ঢাকা ০৫:২৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৬ জুন ২০২৫

মন্ত্রীরা যা বলছেন এবং যা করেন

  • আপডেট সময় : ০৯:৪০:০৭ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২০ জানুয়ারী ২০২৪
  • ৯০ বার পড়া হয়েছে

সৈয়দ ইশতিয়াক রেজা : নির্বাচন হলো, সংসদ সদস্যরা শপথ নিলেন, মন্ত্রিপরিষদ গঠিত হলো এবং সরকারের কাজও শুরু হলো। সরকার আসলে নতুন নয়, এটি শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগের সরকার, কেবল মন্ত্রিসভায় কিছু নতুন মুখ যুক্ত হয়েছে। এবং তাদের দেখে মানুষ আশাবাদীও হয়ে উঠেছে। বিশেষ করে পররাষ্ট্র, বাণিজ্য, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কৃষি ও অর্থ মন্ত্রণালয়ে নতুন মুখ একেবারেই জন-প্রত্যাশা ছিল।
মন্ত্রীরা যা বলেন তার প্রতি মানুষের আগ্রহ থাকে এবং সেগুলো মানুষ নানাভাবে বিশ্লেষণও করে। সাবেক পররাষ্ট্র মন্ত্রী ড. আবদুল মোমেনের অনেক কথা বিতর্কের জন্ম দিয়েছিল, সরকার ও শাসক দলের জন্য বিব্রতকর ছিল এবং জন পরিসরে তার কথা নিয়ে হাস্যরসও হয়েছে। তার কথা শোনে প্রমথ চৌধুরীর লেখা ঘোষালের ত্রিকথা গ্রন্থের কথা মনে পড়ত যেখানে লেখক উপদেশ দিয়েছিলেন – ঘোষাল তুমি কম কথা বলার আর্ট শেখো।
সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী দ্রব্যমূল্য কমাতে কোনো কার্যকর ব্যবস্থা নিতে পারেননি, সেটা দৃশ্যমানও ছিল। উল্টো সংসদে দাঁড়িয়ে সিন্ডিকেটের কারসাজি আছে স্বীকার করে ব্যবস্থা নিতে গেলে অস্থিরতা হবে এমন বক্তব্য দিয়ে সমালোচিত হয়েছেন তিনি। শিক্ষা কারিকুলাম বারবার বদল করা, পাঠ্যবইয়ে ভুলসহ নিজের সংসদীয় এলাকায় তার ভাইয়ের কর্মকা- নিয়ে সমালোচিত হয়েছেন দীপু মনি। আর সাবেক অর্থমন্ত্রী আ হ ম মোস্তফা কামাল তার পুরো মেয়াদেই অর্থনৈতিক নেতৃত্ব কোনো স্তরেই দেখাতে পারেননি।
এবার মানুষের প্রত্যাশা অনেক বেশি। মন্ত্রীরাও জানেন সেটা। স্মার্ট নাগরিক গড়ার জন্য আধুনিক শিক্ষা কারিকুলাম নিশ্চিত করা হবে বলে জানিয়েছেন নতুন শিক্ষামন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল। আর নতুন বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু বলেছেন দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে আনতে তার লক্ষ্য স্মার্ট বাজার ব্যবস্থাপনা। দেখা যাচ্ছে, দুজন মন্ত্রীই স্মার্ট ব্যবস্থাপনাকেই লক্ষ্য হিসেবে স্থির করেছেন।

