ঢাকা ০৬:৪০ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ০৫ ডিসেম্বর ২০২৫

ডেঙ্গু পরিস্থিতি আশঙ্কাজনক রূপ নিতে পারে: স্বাস্থ্য অধিদফতর

  • আপডেট সময় : ০১:৪৯:০১ অপরাহ্ন, বুধবার, ৪ অগাস্ট ২০২১
  • ১৭২ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক : ডেঙ্গু পরিস্থিতি আবারও আশঙ্কাজনক রূপ নিতে পারে, এমন উদ্বেগের কথা জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদফতর।
গতকাল বুধবার কোভিড-১৯ পরিস্থিতি নিয়ে স্বাস্থ্য অধিদফতর আয়োজিত ভার্চুয়াল স্বাস্থ্য বুলেটিনে অধিদফতরের মুখপাত্র অধ্যাপক ডা. মো. নাজমুল ইসলাম এ কথা বলেন। তিনি বলেন, ‘বর্ষাকালে আমরা গত কয়েক বছর ধরেই দেখেছি— এডিসবাহিত যে ডেঙ্গু পরিস্থিতি, সেটি সময় সময় অত্যন্ত আশঙ্কাজনক রূপ নিয়েছে। ২০১৯ সালে আমরা দেখেছি, ডেঙ্গু মহামারি আমাদের কীভাবে আক্রান্ত করেছিল। ২০২১ সালে এসে একই রকম একটি পরিস্থিতির মুখে আমরা দাঁড়িয়েছি। আমরা মনে করি, দ্রুত ব্যবস্থা নিলে সেটি মোকাবিলা করতে পারবো।’
ডেঙ্গু সংক্রমণের চিত্র তুলে ধরে তিনি আরও বলেন, ‘মঙ্গলবার (৩ আগস্ট) সকাল ৮টার পর্যন্ত ঢাকায় ২৪৮ জন রোগী ভর্তি হয়েছেন। এরমধ্যে ১৬ জন ছিলেন ঢাকার বাইরের। এই সময় সরকারি-বেসরকারি মিলিয়ে এক হাজার ৭২ জন রোগী ভর্তি ছিলেন। এর মধ্যে ঢাকার ৪১টি সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে এক হাজার ২৫ জন রোগী ছিলেন। অন্যান্য বিভাগে মোট ভর্তি ছিলেন ৪৭ জন রোগী।’ অধ্যাপক ডা. মো. নাজমুল ইসলাম বলেন, ‘চলতি বছরের ২ জানুয়ারি থেকে ৩ আগস্ট পর্যন্ত মোট তিন হাজার ৪৪৬ জন ডেঙ্গু রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। হাসপাতাল থেকে চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন ২ হাজার ৩৭০ জন। জুলাই মাসে ২৮৬ জন রোগী শনাক্ত হয়েছিল, আগস্টের তিন দিনে ৭৮৮ জন রোগী শনাক্ত হয়েছেন।’
ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে সবাইকে দায়িত্বশীল হওয়ার আহ্বান ডিএসসিসি মেয়রের : চিরুনি অভিযানে এডিস নিয়ন্ত্রণে আসবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস। পাশাপাশি তিনি ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে সবাইকে সচেতন ও দায়িত্বশীল হওয়ার আহ্বান জানান। গতকাল বুধবার সকালে খিলগাঁওয়ের পিডব্লিউডি কলোনিতে মশক নিধন কার্যক্রম পরিদর্শন শেষে গণমাধ্যমের সঙ্গে মতবিনিময়কালে মেয়র ব্যারিস্টার শেখ তাপস এ কথা বলেন।
