চট্টগ্রাম প্রতিনিধি : চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে ভাঙ্গারি ব্যবসা জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। এ ব্যবসায় স্বাবলম্বী হয়েছে অনেক বেকার যুবক। উপজেলাজুড়ে প্রায় দুই শতাধিক যুবক এ ব্যবসায় জড়িত। জীবন-জীবিকার প্রয়োজনে অনেকে ভাঙ্গারি ব্যবসায় নিজেকে জড়িয়েছেন। তবে স্থানীয়দের সংখ্যায় কম হলেও বিভিন্ন জেলার মানুষ এখানে এসে ভাঙ্গারি ব্যবসা করছেন। উপজেলার বিভিন্ন ভাঙ্গারি দোকানে ঘুরে দেখা গেছে, নোয়াখালী, চাঁদপুর, কুমিল্লা লক্ষ্মীপুরসহ বিভিন্ন জেলা থেকে নি¤œবিত্ত বা দরিদ্র্য হকাররা এখানে এসে এ ব্যবসা শুরু করেন। এখন অনেকেই স্বাবলম্বী হয়েছেন। পলিথিনসহ নানা অপচনশীল জিনিস আমাদের চারপাশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে পরিবেশকে দূষিত করত। ভাঙ্গারি ব্যবসা সম্প্রসারণ হওয়ার ফলে, পুরনো প্লাস্টিক জাতীয় সামগ্রী প্রায় শতভাগই এখন পুনঃপ্রক্রিয়াজাতকরণ করা হচ্ছে। উপজেলার বিভিন্ন বাজারে গড়ে উঠেছে বেশ কিছু ভাঙ্গারি দোকান। প্লাস্টিক জাতীয় পণ্য আর পরিবেশকে দূষিত করতে পারছে না। উল্টো সেগুলো এখন অর্থনীতিকে আরও সমৃদ্ধ করছে। সেই সঙ্গে কর্মসংস্থান হচ্ছে অনেকের। গরিব ও অসহায় কিশোররা বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা এসব প্লাস্টিকদ্রব্য কুড়িয়ে বিক্রি করছে ভাঙ্গারি দোকানে। এসব ভাঙ্গারি পরে চলে যাচ্ছে প্রক্রিয়াজাতকরণ কারখানাগুলোতে। গরিব, বেকার ও পথ শিশুরা প্রতিদিন সকাল-সন্ধ্যা পুরনো প্লাস্টিকের বোতল, টিন, ফেলে দেওয়া কাগজের টুকরো, ওষুধের কার্টন, পুরনো বাতিল, লোহা, পুরাতন জুতা ও লোহার যন্ত্রাংশ, নষ্ট ও পুরনো ইঞ্জিনের যন্ত্রাংশ ইত্যাদি কুড়িয়ে এনে ভাঙ্গারি দোকানে বিক্রি করছে। বিনিময়ে কিছুটা আর্থিক সচ্ছলতা পাচ্ছে, ধীরে ধীরে স্বাবলম্বী হয়ে উঠছে। ভাঙ্গারি দোকানে কাজ করা মো. ফিরোজ বলেন, প্রতিদিন চার-পাঁচশত টাকা বেতন পাই। এটি দিয়ে আমার পরিবার চলে। তবে বর্ষাকালে আমাদের কষ্ট হয়ে যায়। কারণ তখন ভাঙ্গারি জিনিস পাওয়া যায় না। মিরসরাই উপজেলার বিভিন্ন হাটবাজার সড়ক-মহাসড়কের পাশে গড়ে উঠেছে শতাধিক ভাঙ্গারি দোকান। অনেক সময় এসব দোকানের হকার গ্রামগঞ্জের বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে বিভিন্ন ধরনের ভাঙ্গারি কিনে নিয়ে আসেন। উপজেলার বড়তাকিয়া বাজারের ভাঙ্গারি ব্যবসায়ী মোহাম্মদ সুমন বলেন, প্রতিদিন সকালে গ্রামে, ফেরি করতে যাওয়া হকারদের আমরা অগ্রিম টাকা দিই। আমার দোকানে প্রায় ৮-১০ জন কাজ করে। তারা প্রতিদিন গ্রামে গিয়ে ভাঙ্গারি মালামাল কিনে বা কুড়িয়ে এনে আমাদের দেয়। আমরা প্রতি কেজি পুরনো টিন ৩৮-৪০ টাকা, পুরনো প্লাস্টিক বোতল প্রতি কেজি ২০-২৫ টাকা, পুরনো কার্টুন প্রতি কেজি ১৫-২০ টাকা, পুরনো বইপত্র ২৮-৩০ টাকায় তাদের কাছ থেকে কিনে নেই। মেসার্স বারইয়ারহাট আয়রন মার্ট অ্যান্ড ডিজিটাল এস্কেলের সত্ত্বাধিকারী জাহেদুল আলম বলেন, উপজেলার বিভিন্ন স্থান থেকে জিনিসপত্র এনে আমাদের দোকানে বিক্রি করে। কয়েকটি ট্রাকের উপয়োগী মালামাল জমা হলে সেগুলো বিভিন্ন কোম্পানির কারখানায় সরবরাহ করে থাকি। আমার প্রতিষ্ঠানে ১০জন শ্রমিক রয়েছে। যারা বিভিন্ন জায়গা থেকে আসা ভাঙ্গারি জিনিসগুলো আলাদা করে। এ ব্যবসা থেকে মাসে আমার ভালো আয় হয়। বারইয়ারহাট পৌর বাজার পরিচালনা কমিটির সাধারণ সম্পাদক হেদায়েত উল্লাহ বলেন, বাজারে অনেকগুলো ভাঙ্গারি দোকান গড়ে উঠেছে। বিভিন্ন জায়গা থেকে ভাঙ্গারি আইটেম এনে এখানে বিক্রি করে থাকেন। অনেকে এখন এ কাজ করে স্বাবলম্বী হয়েছেন।