ঢাকা ১১:৩৮ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২১ অক্টোবর ২০২৫

শ্রমিক আন্দোলন থেকে গ্রেপ্তার সবাই বিএনপির লোক: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

  • আপডেট সময় : ০২:২৫:১৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ১২ নভেম্বর ২০২৩
  • ১৩১ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক : মজুরি বোর্ডের মাধ্যমে বেতন বাড়ানোর পরেও পোশাক খাতে চলমান অস্থিতিশীলতার পেছনে বিএনপির ইন্ধন দেখছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল। নির্বাচনের আগে আগে সরকার পতনের আন্দোলনে ‘ব্যর্থ’ হয়ে বিএনপি শ্রমিকের মধ্যে অসন্তোষ ছড়িয়ে দিয়েছে বলেও অভিযোগ করেছেন তিনি।
গতকাল রোববার সচিবালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, “চলমান শ্রমিক আন্দোলনে অবশ্যই বিএনপির ইন্ধন আছে।“
যেসব শ্রমিক আন্দোলনে রয়েছেন, তাদের বেশিরভাগই বিএনপির কর্মী বলে ভিডিও ফুটেজ দেখে ‘নিশ্চিত হওয়ার’ কথা বলেছেন মন্ত্রী। তিনি বলেন, “সবচেয়ে প্রণিধানযোগ্য যে বিষয়গুলো ভিডিও ফুটেজের মাধ্যমে আমরা যা পাচ্ছি, এর প্রায়গুলোই বিএনপির অ্যাক্টিভিস্ট। আমরা দেখেছি কুষ্টিয়ার একজন নেতা কোনাবাড়িতে এসে এদেরকে উৎসাহ দিচ্ছিল, এদেরকে ঐক্যবদ্ধ করছিল। বিভিন্ন স্থানে যেগুলো ক্যামেরাবন্দি হয়েছে, যাদেরকে আমরা ধরতে পেরেছি- এর সবগুলোই বিএনপির অ্যাক্টিভিস্ট। “এরাই এই নিরীহ শ্রমিকদের উসকে দিচ্ছেন, তাদেরকে জড়ো করছেন। সর্বক্ষেত্রে ফেইল করে এই জায়গায় সফলতা পাওয়া যায় কিনা, তারই একটা ব্যবস্থা হয়ত তারা করতে চাচ্ছেন,” বলেন কামাল। মজুরি বৃদ্ধির দাবিতে গত কয়েক সপ্তাহ ধরেই গাজীপুর, সাভার, আশুলিয়ায় বিক্ষোভ করে আসছেন পোশাক শ্রমিকরা। এর মধ্যে সরকার ন্যূনতম মজুরি ৮ হাজার টাকা থেকে বাড়িয়ে সাড়ে ১২ হাজার টাকা করার ঘোষণা দিলেও শ্রমিকদের কয়েকটি অংশ মজুরি ২৩ থেকে ২৫ হাজার টাকা করার দাবিতে আন্দোলন চালিয়ে আসছে। এর মধ্যে গত বুধবার গাজীপুরে কয়েকটি কারখানার শ্রমিকরা বিক্ষোভে নামলে পুলিশের সঙ্গে তাদের সংঘর্ষ বাঁধে। ওই সংঘর্ষের মধ্যে এক পোশাক শ্রমিক এবং আরেক কর্মচারীর মৃত্যু হয়। মজুরি বৃদ্ধির দাবিতে রোববারও ঢাকার মিরপুরে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন শ্রমিকরা। সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, “বেতন গ্রেড নিয়ে অনেকের মনে সংশয় আছে, দ্বিধা আছে- এ রকম আমরা শুনতে পাচ্ছি। সেকেন্ড গ্রেড, থার্ড গ্রেড, ফোর্থ গ্রেড এগুলোর কি হবে? মালিকপক্ষ নিশ্চয়ই এগুলোর সমাধান করবেন, তারা তো ব্যবসা-বাণিজ্য করবেন। সমাধান করার ক্ষেত্রটি আগুন, ভাঙচুর ও রাস্তা অবরোধ করা নয়।”
নতুন মজুরি নিয়ে আপত্তি থাকলে শ্রমিকরা ‘মালিকদের সঙ্গে বসে সমাধান করতে পারত’ মন্তব্য করে মন্ত্রী বলেন, “সেটা না করে তারা এই করলে নিজেদের যেমন ক্ষতি হয়, দেশেরও ক্ষতি হচ্ছে। এটা তাদের চিন্তা করা উচিত।“
বিএনপি ভোটে ‘আসবে’, আশায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী: সচিবালয়ে বিএনপি-জামায়াত ও সমমনা দলের নাশকতা নিয়েও কথা বলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। তিনি বলেন, “যারা জ্বালাও-পোড়াও করছে, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তাদের খুঁজে বের করছে, আমরা আইনগত ব্যবস্থা নিচ্ছি। দেশের জনগণও যথেষ্ট সজাগ হয়েছে, জনগণও তাদের ধরিয়ে দিচ্ছে। জনগণ যখন ঘুরে দাঁড়াবে তখন এগুলো অটোমেটিক্যালি (আপনা আপনি) বন্ধ হয়ে যাবে। অবরোধ কর্মসূচি দিয়ে গাড়ি পোড়ানো নিয়ে এক প্রশ্নে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, “তারা সবসময়ই সন্ত্রাস ডেকে ষড়যন্ত্র করে একটা অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে এসব কর্মসূচি দিচ্ছে।“ সরকার পরিবর্তনে ভূমিকা রাখতে নির্বাচনে অংশ নেওয়া ছাড়া বিএনপির আর কোনো গতি নেই বলেও মন্তব্য করেন কামাল। “সময়মত নির্বাচনের ডাক দেবে নির্বাচন কমিশন। সবাই সেখানে অংশ নেবে এমনটিই জনগণের প্রত্যাশা। আমরা এখনও বলি, তারা (বিএনপি) নির্বাচনে আসবে, নির্বাচন ছাড়া সরকার পাল্টানোর আর কোনো সুযোগ নেই। কাজেই নির্বাচনে তাদের আসতে হবে, যদি সরকার পরিবর্তন করতে চায়।” বিএনপির শীর্ষ নেতাদের জেলে রাখলে দলটি নির্বাচনে আসবে কী না প্রশ্নের উত্তরে মন্ত্রী বলেন, “নির্বাচনে আসবে কি আসবেন না এটা তাদের এখতিয়ার। আমাদের কথা হচ্ছে ২৮ অক্টোবরের সমাবেশ ঘিরে লঙ্কাকা-ের আগে আমরা বিএনপির কোনো নেতাকর্মীদের ধরিনি।“

