ঢাকা ০৬:৪৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১১ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

আফগান শিশুদের জীবন চরম ঝুঁকিতে

  • আপডেট সময় : ১২:৫২:৪৬ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১০ অগাস্ট ২০২১
  • ৪৬ বার পড়া হয়েছে

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : আফগানিস্তানজুড়ে চলছে সংঘাত-সংঘর্ষ-সহিংসতা। দেশটির একাধিক প্রাদেশিক রাজধানী দখলে নিয়েছে তালেবান যোদ্ধারা। আফগান সরকারি বাহিনীর সঙ্গে তালেবানের লড়াইয়ে নিহত হচ্ছে বেসামরিক মানুষ। বাদ যাচ্ছে না শিশুরাও। সরকারি বাহিনী ও তালেবানের লড়াইয়ে আফগান শিশুদের জীবনহানি বাড়ছে। তিন দিনে দেশটিতে অন্তত ২৭ শিশু নিহত হওয়ার খবর মিলেছে।
জাতিসংঘ শিশু তহবিল (ইউনিসেফ) বলছে, আফগানিস্তানে শিশুদের বিরুদ্ধে গুরুতর সহিংসতার ঘটনা দ্রুত বাড়ছে। এ প্রেক্ষাপটে আফগান শিশুদের ভবিষ্যৎ নিয়ে গভীর উদ্বেগ জানিয়েছে গতকাল সোমবার একটি বিবৃতি প্রকাশ করেছে ইউনিসেফ। বিবৃতিতে বলা হয়, আফগান শিশুদের ওপর যে সহিংসতা চালানো হচ্ছে, তা দিন দিন বেড়েই চলেছে। কান্দাহার, পাকতিয়া, খোশতে তিন দিনে ২৭ শিশুর প্রাণ গেছে। আহত হয়েছে অন্তত ১৩৬ শিশু।
আফগানিস্তানে ইউনিসেফের যোগাযোগবিষয়ক প্রধান সামান্থা মোর্ট বলেন, ‘শিশুদের জন্য দীর্ঘদিন ধরেই আফগানিস্তান পৃথিবীর সবচেয়ে খারাপ স্থানগুলোর একটি। কিন্তু সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোয়, বিশেষ করে গত তিন দিনে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হয়ে উঠেছে।’ সেপ্টেম্বরের মধ্যে আফগানিস্তান থেকে যুক্তরাষ্ট্র ও ন্যাটোর সেনাদের পুরোপুরি প্রত্যাহার করে নেওয়া হবে। এ পরিস্থিতিতে পশ্চিমা দেশগুলো-সমর্থিত প্রেসিডেন্ট আশরাফ ঘানি সরকারকে হটিয়ে আফগানিস্তানে নিজেদের কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করতে মরিয়া তালেবান। লক্ষ্য অর্জনে সরকারি সেনাদের বিরুদ্ধে তালেবান তাদের অভিযান জোরদার করেছে। তারা একের পর এক এলাকা দখল করে অগ্রযাত্রা অব্যাহত রেখেছে।
চলমান সংঘাতে আফগান শিশুরা রাস্তার পাশে বোমার আঘাতে মারা যাচ্ছে। আহত হচ্ছে। দুই পক্ষের লড়াইয়ের মধ্যে পড়ে গুলিতে তারা হতাহত হচ্ছে। একজন মা জানান, গত সপ্তাহে তাঁদের বাড়িতে একটি শেল এসে পড়ে। এ সময় তাঁরা ঘুমিয়ে ছিলেন। শেলের আঘাতে বাড়িতে আগুন ধরে যায়। এতে তাঁর ১০ বছর বয়সী ছেলে গুরুতরভাবে অগ্নিদগ্ধ হয়।
