ঢাকা ১০:১৫ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ০৮ জুন ২০২৫

নতুন মন্ত্রিসভার শপথ কাল, এমপিদের আজ

  • আপডেট সময় : ০২:৪০:১৭ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৯ জানুয়ারী ২০২৪
  • ৯৫ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক : দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তিন দিনের মাথায় টানা চতুর্থবারের মত সরকার গঠন করতে যাচ্ছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। আর সংসদে সংখ্যাগরিষ্ঠ এই দলের প্রধান হিসেবে পঞ্চমবার প্রধানমন্ত্রী হচ্ছেন শেখ হসিনা। সংসদের নবনির্বাচিত সদস্যরা বুধবার সকালে জাতীয় সংসদভবনে শপথ নেবেন। তারপর বৃহস্পতিবার বঙ্গভবনে হবে নতুন মন্ত্রিসভার শপথ। রাষ্ট্রপতির প্রেস সচিব জয়নাল আবেদীন গতকাল মঙ্গলবার সংবাদমাধ্যমকে বলেন, “বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৭টায় নতুন মন্ত্রিসভার শপথ হবে।”
বঙ্গভবনে মন্ত্রিসভার শপথ আয়োজন করে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। এ বিষয়ে জানতে চাইলে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের (সমন্বয় ও সংস্কার) সচিব মো. মাহমুদুল হোসাইন খান বলেন, “আমাদের তো প্রস্তুতি আছেই। তালিকা পেলেই আমরা কার্যক্রম নেব। যারা মন্ত্রী হবেন, তাদের সঙ্গে সরাসরি মন্ত্রিপরিষদ সচিব মহোদয় কথা বলবেন। দাওয়াত দেবেন, তারপর যেতে হবে বঙ্গভবনে।”
এ বিষয়ে প্রশ্ন করলে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. মাহবুব হোসেন মঙ্গলবার বিকালে নিজের কার্যালয়ের সামনে সাংবাদিকদের বলেন, শপথ অনুষ্ঠান আয়োজনের নির্দেশনা পেলেও কারা শপথ নেবেন, সেই তালিকা তিনি পাননি। “আপনারা জানেন, ৭ জানুয়ারি নির্বাচন হয়েছে। নির্বাচন হওয়ার পরে নির্বাচিত মাননীয় সংসদ সদস্যগণ শপথ নেবেন। সেই প্রেক্ষিতে আমরা প্রস্তুতি নিচ্ছি। আগামী ১১ জানুয়ারি বৃহস্পতিবার বিকালে শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানের প্রস্তুতি আমরা নিচ্ছি। ঐতিহ্যগতভাবেই শপথ অনুষ্ঠান বঙ্গভবনে হয়ে থাকে। আমরা সন্ধ্যা ৭টায় শপথ অনুষ্ঠানের প্রস্তুতি নিচ্ছি।” এবার কারা মন্ত্রী হচ্ছেন এবং কত সদস্যের মন্ত্রিসভা হচ্ছে জানতে চাইলে মাহবুব হোসেন বলেন, “এই কাজটা আমরা এখনও শুরু করিনি। শপথ অনুষ্ঠানের জন্য গাড়ি রেডি আছে, আমরা তেরো, চৌদ্দশর মত (অতিথিকে) দাওয়াত দেব।”
সংসদের ৩০০ আসনের মধ্যে রোববার ভোট হয়েছে ২৯৯ আসনে। এরমধ্যে একটি কেন্দ্রে ফল স্থগিত থাকায় ময়মনসিংহের একটি আসনের ফলাফল আটকে আছে। ২৯৮টি আসনের মধ্যে আওয়ামী লীগ ২২২, জাতীয় পার্টি ১১, ওয়ার্কার্স পার্টি ১, জাসদ ১, কল্যাণ পার্টি ১ এবং ৬২ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থীরা বিজয়ী হয়েছেন। তাদের তালিকা গেজেট আকারে প্রকাশের জন্য ইতোমধ্যে অনুমোদন দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। গেজেট প্রকাশের পর তা সংসদ সচিবালয়ে পাঠাবে ইসি সচিবালয়। বুধবার সকাল ১০টায় জাতীয় সংসদ ভবনের শপথ কক্ষে নতুন সংসদের এমপিদের শপথ অনুষ্ঠান হবে। স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী প্রথমে নিজে দ্বাদশ সংসদের এমপি হিসেবে শপথ নেবেন। পরে তিনি অন্যদের শপথ বাক্য পাঠ করাবেন। একাদশ সংসদের প্রধান হুইপ ও আওয়ামী লীগের সংসদীয় দলের সেক্রেটারি নূর ই আলম চৌধুরী জানিয়েছেন, বুধবার সকাল ১০টায় শপথ অনুষ্ঠানের পর বেলা ১২টায় প্রথম বৈঠকে বসবে আওয়ামী লীগের সংসদীয় দল। এর মধ্যে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন সংখ্যাগরিষ্ঠ দলের নেতাকে সরকার গঠনের আমন্ত্রণ জানাবেন। এরপর বঙ্গভবনে হবে নতুন মন্ত্রিসভার শপথ। একাদশ সংসদ নির্বাচন হয়েছিল ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর, এরপর ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে গেজেট প্রকাশ করা হয়। ২০১৯ সালের ৩ জানুয়ারি শপথ নেন নবনির্বাচিত সংসদ সদস্যরা। সেদিনই রাষ্ট্রপতির সরকার গঠনের আমন্ত্রণ জানান। ৭ জানুয়ারি বঙ্গভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং তার সরকারের ২৪ জন মন্ত্রী, ১৯ জন প্রতিমন্ত্রী এবং তিনজন উপমন্ত্রীকে শপথ পড়ান তখনকার রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। তার আগের দিনই সংবাদ সম্মেলন করে জানিয়ে দেওয়া হয় মন্ত্রিসভায় কারা স্থান পাচ্ছেন, কাকে কোন দপ্তরের দায়িত্ব দেওয়া হচ্ছে। শপথের আগে সংবাদ সম্মেলন করে নতুন মন্ত্রিসভার সদস্যদের নাম ঘোষণা সেবারই প্রথম।
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের একজন কর্মকর্তা জানান, প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে নতুন মন্ত্রিসভার সদস্যদের তালিকা পাবেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব। সে অনুযায়ী নতুন মন্ত্রীদের শপথের জন্য আলাদা আলাদা ফোল্ডার প্রস্তুত করতে হবে। মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী এবং উপমন্ত্রীদের চালকসহ সার্বক্ষণিক গাড়ির সুবিধা দেওয়ার দায়িত্ব সরকারি যানবাহন অধিদপ্তরের। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ২৫ জন মন্ত্রী, ১৯ জন প্রতিমন্ত্রী এবং তিনজন উপ-মন্ত্রী গত পাঁচ বছর সরকার পরিচালনার দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন। তাদের মধ্যে টেকনোক্র্যাট দুই মন্ত্রী এবং একজন প্রতিমন্ত্রী নির্বাচনের আগে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে পদত্যাগ করেন।
