুরু হলে উত্তরা-মিরপুর সংশ্লিষ্ট এলাকার লোকজন নিত্য-নৈমিত্তিক যানজট ঠেলে শাহবাগ আসতে পারতেন না বা চাইতেন না। তবে এবার কর্মজীবীসহ সব স্তরের বই পাগল মানুষের জন্য আশীর্বাদ হয়ে এসেছে মেট্রোরেল। যে কারণে প্রকাশক, লেখক-পাঠক সবাই মেট্রোরেলের সমসাময়িক সুবিধার কথা জানিয়ে দাবি করছেন- সাপ্তাহিক ছুটির দিন শুক্রবারও যেন মেট্রোরেল চালু করা হয়।

দাঁড়িকমা প্রকাশনীর প্রকাশক আলমগীর রুমির বাসা ও কার্যালয় মিরপুরে। বইমেলায় স্টলের কাজে গত দুই সপ্তাহে প্রতিদিনই তাকে যেতে হয়েছে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের বইমেলা প্রাঙ্গণে। মেট্রোরেল থাকায় তিনি অনায়াসে যাতায়াত সুবিধা পেয়েছেন। আলমগীর রুমি বলেন, বছর ঘুরে আবারও আসা ফেব্রুয়ারি ভাষা ও লেখক-প্রকাশক-পাঠকের মাস। মেলা প্রাঙ্গণে বইয়ে ঠাসা শত শত প্যাভিলিয়ন, হাজারো নতুন বই ও লাখো পাঠকের উপস্থিতিতে রমরমা হবে বইমেলা। বাংলা সাহিত্য পাবে নতুন সম্পদ, সাহিত্যের ইতিহাস পাবে আগামীর লেখক।
তরুণ এ প্রকাশকের দাবি, মেট্রোরেলের কারণে এবার বইমেলায় আসা সবার জন্যই সহজ হবে। ছুটির দিনও যদি মেট্রোরেল চালু থাকে তাহলে স্বাচ্ছন্দ্যে বইমেলায় সবাই আসতে পারবেন। একই কথা বলেছেন টঙ্গী এলাকার বাসিন্দা ও বইপ্রেমী ফয়সাল মাহমুদ। ফেব্রুয়ারি এলেই তিনি নিয়মিত মেলায় আসেন ঘুরতে ও বই কিনতে। নিজের দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, মেট্রোরেল একটি গণপরিবহন। গণপরিবহনে শুক্রবার বন্ধ রাখা উচিত না। একইসাথে বইমেলার এ মাসে মেলায় প্রচুর মানুষ আসবেন। মেট্রোরেল কর্তৃপক্ষের উচিত শুক্রবারও মেট্রোরেল চালু রাখা।

এ বিষয়ে একুশে বইমেলা আয়োজক কমিটির সদস্য ও আগামী প্রকাশনীর প্রকাশক ওসমান গণি বলেন, আমরা দাবি করছিলাম মেট্রোরেলের সময় বৃদ্ধির। সেটা ইতিমধ্যেই বাস্তবায়িত হওয়ায় এবার বইমেলায় পাঠকের পরিমাণ বাড়বে। মিরপুর-উত্তরার মানুষ আগে বইমেলায় আসতে পারতেন না যানজটের কারণে। এবার আসতে পারবেন অনায়াসে। শুক্রবারে মেট্রোরেল চললে আরও বেশি সংখ্যক পাঠক বইমেলায় আসতে পারবেন। লেখক-প্রকাশক আর পাঠকদের দাবীর সাথে একমত পোষণ করেছেন বাংলা একাডেমির কর্মকর্তা ও বইমেলা পরিচালনা কমিটির সদস্য সচিব ডা. কে. এম. মুজাহিদুল ইসলাম। তিনি বলেন, শুক্রবারে মেট্রোরেল চালু হলে সুবিধা হবে।
শুধু বইমেলাকে কেন্দ্র করেই নয়, বছরের প্রতিদিনই মেট্রোরেল চালু রাখার দাবি করেছেন শিক্ষার্থী ও পরীক্ষার্থীরা। তাদের দাবি, শুক্রবারে সরকারি-বেসরকারি অনেক প্রতিষ্ঠানে চাকরির পরীক্ষা হয়। মেট্রোরেল চালু থাকলে সব পরীক্ষার্থীরই সুবিধা।