বাণিজ্যমন্ত্রীর জন্য চ্যালেঞ্জটা বড় এবং তার সাথে পুরো অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনা জড়িত। নিত্যপণ্যের অতি উচ্চ দামের কারণে বড় কষ্টে আছে মানুষ। এর লাগাম টানতে হলে কমাতে হবে মূল্যস্ফীতি। তাই বাজারে টাকার সরবরাহ আরও কমানোর উদ্যোগ নিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এ জন্য বাড়ানো হয়েছে নীতি সুদহার। কিন্তু এতে করে মূল্যস্ফীতি কমানো যে খুব সফল হবে তেমন আশা করা যাচ্ছে না।
সিন্ডিকেটের দিকে নজর দিতে হবে, স্মার্ট বাজার নজরদারি লাগবে। তবে সরকার যদি জ্বালানি তেলের দাম না কমায় তাহলে পণ্য পরিবহনের খরচ কমবে না, দ্রব্যমূল্যও নিয়ন্ত্রণে আসবে না। আরেকটি পথ হলো পণ্যের ব্যাপক আমদানি। কিন্তু সেটাও করা সম্ভব না ডলার সংকট ও ডলারের দামের কারণে। অর্থমন্ত্রণালয়ের সাথে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের এই সমন্বয়টাই বেশি জরুরি।
নতুন সরকারের রেলমন্ত্রী মো. জিল্লুল হাকিম বলেছেন, রেলে কালো বিড়াল আছে কি না সেটা তিনি বলতে পারবেন না, তবে দুর্নীতি যে আছে সেটা মানেন। এখন দেখার পালা সেই দুর্নীতি দূর করতে কি করতে পারেন তিনি। তবে রেলের কাছে মানুষ চায় কাঙ্খিত সেবা। ব্যবস্থাপনার দুর্বলতায় রেলের শিডিউল বিপর্যয় একেবারে স্বাভাবিক বিষয়। সাথে আছে টিকিট কালোবাজারি ও দুর্ঘটনা। মন্ত্রী কী পারবেন এগুলোর উন্নয়ন ঘটাতে? পারবেন রেল স্টেশনগুলোর কদর্য পরিবেশ বদলাতে?
নতুন অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী বলেছেন সব সংকট রাতারাতি দূর হয়ে যাবে না। কিন্তু সমাধানে কাজ তো শুরু করতে হবে। তার প্রথম কাজ মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে আনা। তার জন্য একটি বড় কাজ দেশের ব্যাংকিং ও আর্থিক খাতকে শৃঙ্খলায় আনা। ব্যাংক ও আর্থিক খাতে বড় বড় দুর্নীতির ঘটনায়, অনিয়মের দৃষ্টান্তে পুরো ব্যবস্থার ভাবমূর্তিই সংকটে। কয়েকজন মালিকের হাতে পাবলিক মানি পরিচালিত করা প্রাইভেট ব্যাংকগুলো জিম্মি হয়ে পড়েছে।
