নিজস্ব প্রতিবেদক : কূটনীতিকদের অবাধ ও সুষ্ঠুভাবে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সম্পন্নের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।
ভোটারদের ভোটকেন্দ্রে যাওয়ার ক্ষেত্রে কোনো চাপ প্রয়োগ করা হচ্ছে না জানিয়ে কমিশন কূটনীতিকদের বলেছে, নির্বাচনকে ঘিরে সহিংসতা খুব কম। একইসঙ্গে সহিংসতা রোধ করার লক্ষ্যে তাৎক্ষণিক উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজধানীর প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেলে ঢাকায় অবস্থিত বিভিন্ন দেশের দূতাবাস ও মিশন প্রতিনিধিদের নির্বাচনের সরশেষ পরিস্থিতি নিয়ে ব্রিফিং করে ইসি। এ সময় অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের প্রতিশ্রুতি দেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল। দুপুর সাড়ে ৩টা থেকে প্রায় ঘণ্টাখানেক এই ব্রিফিং হয়। কূটনীতিকদের ব্রিফিং শেষে সাংবাদিকদের সিইসি জানান, নির্বাচনের সবশেষ প্রস্তুতি তুলে ধরা হয়েছে। এরইমধ্যে বাংলাদেশের নির্বাচন ঘিরে তারা আগ্রহ দেখিয়েছে। বিভিন্ন সময়ে ইসির সঙ্গে মতবিনিময় করেছে। তাই স্বচ্ছতা নিশ্চিত করার লক্ষ্যেই কূটনীতিকদের উদ্দেশ্যে এই ব্রিফিংয়ের আয়োজন করা হয়েছে, যাতে বিভ্রান্তির কোনো সুযোগ না থাকে। কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, ‘তারা প্রশ্ন করেছেন কী পরিমাণে অভিযোগ এসেছে। এর প্রেক্ষিতে আমরা জানিয়েছি অভিযোগের ভিত্তিতে কী কী উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘কূটনীতিকদের সহিংসতার বিষয়ে প্রশ্নের উত্তরে জানিয়েছি, সহিংসতা আছে তবে খুব কম।’ ভোটারদের ভোটকেন্দ্রে আসার ক্ষেত্রে চাপ প্রয়োগ করা হচ্ছে কি না প্রশ্নের জবাবে প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেন, ‘ভোট কেন্দ্রে আসার ক্ষেত্রে চাপ নয়, সচেতনতা তৈরি করা হচ্ছে, যা ইসির দায়িত্ব। তবে যারা নির্বাচন বর্জন করেছে তাদের পক্ষ থেকে ভোট দিতে না যাওয়ার বিষয়ে চাপ থাকতে পারে। এটা ব্যাখ্যা করেছি।’ এছাড়া ভোটের ফল জানার বিষয়ে একটি অ্যাপ চালু হয়েছে বলেও জানান তিনি। এই অ্যাপের মাধ্যমে বিশ্বের নানা প্রান্ত থেকে সারা দেশের বিভিন্ন কেন্দ্রে ভোটের তাৎক্ষণিক ফল জানা যাবে। পোলিং চলাকালে দুই ঘণ্টা পরপর তথ্য আপলোড করা হবে। সিইসি জানান, নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আট লাখ সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। স্ট্যান্ডবাই রয়েছেন আরও এক লাখ। মাঠে থাকবেন তিন হাজার ম্যাজিস্ট্রেট ও বিচারক।
এছাড়া শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের লক্ষ্যে পুলিশ, আনসার, র্যাব, সাদা পোশাকে গোয়েন্দা ও দেশের বিভিন্ন নিরাপত্তা বাহিনীর প্রায় আট লাখ সদস্য সারা দেশে মোতায়েন করা হয়েছে।
এই ব্রিফিংয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, চীনসহ বিভিন্ন দেশের দূতাবাস, ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত বিভিন্ন দেশের দূতাবাস ও জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক বিভিন্ন দাতা সংস্থার প্রতিনিধিরা অংশ নেন। ব্রিফিংয়ে ইসির পক্ষ থেকে নেতৃত্ব দেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল। এছাড়া ইসির কমিশনাররা এবং পররাষ্ট্রসচিব মাসুদ বিন মোমেনসহ মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তারাও উপস্থিত ছিলেন। সাংবাদিকদের ব্রিফিংয়ের আগে সোনারগাঁও হোটেলে ইসির তত্ত্বাবধানে দেশি-বিদেশি সাংবাদিকদের জন্য মিডিয়া সেন্টার উদ্বোধন করেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার। এখানে নির্বাচনি খবর প্রকাশে সাংবাদিকদের জন্য বেশ কিছু ল্যাপটপ ও ফ্যাক্স মেশিনসহ বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করা হয়েছে।
সোনারগাঁও হোটেলে মিডিয়া সেন্টার উদ্বোধন
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনেকে সামনে রেখে দেশি-বিদেশি গনমাধ্যমকর্মীদের জন্য মিডিয়া সেন্টার উদ্বোধন করলেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল।
গতকাল বৃহস্পতিবার (৪ জানুয়ারি) বিকালে রাজধানীতে হোটেল সোনারগাঁওয়ে বাংলাদেশে অবস্থানরত বিভিন্ন দেশের দূতাবাসের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক শেষে মিডিয়া সেন্টার উদ্বোধন করেন তিনি। উদ্বোধন শেষে মিডিয়া সেন্টারটি পরিদর্শন করেন তিনি। পিআইডির একজন কর্মকর্তা সিইসিকে জানান, দ্রুগতির ইন্টারনেট সেবাসহ ১২টি ল্যাপটপ ২৪ ঘন্টা যেকোনো দেশি বা বিদেশি সাংবাদিক মিডিয়া সেন্টারে নির্বাচনকালীন সময়ে ব্যবহার করতে পারবে। এসময় সেখানে নির্বাচন কমিশনের চার সচিব, কমিশনার রাশেদা সুলতানা, আনিছুর রহমান, মোহাম্মদ আলমগীরসহ পিআইডির মিডিয়া শাখার কর্মকর্তা-কর্মচারীবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানটি পিআইডি ও নির্বাচন কমিশনার আনিছুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত হয়।