তাপস বলেন, ‘আমাদের এলাকায় যে সরকারি আবাসনগুলো আছে, আমরা তাদেরকে বারবার চিঠি দিয়েছি, সতর্ক করেছি। আমরা বলেছি, যেন তারা সেগুলো পরিষ্কার করেন। আপনারা লক্ষ্য করেছেন, আজকেও আমি পরিদর্শনে এসে দেখলাম, এখানে লার্ভা পাওয়া গেছে। এটি আসলে খুবই দুঃখজনক। আমরা যদি নিজেরা নিজেদের এলাকা পরিষ্কার-পরিছন্ন না রাখি, উৎসগুলো নিধন না করি, কোনও আধারে যেন পানি না জমতে না পারে, সে বিষয়ে সচেতন না হন, তবে এটা (ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণ) অত্যন্ত দুরূহ। তারপরও আমরা কাজ করে চলেছি। আমরা আশাবাদী, এই চিরুনি অভিযানের ফলে এডিস মশার বিস্তার আমরা নিয়ন্ত্রণ রাখতে পারবো। কিন্তু কাজটি অত্যন্ত দুরূহ, তারপরও আমরা প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।’ যেখানেই সরকারি আবাসন সেখানেই নোংরা, অপরিচ্ছন্নতা দৃশ্যমান, সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে মেয়র ব্যারিস্টার শেখ তাপস বলেন, ‘এটা অত্যন্ত দুঃখজনক। আমরা এখন কঠোর হচ্ছি, জরিমানা করছি। তারপরও আমরা দায়িত্বহীনতা ও উদাসীনতা লক্ষ্য করছি। এটা কোনোভাবেই কাম্য নয়। যদি সবাই দায়িত্বশীলভাবে কাজ করি, তাহলে এটার বিস্তার এতদূর হতে পারে না। এখন ঘরে ঘরে যাচ্ছি।’ জনগণ সচেতন না হলে ১ কোটি ২০ লাখ জনবসতির এই শহরে এডিস নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রম অত্যন্ত কষ্টসাধ্য ও দুরূহ উল্লেখ করে ডিএসসিসির বলেন, ‘তারপরও প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। কিন্তু দীর্ঘ মেয়াদে যদি ডেঙ্গুকে নিয়ন্ত্রণ করতে হয়, তাহলে সকলের দায়িত্বশীলতা-সচেতনতা অত্যন্ত জরুরি।’ এর আগে মেয়র টিটিপাড়া পাম্প স্টেশন সংলগ্ন মান্ডা খালে বৃক্ষরোপণ করেন। পরে তিনি মতিঝিল টিঅ্যান্ডটি কলোনিতে মশক নিয়ন্ত্রণ, সেগুনবাগিচা ও ইস্কাটন গার্ডেন রোডে নর্দমা পরিষ্কারকরণ কার্যক্রম পরিদর্শন করেন। এ সময় ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ফরিদ আহাম্মদ, প্রধান প্রকৌশলী মো. রেজাউর রহমান, সচিব আকরামুজ্জামান, সংশ্লিষ্ট আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা, প্রধান সম্পত্তি কর্মকর্তা রাসেল সাবরিন, তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী খায়রুল বাকের এবং সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডগুলোর কাউন্সিলর ও সংরক্ষিত আসনের নারী কাউন্সিলররা উপস্থিত ছিলেন।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : prottashasmf@yahoo.com
আপলোডকারীর তথ্য