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : prottashasmf@yahoo.com
আপলোডকারীর তথ্য

শ্রমিক আন্দোলন থেকে গ্রেপ্তার সবাই বিএনপির লোক: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

আপডেট সময় : ০২:২৫:১৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ১২ নভেম্বর ২০২৩

নিজস্ব প্রতিবেদক : মজুরি বোর্ডের মাধ্যমে বেতন বাড়ানোর পরেও পোশাক খাতে চলমান অস্থিতিশীলতার পেছনে বিএনপির ইন্ধন দেখছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল। নির্বাচনের আগে আগে সরকার পতনের আন্দোলনে ‘ব্যর্থ’ হয়ে বিএনপি শ্রমিকের মধ্যে অসন্তোষ ছড়িয়ে দিয়েছে বলেও অভিযোগ করেছেন তিনি।
গতকাল রোববার সচিবালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, “চলমান শ্রমিক আন্দোলনে অবশ্যই বিএনপির ইন্ধন আছে।“
যেসব শ্রমিক আন্দোলনে রয়েছেন, তাদের বেশিরভাগই বিএনপির কর্মী বলে ভিডিও ফুটেজ দেখে ‘নিশ্চিত হওয়ার’ কথা বলেছেন মন্ত্রী। তিনি বলেন, “সবচেয়ে প্রণিধানযোগ্য যে বিষয়গুলো ভিডিও ফুটেজের মাধ্যমে আমরা যা পাচ্ছি, এর প্রায়গুলোই বিএনপির অ্যাক্টিভিস্ট। আমরা দেখেছি কুষ্টিয়ার একজন নেতা কোনাবাড়িতে এসে এদেরকে উৎসাহ দিচ্ছিল, এদেরকে ঐক্যবদ্ধ করছিল। বিভিন্ন স্থানে যেগুলো ক্যামেরাবন্দি হয়েছে, যাদেরকে আমরা ধরতে পেরেছি- এর সবগুলোই বিএনপির অ্যাক্টিভিস্ট। “এরাই এই নিরীহ শ্রমিকদের উসকে দিচ্ছেন, তাদেরকে জড়ো করছেন। সর্বক্ষেত্রে ফেইল করে এই জায়গায় সফলতা পাওয়া যায় কিনা, তারই একটা ব্যবস্থা হয়ত তারা করতে চাচ্ছেন,” বলেন কামাল। মজুরি বৃদ্ধির দাবিতে গত কয়েক সপ্তাহ ধরেই গাজীপুর, সাভার, আশুলিয়ায় বিক্ষোভ করে আসছেন পোশাক শ্রমিকরা। এর মধ্যে সরকার ন্যূনতম মজুরি ৮ হাজার টাকা থেকে বাড়িয়ে সাড়ে ১২ হাজার টাকা করার ঘোষণা দিলেও শ্রমিকদের কয়েকটি অংশ মজুরি ২৩ থেকে ২৫ হাজার টাকা করার দাবিতে আন্দোলন চালিয়ে আসছে। এর মধ্যে গত বুধবার গাজীপুরে কয়েকটি কারখানার শ্রমিকরা বিক্ষোভে নামলে পুলিশের সঙ্গে তাদের সংঘর্ষ বাঁধে। ওই সংঘর্ষের মধ্যে এক পোশাক শ্রমিক এবং আরেক কর্মচারীর মৃত্যু হয়। মজুরি বৃদ্ধির দাবিতে রোববারও ঢাকার মিরপুরে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন