পটুয়াখালী সংবাদদাতা : পর্যটকের সমাগমে মুখরিত হয়ে উঠেছে সাগরকন্যা খ্যাত কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকত। ফলে হাসি ফুটেছে পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীদের মুখে। গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে সৈকতের বিভিন্ন দর্শনীয় স্পটে পর্যটকের উপস্থিতি ছিল লক্ষণীয়। জানা যায়, আজ শুক্রবার কুয়াকাটার সকল হোটেল-মোটেল ও রিসোর্টগুলোতে প্রায় শতভাগ অগ্রিম বুকিং রয়েছে। ইতোমধ্যে পর্যটকদের বরণ করতে ব্যস্ত সময় পার করছেন পর্যটন সংশ্লিষ্টরা। এভাবে নিয়মিত পর্যটকের সমাগম হলে বিগত দিনের লোকসান কাটিয়ে উঠতে পারবেন বলে মনে করছেন স্থানীয় ব্যবসায়ীরা। এর আগে ভরা মৌসুমেও পর্যটকের সমাগম না থাকায় শতশত কোটি টাকার লোকসান গুণতে হয়েছে বলে জানিয়েছেন তারা। তাদের ভাষ্য অনুযায়ী, নির্বাচন পূর্ববর্তী দেশের অস্থিতিশীল পরিবেশের কারণে দেশের অন্যতম সমুদ্র সৈকত কুয়াকাটায় পর্যটকের উপস্থিতি ছিল প্রায় শূন্যের কোঠায়। দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন পরবর্তী দীর্ঘদিন কেটে গেলেও পরিস্থিতির উন্নতি না হওয়ায় হতাশ হয়ে পড়েছিলেন পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা। তবে ধীরে ধীরে পর্যটকদের উপস্থিতি বাড়তে থাকায় তাদের মাঝে কিছুটা স্বস্তি ফিরেছে। দেখছেন আশার আলো। সূর্যোদয় সূর্যাস্তের বেলাভূমি সাগরকন্যা কুয়াকাটা দেশের একমাত্র সৈকত যেখানে একইস্থানে দাঁড়িয়ে অবলোকন করা যায় সূর্যোদয় ও সূর্যাস্তের নান্দনিক দৃশ্য। সমুদ্র সৈকতের আলাদা এই বৈশিষ্ট্যের কারণে দেশি বিদেশি পর্যটকরা ছুটে আসেন এখানে। ইট পাথরের ব্যস্ত শহরের কোলাহল ছেড়ে একটু স্বস্তির নিঃশ্বাস নিতে ভ্রমণ প্রেমী মানুষরা ঘুরতে যান দেশের বিভিন্ন পর্যটন স্পটে। এসব স্পটের মধ্যে অন্যতম পটুয়াখালীর কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকত। এখানকার পরিবেশ, ও প্রাকৃতিক সৌন্দর্য সকলকে আকৃষ্ট করে নিমিষে। এছাড়াও পর্যটকদের কুয়াকাটা সৈকতসহ পার্শ্ববর্তী বিভিন্ন স্পটে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা ও স্থানীয় ব্যবসায়ী থেকে শুরু করে সকল শ্রেণির মানুষ পর্যটক বান্ধব হওয়ায় এখানে ঘুরতে আসা পর্যটকরা স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন বেশি। তবে অভিযোগও আছে পর্যটকদের। সরকারি ছুটিসহ বিশেষ দিনগুলোতে কুয়াকাটায় পর্যটক বৃদ্ধি পেলেই আবাসিক হোটেল ও খাবার হোটেল গুলোতে দ্বিগুণ দাম রাখা হয় বলে জানান তারা। খাবারের মান নিয়েও রয়েছে আপত্তি। তবে বিভিন্ন সময় পর্যটকদের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে প্রশাসন অভিযান পরিচালনা করছেন। পর্যটকদের দাবি প্রশাসনের তরফ থেকে কুয়াকাটায় আবাসিক হোটেল-রিসোর্ট এবং খাবার হোটেলগুলোতে অনিয়ম রোধে ভাড়ার নির্ধারিত তালিকা করে দিলে আর কেউ ভোগান্তির শিকার হবে না। পর্যটক সাদিয়া-আবির দম্পতি জানান, কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকতে আসার প্রধান কারণ সূর্যোদয় ও সূর্যাস্ত দেখা। মূলত এই সমুদ্র সৈকতে দাঁড়িয়ে এর নান্দনিক দৃশ্য দেখা যায়, যা দেশের মধ্যে বিরল। এদিকে ভাড়া বেশি নেওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করে কুয়াকাটা হোটেল-মোটেল এমপ্লয়িজের সভাপতি ইব্রাহিম ওয়াহিদ জানান, প্রথম সারি এবং দ্বিতীয় সারির হোটেলগুলোর নির্দিষ্ট ভাড়ার তালিকা রয়েছে। তবে কিছু ছোট হোটেলে এমন ঘটনা ঘটে বলে জানান তিনি। স্থানীয় প্রশাসন উদ্যোগী হলে কোনো সমস্যা থাকবে না বলে আশা করেন তিনি। ট্যুরিস্ট পুলিশ কুয়াকাটা রিজিওনের পরিদর্শক মো. হাচনাইন পারভেজ বলেন, ট্যুরিস্ট পুলিশ কুয়াকাটায় আগত পর্যটকদের নিরাপত্তা ও সেবা প্রদানে সতর্ক অবস্থানে রয়েছে। পর্যটকরা যাতে কোনো বিষয়ে সমস্যার সম্মুখীন না হয় সে লক্ষ্যে সর্বদা কাজ করে যাচ্ছে।
জনপ্রিয় সংবাদ