নতুন অর্থমন্ত্রী কি পারবেন এদর হাত থেকে এই খাতকে বাঁচাতে? পারবেন অর্থমন্ত্রণালয়ের অধীনে থাকা বাংক ও আর্থিক বিভাগ বিলুপ্ত করে এই খাতের ওপর প্রশাসনিক ও রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ বন্ধ করতে? পারবেন ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর ওপর কেন্দ্রীয় ব্যাংকের অভিভাবকত্ব নিশ্চিত করতে? খেলাপি ও মুদ্রা পাচার রোধে ব্যবস্থা নিতে? শেয়ার বাজারে গতি আর সুস্থতা আনতে?
অর্থমন্ত্রীর আরেকটি বড় কাজ রাজস্ব ব্যবস্থাপনায় গতি আনা। সরকারের আয়ের চাইতে ব্যয় বেশি এবং কর-জিডিপি অনুপাতও দক্ষিণ এশিয়ায় সবচেয়ে নিচে। এর ফলে রাজস্ব আহরণ বেশি হচ্ছে পরোক্ষ কর থেকে, প্রত্যক্ষ কর বাড়াতে না পারলে এ অবস্থা বদলাবে না, সরকারের নগদ টাকার সংকটও কাটবে না। বাজেটকে ফুলিয়ে ফাঁপিয়ে বড় না করে সংকুচিত রাখাই এখন দরকার। নতুন করে বড় প্রকল্প হাতে নেওয়া থেকেও আপাতত বিরতি দেয়া প্রয়োজন বলে বলছেন অনেক অর্থনীতিবিদ।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেছেন, নতুন সরকারের অধীনে দেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করা হবো। পূর্ব-পশ্চিম সবার সঙ্গে সম্পর্কের আরও উন্নয়ন ঘটানো হবে। সরকারের জন্য যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশ সমূহের সাথে কূটনৈতিক বোঝাপড়াটা অনেক বেশি জরুরি যা দেশের রাজনৈতিক অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক কারণে অনেকখানি বৈরিতা সৃষ্টি করেছে।
২০২১ সালে র্যাব ও এর কয়েকজন কর্মকর্তার ওপর স্যাংশন দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র আর বাংলাদেশের রাজনৈতিক সংকট ও নির্বাচন ঘিরে গতবছর ভিসানীতি ঘোষণা করেছে, যা তাদের বৈরি মনোভাবেরই প্রকাশ। মনে রাখা দরকার যে, ইউরোপ-আমেরিকাই বাংলাদেশের রপ্তানির প্রধান বাজার এবং তারাই বড় উন্নয়ন সহায়ক। চীনের আধিপত্য নিয়ে আমেরিকা ও ভারত উভয়েরই পর্যবেক্ষণ আছে এবং বাংলাদেশের জন্য বিষয়টি বেশ স্পর্শকাতরও বটে।
সব ক্ষেত্রেই চ্যালেঞ্জ আছে। সরকার চায় সবগুলো সমস্যার অভ্যন্তরীণ সমাধান এবং বহির্বিশ্বের স্বীকৃতি ও তার সাথে সুসম্পর্ক। সরকারের এই প্রত্যাশিত অর্জন নির্ভর করছে নতুন মন্ত্রিসভার দক্ষতার ওপর।
লেখক: প্রধান সম্পাদক, গ্লোবাল টেলিভিশন।