শ্রমিকরা। সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, “বেতন গ্রেড নিয়ে অনেকের মনে সংশয় আছে, দ্বিধা আছে- এ রকম আমরা শুনতে পাচ্ছি। সেকেন্ড গ্রেড, থার্ড গ্রেড, ফোর্থ গ্রেড এগুলোর কি হবে? মালিকপক্ষ নিশ্চয়ই এগুলোর সমাধান করবেন, তারা তো ব্যবসা-বাণিজ্য করবেন। সমাধান করার ক্ষেত্রটি আগুন, ভাঙচুর ও রাস্তা অবরোধ করা নয়।”
নতুন মজুরি নিয়ে আপত্তি থাকলে শ্রমিকরা ‘মালিকদের সঙ্গে বসে সমাধান করতে পারত’ মন্তব্য করে মন্ত্রী বলেন, “সেটা না করে তারা এই করলে নিজেদের যেমন ক্ষতি হয়, দেশেরও ক্ষতি হচ্ছে। এটা তাদের চিন্তা করা উচিত।“
বিএনপি ভোটে ‘আসবে’, আশায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী: সচিবালয়ে বিএনপি-জামায়াত ও সমমনা দলের নাশকতা নিয়েও কথা বলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। তিনি বলেন, “যারা জ্বালাও-পোড়াও করছে, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তাদের খুঁজে বের করছে, আমরা আইনগত ব্যবস্থা নিচ্ছি। দেশের জনগণও যথেষ্ট সজাগ হয়েছে, জনগণও তাদের ধরিয়ে দিচ্ছে। জনগণ যখন ঘুরে দাঁড়াবে তখন এগুলো অটোমেটিক্যালি (আপনা আপনি) বন্ধ হয়ে যাবে। অবরোধ কর্মসূচি দিয়ে গাড়ি পোড়ানো নিয়ে এক প্রশ্নে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, “তারা সবসময়ই সন্ত্রাস ডেকে ষড়যন্ত্র করে একটা অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে এসব কর্মসূচি দিচ্ছে।“ সরকার পরিবর্তনে ভূমিকা রাখতে নির্বাচনে অংশ নেওয়া ছাড়া বিএনপির আর কোনো গতি নেই বলেও মন্তব্য করেন কামাল। “সময়মত নির্বাচনের ডাক দেবে নির্বাচন কমিশন। সবাই সেখানে অংশ নেবে এমনটিই জনগণের প্রত্যাশা। আমরা এখনও বলি, তারা (বিএনপি) নির্বাচনে আসবে, নির্বাচন ছাড়া সরকার পাল্টানোর আর কোনো সুযোগ নেই। কাজেই নির্বাচনে তাদের আসতে হবে, যদি সরকার পরিবর্তন করতে চায়।” বিএনপির শীর্ষ নেতাদের জেলে রাখলে দলটি নির্বাচনে আসবে কী না প্রশ্নের উত্তরে মন্ত্রী বলেন, “নির্বাচনে আসবে কি আসবেন না এটা তাদের এখতিয়ার। আমাদের কথা হচ্ছে ২৮ অক্টোবরের সমাবেশ ঘিরে লঙ্কাকা-ের আগে আমরা বিএনপির কোনো নেতাকর্মীদের ধরিনি।“