সরকারি বাহিনী ও তালেবানের মধ্যকার সশস্ত্র সংঘাতের মুখে নিরাপত্তার জন্য অনেকেই বাড়িঘর ছেড়ে পালিয়েছেন। এ কারণে অনেক আফগান শিশুকে এখন খোলা আকাশের নিচে রাত কাটাতে হচ্ছে। অনিশ্চয়তার মুখে পড়েছে এসব শিশুর স্বাস্থ্য ও শিক্ষার মতো মৌলিক অধিকারগুলো। এ জন্য আফগান শিশুদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে ইউনিসেফ বিবদমান সব পক্ষের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে। লন্ডনভিত্তিক অধিকার সংগঠন অ্যাকশন অন আর্মড ভায়োলেন্স (এওএভি) জানিয়েছে, ২০১৬ থেকে ২০২০ সালের মধ্যে আফগানিস্তানে বিমান হামলায় হতাহত বেসামরিক মানুষের ৪০ শতাংশই শিশু। এ সংখ্যা ১ হাজার ৫৯৮।
শিশুদের জন্য দীর্ঘদিন ধরেই আফগানিস্তান পৃথিবীর সবচেয়ে খারাপ স্থানগুলোর একটি। কিন্তু সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোয়, বিশেষ করে গত তিন দিনে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হয়ে উঠেছে।
সামান্থা মোর্ট, আফগানিস্তানে ইউনিসেফের যোগাযোগবিষয়ক প্রধান এ বিষয়ে সেভ দ্য চিলড্রেন ইন্টারন্যাশনাল আফগানিস্তানের কান্ট্রি হেড ক্রিস নায়ামান্দি বলেন, ‘বছরের পর বছর ধরে আফগানিস্তান শিশুদের জন্য একটি ভয়ংকর প্রাণঘাতী দেশ। তাই দুঃখজনক হলেও সত্য, এ সংখ্যা আমাকে অবাক করে না।’
আগামী সেপ্টেম্বরের মধ্যে আফগানিস্তান থেকে যুক্তরাষ্ট্র ও ন্যাটোর সেনাদের পুরোপুরি প্রত্যাহার করে নেওয়া হবে। এ পরিস্থিতিতে পশ্চিমা দেশগুলো-সমর্থিত প্রেসিডেন্ট আশরাফ ঘানি সরকারকে হটিয়ে আফগানিস্তানে নিজেদের কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করতে মরিয়া তালেবান। লক্ষ্য অর্জনে সরকারি সেনাদের বিরুদ্ধে তালেবান তাদের অভিযান জোরদার করেছে। তারা একের পর এক এলাকা দখল করে অগ্রযাত্রা অব্যাহত রেখেছে।
গত শুক্র থেকে সোমবার নাগাদ দেশটির জারাঞ্জ, সেবারঘান, কুন্দুজ, সার-ই-পল, তালুকান ও আইবাক—এ ছয় প্রাদেশিক রাজধানী তালেবান দখল করে নিয়েছে। রাজধানী কাবুলেও হামলার ঘটনা ঘটছে। যেকোনো মুহূর্তে কাবুলের পতন ঘটতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। অস্ত্রবিরতির জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের আহ্বান প্রত্যাখ্যান করেছে তালেবান। এ কারণে দেশটিতে চলমান লড়াই-সংঘাত শেষ হওয়ার কোনো লক্ষণ নেই। আফগানিস্তানজুড়ে দুই পক্ষের লড়াই ও সহিংসতায় বেসামরিক মানুষের প্রাণহানি ঘটছে। দেশটিতে গত এক মাসের সংঘাতে হাজারো বেসামরিক মানুষ নিহত হয়েছে। আফগানিস্তানের বর্তমান পরিস্থিতি এতটাই বিপজ্জনক যে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য গত শনিবার তাদের নাগরিকদের দেশটি ছাড়ার নির্দেশ দিয়েছে।