দ্বাদশ সংসদের এমপিরা শপথ নেবেন আজ: দ্বাদশ জাতীয় সংসদের সদস্যদের বরণ করে নিতে প্রস্তুত হচ্ছে বাংলাদেশের সংসদ ভবন। আজ বুধবার সকাল ১০টায় হবে তাদের শপথ অনুষ্ঠান। এই শপথ অনুষ্ঠান হবে জাতীয় সংসদ ভবনের শপথ কক্ষে। স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী প্রথমে নিজে দ্বাদশ সংসদের এমপি হিসেবে শপথ নেবেন। এবারও তিনি রংপুর-৬ আসন থেকে নির্বাচিত হয়েছেন। পরে তিনি অন্যদের শপথ বাক্য পাঠ করাবেন। ইতিমধ্যে ২৯৮ আসনে বিজয়ীদের নামের গেজেট প্রকাশের অনুমোদন দেওয়ার কথা জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশনার মো. আলমগীর। একাদশ সংসদের প্রধান হুইপ ও আওয়ামী লীগের সংসদীয় দলের সেক্রেটারি নূর ই আলম চৌধুরী মঙ্গলবার বলেন, “নির্ধারিত সময়ে গেজেট হয়ে যাবে। কাল সকাল ১০টায় শপথ হবে। আর বেলা ১২টায় আমাদের সংসদীয় দলের সভাও রয়েছে।”
সংসদের ৩০০ আসনের মধ্যে রোববার ভোট হয়েছে ২৯৯ আসনে। এরমধ্যে একটি কেন্দ্রে ফল স্থগিত থাকায় ময়মনসিংহের একটি আসনের ফলাফল আটকে আছে। ফলে বুধবার ২৯৮ আসনের নবনির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের শপথের আয়োজন হচ্ছে। নির্বাচন কমিশন ইতোমধ্যে ২৯৮ আসনে নবনির্বাচিতদের নামে গেজেট প্রকাশের অনুমোদন দিয়েছে জানিয়ে নির্বাচন কমিশনার মো. আলমগীর নিজের কার্যালয়ে সাংবাদিকদের বলেন, “২৯৮ আসনের নির্বাচনের ফলাফল মিলিয়ে দেখা হয়েছে, যাচাই করা হয়েছে। সব ঠিক আছে। এখন গেজেট করার জন্যে বিজি প্রেসে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে।” “নির্বাচন কমিশনের অনুমোদন পেলে গেজেট প্রকাশের জন্য প্রেসে পাঠিয়ে দেওয়া হবে। দুপুরের দিকে সিইসির নেতৃত্বে কমিশন বসার কথা রয়েছে।” সংসদ নির্বাচনের ফল গেজেট আকারে প্রকাশের তিন দিনের মধ্যে শপথ অনুষ্ঠানের সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা রয়েছে। এরপর ৩০ দিনের মধ্যে অধিবেশন ডাকতে হবে। প্রথম অধিবেশন শুরুর ৯০ দিনের মধ্যে শপথ না নিলে বা স্পিকারকে অবহিত না করলে সদস্য পদ খারিজ হবে। নির্বাচন কমিশনের অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার বেদনাথ জানান, গেজেট প্রকাশের পরেই পরবর্তী ব্যবস্থা নিতে সংসদ সচিবালয়ে গেজেটের কপি পাঠানো হবে। গেজেট পেলে স্পিকারের নির্দেশনা অনুযায়ী শপথ আয়োজনের প্রস্তুতি চূড়ান্ত করবে সংসদ সচিবালয়। সংসদ ভবনের নিচতলায় ‘শপথ কক্ষে’ নবনির্বাচিতদের শপথ পড়াবেন স্পিকার। ইতোমধ্যে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে নবনির্বাচিতদের শপথ-এর বিষয়ে জানানো হয়েছে। আওয়ামী লীগের নব নির্বাচিত সংসদ সদস্য ঢাকা দক্ষিণের সাবেক মেয়র সাঈদ খোকন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “দলীয়ভাবে আমাকে বলা হয়েছে, বুধবার সকাল ১০টায় নব নির্বাচিত সংসদ সদসস্যদের শপথ হবে।”
