প্রত্যাশা ডেস্ক : মানুষের কর্মকা- এই পৃথিবীর জলবায়ুকে অল্প সময়ে যেভাবে বদলে দিয়েছে, তেমনটা লাখো বছরেও ঘটেনি। আর এই পরিবর্তন অনেক ক্ষেত্রে আর সংশোধনের উপায় নেই, যা মানবজাতিকে অনিবার্য পরিণতির দিকে নিয়ে যাচ্ছে বলে সতর্ক করেছেন বিজ্ঞানীরা। জাতিসংঘ গঠিত জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক আন্তঃসরকার প্যানেলের (আইপিসিসি) প্রতিবেদন বলছে, পৃথিবীর উষ্ণতা যেভাবে বাড়ছে তাতে চূড়ান্ত বিপদের খুব কাছাকাছি পৌঁছে যাচ্ছে মানবসভ্যতা। আর সেজন্য মানুষই পুরোপুরি দায়ী।
‘নীতিনির্ধারকদের জন্য সারসংক্ষেপ’ শিরোনামে সোমবার প্রকাশিত ৪২ পৃষ্ঠার এই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আগামী দুই দশকের মধ্যে পৃথিবীর তাপমাত্রা প্রাক শিল্পায়ন যুগের তুলনায় ১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেড়ে যেতে পারে।
এর মানে হল, ২০১৫ সালে প্যারিস জলবায়ু সম্মেলনে উষ্ণায়নকে যে মাত্রায় বেধে রাখার অঙ্গীকার বিশ্বনেতারা করেছিলেন, তা পূরণ করা হয়ত সম্ভব হচ্ছে না। আর এই উষ্ণতা বৃদ্ধির ফল হবে মারাত্মক। এ শতকের শেষে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা দুই মিটার বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনার বিষয়টিকে বিজ্ঞানীরা আর উড়িয়ে দিতে পারছেন না। তবে ছোট হলেও একটি আশার আলো রয়েছে আইপিসিসির গুরুত্বপূর্ণ এই প্রতিবেদনে। বিজ্ঞানীরা বলছেন, গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমন ব্যাপক হারে কমিয়ে আনা গেলে বাড়তে থাকা উষ্ণতায় ভারসাম্য ফিরে আসতে পারে।
কয়েকশ বিশেষজ্ঞের গবেষণা ও সমীক্ষার তথ্য বিশ্লেষণ করে প্রায় ৮ বছর ধরে এই প্রতিবেদনটি তৈরি করেছে আইপিসিসি, যেখানে বিশ্বজুড়ে জলবায়ু পরিবর্তনের সবশেষ বাস্তব অবস্থা তুলে ধরা হয়েছে। ১৯৮৮ সাল থেকে আইপিসিসি এমন ছয়টি প্রতিবেদন দিয়েছে। এবারের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দ্রুত জলবায়ু বদলে গিয়ে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি, মেরু অঞ্চলে বরফ ও হিমবাহ গলে যাওয়া, তাপদাহ, বন্যা আর খরার মত ঘটনা বাড়ছে মানুষের নানা কার্যক্রমের কারণেই।
এ প্রতিবেদনকে মানবজাতির জন্য সর্বোচ্চ সতর্কবার্তা বা ‘কোড রেড’ হিসেবে বর্ণনা করে জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস জ্বালানি হিসেবে কয়লা এবং উচ্চমাত্রায় দূষণ ঘটানো জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার যত দ্রুত সম্ভব বন্ধ করার আহ্বান জানিয়েছেন। এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, ‘আমাদের গ্রহটাকে ধ্বংস করে ফেলার আগে এই প্রতিবেদনের মধ্য দিয়েই কয়লা ও ফসিল ফুয়েলের মৃত্যুঘণ্টা বাজানো উচিত।’
জলবায়ু পরিবর্তন প্রতিবেদনে মানবজাতির জন্য সতর্কবার্তা
ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