ডেঙ্গু পরিস্থিতি আশঙ্কাজনক রূপ নিতে পারে: স্বাস্থ্য অধিদফতর

আপডেট সময় : ০১:৪৯:০১ অপরাহ্ন, বুধবার, ৪ অগাস্ট ২০২১

নিজস্ব প্রতিবেদক : ডেঙ্গু পরিস্থিতি আবারও আশঙ্কাজনক রূপ নিতে পারে, এমন উদ্বেগের কথা জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদফতর।
গতকাল বুধবার কোভিড-১৯ পরিস্থিতি নিয়ে স্বাস্থ্য অধিদফতর আয়োজিত ভার্চুয়াল স্বাস্থ্য বুলেটিনে অধিদফতরের মুখপাত্র অধ্যাপক ডা. মো. নাজমুল ইসলাম এ কথা বলেন। তিনি বলেন, ‘বর্ষাকালে আমরা গত কয়েক বছর ধরেই দেখেছি— এডিসবাহিত যে ডেঙ্গু পরিস্থিতি, সেটি সময় সময় অত্যন্ত আশঙ্কাজনক রূপ নিয়েছে। ২০১৯ সালে আমরা দেখেছি, ডেঙ্গু মহামারি আমাদের কীভাবে আক্রান্ত করেছিল। ২০২১ সালে এসে একই রকম একটি পরিস্থিতির মুখে আমরা দাঁড়িয়েছি। আমরা মনে করি, দ্রুত ব্যবস্থা নিলে সেটি মোকাবিলা করতে পারবো।’
ডেঙ্গু সংক্রমণের চিত্র তুলে ধরে তিনি আরও বলেন, ‘মঙ্গলবার (৩ আগস্ট) সকাল ৮টার পর্যন্ত ঢাকায় ২৪৮ জন রোগী ভর্তি হয়েছেন। এরমধ্যে ১৬ জন ছিলেন ঢাকার বাইরের। এই সময় সরকারি-বেসরকারি মিলিয়ে এক হাজার ৭২ জন রোগী ভর্তি ছিলেন। এর মধ্যে ঢাকার ৪১টি সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে এক হাজার ২৫ জন রোগী ছিলেন। অন্যান্য বিভাগে মোট ভর্তি ছিলেন ৪৭ জন রোগী।’ অধ্যাপক ডা. মো. নাজমুল ইসলাম বলেন, ‘চলতি বছরের ২ জানুয়ারি থেকে ৩ আগস্ট পর্যন্ত মোট তিন হাজার ৪৪৬ জন ডেঙ্গু রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। হাসপাতাল থেকে চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন ২ হাজার ৩৭০ জন। জুলাই মাসে ২৮৬ জন রোগী শনাক্ত হয়েছিল, আগস্টের তিন দিনে ৭৮৮ জন রোগী শনাক্ত হয়েছেন।’
ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে সবাইকে দায়িত্বশীল হওয়ার আহ্বান ডিএসসিসি মেয়রের : চিরুনি অভিযানে এডিস নিয়ন্ত্রণে আসবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস। পাশাপাশি তিনি ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে সবাইকে সচেতন ও দায়িত্বশীল হওয়ার আহ্বান জানান। গতকাল বুধবার সকালে খিলগাঁওয়ের পিডব্লিউডি কলোনিতে মশক নিধন কার্যক্রম পরিদর্শন শেষে গণমাধ্যমের সঙ্গে মতবিনিময়কালে মেয়র ব্যারিস্টার শেখ তাপস এ কথা বলেন।
তাপস বলেন, ‘আমাদের এলাকায় যে সরকারি আবাসনগুলো আছে, আমরা তাদেরকে বারবার চিঠি দিয়েছি, সতর্ক করেছি। আমরা বলেছি, যেন তারা সেগুলো পরিষ্কার করেন। আপনারা লক্ষ্য করেছেন, আজকেও আমি পরিদর্শনে এসে দেখলাম, এখানে লার্ভা পাওয়া গেছে। এটি আসলে খুবই দুঃখজনক। আমরা যদি নিজেরা নিজেদের এলাকা পরিষ্কার-পরিছন্ন না রাখি, উৎসগুলো নিধন না করি, কোনও আধারে যেন পানি না জমতে না পারে, সে বিষয়ে সচেতন না হন, তবে এটা (ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণ) অত্যন্ত দুরূহ। তারপরও আমরা কাজ করে চলেছি। আমরা আশাবাদী, এই চিরুনি অভিযানের ফলে এডিস মশার বিস্তার আমরা নিয়ন্ত্রণ রাখতে পারবো। কিন্তু কাজটি অত্যন্ত দুরূহ, তারপরও আমরা প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।’ যেখানেই সরকারি আবাসন সেখানেই নোংরা, অপরিচ্ছন্নতা দৃশ্যমান, সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে মেয়র ব্যারিস্টার শেখ তাপস বলেন, ‘এটা অত্যন্ত দুঃখজনক। আমরা এখন কঠোর হচ্ছি, জরিমানা করছি। তারপরও আমরা দায়িত্বহীনতা ও উদাসীনতা লক্ষ্য করছি। এটা কোনোভাবেই কাম্য নয়। যদি সবাই দায়িত্বশীলভাবে কাজ করি, তাহলে এটার বিস্তার এতদূর হতে পারে না। এখন ঘরে ঘরে যাচ্ছি।’ জনগণ সচেতন না হলে ১ কোটি ২০ লাখ জনবসতির এই শহরে এডিস নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রম অত্যন্ত কষ্টসাধ্য ও দুরূহ উল্লেখ করে ডিএসসিসির বলেন, ‘তারপরও প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। কিন্তু দীর্ঘ মেয়াদে যদি ডেঙ্গুকে নিয়ন্ত্রণ করতে হয়, তাহলে সকলের দায়িত্বশীলতা-সচেতনতা অত্যন্ত জরুরি।’ এর আগে মেয়র টিটিপাড়া পাম্প স্টেশন সংলগ্ন মান্ডা খালে বৃক্ষরোপণ করেন। পরে তিনি মতিঝিল টিঅ্যান্ডটি কলোনিতে মশক নিয়ন্ত্রণ, সেগুনবাগিচা ও ইস্কাটন গার্ডেন রোডে নর্দমা পরিষ্কারকরণ কার্যক্রম পরিদর্শন করেন। এ সময় ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ফরিদ আহাম্মদ, প্রধান প্রকৌশলী মো. রেজাউর রহমান, সচিব আকরামুজ্জামান, সংশ্লিষ্ট আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা, প্রধান সম্পত্তি কর্মকর্তা রাসেল সাবরিন, তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী খায়রুল বাকের এবং সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডগুলোর কাউন্সিলর ও সংরক্ষিত আসনের নারী কাউন্সিলররা উপস্থিত ছিলেন।