গেজেট অনুমোদন: এর কয়েকঘণ্টা পরই ২৯৮ আসনে নবনির্বাচিত সংসদ সদস্যদের নাম গেজেট আকারে প্রকাশের অনুমোদন দেয় নির্বাচন কমিশন। গতকাল মঙ্গলবার বিকালে নিজ কার্যালয়ে নির্বাচন কমিশনার মো. আলমগীর বলেন, “৩০০ আসনের মধ্যে ২৯৮ আসনের নির্বাচনের ফলাফল মিলিয়ে দেখা হয়েছে, যাচাই করা হয়েছে। সব ঠিক আছে। নির্বাচন কমিশন যখন দেখেছে সব সঠিক রয়েছে, এখন (নির্বাচিতদের নাম ঠিকানাসহ) গেজেট করার জন্যে বিজি প্রেসে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে।” গেজেট প্রকাশের পরই তা সংসদ সচিবালয়ে পাঠাবে ইসি সচিবালয়।
দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ২২২, জাতীয় পার্টি ১১, ওয়ার্কার্স পার্টি ১, জাসদ ১, কল্যাণ পার্টি ১ এবং স্বতন্ত্র প্রার্থীরা ৬২ আসনে বিজয়ী হয়েছেন। রেওয়াজ অনুযায়ী সংখ্যাগরিষ্ঠ দল আওয়ামী লীগের সদস্যরাই প্রথমে শপথ নেবেন। এরপর ক্রমানুসারে শপথ নেবেন অন্যরা। শপথ শেষে নতুন সংসদ সদস্যরা সংসদ সচিবের কার্যালয়ের স্বাক্ষর খাতায় সই করবেন এবং একসঙ্গে তাদের ছবি তোলা হবে। এমপিদের শপথের আনুষ্ঠানিকতা শেষে শুরু হবে নতুন সরকার গঠনের পর্ব। রাষ্ট্রপতি সংখ্যাগরিষ্ঠ দলের নেতাকে সরকার গঠনের আমন্ত্রণ জানাবেন। এরপর বঙ্গভবনে হবে নতুন মন্ত্রিসভার শপথ। নিরঙ্কুশ জয়ে টানা চতুর্থবারের মত সরকার গঠন করতে যাচ্ছে আওয়ামী লীগ। একাদশ সংসদ নির্বাচন হয়েছিল ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর, এরপর ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে গেজেট প্রকাশ করা হয়। ২০১৯ সালের ৩ জানুয়ারি শপথ নেন নবনির্বাচিত সংসদ সদস্যরা। সেদিনই রাষ্ট্রপতির সরকার গঠণের আমন্ত্রণ জানান।

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

নতুন মন্ত্রিসভার শপথ কাল, এমপিদের আজ

আপডেট সময় : ০২:৪০:১৭ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৯ জানুয়ারী ২০২৪

নিজস্ব প্রতিবেদক : দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তিন দিনের মাথায় টানা চতুর্থবারের মত সরকার গঠন করতে যাচ্ছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। আর সংসদে সংখ্যাগরিষ্ঠ এই দলের প্রধান হিসেবে পঞ্চমবার প্রধানমন্ত্রী হচ্ছেন শেখ হসিনা। সংসদের নবনির্বাচিত সদস্যরা বুধবার সকালে জাতীয় সংসদভবনে শপথ নেবেন। তারপর বৃহস্পতিবার বঙ্গভবনে হবে নতুন মন্ত্রিসভার শপথ। রাষ্ট্রপতির প্রেস সচিব জয়নাল আবেদীন গতকাল মঙ্গলবার সংবাদমাধ্যমকে বলেন, “বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৭টায় নতুন মন্ত্রিসভার শপথ হবে।”
বঙ্গভবনে মন্ত্রিসভার শপথ আয়োজন করে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। এ বিষয়ে জানতে চাইলে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের (সমন্বয় ও সংস্কার) সচিব মো. মাহমুদুল হোসাইন খান বলেন, “আমাদের তো প্রস্তুতি আছেই। তালিকা পেলেই আমরা কার্যক্রম নেব। যারা মন্ত্রী হবেন, তাদের সঙ্গে সরাসরি মন্ত্রিপরিষদ সচিব মহোদয় কথা বলবেন। দাওয়াত দেবেন, তারপর যেতে হবে বঙ্গভবনে।”
