নিজস্ব প্রতিবেদক : ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ কামরুন্নাহার মুকুলের ফাঁস হওয়া ফোনালাপের বিষয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের তদন্তে এখনও কোনো অগ্রগতি হয়নি বলে হাই কোর্টকে জানিয়েছে রাষ্ট্রপক্ষ। বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের ভার্চুয়াল বেঞ্চে গতকাল মঙ্গলবার ফোনালাপের বিষয়ে বিভাগীয় তদন্ত চেয়ে করা রিট আবেদনে প্রাথমিক শুনানি শেষে ৩০ অগাস্টের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছে। আদালতে রিটের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন, আইনজীবী মো. আব্দুল্লাহ আল হারুন ভূঁইয়া। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিপুল বাগমার। অধ্যক্ষের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মুশফিক উদ্দিন বখতিয়ার। শিক্ষা মন্ত্রণালয় এ বিষয়ে কী পদক্ষেপ নিয়েছে, তা জানাতে সোমবার রাষ্ট্রপক্ষে নির্দেশ দিয়েছিল আদালত।
নির্দেশ অনুযায়ী ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিপুল বাগমার জানান, পত্রিকায় খবর বের হওয়ার পরে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কিন্তু লকডাউনের মধ্যে কাজ শেষ করতে পারেনি।
তখন বেঞ্চের জ্যেষ্ঠ বিচারক এম. ইনায়েতুর রহিম বলেন, “এখন তো লকডাউন শেষ। আমরা ১ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত মুলতবি করলাম। ৩০ আগস্টের মধ্যে আমরা যেন একটা রিপোর্ট পাই। বিষয়টি আপনি মন্ত্রণালয়কে জানাবেন।”
এর মধ্যে অধ্যক্ষের আইনজীবী মুশফিক উদ্দিন বখতিয়ার ও ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ফাঁস হওয়া ফোনালাপ নিয়ে বলতে চাইলে জ্যেষ্ঠ বিচারক বলেন, “যদি ফোনালাপটি সত্যি হয়ে হয়ে থাকে তাহলে সেটা ‘অপ্রত্যাশিত’ এবং ‘খুবই নিন্দনীয়। একজন অধ্যক্ষের কাছ থেকে এ ধরণের কথা আশা করা যায় না।”
ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের দুই শিক্ষার্থীর অভিভাবক মোহাম্মদ মোর্শেদ আলম এ রিট আবেদনটি করেছিলেন। এরপর গত সোমবার হাই কোর্ট মন্ত্রণালয় কী পদক্ষেপ নিয়েছে সে বিষয়ে জানতে চেয়েছিলেন। অধ্যক্ষ কামরুন নাহার মুকুল।অধ্যক্ষ কামরুন নাহার মুকুল।রিট আবেদনে ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষের ‘অসাদাচরণ ও দুর্নীতির’বিষয়ে বিভাগীয় ব্যবস্থা না নেওয়ায় বিবাদীদের ব্যর্থতা এবং নিষ্ক্রিয়তা কেন অবৈধ হবে না এবং বিভাগীয় ব্যবস্থা নিতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, প্রশ্নে রুল চাওয়া হয়।
এছাড়া প্রতিষ্ঠানটির একজন জ্যেষ্ঠ শিক্ষককে দায়িত্ব দিয়ে অধ্যক্ষ হিসেবে কামরুন্নাহার মুকুলের দায়িত্ব পালনের ক্ক্ষেত্রে নিষধাজ্ঞা চাওয়া হয় রিটে। কামরুন্নাহার মুকুলের ফোনালাপ, অনিয়ম দুর্নীতি নিয়ে বেশ কয়েকটি গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদ, প্রতিবেদন যুক্ত করে রিট আবেদনটি করা হয়। এর আগে রিটকারী মোহাম্মদ মোর্শেদ আলম গত ২৭ জুলাই মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ও শিক্ষা সচিব বরাবরে চিঠি দেন। সে চিঠিতে তিনি তদন্তের মাধ্যমে কামরুন্নাহার মুকুলের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নিতে এবং তদন্তের স্বার্থে অধ্যক্ষকে সাময়িক বরখাস্তের দাবি জানান। কিন্তু এ বিষয়ে কোনো ব্যবস্থা না নেওয়ায় তিনি উচ্চ আদালতে ররিট আবেদন করেছেন বলে জানান তার আইনজীবী মো.আব্দুল্লাহ আল হারুন ভূঁইয়া। সাংবাদিকদের তিনি বলেন, অধ্যক্ষ অডিওতে যেসব কথা বলেছেন, তাতে তিনি ওই কলেজের অধ্যক্ষ পদে থাকার নৈতিক অবস্থান হারিয়েছেন। শিক্ষা সচিব, শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচলক, অধ্যক্ষ কামরুন্নাহার মুকুল এবং গভর্নিং বডির সভাপতিকে।