ঢাকা ১১:২৩ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৯ মে ২০২৫

বন্ধুর পৈশাচিক নির্যাতনে মৃত্যু, বাবা ডেকেও রক্ষা পায়নি রাসেল

  • আপডেট সময় : ০১:২৫:২৮ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১১ জানুয়ারী ২০২৪
  • ১২৪ বার পড়া হয়েছে

কেরানীগঞ্জ (ঢাকা) সংবাদদাতা : ঢাকার কেরানীগঞ্জে থানা স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা আফতাব হোসেন রাব্বির পৈশাচিক নির্যাতনের শিকার হয়ে রাসেল (৩২) নামে এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে। আব্বা ডেকেও বন্ধুর হাত থেকে রক্ষা পাননি তিনি। মঙ্গলবার রাতভর রাসেলের উপর এ নির্যাতন করা হয়। বুধবার ভোরে রাসেলের স্বজনরা তাকে উদ্ধার করে মিটফোর্ড হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। নিহত রাসেল স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা রাব্বির পক্ষে চাঁদা আদায়ের কাজ করতো। তিনি বরিশাল জেলার মেহেন্দীগঞ্জ উপজেলার ভাষানচর গ্রামের তোফাজ্জল হাওলাদারের ছেলে। দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের খেজুরবাগ এলাকায় মোজাম্মেল মাস্টারের বাড়িতে সপরিবারে ভাড়া বাসায় থাকতেন। অপরদিকে আফতাব হোসেন রাব্বি দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও শুভাঢ্যা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি হাজী বাসের উদ্দিনের ছেলে। তার চাচা ইকবাল হোসেন শুভাঢ্যা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান। স্থানীয়দের কাছ থেকে জানা যায়, রাব্বির পক্ষে বিভিন্ন জায়গা থেকে চাঁদা আদায় করতো রাসেল। চাঁদার টাকার ভাগবাটোয়ারা নিয়ে মঙ্গলবার রাতে তেলঘাট এলাকার পারভীন টাওয়ারের নিচতলায় রাব্বির অফিসে ডেকে আনা হয় রাসেলকে। সেখানে সবাই মিলে মদ্যপান করে। এরপর রাব্বির নেতৃত্বে রাসেলের উপর শুরু হয় অমানুষিক নির্যাতন।
নির্যাতনের বেশ কিছু ভিডিও ফুটেজ ইতোমধ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। একটি ভিডিওতে দেখা যায়, রাসেলের পরনে কোনো জামা নেই। খালি গায়ে থাকা রাসেলকে কয়েকজন টানা হেঁচড়া করছে। আধমরা অবস্থায় রাসেল তার বন্ধু রাব্বিকে বলছে, ‘আব্বা আব্বা, রাব্বি আব্বা আমাকে বাঁচান।’ অপর একটি ভিডিওতে দেখা যায়, অচেতন অবস্থায় বসিয়ে রাখা হয়েছে রাসেলকে। একজন তাকে গালিগালাজ করছে। আরেকটি ভিডিওতে দেখা যায়, মেঝেতে রাসেলর নিথর দেহ। নাক দিয়ে রক্ত ঝড়ছে। কেউ একজন সেটা মুছে দিচ্ছেন। খবর পেয়ে বুধবার ভোরে রাসেলের স্বজনরা তাকে উদ্ধার করে স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের (মিটফোর্ড) জরুরি বিভাগে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
জানা যায়, বছরখানেক আগে বাবা ও চাচার প্রভাব খাটিয়ে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক পদ ভাগিয়ে নেন রাব্বি। এরপর থেকে বিশাল বাহিনী নিয়ে চলাফেরা শুরু করে সে। তার বাহিনীর লোকজন স্থানীয় বিচার সালিশ থেকে শুরু করে বিভিন্ন দোকান ও রাস্তাঘাট থেকে চাঁদা আদায় করতো।

এদিকে রাসেলকে হত্যার ঘটনায় তার বাবা তোফাজ্জল হাওলাদার বুধবার রাতে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন। মামলায় রাব্বিসহ ১৩ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা ১০/১২ জনকে আসামি করা হয়েছে।
দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মাহবুব আলম জানান, মামলা হয়েছে। আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