এ বিষয়ে প্রশ্ন করলে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. মাহবুব হোসেন মঙ্গলবার বিকালে নিজের কার্যালয়ের সামনে সাংবাদিকদের বলেন, শপথ অনুষ্ঠান আয়োজনের নির্দেশনা পেলেও কারা শপথ নেবেন, সেই তালিকা তিনি পাননি। “আপনারা জানেন, ৭ জানুয়ারি নির্বাচন হয়েছে। নির্বাচন হওয়ার পরে নির্বাচিত মাননীয় সংসদ সদস্যগণ শপথ নেবেন। সেই প্রেক্ষিতে আমরা প্রস্তুতি নিচ্ছি। আগামী ১১ জানুয়ারি বৃহস্পতিবার বিকালে শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানের প্রস্তুতি আমরা নিচ্ছি। ঐতিহ্যগতভাবেই শপথ অনুষ্ঠান বঙ্গভবনে হয়ে থাকে। আমরা সন্ধ্যা ৭টায় শপথ অনুষ্ঠানের প্রস্তুতি নিচ্ছি।” এবার কারা মন্ত্রী হচ্ছেন এবং কত সদস্যের মন্ত্রিসভা হচ্ছে জানতে চাইলে মাহবুব হোসেন বলেন, “এই কাজটা আমরা এখনও শুরু করিনি। শপথ অনুষ্ঠানের জন্য গাড়ি রেডি আছে, আমরা তেরো, চৌদ্দশর মত (অতিথিকে) দাওয়াত দেব।”
সংসদের ৩০০ আসনের মধ্যে রোববার ভোট হয়েছে ২৯৯ আসনে। এরমধ্যে একটি কেন্দ্রে ফল স্থগিত থাকায় ময়মনসিংহের একটি আসনের ফলাফল আটকে আছে। ২৯৮টি আসনের মধ্যে আওয়ামী লীগ ২২২, জাতীয় পার্টি ১১, ওয়ার্কার্স পার্টি ১, জাসদ ১, কল্যাণ পার্টি ১ এবং ৬২ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থীরা বিজয়ী হয়েছেন। তাদের তালিকা গেজেট আকারে প্রকাশের জন্য ইতোমধ্যে অনুমোদন দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। গেজেট প্রকাশের পর তা সংসদ সচিবালয়ে পাঠাবে ইসি সচিবালয়। বুধবার সকাল ১০টায় জাতীয় সংসদ ভবনের শপথ কক্ষে নতুন সংসদের এমপিদের শপথ অনুষ্ঠান হবে। স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী প্রথমে নিজে দ্বাদশ সংসদের এমপি হিসেবে শপথ নেবেন। পরে তিনি অন্যদের শপথ বাক্য পাঠ করাবেন। একাদশ সংসদের প্রধান হুইপ ও আওয়ামী লীগের সংসদীয় দলের সেক্রেটারি নূর ই আলম চৌধুরী জানিয়েছেন, বুধবার সকাল ১০টায় শপথ অনুষ্ঠানের পর বেলা ১২টায় প্রথম বৈঠকে বসবে আওয়ামী লীগের সংসদীয় দল। এর মধ্যে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন সংখ্যাগরিষ্ঠ দলের নেতাকে সরকার গঠনের আমন্ত্রণ জানাবেন। এরপর বঙ্গভবনে হবে নতুন মন্ত্রিসভার শপথ। একাদশ সংসদ নির্বাচন হয়েছিল ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর, এরপর ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে গেজেট প্রকাশ করা হয়। ২০১৯ সালের ৩ জানুয়ারি শপথ নেন নবনির্বাচিত সংসদ সদস্যরা। সেদিনই রাষ্ট্রপতির সরকার গঠনের আমন্ত্রণ জানান। ৭ জানুয়ারি বঙ্গভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং তার সরকারের ২৪ জন মন্ত্রী, ১৯ জন প্রতিমন্ত্রী এবং তিনজন উপমন্ত্রীকে শপথ পড়ান তখনকার রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। তার আগের দিনই সংবাদ সম্মেলন করে জানিয়ে দেওয়া হয় মন্ত্রিসভায় কারা স্থান পাচ্ছেন, কাকে কোন দপ্তরের দায়িত্ব দেওয়া হচ্ছে। শপথের আগে সংবাদ সম্মেলন করে নতুন মন্ত্রিসভার সদস্যদের নাম ঘোষণা সেবারই প্রথম।