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

সংবাদপত্রের স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে হবে: তারেক রহমান

মন্ত্রীরা যা বলছেন এবং যা করেন

আপডেট সময় : ০৯:৪০:০৭ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২০ জানুয়ারী ২০২৪

সৈয়দ ইশতিয়াক রেজা : নির্বাচন হলো, সংসদ সদস্যরা শপথ নিলেন, মন্ত্রিপরিষদ গঠিত হলো এবং সরকারের কাজও শুরু হলো। সরকার আসলে নতুন নয়, এটি শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগের সরকার, কেবল মন্ত্রিসভায় কিছু নতুন মুখ যুক্ত হয়েছে। এবং তাদের দেখে মানুষ আশাবাদীও হয়ে উঠেছে। বিশেষ করে পররাষ্ট্র, বাণিজ্য, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কৃষি ও অর্থ মন্ত্রণালয়ে নতুন মুখ একেবারেই জন-প্রত্যাশা ছিল।
মন্ত্রীরা যা বলেন তার প্রতি মানুষের আগ্রহ থাকে এবং সেগুলো মানুষ নানাভাবে বিশ্লেষণও করে। সাবেক পররাষ্ট্র মন্ত্রী ড. আবদুল মোমেনের অনেক কথা বিতর্কের জন্ম দিয়েছিল, সরকার ও শাসক দলের জন্য বিব্রতকর ছিল এবং জন পরিসরে তার কথা নিয়ে হাস্যরসও হয়েছে। তার কথা শোনে প্রমথ চৌধুরীর লেখা ঘোষালের ত্রিকথা গ্রন্থের কথা মনে পড়ত যেখানে লেখক উপদেশ দিয়েছিলেন – ঘোষাল তুমি কম কথা বলার আর্ট শেখো।
সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী দ্রব্যমূল্য কমাতে কোনো কার্যকর ব্যবস্থা নিতে পারেননি, সেটা দৃশ্যমানও ছিল। উল্টো সংসদে দাঁড়িয়ে সিন্ডিকেটের কারসাজি আছে স্বীকার করে ব্যবস্থা নিতে গেলে অস্থিরতা হবে এমন বক্তব্য দিয়ে সমালোচিত হয়েছেন তিনি। শিক্ষা কারিকুলাম বারবার বদল করা, পাঠ্যবইয়ে ভুলসহ নিজের সংসদীয় এলাকায় তার ভাইয়ের কর্মকা- নিয়ে সমালোচিত হয়েছেন দীপু মনি। আর সাবেক অর্থমন্ত্রী আ হ ম মোস্তফা কামাল তার পুরো মেয়াদেই অর্থনৈতিক নেতৃত্ব কোনো স্তরেই দেখাতে পারেননি।
এবার মানুষের প্রত্যাশা অনেক বেশি। মন্ত্রীরাও জানেন সেটা। স্মার্ট নাগরিক গড়ার জন্য আধুনিক শিক্ষা কারিকুলাম নিশ্চিত করা হবে বলে জানিয়েছেন নতুন শিক্ষামন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল। আর নতুন বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু বলেছেন দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে আনতে তার লক্ষ্য স্মার্ট বাজার ব্যবস্থাপনা। দেখা যাচ্ছে, দুজন মন্ত্রীই স্মার্ট ব্যবস্থাপনাকেই লক্ষ্য হিসেবে স্থির করেছেন।

