প্রত্যাশা ডেস্ক : গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ২৪ ঘণ্টায় সাত শতাধিক মানুষকে হত্যা করেছে ইসরায়েল। সেখানে প্রতিদিনই ইসরায়েলের বিমান হামলায় শত শত মানুষ নিহত হচ্ছে। ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস নিয়ন্ত্রিত গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, গত ৭ অক্টোবর থেকে গাজায় ৫ হাজার ৭৯১ জন ফিলিস্তিনি নাগরিক নিহত হয়েছে। গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে আকস্মিক হামলা চালায় হামাস। এরপরেই গাজায় পাল্টা অভিযান শুরু করে ইসরায়েলি বাহিনী। টানা কয়েকদিন ধরেই গাজায় হামলা অব্যাহত রেখেছে ইসরায়েল। ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর মুখপাত্র ড্যানিয়েল হাগারি জানিয়েছেন, গাজা উপত্যকায় গত কয়েকদিনে তাদের সেনারা চার শতাধিক টার্গেটে হামলা চালিয়েছে। এর মধ্যে বেশ কয়েকটি মসজিদও রয়েছে। মঙ্গলবার সকালে এক্সে পোস্ট করা এক বার্তায় তিনি দাবি করেন, যেসব মসজিদে হামলা চালানো হয়েছিল সেগুলো বৈঠকের জন্য ব্যবহার করছিল হামাস। তিনি আরও জানান, হামাসের অপারেশনাল সদর দপ্তরে হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। এতে হামাসের তিনজন ডেপুটি কমান্ডার নিহত হয়েছেন। এদিকে ইসরায়েলের চলমান বিমান হামলার কারণে অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকার উত্তরাঞ্চল থেকে অনেক ফিলিস্তিনি নাগরিকই নিজেদের বাড়ি-ঘর ছেড়ে দক্ষিণাঞ্চলে আশ্রয় নিয়েছিলেন। কিন্তু এখন দক্ষিণাঞ্চলের পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হয়ে উঠেছে। ফলে বিপাকে পড়েছেন এসব অসহায় মানুষ। আর কোনো পথ খুঁজে না পেয়ে তারা এখন আবারো সেই উত্তরাঞ্চলেই ফিরে যেতে শুরু করেছেন। জাতিসংঘের এর শীর্ষ কর্মকর্তা এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন বলে বিবিসির এক প্রতিবেদনে জানানো হয়।
মর্গে জায়গা নেই, মৃতদেহ হাসপাতালের আঙ্গিনায়
গাজার হাসপাতালগুলোর মর্গে মৃতদেহ রাখার জায়গা নেই। মৃতদেহ রাখার জন্য অবরুদ্ধ শহরটির হাসপাতালগুলোর আঙ্গিনায় তাবু তৈরি করা হয়েছে। মঙ্গলবার আল-জাজিরা অনলাইন এ তথ্য জানিয়েছে। ৭ অক্টোবর গাজায় হামলা শুরু করে ইসরায়েল। নির্বিচার বোমা হামলায় গাজায় নিহতের সংখ্যা পাঁচ হাজার ছাড়িয়েছে। এদের মধ্যে অন্তত দুই হাজার শিশু। সোমবার রাতভর ইসরায়েলি বোমা হামলায় ১৪০ জন নিহত হয়েছে। আল-জাজিরার স্থানীয় সংবাদদাতা জানিয়েছেন, গাজার সবচেয়ে বড় হাসপাতাল হচ্ছে আল-শিফা। ইসরায়েলি বোমাবর্ষণের সাথে সাথে ছিটমহলজুড়ে হতাহতের সংখ্যা বাড়ছে। এর ফলে হাসপাতালে আনা আহতদের সংখ্যা প্রতিমুহূর্তে বাড়ছে। মৃতদেহ সংরক্ষণের জন্য আল-শিফা হাসপাতালের মর্গে জায়গা নেই। তাই মৃতদেহ রাখার জন্য হাসপাতালের আঙ্গিনায় তাবু তৈরি করা হয়েছে। স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা গাজায় ইসরায়েল যে ধরনের অস্ত্র ব্যবহার করছে তা পরীক্ষা করার জন্য একটি আন্তর্জাতিক তদন্তের আহ্বান জানিয়েছেন। আহতদের মধ্যে কয়েকজন গুরুতর দগ্ধ হয়ে হাসপাতালে এসেছেন। স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, তাদের ত্বক গলে গেছে। এসব আঘাতের চিকিৎসার জন্য তাদের কাছে কোনো ওষুধ নেই।