পরিস্থিতি ক্রমে দীর্ঘমেয়াদি গৃহযুদ্ধের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে বলে সতর্ক করে দিয়েছেন আফগানিস্তানে নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক রাষ্ট্রদূত রায়ান ক্রোকার। গত রোববার এবিসি নিউজের এক অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, তালেবান এখন পর্যন্ত রাজধানী কাবুলে বড় ধরনের হামলা শুরু করেনি। ভয় ও আতঙ্কের একটি পরিবেশ সৃষ্টির জন্য তারা যা করছে, তা আংশিকভাবে করছে। আর তারা বিস্ময়করভাবে সফল হচ্ছে। তবে পুরো দেশ দ্রুত তালেবানের দখলে যাওয়ার চেয়েও বড় কথা হলো আফগানিস্তানে একটি দীর্ঘায়িত গৃহযুদ্ধের আশঙ্কা প্রবল।
আফগানিস্তানের নিরাপত্তা পরিস্থিতি যত নাজুক হোক না কেন, নির্ধারিত সময়সীমার মধ্যে মার্কিন সেনাদের সে দেশ থেকে প্রত্যাহার করে নেওয়ার ব্যাপারে অনড় যুক্তরাষ্ট্র।
২০০১ সালে যুক্তরাষ্ট্রে ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলার পর আফগানিস্তানে তথাকথিত সন্ত্রাসবিরোধী যুদ্ধ শুরু করে তারা। এতে আফগানিস্তানের তৎকালীন ক্ষমতাসীন তালেবান সরকারের পতন ঘটে। ক্ষমতাচ্যুত হলেও তালেবান কখনো নিশ্চিহ্ন হয়নি; বরং তারা ধীরে ধীরে নিজেদের শক্তি বাড়ায়। এখন আফগানিস্তান থেকে বিদেশি সেনা প্রত্যাহারের সুযোগে তালেবান দেশটির ক্ষমতা দখলে মরিয়া। অন্যদিকে, আফগান সরকার চাইছে ক্ষমতা টিকিয়ে রাখতে। এ দুই পক্ষের সংঘাতে দেশটির শিশুদের জীবন এখন চরম ঝুঁকিতে।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

ডিসেম্বর ধরেই নির্বাচনের সব ধরনের প্রস্তুতি নিচ্ছে ইসি

আফগান শিশুদের জীবন চরম ঝুঁকিতে

আপডেট সময় : ১২:৫২:৪৬ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১০ অগাস্ট ২০২১

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : আফগানিস্তানজুড়ে চলছে সংঘাত-সংঘর্ষ-সহিংসতা। দেশটির একাধিক প্রাদেশিক রাজধানী দখলে নিয়েছে তালেবান যোদ্ধারা। আফগান সরকারি বাহিনীর সঙ্গে তালেবানের লড়াইয়ে নিহত হচ্ছে বেসামরিক মানুষ। বাদ যাচ্ছে না শিশুরাও। সরকারি বাহিনী ও তালেবানের লড়াইয়ে আফগান শিশুদের জীবনহানি বাড়ছে। তিন দিনে দেশটিতে অন্তত ২৭ শিশু নিহত হওয়ার খবর মিলেছে।
জাতিসংঘ শিশু তহবিল (ইউনিসেফ) বলছে, আফগানিস্তানে শিশুদের বিরুদ্ধে গুরুতর সহিংসতার ঘটনা দ্রুত বাড়ছে। এ প্রেক্ষাপটে আফগান শিশুদের ভবিষ্যৎ নিয়ে গভীর উদ্বেগ জানিয়েছে গতকাল সোমবার একটি বিবৃতি প্রকাশ করেছে ইউনিসেফ। বিবৃতিতে বলা হয়, আফগান শিশুদের ওপর যে সহিংসতা চালানো হচ্ছে, তা দিন দিন বেড়েই চলেছে। কান্দাহার, পাকতিয়া, খোশতে তিন দিনে ২৭ শিশুর প্রাণ গেছে। আহত হয়েছে অন্তত ১৩৬ শিশু।
