নিজস্ব প্রতিবেদক : গণটিকা কার্যক্রমে বিশৃঙ্খলা এবং এসময় জনপ্রতিনিধিদের দায়িত্বজ্ঞানহীন আচরণের অভিযোগ এনে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে মানবাধিকার সংগঠন আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক)।
গতকাল সোমবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ উদ্বেগের কথা জানায় সংগঠনটি।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সরকার ইতোমধ্যে করোনার গণটিকাদান কর্মসূচি শুরু করেছে। অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ও জনস্বাস্থ্যের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট এ কর্মসূচির প্রথম দুদিনেই সরকার তার লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে সক্ষম হলেও নানা ধরণের বিশৃঙ্খলা আর দায়িত্বহীন আচরণের সংবাদ গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। একদিকে যেমন করোনা প্রতিরোধে লকডাউন চলছে, রোগীর তুলনায় হাসপাতালের শয্যা অপ্রতুল হয়ে পড়েছে এবং প্রতিদিন গড়ে দুই শতাধিক রোগী মারা যাচ্ছেন। অন্যদিকে টিকাদান কর্মসূচিতে কোনও ধরণের সামাজিক দূরত্ব বা স্বাস্থ্যবিধি না মেনে জমায়েত হচ্ছে। ফলে করোনা সংক্রমণ আরও বৃদ্ধি পাওয়ার আশঙ্কা বাড়ছে। কোন টিকাদান কেন্দ্রে কত ডোজ টিকা আছে এবং কতজন পেতে পারে এ সংক্রান্ত কোনও সুষ্পষ্ট তথ্য জনগণের কাছে নেই।
টিকাদানে বয়স্ক, নারী ও শারীরিক প্রতিবন্ধীদের অগ্রাধিকার দেওয়ার বিষয়ে সরকারের পক্ষ থেকে বলা হলেও ভিড়ের কারণে তা অধিকাংশ ক্ষেত্রেই নিশ্চিত হয়নি। ঢাকাসহ অনেক জায়গায় সারাদিন টিকা দেওয়ার ঘোষণা দেওয়া হলেও দিনের প্রথম কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই টিকা শেষ হয়ে যায়। টিকা না পেয়ে অধিকাংশ মানুষ ফিরে যান। আবার কয়েকটি স্থানে উপস্থিত জনতা দীর্ঘক্ষণ লাইনে দাঁড়িয়ে থেকে টিকা না পেয়ে উত্তেজিত হয়ে পড়েন। একইসঙ্গে জনপ্রতিনিধিদের অবিবেচনাপ্রসূত আচরণও প্রকটভাবে দৃশ্যমান হয়েছে। ধামরাইয়ে এ কর্মসূচিতে স্বাস্থ্যকর্মীর পরিবর্তে পৌর মেয়র এবং রাজশাহীতে সাংসদ নিজেই টিকা পুশ করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ছবিতে দেখা যায়, সামাজিক দূরত্ব না মেনে ও সঠিকভাবে মাস্ক না পড়ে এ কাজটি করা হয়েছে। এসময় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্টদের দাঁড়িয়ে থাকতেও দেখা গেছে। পরে তারা এ অভিযোগ অস্বীকার করে কেবল ছবি তোলার জন্য পোজ দিয়েছেন বলে জানালেও প্রত্যক্ষদর্শীরা গণমাধ্যমকে ভিন্ন তথ্য দিয়েছেন।
আসক মনে করে, দেরিতে হলেও সরকার গণটিকাদান কর্মসূচি পরিচালনা করছে, যা অত্যন্ত ইতিবাচক একটি উদ্যোগ। সাধারণ মানুষকে করোনার টিকার আওতায় আনার ক্ষেত্রে এ উদ্যোগ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। তথাপি পুরো টিকাদান কর্মসূচিতে পরিকল্পনা ও প্রস্তুতির ঘাটতি, অজ্ঞতা, অদূরদর্শিতা আর সমন্বয়হীনতা ও অব্যবস্থাপনা তীব্রভাবে দৃশ্যমান হয়েছে, যা হতাশাজনক।
গত দেড় বছরেও গণজমায়েত ব্যবস্থাপনায় সরকারের কোনো সুনির্দিষ্ট কৌশল লক্ষ্য করা যাচ্ছে না। কর্তৃপক্ষের কাছে সংশ্লিষ্ট জনপ্রতিনিধিদের টিকা পুশ করার মত ঘটনার বিষয়ে জবাবদিহি করাসহ গত কয়েকদিনের অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে গণটিকাদান কর্মসূচিকে আরও বেশি জনমুখী, বিড়ম্বনাহীন ও সফল করে তোলার আহবান জানাচ্ছে আসক।
গণটিকা কার্যক্রমে বিশৃঙ্খলায় আসকের উদ্বেগ
ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