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের একজন কর্মকর্তা জানান, প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে নতুন মন্ত্রিসভার সদস্যদের তালিকা পাবেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব। সে অনুযায়ী নতুন মন্ত্রীদের শপথের জন্য আলাদা আলাদা ফোল্ডার প্রস্তুত করতে হবে। মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী এবং উপমন্ত্রীদের চালকসহ সার্বক্ষণিক গাড়ির সুবিধা দেওয়ার দায়িত্ব সরকারি যানবাহন অধিদপ্তরের। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ২৫ জন মন্ত্রী, ১৯ জন প্রতিমন্ত্রী এবং তিনজন উপ-মন্ত্রী গত পাঁচ বছর সরকার পরিচালনার দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন। তাদের মধ্যে টেকনোক্র্যাট দুই মন্ত্রী এবং একজন প্রতিমন্ত্রী নির্বাচনের আগে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে পদত্যাগ করেন।
দ্বাদশ সংসদের এমপিরা শপথ নেবেন আজ: দ্বাদশ জাতীয় সংসদের সদস্যদের বরণ করে নিতে প্রস্তুত হচ্ছে বাংলাদেশের সংসদ ভবন। আজ বুধবার সকাল ১০টায় হবে তাদের শপথ অনুষ্ঠান। এই শপথ অনুষ্ঠান হবে জাতীয় সংসদ ভবনের শপথ কক্ষে। স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী প্রথমে নিজে দ্বাদশ সংসদের এমপি হিসেবে শপথ নেবেন। এবারও তিনি রংপুর-৬ আসন থেকে নির্বাচিত হয়েছেন। পরে তিনি অন্যদের শপথ বাক্য পাঠ করাবেন। ইতিমধ্যে ২৯৮ আসনে বিজয়ীদের নামের গেজেট প্রকাশের অনুমোদন দেওয়ার কথা জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশনার মো. আলমগীর। একাদশ সংসদের প্রধান হুইপ ও আওয়ামী লীগের সংসদীয় দলের সেক্রেটারি নূর ই আলম চৌধুরী মঙ্গলবার বলেন, “নির্ধারিত সময়ে গেজেট হয়ে যাবে। কাল সকাল ১০টায় শপথ হবে। আর বেলা ১২টায় আমাদের সংসদীয় দলের সভাও রয়েছে।”
সংসদের ৩০০ আসনের মধ্যে রোববার ভোট হয়েছে ২৯৯ আসনে। এরমধ্যে একটি কেন্দ্রে ফল স্থগিত থাকায় ময়মনসিংহের একটি আসনের ফলাফল আটকে আছে। ফলে বুধবার ২৯৮ আসনের নবনির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের শপথের আয়োজন হচ্ছে। নির্বাচন কমিশন ইতোমধ্যে ২৯৮ আসনে নবনির্বাচিতদের নামে গেজেট প্রকাশের অনুমোদন দিয়েছে জানিয়ে নির্বাচন কমিশনার মো. আলমগীর নিজের কার্যালয়ে সাংবাদিকদের বলেন, “২৯৮ আসনের নির্বাচনের ফলাফল মিলিয়ে দেখা হয়েছে, যাচাই করা হয়েছে। সব ঠিক আছে। এখন গেজেট করার জন্যে বিজি প্রেসে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে।” “নির্বাচন কমিশনের অনুমোদন পেলে গেজেট প্রকাশের জন্য প্রেসে পাঠিয়ে দেওয়া হবে। দুপুরের দিকে সিইসির