আফগানিস্তানে ইউনিসেফের যোগাযোগবিষয়ক প্রধান সামান্থা মোর্ট বলেন, ‘শিশুদের জন্য দীর্ঘদিন ধরেই আফগানিস্তান পৃথিবীর সবচেয়ে খারাপ স্থানগুলোর একটি। কিন্তু সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোয়, বিশেষ করে গত তিন দিনে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হয়ে উঠেছে।’ সেপ্টেম্বরের মধ্যে আফগানিস্তান থেকে যুক্তরাষ্ট্র ও ন্যাটোর সেনাদের পুরোপুরি প্রত্যাহার করে নেওয়া হবে। এ পরিস্থিতিতে পশ্চিমা দেশগুলো-সমর্থিত প্রেসিডেন্ট আশরাফ ঘানি সরকারকে হটিয়ে আফগানিস্তানে নিজেদের কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করতে মরিয়া তালেবান। লক্ষ্য অর্জনে সরকারি সেনাদের বিরুদ্ধে তালেবান তাদের অভিযান জোরদার করেছে। তারা একের পর এক এলাকা দখল করে অগ্রযাত্রা অব্যাহত রেখেছে।
চলমান সংঘাতে আফগান শিশুরা রাস্তার পাশে বোমার আঘাতে মারা যাচ্ছে। আহত হচ্ছে। দুই পক্ষের লড়াইয়ের মধ্যে পড়ে গুলিতে তারা হতাহত হচ্ছে। একজন মা জানান, গত সপ্তাহে তাঁদের বাড়িতে একটি শেল এসে পড়ে। এ সময় তাঁরা ঘুমিয়ে ছিলেন। শেলের আঘাতে বাড়িতে আগুন ধরে যায়। এতে তাঁর ১০ বছর বয়সী ছেলে গুরুতরভাবে অগ্নিদগ্ধ হয়।
সরকারি বাহিনী ও তালেবানের মধ্যকার সশস্ত্র সংঘাতের মুখে নিরাপত্তার জন্য অনেকেই বাড়িঘর ছেড়ে পালিয়েছেন। এ কারণে অনেক আফগান শিশুকে এখন খোলা আকাশের নিচে রাত কাটাতে হচ্ছে। অনিশ্চয়তার মুখে পড়েছে এসব শিশুর স্বাস্থ্য ও শিক্ষার মতো মৌলিক অধিকারগুলো। এ জন্য আফগান শিশুদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে ইউনিসেফ বিবদমান সব পক্ষের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে। লন্ডনভিত্তিক অধিকার সংগঠন অ্যাকশন অন আর্মড ভায়োলেন্স (এওএভি) জানিয়েছে, ২০১৬ থেকে ২০২০ সালের মধ্যে আফগানিস্তানে বিমান হামলায় হতাহত বেসামরিক মানুষের ৪০ শতাংশই শিশু। এ সংখ্যা ১ হাজার ৫৯৮।
শিশুদের জন্য দীর্ঘদিন ধরেই আফগানিস্তান পৃথিবীর সবচেয়ে খারাপ স্থানগুলোর একটি। কিন্তু সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোয়, বিশেষ করে গত তিন দিনে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হয়ে উঠেছে।
সামান্থা মোর্ট, আফগানিস্তানে ইউনিসেফের যোগাযোগবিষয়ক প্রধান এ বিষয়ে সেভ দ্য চিলড্রেন ইন্টারন্যাশনাল আফগানিস্তানের কান্ট্রি হেড ক্রিস নায়ামান্দি বলেন, ‘বছরের পর বছর ধরে আফগানিস্তান শিশুদের জন্য একটি ভয়ংকর প্রাণঘাতী দেশ। তাই দুঃখজনক হলেও সত্য, এ সংখ্যা আমাকে অবাক করে না।’