বন্ধুর পৈশাচিক নির্যাতনে মৃত্যু, বাবা ডেকেও রক্ষা পায়নি রাসেল

আপডেট সময় : ০১:২৫:২৮ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১১ জানুয়ারী ২০২৪

কেরানীগঞ্জ (ঢাকা) সংবাদদাতা : ঢাকার কেরানীগঞ্জে থানা স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা আফতাব হোসেন রাব্বির পৈশাচিক নির্যাতনের শিকার হয়ে রাসেল (৩২) নামে এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে। আব্বা ডেকেও বন্ধুর হাত থেকে রক্ষা পাননি তিনি। মঙ্গলবার রাতভর রাসেলের উপর এ নির্যাতন করা হয়। বুধবার ভোরে রাসেলের স্বজনরা তাকে উদ্ধার করে মিটফোর্ড হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। নিহত রাসেল স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা রাব্বির পক্ষে চাঁদা আদায়ের কাজ করতো। তিনি বরিশাল জেলার মেহেন্দীগঞ্জ উপজেলার ভাষানচর গ্রামের তোফাজ্জল হাওলাদারের ছেলে। দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের খেজুরবাগ এলাকায় মোজাম্মেল মাস্টারের বাড়িতে সপরিবারে ভাড়া বাসায় থাকতেন। অপরদিকে আফতাব হোসেন রাব্বি দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও শুভাঢ্যা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি হাজী বাসের উদ্দিনের ছেলে। তার চাচা ইকবাল হোসেন শুভাঢ্যা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান। স্থানীয়দের কাছ থেকে জানা যায়, রাব্বির পক্ষে বিভিন্ন জায়গা থেকে চাঁদা আদায় করতো রাসেল। চাঁদার টাকার ভাগবাটোয়ারা নিয়ে মঙ্গলবার রাতে তেলঘাট এলাকার পারভীন টাওয়ারের নিচতলায় রাব্বির অফিসে ডেকে আনা হয় রাসেলকে। সেখানে সবাই মিলে মদ্যপান করে। এরপর রাব্বির নেতৃত্বে রাসেলের উপর শুরু হয় অমানুষিক নির্যাতন।
নির্যাতনের বেশ কিছু ভিডিও ফুটেজ ইতোমধ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। একটি ভিডিওতে দেখা যায়, রাসেলের পরনে কোনো জামা নেই। খালি গায়ে থাকা রাসেলকে কয়েকজন টানা হেঁচড়া করছে। আধমরা অবস্থায় রাসেল তার বন্ধু রাব্বিকে বলছে, ‘আব্বা আব্বা, রাব্বি আব্বা আমাকে বাঁচান।’ অপর একটি ভিডিওতে দেখা যায়, অচেতন অবস্থায় বসিয়ে রাখা হয়েছে রাসেলকে। একজন তাকে গালিগালাজ করছে। আরেকটি ভিডিওতে দেখা যায়, মেঝেতে রাসেলর নিথর দেহ। নাক দিয়ে রক্ত ঝড়ছে। কেউ একজন সেটা মুছে দিচ্ছেন। খবর পেয়ে বুধবার ভোরে রাসেলের স্বজনরা তাকে উদ্ধার করে স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের (মিটফোর্ড) জরুরি বিভাগে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
জানা যায়, বছরখানেক আগে বাবা ও চাচার প্রভাব খাটিয়ে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক পদ ভাগিয়ে নেন রাব্বি। এরপর থেকে বিশাল বাহিনী নিয়ে চলাফেরা শুরু করে সে। তার বাহিনীর লোকজন স্থানীয় বিচার সালিশ থেকে শুরু করে বিভিন্ন দোকান ও রাস্তাঘাট থেকে চাঁদা আদায় করতো।

এদিকে রাসেলকে হত্যার ঘটনায় তার বাবা তোফাজ্জল হাওলাদার বুধবার রাতে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন। মামলায় রাব্বিসহ ১৩ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা ১০/১২ জনকে আসামি করা হয়েছে।
দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মাহবুব আলম জানান, মামলা হয়েছে। আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।