বাণিজ্যমন্ত্রীর জন্য চ্যালেঞ্জটা বড় এবং তার সাথে পুরো অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনা জড়িত। নিত্যপণ্যের অতি উচ্চ দামের কারণে বড় কষ্টে আছে মানুষ। এর লাগাম টানতে হলে কমাতে হবে মূল্যস্ফীতি। তাই বাজারে টাকার সরবরাহ আরও কমানোর উদ্যোগ নিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এ জন্য বাড়ানো হয়েছে নীতি সুদহার। কিন্তু এতে করে মূল্যস্ফীতি কমানো যে খুব সফল হবে তেমন আশা করা যাচ্ছে না।
সিন্ডিকেটের দিকে নজর দিতে হবে, স্মার্ট বাজার নজরদারি লাগবে। তবে সরকার যদি জ্বালানি তেলের দাম না কমায় তাহলে পণ্য পরিবহনের খরচ কমবে না, দ্রব্যমূল্যও নিয়ন্ত্রণে আসবে না। আরেকটি পথ হলো পণ্যের ব্যাপক আমদানি। কিন্তু সেটাও করা সম্ভব না ডলার সংকট ও ডলারের দামের কারণে। অর্থমন্ত্রণালয়ের সাথে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের এই সমন্বয়টাই বেশি জরুরি।
নতুন সরকারের রেলমন্ত্রী মো. জিল্লুল হাকিম বলেছেন, রেলে কালো বিড়াল আছে কি না সেটা তিনি বলতে পারবেন না, তবে দুর্নীতি যে আছে সেটা মানেন। এখন দেখার পালা সেই দুর্নীতি দূর করতে কি করতে পারেন তিনি। তবে রেলের কাছে মানুষ চায় কাঙ্খিত সেবা। ব্যবস্থাপনার দুর্বলতায় রেলের শিডিউল বিপর্যয় একেবারে স্বাভাবিক বিষয়। সাথে আছে টিকিট কালোবাজারি ও দুর্ঘটনা। মন্ত্রী কী পারবেন এগুলোর উন্নয়ন ঘটাতে? পারবেন রেল স্টেশনগুলোর কদর্য পরিবেশ বদলাতে?
নতুন অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী বলেছেন সব সংকট রাতারাতি দূর হয়ে যাবে না। কিন্তু সমাধানে কাজ তো শুরু করতে হবে। তার প্রথম কাজ মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে আনা। তার জন্য একটি বড় কাজ দেশের ব্যাংকিং ও আর্থিক খাতকে শৃঙ্খলায় আনা। ব্যাংক ও আর্থিক খাতে বড় বড় দুর্নীতির ঘটনায়, অনিয়মের দৃষ্টান্তে পুরো ব্যবস্থার ভাবমূর্তিই সংকটে। কয়েকজন মালিকের হাতে পাবলিক মানি পরিচালিত করা প্রাইভেট ব্যাংকগুলো জিম্মি হয়ে পড়েছে।
নতুন অর্থমন্ত্রী কি পারবেন এদর হাত থেকে এই খাতকে বাঁচাতে? পারবেন অর্থমন্ত্রণালয়ের অধীনে থাকা বাংক ও আর্থিক বিভাগ বিলুপ্ত করে এই খাতের ওপর প্রশাসনিক ও রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ বন্ধ করতে? পারবেন ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর ওপর কেন্দ্রীয় ব্যাংকের অভিভাবকত্ব নিশ্চিত করতে? খেলাপি ও মুদ্রা পাচার রোধে ব্যবস্থা নিতে? শেয়ার বাজারে গতি আর সুস্থতা আনতে?
অর্থমন্ত্রীর আরেকটি বড় কাজ রাজস্ব ব্যবস্থাপনায় গতি আনা। সরকারের আয়ের চাইতে ব্যয় বেশি এবং কর-জিডিপি অনুপাতও দক্ষিণ এশিয়ায় সবচেয়ে নিচে। এর ফলে রাজস্ব আহরণ বেশি হচ্ছে পরোক্ষ কর থেকে, প্রত্যক্ষ কর বাড়াতে না পারলে এ অবস্থা বদলাবে না, সরকারের নগদ টাকার সংকটও কাটবে না। বাজেটকে ফুলিয়ে ফাঁপিয়ে বড় না করে সংকুচিত রাখাই এখন দরকার। নতুন করে বড় প্রকল্প হাতে নেওয়া থেকেও আপাতত বিরতি দেয়া প্রয়োজন বলে বলছেন অনেক অর্থনীতিবিদ।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেছেন, নতুন সরকারের অধীনে দেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করা হবো। পূর্ব-পশ্চিম সবার সঙ্গে সম্পর্কের আরও উন্নয়ন ঘটানো হবে। সরকারের জন্য যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশ সমূহের সাথে কূটনৈতিক বোঝাপড়াটা অনেক বেশি জরুরি যা দেশের রাজনৈতিক অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক কারণে অনেকখানি বৈরিতা সৃষ্টি করেছে।
২০২১ সালে র্যাব ও এর কয়েকজন কর্মকর্তার ওপর স্যাংশন দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র আর বাংলাদেশের রাজনৈতিক সংকট ও নির্বাচন ঘিরে গতবছর ভিসানীতি ঘোষণা করেছে, যা তাদের বৈরি মনোভাবেরই প্রকাশ। মনে রাখা দরকার যে, ইউরোপ-আমেরিকাই বাংলাদেশের রপ্তানির প্রধান বাজার এবং তারাই বড় উন্নয়ন সহায়ক। চীনের আধিপত্য নিয়ে আমেরিকা ও ভারত উভয়েরই পর্যবেক্ষণ আছে এবং বাংলাদেশের জন্য বিষয়টি বেশ স্পর্শকাতরও বটে।
সব ক্ষেত্রেই চ্যালেঞ্জ আছে। সরকার চায় সবগুলো সমস্যার অভ্যন্তরীণ সমাধান এবং বহির্বিশ্বের স্বীকৃতি ও তার সাথে সুসম্পর্ক। সরকারের এই প্রত্যাশিত অর্জন নির্ভর করছে নতুন মন্ত্রিসভার দক্ষতার ওপর।
লেখক: প্রধান সম্পাদক, গ্লোবাল টেলিভিশন।