নেতৃত্বে কমিশন বসার কথা রয়েছে।” সংসদ নির্বাচনের ফল গেজেট আকারে প্রকাশের তিন দিনের মধ্যে শপথ অনুষ্ঠানের সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা রয়েছে। এরপর ৩০ দিনের মধ্যে অধিবেশন ডাকতে হবে। প্রথম অধিবেশন শুরুর ৯০ দিনের মধ্যে শপথ না নিলে বা স্পিকারকে অবহিত না করলে সদস্য পদ খারিজ হবে। নির্বাচন কমিশনের অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার বেদনাথ জানান, গেজেট প্রকাশের পরেই পরবর্তী ব্যবস্থা নিতে সংসদ সচিবালয়ে গেজেটের কপি পাঠানো হবে। গেজেট পেলে স্পিকারের নির্দেশনা অনুযায়ী শপথ আয়োজনের প্রস্তুতি চূড়ান্ত করবে সংসদ সচিবালয়। সংসদ ভবনের নিচতলায় ‘শপথ কক্ষে’ নবনির্বাচিতদের শপথ পড়াবেন স্পিকার। ইতোমধ্যে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে নবনির্বাচিতদের শপথ-এর বিষয়ে জানানো হয়েছে। আওয়ামী লীগের নব নির্বাচিত সংসদ সদস্য ঢাকা দক্ষিণের সাবেক মেয়র সাঈদ খোকন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “দলীয়ভাবে আমাকে বলা হয়েছে, বুধবার সকাল ১০টায় নব নির্বাচিত সংসদ সদসস্যদের শপথ হবে।”
গেজেট অনুমোদন: এর কয়েকঘণ্টা পরই ২৯৮ আসনে নবনির্বাচিত সংসদ সদস্যদের নাম গেজেট আকারে প্রকাশের অনুমোদন দেয় নির্বাচন কমিশন। গতকাল মঙ্গলবার বিকালে নিজ কার্যালয়ে নির্বাচন কমিশনার মো. আলমগীর বলেন, “৩০০ আসনের মধ্যে ২৯৮ আসনের নির্বাচনের ফলাফল মিলিয়ে দেখা হয়েছে, যাচাই করা হয়েছে। সব ঠিক আছে। নির্বাচন কমিশন যখন দেখেছে সব সঠিক রয়েছে, এখন (নির্বাচিতদের নাম ঠিকানাসহ) গেজেট করার জন্যে বিজি প্রেসে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে।” গেজেট প্রকাশের পরই তা সংসদ সচিবালয়ে পাঠাবে ইসি সচিবালয়।
দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ২২২, জাতীয় পার্টি ১১, ওয়ার্কার্স পার্টি ১, জাসদ ১, কল্যাণ পার্টি ১ এবং স্বতন্ত্র প্রার্থীরা ৬২ আসনে বিজয়ী হয়েছেন। রেওয়াজ অনুযায়ী সংখ্যাগরিষ্ঠ দল আওয়ামী লীগের সদস্যরাই প্রথমে শপথ নেবেন। এরপর ক্রমানুসারে শপথ নেবেন অন্যরা। শপথ শেষে নতুন সংসদ সদস্যরা সংসদ সচিবের কার্যালয়ের স্বাক্ষর খাতায় সই করবেন এবং একসঙ্গে তাদের ছবি তোলা হবে। এমপিদের শপথের আনুষ্ঠানিকতা শেষে শুরু হবে নতুন সরকার গঠনের পর্ব। রাষ্ট্রপতি সংখ্যাগরিষ্ঠ দলের নেতাকে সরকার গঠনের আমন্ত্রণ জানাবেন। এরপর বঙ্গভবনে হবে নতুন মন্ত্রিসভার শপথ। নিরঙ্কুশ জয়ে টানা চতুর্থবারের মত সরকার গঠন করতে যাচ্ছে আওয়ামী লীগ। একাদশ সংসদ নির্বাচন হয়েছিল ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর, এরপর ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে গেজেট প্রকাশ করা হয়। ২০১৯ সালের ৩ জানুয়ারি শপথ নেন নবনির্বাচিত সংসদ সদস্যরা। সেদিনই রাষ্ট্রপতির সরকার গঠণের আমন্ত্রণ জানান।