আগামী সেপ্টেম্বরের মধ্যে আফগানিস্তান থেকে যুক্তরাষ্ট্র ও ন্যাটোর সেনাদের পুরোপুরি প্রত্যাহার করে নেওয়া হবে। এ পরিস্থিতিতে পশ্চিমা দেশগুলো-সমর্থিত প্রেসিডেন্ট আশরাফ ঘানি সরকারকে হটিয়ে আফগানিস্তানে নিজেদের কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করতে মরিয়া তালেবান। লক্ষ্য অর্জনে সরকারি সেনাদের বিরুদ্ধে তালেবান তাদের অভিযান জোরদার করেছে। তারা একের পর এক এলাকা দখল করে অগ্রযাত্রা অব্যাহত রেখেছে।
গত শুক্র থেকে সোমবার নাগাদ দেশটির জারাঞ্জ, সেবারঘান, কুন্দুজ, সার-ই-পল, তালুকান ও আইবাক—এ ছয় প্রাদেশিক রাজধানী তালেবান দখল করে নিয়েছে। রাজধানী কাবুলেও হামলার ঘটনা ঘটছে। যেকোনো মুহূর্তে কাবুলের পতন ঘটতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। অস্ত্রবিরতির জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের আহ্বান প্রত্যাখ্যান করেছে তালেবান। এ কারণে দেশটিতে চলমান লড়াই-সংঘাত শেষ হওয়ার কোনো লক্ষণ নেই। আফগানিস্তানজুড়ে দুই পক্ষের লড়াই ও সহিংসতায় বেসামরিক মানুষের প্রাণহানি ঘটছে। দেশটিতে গত এক মাসের সংঘাতে হাজারো বেসামরিক মানুষ নিহত হয়েছে। আফগানিস্তানের বর্তমান পরিস্থিতি এতটাই বিপজ্জনক যে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য গত শনিবার তাদের নাগরিকদের দেশটি ছাড়ার নির্দেশ দিয়েছে।
পরিস্থিতি ক্রমে দীর্ঘমেয়াদি গৃহযুদ্ধের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে বলে সতর্ক করে দিয়েছেন আফগানিস্তানে নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক রাষ্ট্রদূত রায়ান ক্রোকার। গত রোববার এবিসি নিউজের এক অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, তালেবান এখন পর্যন্ত রাজধানী কাবুলে বড় ধরনের হামলা শুরু করেনি। ভয় ও আতঙ্কের একটি পরিবেশ সৃষ্টির জন্য তারা যা করছে, তা আংশিকভাবে করছে। আর তারা বিস্ময়করভাবে সফল হচ্ছে। তবে পুরো দেশ দ্রুত তালেবানের দখলে যাওয়ার চেয়েও বড় কথা হলো আফগানিস্তানে একটি দীর্ঘায়িত গৃহযুদ্ধের আশঙ্কা প্রবল।
আফগানিস্তানের নিরাপত্তা পরিস্থিতি যত নাজুক হোক না কেন, নির্ধারিত সময়সীমার মধ্যে মার্কিন সেনাদের সে দেশ থেকে প্রত্যাহার করে নেওয়ার ব্যাপারে অনড় যুক্তরাষ্ট্র।
২০০১ সালে যুক্তরাষ্ট্রে ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলার পর আফগানিস্তানে তথাকথিত সন্ত্রাসবিরোধী যুদ্ধ শুরু করে তারা। এতে আফগানিস্তানের তৎকালীন ক্ষমতাসীন তালেবান সরকারের পতন ঘটে। ক্ষমতাচ্যুত হলেও তালেবান কখনো নিশ্চিহ্ন হয়নি; বরং তারা ধীরে ধীরে নিজেদের শক্তি বাড়ায়। এখন আফগানিস্তান থেকে বিদেশি সেনা প্রত্যাহারের সুযোগে তালেবান দেশটির ক্ষমতা দখলে মরিয়া। অন্যদিকে, আফগান সরকার চাইছে ক্ষমতা টিকিয়ে রাখতে। এ দুই পক্ষের সংঘাতে দেশটির শিশুদের জীবন এখন চরম ঝুঁকিতে।